বস্ত্র রপ্তানিতে এলডিসির মতো বাজারসুবিধা চাইছে পাকিস্তান
বস্ত্র খাতের কিছু পণ্য রপ্তানিতে পাকিস্তানকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রস্তাবের সঙ্গে একমত নয় বাংলাদেশ, ভারত ও পেরু।
এই প্রস্তাবে স্বল্পোন্নত দেশগুলো (এলডিসি) পণ্য রপ্তানিতে যেসব সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আসছে, সে রকম সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এলডিসির বাইরের দেশ অর্থাৎ উন্নয়নশীল পাকিস্তানের জন্য।
পাকিস্তানেরই আবেদনে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) গত ৩০ নভেম্বর প্রস্তাবটি দিয়েছিল ইইউ। পাকিস্তানের ইতিহাসে ভয়াবহতম বন্যার ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পাকিস্তানের পক্ষে ইইউ এমন প্রস্তাব দেয়। বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ডব্লিউটিওর কাউন্সিল ফর ট্রেড অ্যান্ড গুডসে এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হলেও গতকাল বুধবার পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে পাকিস্তান বিষয়টিকে নিজের পক্ষে নিতে বিভিন্ন দেশের কাছে ধরনা দিচ্ছে বলে জানা গেছে। ২০১১ সালের জানুয়ারির শেষ দিকে এ বিষয়ে আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি হিসেবে ইইউ বলেছিল, গত জুলাই ও আগস্টে পাকিস্তানে ভয়াবহতম বন্যা হয়। এতে পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান, সিন্ধু ইত্যাদি অঞ্চলের দুই কোটি মানুষের জীবনমানের ওপর আঘাত আসে। সুতরাং পাকিস্তানকে শূন্য শুল্কে বস্ত্র খাতের কিছু পণ্য রপ্তানির সুযোগ দেওয়া যেতে পারে।
ইইউর প্রস্তাবে ৭৫টি পণ্যে শুল্কমুক্ত বাজারসুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, যার মধ্যে ৬৪টিই বস্ত্রজাতীয় পণ্য।
প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের হিসাবে বন্যায় এক লাখ ৬০ বর্গকিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয় এবং এক কোটি ২০ লাখ মানুষ জরুরি মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ও পেরু সম্প্রতি ডব্লিউটিওকে জানিয়েছে, সহযোগিতা করতে চাইলে বাজারসুবিধা ভালো কোনো বিকল্প নয়। বরং নগদ সহায়তাসহ অন্য অনেক ধরনের সহযোগিতাই করা যায়। এককভাবে একটি দেশকে বাণিজ্য বা বাজারসুবিধা দেওয়া হলে একই জাতীয় পণ্য রপ্তানিতে বরং প্রতিযোগী দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
জানা গেছে, ইইউর প্রস্তাবটি তখনই গ্রাহ্য হতে পারে যদি ডব্লিউটিও পাকিস্তানকে ১৯৯৪ সালের গ্যাট চুক্তি অনুযায়ী মোস্ট ফেভারড নেশন (এমএফএন) শর্তটি শিথিল করে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের শীর্ষপর্যায়ের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, পাকিস্তানের বন্যার ক্ষয়ক্ষতিতে বাংলাদেশ যথেষ্ট সহানুভূতিশীল। পাকিস্তানের বন্যার্তদের জন্য ত্রাণও পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু বাণিজ্যসুবিধার বিষয়টি ভিন্ন। এতে এক দেশকে সহযোগিতা করতে গিয়ে অন্য দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। বাংলাদেশ তার নিজের অস্তিত্বের কারণেই ইইউর এমন প্রস্তাবের বিরোধিতা করছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ডব্লিউটিওকে ভারতও জানিয়েছে যে পাকিস্তানকে নগদ অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করা যেতে পারে, কিন্তু বাজারসুবিধা দিয়ে নয়। এতে ভারতসহ অন্য অনেক দেশেরই রপ্তানি বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
যোগাযোগ করা হলে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘পাকিস্তান যেহেতু এলডিসির বাইরে, সুতরাং দেশটিকে শূন্য শুল্কে রপ্তানিসুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব গ্রহণীয় নয়। এতে বাংলাদেশসহ এলডিসির কিছু সদস্য সংগত কারণেই বিরোধিতা করছে ।’
যুক্তি হিসেবে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে পাকিস্তানও যদি এলডিসির মতোই সুবিধা পায়, তাহলে বস্ত্র খাতের পণ্য রপ্তানিতে এলডিসিগুলো অসম প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়বে।
মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, এলডিসিগুলো বর্তমানে বিশেষ বিবেচনায় শূন্য শুল্কে পণ্য রপ্তানির সুযোগ পাচ্ছে। হংকংয়ে অনুষ্ঠিত ডব্লিউটিও সম্মেলনে তা মেনে নিয়েছে ইইউ। এখন যদি ইইউ এলডিসি ধারণার ব্যত্যয় ঘটিয়ে নতুন কোনো প্রস্তাব করতে চায়, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য তা মেনে নেওয়া কঠিন।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বিশ্ববাণিজ্যে এলডিসির জন্য বিভিন্ন মাপকাঠি নির্ধারণ করে দিয়েছে ডব্লিউটিও নিজেই। সে অনুযায়ী উন্নয়নের স্বার্থে দেশগুলো কিছু সুবিধা পাচ্ছে। ডব্লিউটিওকে এর ব্যত্যয় ঘটানো উচিত হবে না।
এদিকে ইইউর এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে স্পেন, পর্তুগাল ও ইতালির মতো উন্নত দেশগুলোও। তারা ইইউর প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ডব্লিউটিওর কাছে মতামত ব্যক্ত করেছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে ডব্লিউটিওর হংকং সম্মেলনে এলডিসিগুলোকে শতভাগ বাজারসুবিধা দেওয়ার অন্যতম বিরোধিতাকারী ছিল পাকিস্তান। ওই সম্মেলনে শেষ পর্যন্ত এলডিসিগুলোকে ৯৭ শতাংশ পণ্যে বাজারসুবিধা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়।
এই প্রস্তাবে স্বল্পোন্নত দেশগুলো (এলডিসি) পণ্য রপ্তানিতে যেসব সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আসছে, সে রকম সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এলডিসির বাইরের দেশ অর্থাৎ উন্নয়নশীল পাকিস্তানের জন্য।
পাকিস্তানেরই আবেদনে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) গত ৩০ নভেম্বর প্রস্তাবটি দিয়েছিল ইইউ। পাকিস্তানের ইতিহাসে ভয়াবহতম বন্যার ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পাকিস্তানের পক্ষে ইইউ এমন প্রস্তাব দেয়। বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ডব্লিউটিওর কাউন্সিল ফর ট্রেড অ্যান্ড গুডসে এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হলেও গতকাল বুধবার পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে পাকিস্তান বিষয়টিকে নিজের পক্ষে নিতে বিভিন্ন দেশের কাছে ধরনা দিচ্ছে বলে জানা গেছে। ২০১১ সালের জানুয়ারির শেষ দিকে এ বিষয়ে আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি হিসেবে ইইউ বলেছিল, গত জুলাই ও আগস্টে পাকিস্তানে ভয়াবহতম বন্যা হয়। এতে পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান, সিন্ধু ইত্যাদি অঞ্চলের দুই কোটি মানুষের জীবনমানের ওপর আঘাত আসে। সুতরাং পাকিস্তানকে শূন্য শুল্কে বস্ত্র খাতের কিছু পণ্য রপ্তানির সুযোগ দেওয়া যেতে পারে।
ইইউর প্রস্তাবে ৭৫টি পণ্যে শুল্কমুক্ত বাজারসুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, যার মধ্যে ৬৪টিই বস্ত্রজাতীয় পণ্য।
প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের হিসাবে বন্যায় এক লাখ ৬০ বর্গকিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয় এবং এক কোটি ২০ লাখ মানুষ জরুরি মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ও পেরু সম্প্রতি ডব্লিউটিওকে জানিয়েছে, সহযোগিতা করতে চাইলে বাজারসুবিধা ভালো কোনো বিকল্প নয়। বরং নগদ সহায়তাসহ অন্য অনেক ধরনের সহযোগিতাই করা যায়। এককভাবে একটি দেশকে বাণিজ্য বা বাজারসুবিধা দেওয়া হলে একই জাতীয় পণ্য রপ্তানিতে বরং প্রতিযোগী দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
জানা গেছে, ইইউর প্রস্তাবটি তখনই গ্রাহ্য হতে পারে যদি ডব্লিউটিও পাকিস্তানকে ১৯৯৪ সালের গ্যাট চুক্তি অনুযায়ী মোস্ট ফেভারড নেশন (এমএফএন) শর্তটি শিথিল করে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের শীর্ষপর্যায়ের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, পাকিস্তানের বন্যার ক্ষয়ক্ষতিতে বাংলাদেশ যথেষ্ট সহানুভূতিশীল। পাকিস্তানের বন্যার্তদের জন্য ত্রাণও পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু বাণিজ্যসুবিধার বিষয়টি ভিন্ন। এতে এক দেশকে সহযোগিতা করতে গিয়ে অন্য দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। বাংলাদেশ তার নিজের অস্তিত্বের কারণেই ইইউর এমন প্রস্তাবের বিরোধিতা করছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ডব্লিউটিওকে ভারতও জানিয়েছে যে পাকিস্তানকে নগদ অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করা যেতে পারে, কিন্তু বাজারসুবিধা দিয়ে নয়। এতে ভারতসহ অন্য অনেক দেশেরই রপ্তানি বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
যোগাযোগ করা হলে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘পাকিস্তান যেহেতু এলডিসির বাইরে, সুতরাং দেশটিকে শূন্য শুল্কে রপ্তানিসুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব গ্রহণীয় নয়। এতে বাংলাদেশসহ এলডিসির কিছু সদস্য সংগত কারণেই বিরোধিতা করছে ।’
যুক্তি হিসেবে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে পাকিস্তানও যদি এলডিসির মতোই সুবিধা পায়, তাহলে বস্ত্র খাতের পণ্য রপ্তানিতে এলডিসিগুলো অসম প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়বে।
মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, এলডিসিগুলো বর্তমানে বিশেষ বিবেচনায় শূন্য শুল্কে পণ্য রপ্তানির সুযোগ পাচ্ছে। হংকংয়ে অনুষ্ঠিত ডব্লিউটিও সম্মেলনে তা মেনে নিয়েছে ইইউ। এখন যদি ইইউ এলডিসি ধারণার ব্যত্যয় ঘটিয়ে নতুন কোনো প্রস্তাব করতে চায়, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য তা মেনে নেওয়া কঠিন।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বিশ্ববাণিজ্যে এলডিসির জন্য বিভিন্ন মাপকাঠি নির্ধারণ করে দিয়েছে ডব্লিউটিও নিজেই। সে অনুযায়ী উন্নয়নের স্বার্থে দেশগুলো কিছু সুবিধা পাচ্ছে। ডব্লিউটিওকে এর ব্যত্যয় ঘটানো উচিত হবে না।
এদিকে ইইউর এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে স্পেন, পর্তুগাল ও ইতালির মতো উন্নত দেশগুলোও। তারা ইইউর প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ডব্লিউটিওর কাছে মতামত ব্যক্ত করেছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে ডব্লিউটিওর হংকং সম্মেলনে এলডিসিগুলোকে শতভাগ বাজারসুবিধা দেওয়ার অন্যতম বিরোধিতাকারী ছিল পাকিস্তান। ওই সম্মেলনে শেষ পর্যন্ত এলডিসিগুলোকে ৯৭ শতাংশ পণ্যে বাজারসুবিধা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়।
No comments