‘ইরাকি বন্দীদের ওপর নির্যাতন উপেক্ষা করেছেন মার্কিন সেনারা’
সরকারের জন্য বিব্রতকর তথ্য ফাঁসের জন্য আলোচিত ওয়েবসাইট ‘উইকিলিকস’ এবার ইরাকে মার্কিন দখলদারির বেশ কিছু গোপন নথি প্রকাশ করেছে। গত শুক্রবার প্রকাশিত মার্কিন বাহিনীর প্রায় চার লাখ নথিতে ওয়েবসাইটটি সাধারণ মানুষের ওপর ইরাকি কর্তৃপক্ষের ব্যাপক নির্যাতন ও মার্কিন সেনা চৌকিতে বিপুলসংখ্যক বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ইরাকি কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক প্রক্রিয়ায় বলেছে, প্রকাশিত তথ্যে ‘বিস্মিত হওয়ার মতো’ নতুন কিছু নেই। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র এসব তথ্য তত গুরুত্বপূর্ণ ও নির্ভরযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করার পাশাপাশি তা ফাঁস করে দেওয়ার নিন্দা করেছে।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর ইতিহাসে একসঙ্গে এত বেশি গোপন নথি ফাঁসের ঘটনা এটাই প্রথম। এর আগে গত জুলাইয়ে উইকিলিকস আফগান যুদ্ধ বিষয়ে মার্কিন বাহিনীর ৯২ হাজারেরও বেশি গোপন নথি প্রকাশ করে আলোড়ন তোলে।
ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা যায়, ইরাকের বিভিন্ন কারাগারে বন্দীদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালানোর বিষয়টি দখলদার মার্কিন সেনা কর্তৃপক্ষ জানত। ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মীরা এসব নির্যাতন চালালেও তা তদন্ত করতে ব্যর্থ হয় মার্কিন বাহিনী। এ ছাড়া ইরাকের বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনকে প্রতিবেশী ইরানের সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়েও জানতেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা অস্ট্রেলীয় সাংবাদিক জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ বলেছেন, এসব নথি থেকে পাওয়া তথ্যে যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ মেলে।
নথি ফাঁস করায় উইকিলিকসের নিন্দা জানিয়ে পেন্টাগন বলেছে, এর ফলে মার্কিন বাহিনী ও তাদের সহযোগী অন্তত ৩০০ ইরাকি ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
উইকিলিকসে প্রকাশিত নথিতে ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনের শুরু (২০০৩) থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন তথ্য রয়েছে। আগে অস্বীকার করলেও দেখা যাচ্ছে, মার্কিন কর্তৃপক্ষ বেসামরিক হতাহতের রেকর্ড সংরক্ষণ করেছে। নথির তথ্য অনুযায়ী ইরাক যুদ্ধের প্রত্যক্ষ শিকার হয়েছে দুই লাখ ৮৫ হাজার মানুষ। মোট নিহত হয়েছে এক লাখ নয় হাজার ব্যক্তি। এর মধ্যে ৬৬ হাজার ৮১ জনই বেসামরিক ইরাকি। কিন্তু ‘যুদ্ধের কারণে’ তাদের মৃত্যু হয়নি বলে দাবি করা হয়।
উইকিলিকসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইরাকের বিভিন্ন নিরাপত্তা চৌকিতে নির্বিচারে বেসামরিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে...। বিভিন্ন কারাগারে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা বন্দীদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছেন। জঙ্গি আশ্রয় নিয়েছে, এমন সন্দেহ থেকে মার্কিন সেনারা বহু বেসামরিক ভবন উড়িয়ে দিয়েছেন।’ উইকিলিকসের তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন বেসরকারি নিরাপত্তাপ্রতিষ্ঠান ব্ল্যাক ওয়াটারের বিরুদ্ধেও ইরাকে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার তথ্য রয়েছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোথাও কোনো অভিযোগ তোলা হয়নি।
প্রচারমাধ্যমে উইকিলিকসের প্রকাশিত নথির সূত্র ধরে বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।দ্য নিউইয়র্ক টাইমস-এ বলা হয়েছে, সেনাদের অন্যায়ের বিষয়ে মার্কিন বাহিনীর কাছে অভিযোগ গেলেও তা উপেক্ষা করা হয়েছে। সেনারা এ বিষয়ে তাঁদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালেও বিষয়টি শুধু ইরাকিদের তদন্ত করতে বলা হতো।
গার্ডিয়ান-এ বলা হয়, ইরাকের এক কারাগারে একজন বন্দীর পায়ে গুলি করে ইরাকি পুলিশ। তাঁর কাছে লোহার রড আছে, শুধু এই সন্দেহে ওই বন্দীকে গুলি করা হয়। ওই ঘটনার কোনো তদন্ত হয়নি। এ ছাড়া ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নির্যাতনসহ অনেক অভিযোগেরও তদন্ত করতে ব্যর্থ হয় মার্কিন বাহিনী। উল্লেখ্য, মার্কিন অভিযানে সাদ্দাম হোসেনের পতনের পর কয়েক বছর ইরাকের প্রশাসন কার্যত যুক্তরাষ্ট্রই চালিয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার পরিচালক ম্যালকম স্মার্ট বলেন, উইকিলিকসের নথি থেকে বোঝা যায়, ইরাকে বছরের পর বছর ধরে চলা এসব নির্যাতনের বিষয়ে জানত মার্কিন বাহিনী।
ইরাকের মানবাধিকারবিষয়ক মন্ত্রণালয় গতকাল শনিবার এ ব্যাপারে প্রথমবারের মতো প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কামিল আল আমিন বলেন, ‘এসব নথিতে আশ্চর্য হওয়ার মতো কোনো তথ্য নেই। কারণ আবু গারিবসহ বিভিন্ন কারাগারের ঘটনা সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি। অনেক ঘটনার সঙ্গে মার্কিন সেনারাও জড়িত।’
ইরাকি মুখপাত্র আরও বলেন, উইকিলিকসে মোট নিহত ব্যক্তির সংখ্যা এক লাখ নয় হাজার বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ সংখ্যা ইরাকি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবের কাছাকাছি।
কয়েকজন মার্কিন সেনা কর্মকর্তা দাবি করেন, এসব তথ্য ট্যাকটিক্যাল ইউনিটগুলোর সংগ্রহ করা ‘প্রাথমিক তথ্য’ মাত্র। তাঁরা বলেন, যাতে ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে লক্ষ্যেই প্রচলিত নিয়মমতো এসব ব্যাপারে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছিল তাঁদের।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন এসব তথ্য ফাঁসের নিন্দা জানিয়ে বলেন, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
ইরাকি কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক প্রক্রিয়ায় বলেছে, প্রকাশিত তথ্যে ‘বিস্মিত হওয়ার মতো’ নতুন কিছু নেই। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র এসব তথ্য তত গুরুত্বপূর্ণ ও নির্ভরযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করার পাশাপাশি তা ফাঁস করে দেওয়ার নিন্দা করেছে।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর ইতিহাসে একসঙ্গে এত বেশি গোপন নথি ফাঁসের ঘটনা এটাই প্রথম। এর আগে গত জুলাইয়ে উইকিলিকস আফগান যুদ্ধ বিষয়ে মার্কিন বাহিনীর ৯২ হাজারেরও বেশি গোপন নথি প্রকাশ করে আলোড়ন তোলে।
ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা যায়, ইরাকের বিভিন্ন কারাগারে বন্দীদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালানোর বিষয়টি দখলদার মার্কিন সেনা কর্তৃপক্ষ জানত। ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মীরা এসব নির্যাতন চালালেও তা তদন্ত করতে ব্যর্থ হয় মার্কিন বাহিনী। এ ছাড়া ইরাকের বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনকে প্রতিবেশী ইরানের সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়েও জানতেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা অস্ট্রেলীয় সাংবাদিক জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ বলেছেন, এসব নথি থেকে পাওয়া তথ্যে যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ মেলে।
নথি ফাঁস করায় উইকিলিকসের নিন্দা জানিয়ে পেন্টাগন বলেছে, এর ফলে মার্কিন বাহিনী ও তাদের সহযোগী অন্তত ৩০০ ইরাকি ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
উইকিলিকসে প্রকাশিত নথিতে ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনের শুরু (২০০৩) থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন তথ্য রয়েছে। আগে অস্বীকার করলেও দেখা যাচ্ছে, মার্কিন কর্তৃপক্ষ বেসামরিক হতাহতের রেকর্ড সংরক্ষণ করেছে। নথির তথ্য অনুযায়ী ইরাক যুদ্ধের প্রত্যক্ষ শিকার হয়েছে দুই লাখ ৮৫ হাজার মানুষ। মোট নিহত হয়েছে এক লাখ নয় হাজার ব্যক্তি। এর মধ্যে ৬৬ হাজার ৮১ জনই বেসামরিক ইরাকি। কিন্তু ‘যুদ্ধের কারণে’ তাদের মৃত্যু হয়নি বলে দাবি করা হয়।
উইকিলিকসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইরাকের বিভিন্ন নিরাপত্তা চৌকিতে নির্বিচারে বেসামরিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে...। বিভিন্ন কারাগারে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা বন্দীদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছেন। জঙ্গি আশ্রয় নিয়েছে, এমন সন্দেহ থেকে মার্কিন সেনারা বহু বেসামরিক ভবন উড়িয়ে দিয়েছেন।’ উইকিলিকসের তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন বেসরকারি নিরাপত্তাপ্রতিষ্ঠান ব্ল্যাক ওয়াটারের বিরুদ্ধেও ইরাকে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার তথ্য রয়েছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোথাও কোনো অভিযোগ তোলা হয়নি।
প্রচারমাধ্যমে উইকিলিকসের প্রকাশিত নথির সূত্র ধরে বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।দ্য নিউইয়র্ক টাইমস-এ বলা হয়েছে, সেনাদের অন্যায়ের বিষয়ে মার্কিন বাহিনীর কাছে অভিযোগ গেলেও তা উপেক্ষা করা হয়েছে। সেনারা এ বিষয়ে তাঁদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালেও বিষয়টি শুধু ইরাকিদের তদন্ত করতে বলা হতো।
গার্ডিয়ান-এ বলা হয়, ইরাকের এক কারাগারে একজন বন্দীর পায়ে গুলি করে ইরাকি পুলিশ। তাঁর কাছে লোহার রড আছে, শুধু এই সন্দেহে ওই বন্দীকে গুলি করা হয়। ওই ঘটনার কোনো তদন্ত হয়নি। এ ছাড়া ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নির্যাতনসহ অনেক অভিযোগেরও তদন্ত করতে ব্যর্থ হয় মার্কিন বাহিনী। উল্লেখ্য, মার্কিন অভিযানে সাদ্দাম হোসেনের পতনের পর কয়েক বছর ইরাকের প্রশাসন কার্যত যুক্তরাষ্ট্রই চালিয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার পরিচালক ম্যালকম স্মার্ট বলেন, উইকিলিকসের নথি থেকে বোঝা যায়, ইরাকে বছরের পর বছর ধরে চলা এসব নির্যাতনের বিষয়ে জানত মার্কিন বাহিনী।
ইরাকের মানবাধিকারবিষয়ক মন্ত্রণালয় গতকাল শনিবার এ ব্যাপারে প্রথমবারের মতো প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কামিল আল আমিন বলেন, ‘এসব নথিতে আশ্চর্য হওয়ার মতো কোনো তথ্য নেই। কারণ আবু গারিবসহ বিভিন্ন কারাগারের ঘটনা সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি। অনেক ঘটনার সঙ্গে মার্কিন সেনারাও জড়িত।’
ইরাকি মুখপাত্র আরও বলেন, উইকিলিকসে মোট নিহত ব্যক্তির সংখ্যা এক লাখ নয় হাজার বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ সংখ্যা ইরাকি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবের কাছাকাছি।
কয়েকজন মার্কিন সেনা কর্মকর্তা দাবি করেন, এসব তথ্য ট্যাকটিক্যাল ইউনিটগুলোর সংগ্রহ করা ‘প্রাথমিক তথ্য’ মাত্র। তাঁরা বলেন, যাতে ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে লক্ষ্যেই প্রচলিত নিয়মমতো এসব ব্যাপারে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছিল তাঁদের।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন এসব তথ্য ফাঁসের নিন্দা জানিয়ে বলেন, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
No comments