এরশাদের বিচার -ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না’
সংবিধানের সপ্তম সংশোধনী নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের বেঞ্চ গত ২৬ আগস্ট যে রায় দিয়েছিলেন, বুধবার তার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ প্রকাশিত হয়েছে। এই রায়ে বলা হয়েছে, অবৈধ ক্ষমতা দখল, ষড়যন্ত্র ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার দায়ে সাবেক সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদের বিচার হওয়া উচিত। একই সঙ্গে এ বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণ আছে কি না, তাও সরকারকে তলিয়ে দেখতে বলেছেন আদালত। এরশাদের সামরিক আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত চট্টগ্রামের সিদ্দিক আহমেদ নামের এক ব্যক্তির রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সপ্তম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করেছিলেন। পাশাপাশি ভবিষ্যতে যেন কেউ সামরিক শাসন জারির চেষ্টা না চালান, সে জন্য অতীতের সামরিক শাসকদের বিচার করা এবং ভবিষ্যতে সামরিক শাসন এড়াতে নির্ভুল আইন প্রণয়নেরও তাগিদ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে ২০০৫ সালে হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ জিয়াউর রহমানের পঞ্চম সংশোধনীই বাতিল করে দেন। দুটি রায়েই সামরিক শাসক খন্দকার মোশতাক আহমদ, জিয়াউর রহমান ও এইচ এম এরশাদের কঠোর সমালোচনা করা হয়। সপ্তম সংশোধনী বাতিলের রায়ে মন্তব্য করা হয়, ‘জিয়া সংবিধানের মূল স্তম্ভ ভেঙে দিয়েছেন এবং এরশাদ তাঁর পথ অনুসরণ করে দেশ চালিয়ে গেছেন।’ তবে রায়ে সম্ভাব্য অচলাবস্থা পরিহার করার উদ্দেশ্যে এর আগে সম্পন্ন হওয়া কিছু ঘটনা মার্জনা করার কথাও বলা হয়েছে। অবৈধ সামরিক শাসক সুহার্ত, পিনোশে, ইদি আমিন, আইয়ুব, ইয়াহিয়া, জিয়াউল হক ও পারভেজ মোশাররফের ভাগ্যে কী ঘটেছিল, তাও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় এই রায়ে।
বাংলাদেশে যাঁরা অবৈধ পন্থায় ক্ষমতা দখল করেছেন, তাঁদের মধ্যে একমাত্র এরশাদই বেঁচে আছেন। তাঁর পূর্ববর্তী সামরিক শাসকেরা অনেক আগেই মারা গেছেন। অতএব, তাঁদের বিচারের প্রশ্ন ওঠে না। দুর্ভাগ্যজনক যে, সাবেক এই স্বৈরশাসক এখনো সদম্ভে তাঁর অবৈধ কর্মকাণ্ডের পক্ষে সাফাই গেয়ে চলেছেন এবং তাঁর মধ্যে অনুশোচনার লেশমাত্র নেই। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যাঁরা আত্মাহুতি দিয়েছেন, তাঁদের নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা করতেও তাঁর বাধে না। জিয়া ও এরশাদ—দুজনই অবৈধ পন্থায় ক্ষমতায় এলেও তাঁদের প্রতি ক্ষমতাসীনদের দৃষ্টিভঙ্গি অভিন্ন নয়। তারা জিয়াউর রহমানের পঞ্চম সংশোধনী নিয়ে কঠোর সমালোচনা করলেও এরশাদের সপ্তম সংশোধনীর ব্যাপারে অনেকটাই নীরব। এরশাদ কেবল দেশের রাজনীতিকেই কলুষিত করেননি, ক্ষমতায় থাকতে তিনি দুঃশাসন ও দুর্নীতিরও প্রতীকে পরিণত হয়েছিলেন। এরশাদ এখন মহাজোটের শরিক। সে কারণে তিনি বিচারের আওতামুক্ত হতে পারেন না। কেননা, বর্তমান নয়, বরং অতীতের অপকর্মের জন্যই তাঁর বিচার হতে হবে। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় শীর্ষ দুই নেত্রীও স্বৈরাচারী শাসকের বিচারের জন্য জাতির কাছে ওয়াদাবদ্ধ ছিলেন। দুর্ভাগ্যজনক যে তাঁরা রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে তাঁদের সেই প্রতিশ্রুতির কথা ভুলে গেছেন। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া অপ্রাসঙ্গিক হবে না, যাতে বলা হয়েছিল, ‘স্বৈরশাসকদের ক্ষমা করা হলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।’
এর আগে ২০০৫ সালে হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ জিয়াউর রহমানের পঞ্চম সংশোধনীই বাতিল করে দেন। দুটি রায়েই সামরিক শাসক খন্দকার মোশতাক আহমদ, জিয়াউর রহমান ও এইচ এম এরশাদের কঠোর সমালোচনা করা হয়। সপ্তম সংশোধনী বাতিলের রায়ে মন্তব্য করা হয়, ‘জিয়া সংবিধানের মূল স্তম্ভ ভেঙে দিয়েছেন এবং এরশাদ তাঁর পথ অনুসরণ করে দেশ চালিয়ে গেছেন।’ তবে রায়ে সম্ভাব্য অচলাবস্থা পরিহার করার উদ্দেশ্যে এর আগে সম্পন্ন হওয়া কিছু ঘটনা মার্জনা করার কথাও বলা হয়েছে। অবৈধ সামরিক শাসক সুহার্ত, পিনোশে, ইদি আমিন, আইয়ুব, ইয়াহিয়া, জিয়াউল হক ও পারভেজ মোশাররফের ভাগ্যে কী ঘটেছিল, তাও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় এই রায়ে।
বাংলাদেশে যাঁরা অবৈধ পন্থায় ক্ষমতা দখল করেছেন, তাঁদের মধ্যে একমাত্র এরশাদই বেঁচে আছেন। তাঁর পূর্ববর্তী সামরিক শাসকেরা অনেক আগেই মারা গেছেন। অতএব, তাঁদের বিচারের প্রশ্ন ওঠে না। দুর্ভাগ্যজনক যে, সাবেক এই স্বৈরশাসক এখনো সদম্ভে তাঁর অবৈধ কর্মকাণ্ডের পক্ষে সাফাই গেয়ে চলেছেন এবং তাঁর মধ্যে অনুশোচনার লেশমাত্র নেই। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যাঁরা আত্মাহুতি দিয়েছেন, তাঁদের নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা করতেও তাঁর বাধে না। জিয়া ও এরশাদ—দুজনই অবৈধ পন্থায় ক্ষমতায় এলেও তাঁদের প্রতি ক্ষমতাসীনদের দৃষ্টিভঙ্গি অভিন্ন নয়। তারা জিয়াউর রহমানের পঞ্চম সংশোধনী নিয়ে কঠোর সমালোচনা করলেও এরশাদের সপ্তম সংশোধনীর ব্যাপারে অনেকটাই নীরব। এরশাদ কেবল দেশের রাজনীতিকেই কলুষিত করেননি, ক্ষমতায় থাকতে তিনি দুঃশাসন ও দুর্নীতিরও প্রতীকে পরিণত হয়েছিলেন। এরশাদ এখন মহাজোটের শরিক। সে কারণে তিনি বিচারের আওতামুক্ত হতে পারেন না। কেননা, বর্তমান নয়, বরং অতীতের অপকর্মের জন্যই তাঁর বিচার হতে হবে। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় শীর্ষ দুই নেত্রীও স্বৈরাচারী শাসকের বিচারের জন্য জাতির কাছে ওয়াদাবদ্ধ ছিলেন। দুর্ভাগ্যজনক যে তাঁরা রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে তাঁদের সেই প্রতিশ্রুতির কথা ভুলে গেছেন। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া অপ্রাসঙ্গিক হবে না, যাতে বলা হয়েছিল, ‘স্বৈরশাসকদের ক্ষমা করা হলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।’
No comments