বিদায় চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান!
ইতিহাস বড় নিষ্ঠুর। বড় নির্মম।
সত্যটা কাল উপলব্ধি করতে বাধ্য হলো ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান। সর্বাধিকবার ফেডারেশন কাপ শিরোপার স্বাদ নেওয়া মোহামেডান এই প্রথম মৌসুম সূচক টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে উঠতেই ব্যর্থ!
ফেডারেশন কাপ শুরু হয়েছিল ১৯৮০ সালে। গত ২১ আসরে দুবার যুগ্ম চ্যাম্পিয়নসহ সর্বোচ্চ ১০ বারের চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান। চারবার রানার্সআপ। ১৪ বার খেলেছে ফাইনালে। টানা শিরোপা জিতেছে গত দুবার। হ্যাটট্রিক শিরোপা মিশনে তাদেরই কিনা গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়!
কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে বসে এই দৃশ্য কী করে হজম করেন মোহামেডানের বিখ্যাত সাবেকেরা! ছাইদ হাসানের (কানন) আক্ষেপ, ‘মোহামেডানের ফুটবল ইতিহাসে অনেক বিপর্যয়ই এসেছে। কিন্তু এমন কখনো হয়নি। খুব লজ্জা লাগছে।’ ইমতিয়াজ সুলতান (জনি) বললেন, ‘মোহামেডানের যে দল এবার, তাতে ভালো কিছু আশা করা যায় না। মোহামেডানের ইতিহাসে এবারই জাতীয় দলের কোনো খেলোয়াড় নেই। ভালো ফল আশা করি কীভাবে?’
ঘটনাক্রমে কাল শেষ ম্যাচে মোহামেডান মাঠে নামার আগেই তাদের সব আশা শেষ। দিনের প্রথম ম্যাচে ব্রাদার্সকে মুক্তিযোদ্ধা হারিয়েছে ৩-০ গোলে। ব্রাদার্স অন্তত ড্র করলে পরের ম্যাচে বড় ব্যবধানে জিতে সেমিতে যাওয়ার সুযোগ থাকত মোহামেডানের সামনে। কিন্তু আগের দুই ম্যাচই জিতে সেমিফাইনালে চলে যাওয়া ব্রাদার্স এদিন প্রথম একাদশে ৭টি পরিবর্তন এনে দুলকি চালে খেলেছে মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে।
এরই ফল—মুক্তিযোদ্ধা ৩ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। ব্রাদার্স গ্রুপ রানার্সআপ হতে চেয়েছে, হয়েছেও তাই। সেমিফাইনালে শেখ জামালের পরিবর্তে তাদের পছন্দ যে আবাহনী।
আগের ম্যাচগুলোয় নজর কাড়া ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার এভারটন, ঘানার এনক বেনটিলদের সাইডবেঞ্চেই বসিয়ে রাখল ব্রাদার্স। মুক্তিযোদ্ধা সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে পুরোপুরি। গত ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা সুদানের স্ট্রাইকার জেমস মগা দুটি (একটি পেনাল্টি থেকে), মিঠুন চৌধুরী অন্য গোলটি করে ব্রাদার্সকে দিয়েছেন পরাজয়ের স্বাদ।
ফেনী সকারের বিপক্ষে জিতলে তবু জয় দিয়ে শেষ করতে পারত মোহামেডান। কিন্তু ফেনী সকার আর মোহামেডানে পার্থক্য কী! দুই দলই লড়ল সমানে সমান। ৩৭ মিনিটে বুলবুলের গোলে এগিয়ে যায় সকার। ৪৮ মিনিটে পেনাল্টি পেয়েছে মোহামেডান। কিন্তু ‘আনফিট’ নাইজেরিয়ার স্ট্রাইকার এমেকার দুর্বল শট ঠেকিয়ে দিয়েছেন সকারের গোলরক্ষক। শেষ পর্যন্ত ৮৫ মিনিটে জাতীয় যুবদলের সদস্য ক্যানারি ওয়ার্ফের আবাসিক ক্যাম্পে বেড়ে ওঠা তরুণ সোহেল কোনাকুনি শটে ১-১ করেন।
মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে গোলশূন্য, ব্রাদার্সের কাছে ০-২ হার। ফেনী সকারের সঙ্গে ড্র—তিন ম্যাচে ২ পয়েন্ট পেয়েছে মোহামেডান। ‘বি’ গ্রুপে তৃতীয় হলো সাদা-কালোরা।
মোহামেডান গ্রুপে তৃতীয়! অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার হাসান আল মামুন মোটেও বিস্মিত নন, ‘আমাদের সময় লাগবে। এই বিদায়টা বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো নয়। তৃতীয় হওয়াও অস্বাভাবিক ফল বলব না।’
দলে পাঁচজন বিদেশি খেলোয়াড়। একজন গত ম্যাচে লাল কার্ড দেখায় এদিন মাঠের বাইরে। গোলরক্ষক মোহাম্মদ হাসান এবং স্ট্রাইকার এমেকা খেলেছেন। ছাড়পত্র না আসায় দুজন ছিলেন দর্শক। এই দুজনকে পেলে হয়তো ফলাফল আরেকটু ভালো হতে পারত বলে মনে করে মোহামেডান শিবির। অখ্যাত তরুণদের পক্ষে এর চেয়ে আর কী করা সম্ভব—সান্ত্বনা খোঁজা হয়েছে এই কথা বলেও।
এদিন সাদা-কালো জার্সি ছেড়ে সবুজ পরে খেলাটাই ভালো হয়েছে মোহামেডানের। এই তরুণ দল সাদা-কালোর ভার নেওয়ার উপযুক্ত তো নয়। অচেনা এই দলের কান্ডারি কোচ শফিকুল ইসলামকে (মানিক) ম্যাচের পর সান্ত্বনা দিচ্ছিল সমর্থকেরা। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ বিদায়ের কথাই প্রত্যেকের মুখে। মোহামেডান ঘুরে দাঁড়াবে—এই প্রত্যয়ও রইল মোহামেডান সমর্থকদের কণ্ঠে।
শফিকুল ইসলামের মনে ঝড় বইলেও কণ্ঠটা ছিল স্বাভাবিক, ‘এই ফলাফল হতেই পারে। এটাকে স্বাভাবিক হিসেবে নিচ্ছি। আমি হতাশ নই।’
তবে ঘটনা হলো, ইতিহাসের উল্টো পিঠ দেখা মোহামেডানের জন্য এটি সত্যিই হতাশার দিন!
সত্যটা কাল উপলব্ধি করতে বাধ্য হলো ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান। সর্বাধিকবার ফেডারেশন কাপ শিরোপার স্বাদ নেওয়া মোহামেডান এই প্রথম মৌসুম সূচক টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে উঠতেই ব্যর্থ!
ফেডারেশন কাপ শুরু হয়েছিল ১৯৮০ সালে। গত ২১ আসরে দুবার যুগ্ম চ্যাম্পিয়নসহ সর্বোচ্চ ১০ বারের চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান। চারবার রানার্সআপ। ১৪ বার খেলেছে ফাইনালে। টানা শিরোপা জিতেছে গত দুবার। হ্যাটট্রিক শিরোপা মিশনে তাদেরই কিনা গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়!
কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে বসে এই দৃশ্য কী করে হজম করেন মোহামেডানের বিখ্যাত সাবেকেরা! ছাইদ হাসানের (কানন) আক্ষেপ, ‘মোহামেডানের ফুটবল ইতিহাসে অনেক বিপর্যয়ই এসেছে। কিন্তু এমন কখনো হয়নি। খুব লজ্জা লাগছে।’ ইমতিয়াজ সুলতান (জনি) বললেন, ‘মোহামেডানের যে দল এবার, তাতে ভালো কিছু আশা করা যায় না। মোহামেডানের ইতিহাসে এবারই জাতীয় দলের কোনো খেলোয়াড় নেই। ভালো ফল আশা করি কীভাবে?’
ঘটনাক্রমে কাল শেষ ম্যাচে মোহামেডান মাঠে নামার আগেই তাদের সব আশা শেষ। দিনের প্রথম ম্যাচে ব্রাদার্সকে মুক্তিযোদ্ধা হারিয়েছে ৩-০ গোলে। ব্রাদার্স অন্তত ড্র করলে পরের ম্যাচে বড় ব্যবধানে জিতে সেমিতে যাওয়ার সুযোগ থাকত মোহামেডানের সামনে। কিন্তু আগের দুই ম্যাচই জিতে সেমিফাইনালে চলে যাওয়া ব্রাদার্স এদিন প্রথম একাদশে ৭টি পরিবর্তন এনে দুলকি চালে খেলেছে মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে।
এরই ফল—মুক্তিযোদ্ধা ৩ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। ব্রাদার্স গ্রুপ রানার্সআপ হতে চেয়েছে, হয়েছেও তাই। সেমিফাইনালে শেখ জামালের পরিবর্তে তাদের পছন্দ যে আবাহনী।
আগের ম্যাচগুলোয় নজর কাড়া ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার এভারটন, ঘানার এনক বেনটিলদের সাইডবেঞ্চেই বসিয়ে রাখল ব্রাদার্স। মুক্তিযোদ্ধা সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে পুরোপুরি। গত ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা সুদানের স্ট্রাইকার জেমস মগা দুটি (একটি পেনাল্টি থেকে), মিঠুন চৌধুরী অন্য গোলটি করে ব্রাদার্সকে দিয়েছেন পরাজয়ের স্বাদ।
ফেনী সকারের বিপক্ষে জিতলে তবু জয় দিয়ে শেষ করতে পারত মোহামেডান। কিন্তু ফেনী সকার আর মোহামেডানে পার্থক্য কী! দুই দলই লড়ল সমানে সমান। ৩৭ মিনিটে বুলবুলের গোলে এগিয়ে যায় সকার। ৪৮ মিনিটে পেনাল্টি পেয়েছে মোহামেডান। কিন্তু ‘আনফিট’ নাইজেরিয়ার স্ট্রাইকার এমেকার দুর্বল শট ঠেকিয়ে দিয়েছেন সকারের গোলরক্ষক। শেষ পর্যন্ত ৮৫ মিনিটে জাতীয় যুবদলের সদস্য ক্যানারি ওয়ার্ফের আবাসিক ক্যাম্পে বেড়ে ওঠা তরুণ সোহেল কোনাকুনি শটে ১-১ করেন।
মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে গোলশূন্য, ব্রাদার্সের কাছে ০-২ হার। ফেনী সকারের সঙ্গে ড্র—তিন ম্যাচে ২ পয়েন্ট পেয়েছে মোহামেডান। ‘বি’ গ্রুপে তৃতীয় হলো সাদা-কালোরা।
মোহামেডান গ্রুপে তৃতীয়! অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার হাসান আল মামুন মোটেও বিস্মিত নন, ‘আমাদের সময় লাগবে। এই বিদায়টা বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো নয়। তৃতীয় হওয়াও অস্বাভাবিক ফল বলব না।’
দলে পাঁচজন বিদেশি খেলোয়াড়। একজন গত ম্যাচে লাল কার্ড দেখায় এদিন মাঠের বাইরে। গোলরক্ষক মোহাম্মদ হাসান এবং স্ট্রাইকার এমেকা খেলেছেন। ছাড়পত্র না আসায় দুজন ছিলেন দর্শক। এই দুজনকে পেলে হয়তো ফলাফল আরেকটু ভালো হতে পারত বলে মনে করে মোহামেডান শিবির। অখ্যাত তরুণদের পক্ষে এর চেয়ে আর কী করা সম্ভব—সান্ত্বনা খোঁজা হয়েছে এই কথা বলেও।
এদিন সাদা-কালো জার্সি ছেড়ে সবুজ পরে খেলাটাই ভালো হয়েছে মোহামেডানের। এই তরুণ দল সাদা-কালোর ভার নেওয়ার উপযুক্ত তো নয়। অচেনা এই দলের কান্ডারি কোচ শফিকুল ইসলামকে (মানিক) ম্যাচের পর সান্ত্বনা দিচ্ছিল সমর্থকেরা। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ বিদায়ের কথাই প্রত্যেকের মুখে। মোহামেডান ঘুরে দাঁড়াবে—এই প্রত্যয়ও রইল মোহামেডান সমর্থকদের কণ্ঠে।
শফিকুল ইসলামের মনে ঝড় বইলেও কণ্ঠটা ছিল স্বাভাবিক, ‘এই ফলাফল হতেই পারে। এটাকে স্বাভাবিক হিসেবে নিচ্ছি। আমি হতাশ নই।’
তবে ঘটনা হলো, ইতিহাসের উল্টো পিঠ দেখা মোহামেডানের জন্য এটি সত্যিই হতাশার দিন!
No comments