তিন হাজার কোটি টাকার মিউচুয়াল ফান্ড গঠনের প্রস্তাব আটকে রয়েছে -এসইসির সিদ্ধান্তহীনতায় কর্মহীন নতুন সম্পদ-ব্যবস্থাপনা কোম্পানিগুলো by হাসান ইমাম
প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার ৩০টির মতো মিউচুয়াল ফান্ড গঠনের প্রস্তাব সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (এসইসি) দীর্ঘদিন ধরে আটকে রয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্পদ-ব্যবস্থাপনা কোম্পানিগুলো এসব ফান্ড গঠনের অনুমোদন চেয়ে আবেদন করলেও এসইসির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত দেওয়া হচ্ছে না।
এসইসি সূত্র বলছে, গত ৫ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত একটি বৈঠকের সিদ্ধান্তের কারণে আপাতত নতুন কোনো মিউচুয়াল ফান্ড গঠনের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। এসইসির চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ‘একসঙ্গে অনেকগুলো মিউচুয়াল ফান্ড বাজারে ছাড়ার কারণে পুঁজিবাজারে যাতে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া না হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য মিউচুয়াল ফান্ড ধাপে ধাপে বাজারে ছাড়ার অনুমোদন দিতে হবে।’ মূলত এর পর থেকেই এসইসি নতুন মিউচুয়াল ফান্ড গঠনের অনুমোদন দেওয়া বন্ধ রেখেছে।
বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুঁজিবাজারকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করতে যখন বেশি বেশি মিউচুয়াল ফান্ড দরকার, তখন এ ধরনের সিদ্ধান্ত হঠকারি হতে পারে। সম্প্রতি ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের যৌথ সংবাদ সম্মেলনেও এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, বাজারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের প্রভাব বেশি হলে অস্থিতিশীলতার মাত্রা বাড়ে। কারণ বেশির ভাগ সময় তারা গুজবতাড়িত হয়ে বিনিয়োগ-সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। এর বিপরীতে পেশাদার সম্পদ-ব্যবস্থাপনা কোম্পানিগুলো সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে দূরদর্শিতার সঙ্গে। কিন্তু নতুন এ সিদ্ধান্ত সম্পদ-ব্যবস্থাপনা কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের বিকাশ রুদ্ধ করবে।
এসইসি এ পর্যন্ত মোট ১২টি সম্পদ-ব্যবস্থাপনা কোম্পানিকে অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে গত দু-তিন মাসের ব্যবধানে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে পাঁচটি কোম্পানির। এসব সম্পদ-ব্যবস্থাপনা কোম্পানির একমাত্র কাজ মিউচুয়াল ফান্ড ব্যবস্থাপনা করা। পেশাদারিত্বের সঙ্গে এ কাজ করার জন্য কোম্পানিগুলো উচ্চবেতনে বিদেশ থেকে ডিগ্রি নেওয়া বিশ্লেষকদের নিয়োগ দিয়েছে। কিন্তু ফান্ডের অনুমোদন না পাওয়ায় কোনো আয় করতে পারছে না তারা। এ অবস্থায় সম্পদ-ব্যবস্থাপনা কোম্পানিগুলোর টিকে থাকাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ কারণে নতুন মিউচুয়াল ফান্ড গঠনের অনুমোদন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কোনো কোনো সম্পদ-ব্যবস্থাপনা কোম্পানি জনবল নিয়োগ করা থেকে বিরত রয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঈন আল কাশেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানের মেয়াদি ও বে-মেয়াদি মিলে মোট পাঁচটি মিউচুয়াল ফান্ড গঠনের আবেদন এসইসিতে জমা রয়েছে। কিন্তু একটির ব্যাপারেও কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা ব্যয় হলেও আমাদের কোম্পানির কোনো আয় নেই। এ পরিস্থিতিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিয়ে টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে।’
মঈন আল কাশেমের মতে, বাজারকে স্থিতিশীল রাখতেই বেশি বেশি মিউচুয়াল ফান্ড প্রয়োজন। মিউচুয়াল ফান্ড একই সঙ্গে বাজারে চাহিদা ও জোগানের সৃষ্টি করে। অতিমূল্যায়িত বাজারে মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট যেমন জোগান হিসেবে কাজ করে, তেমনি আবার বাজারমূল্য সংশোধনের ধারায় ফিরলে মিউচুয়াল ফান্ড চাহিদা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। তাই বলা যায়, এ মুহূর্তে মিউচুয়াল ফান্ডের অনুমোদন দেওয়া হলে বাজার আরও অতিমূল্যায়িত হয়ে যাবে এ ধারণা সঠিক নয়। কারণ সাধারণত কোনো পেশাদার সম্পদ-ব্যবস্থাপনা কোম্পানি অতিমূল্যায়িত বাজারে বিনিয়োগ করে না।
বর্তমানে দেশে মোট ১৯টি মিউচুয়াল ফান্ড তালিকাভুক্ত রয়েছে। মোট বাজার মূলধনে এসব মিউচুয়াল ফান্ডের অবদান এক শতাংশেরও কম। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ ভারতে মোট বাজার মূলধনের ১৫ শতাংশ ও পাকিস্তানে প্রায় ৯ শতাংশই মিউচুয়াল ফান্ড। বে-মেয়াদি ও মেয়াদি মিলে ভারতে তিন হাজার ৬০০টির বেশি মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে এবং প্রতি মাসে গড়ে আট থেকে ১০টি ফান্ড নতুন যুক্ত হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে করা হচ্ছে ঠিক উল্টো।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে এসইসির চেয়ারম্যান জিয়াউল হক খোন্দকার বলেন, ‘যেসব আবেদন জমা রয়েছে সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। দ্রুতই এগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।’
এসইসি সূত্র বলছে, গত ৫ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত একটি বৈঠকের সিদ্ধান্তের কারণে আপাতত নতুন কোনো মিউচুয়াল ফান্ড গঠনের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। এসইসির চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ‘একসঙ্গে অনেকগুলো মিউচুয়াল ফান্ড বাজারে ছাড়ার কারণে পুঁজিবাজারে যাতে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া না হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য মিউচুয়াল ফান্ড ধাপে ধাপে বাজারে ছাড়ার অনুমোদন দিতে হবে।’ মূলত এর পর থেকেই এসইসি নতুন মিউচুয়াল ফান্ড গঠনের অনুমোদন দেওয়া বন্ধ রেখেছে।
বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুঁজিবাজারকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করতে যখন বেশি বেশি মিউচুয়াল ফান্ড দরকার, তখন এ ধরনের সিদ্ধান্ত হঠকারি হতে পারে। সম্প্রতি ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের যৌথ সংবাদ সম্মেলনেও এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, বাজারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের প্রভাব বেশি হলে অস্থিতিশীলতার মাত্রা বাড়ে। কারণ বেশির ভাগ সময় তারা গুজবতাড়িত হয়ে বিনিয়োগ-সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। এর বিপরীতে পেশাদার সম্পদ-ব্যবস্থাপনা কোম্পানিগুলো সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে দূরদর্শিতার সঙ্গে। কিন্তু নতুন এ সিদ্ধান্ত সম্পদ-ব্যবস্থাপনা কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের বিকাশ রুদ্ধ করবে।
এসইসি এ পর্যন্ত মোট ১২টি সম্পদ-ব্যবস্থাপনা কোম্পানিকে অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে গত দু-তিন মাসের ব্যবধানে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে পাঁচটি কোম্পানির। এসব সম্পদ-ব্যবস্থাপনা কোম্পানির একমাত্র কাজ মিউচুয়াল ফান্ড ব্যবস্থাপনা করা। পেশাদারিত্বের সঙ্গে এ কাজ করার জন্য কোম্পানিগুলো উচ্চবেতনে বিদেশ থেকে ডিগ্রি নেওয়া বিশ্লেষকদের নিয়োগ দিয়েছে। কিন্তু ফান্ডের অনুমোদন না পাওয়ায় কোনো আয় করতে পারছে না তারা। এ অবস্থায় সম্পদ-ব্যবস্থাপনা কোম্পানিগুলোর টিকে থাকাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ কারণে নতুন মিউচুয়াল ফান্ড গঠনের অনুমোদন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কোনো কোনো সম্পদ-ব্যবস্থাপনা কোম্পানি জনবল নিয়োগ করা থেকে বিরত রয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঈন আল কাশেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানের মেয়াদি ও বে-মেয়াদি মিলে মোট পাঁচটি মিউচুয়াল ফান্ড গঠনের আবেদন এসইসিতে জমা রয়েছে। কিন্তু একটির ব্যাপারেও কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা ব্যয় হলেও আমাদের কোম্পানির কোনো আয় নেই। এ পরিস্থিতিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিয়ে টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে।’
মঈন আল কাশেমের মতে, বাজারকে স্থিতিশীল রাখতেই বেশি বেশি মিউচুয়াল ফান্ড প্রয়োজন। মিউচুয়াল ফান্ড একই সঙ্গে বাজারে চাহিদা ও জোগানের সৃষ্টি করে। অতিমূল্যায়িত বাজারে মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট যেমন জোগান হিসেবে কাজ করে, তেমনি আবার বাজারমূল্য সংশোধনের ধারায় ফিরলে মিউচুয়াল ফান্ড চাহিদা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। তাই বলা যায়, এ মুহূর্তে মিউচুয়াল ফান্ডের অনুমোদন দেওয়া হলে বাজার আরও অতিমূল্যায়িত হয়ে যাবে এ ধারণা সঠিক নয়। কারণ সাধারণত কোনো পেশাদার সম্পদ-ব্যবস্থাপনা কোম্পানি অতিমূল্যায়িত বাজারে বিনিয়োগ করে না।
বর্তমানে দেশে মোট ১৯টি মিউচুয়াল ফান্ড তালিকাভুক্ত রয়েছে। মোট বাজার মূলধনে এসব মিউচুয়াল ফান্ডের অবদান এক শতাংশেরও কম। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ ভারতে মোট বাজার মূলধনের ১৫ শতাংশ ও পাকিস্তানে প্রায় ৯ শতাংশই মিউচুয়াল ফান্ড। বে-মেয়াদি ও মেয়াদি মিলে ভারতে তিন হাজার ৬০০টির বেশি মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে এবং প্রতি মাসে গড়ে আট থেকে ১০টি ফান্ড নতুন যুক্ত হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে করা হচ্ছে ঠিক উল্টো।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে এসইসির চেয়ারম্যান জিয়াউল হক খোন্দকার বলেন, ‘যেসব আবেদন জমা রয়েছে সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। দ্রুতই এগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।’
No comments