আগ্রহের কেন্দ্রে ‘মাদার অব পার্লামেন্টস’
বিশ্বের
সবচেয়ে পুরনো আইনসভাগুলোর একটি হচ্ছে বৃটিশ পার্লামেন্ট। ‘মাদার অব
পার্লামেন্টস’ হিসেবে পরিচিত পার্লামেন্টটি। গত দুই দিনে বিশ্বের আগ্রহের
কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে সেখানকার ঘটনাবলী। নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত বৃটিশ
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন তার নিজদলীয় ২০ সংসদ সদস্যকে দল থেকে বহিষ্কার
করেছেন, পার্লামেন্টের কার্যক্রমের নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে বিদ্রোহী সংসদ
সদস্যদের হাতে। এর মধ্যে আগাম নির্বাচনের আহ্বান জানান জনসন। বিরোধীদলের
সাড়া না পেয়ে তার আহ্বান প্রত্যাখ্যাত হয়। উচ্চকক্ষ হাউজ অব লর্ডসের
সদস্যরা বুধবার গভীর রাত পর্যন্ত তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন। পার্লামেন্টের
সব কার্যক্রম নজরে রাখছে বিশ্ববাসী।
কীভাবে বৃটিশ রাজনীতির ভিত বদল করেছে তা প্রত্যক্ষ করেছে পুরো বিশ্ব। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার বৃটিশ টিভি চ্যানেল ‘বিবিসি পার্লামেন্ট’এ অধিবেশন দেখেছেন ১৫ লাখ দর্শক। সেদিন বিদ্রোহী নেতাদের জোটের কাছে বড় ধরনের পরাজয়ের স্বীকার হয় বৃটিশ সরকার। পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট এজেন্ডার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় বিরোধী জোট। আগাম নির্বাচনের ডাক দিতে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী জনসন। চ্যানেলটির ইতিহাসে একদিনে সর্বোচ্চ দর্শকের সংখ্যা ছিল সেটি। পার্লামেন্ট অধিবেশন দেখা বৃটিশরা অতুলনীয় এক প্রদর্শনী দেখেন সেদিন। ক্ষমতায় আসার পর প্রথমবার পার্লামেন্টে পরাজয়ের স্বীকার হন জনসন। আধুনিক যুগের নজিরবিহীন মুহূর্তগুলোর একটি ছিল সেটি। তার নিজ দলের সদস্যরা তার বিরুদ্ধে ভোট দেন। বিদ্রোহী এসব নেতাদের মধ্যে ছিলেন ‘ফাদার অব দ্য হাউজ’ কেনেথ ক্লার্ক। তিনি যে সময় ধরে রাজনীতিতে আছেন, বহু এমপির বয়সও ততদিন হয়নি। এ ছাড়া আরো রয়েছেন, উইন্সটন চার্চিলের প্রপৌত্র নিকোলাস সোয়ামেস। ক্রন্দনরত অবস্থায় সোয়ামেস বলছিলেন, পরিস্থিতির এ রকম মোড় নিয়ে তিনি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। জনসনের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র ব্রেক্সিট পরিকল্পনার প্রতি সবসময় সমর্থন ছিল তার। কিন্তু বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তেমনটি করেন নি। তার বিশ্বাসঘাতকতা বাকি এমপিদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। জনসনের সমালোচনা করেন ক্লার্কও। তবে পার্লামেন্টে নাটকের অন্ত সেখানেই হয়নি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পার্লামেন্টে দেয়া তার প্রথম বক্তব্যে বিরোধীদল লেবার পার্টির অর্থনৈতিক নীতিমালাকে অশ্রাব্য শব্দে আখ্যায়িত করেন তিনি। শিখ আইনপ্রণেতা তানমানজিত সিং ধেসি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যে জাতি বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ এনে আলোচনার শীর্ষে উঠে আসেন। তাকে সমর্থন জানান অনেকে। চুক্তিহীন ব্রেক্সিট ঠেকাতে নিম্নকক্ষ হাউজ অব কমন্সে বিল পাস করে বিরোধীরা। সরকারের জন্যে আরো একটি বড় পরাজয় হয়ে দাঁড়ায় সেটি। পার্লামেন্টে নাটকীয় এসব ঘটনায় টেলিভিশনের দর্শকদের মধ্যে কেবল টান টান উত্তেজনাই সৃষ্টি করেনি, পার্লামেন্টের স্থিতিশীলতা নিয়ে তাদের মনে প্রশ্নও জাগিয়েছে। ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার জেরে বৃটেনের সংবিধান, বিল পাসের প্রক্রিয়া, বিধি ও সেসব কতটা কঠোর এসব বিষয়ের ওপর নজর পড়েছে বিশ্ববাসীর। সেখানে বহুদিন ধরে প্রচলিত রীতির লঙ্ঘনে দেশে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। জনসন পাঁচ সপ্তাহের জন্য পার্লামেন্ট স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে, চুক্তিহীন ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে বিরোধী বাধা দূর করতে এই পদক্ষেপ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বৃটেনের অলিখিত সংবিধান। কেউ কেউ বলছেন ভেঙে পড়ছে রাজনীতি, সংবিধান নয়। এসবের মধ্যে নতুন সংশয় জেগেছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বৃটেনের বের হওয়ার একটি মূল কারণ ছিল বৃটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে আনা। তবে সামপ্রতিক ঘটনাগুলোর প্রেক্ষিতে এমনটা আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকে।
বাস্তবে বৃটিশ সরকারের সঙ্গে পার্লামেন্ট, বিরোধীদল এমনকি নিজ দলের এমপিদের সঙ্গেও সংঘর্ষ সাধারণ একটি বিষয়। আগামী ৩১শে অক্টোবর পর্যন্ত সৃষ্ট উত্তেজনা বাড়তেই থাকবে। এটিই হচ্ছে বর্তমানে বৃটেনের জন্য ইইউ ছেড়ে যাওয়ার নির্ধারিত সময়সীমা। বুধবার বৃটিশ পার্লামেন্ট বড় দুই দলের এমপিদের মধ্যে যে সমঝোতা দেখা গেছে তা একটি বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত করে। সেটি হলো, পার্লামেন্টের বেশিরভাগ সদস্যই মনে পরে জনসনের সরকার এই প্রতিষ্ঠানটির প্রতি যথাযথ সম্মান দেখাচ্ছে না। বিশেষ করে লেবার পার্টি দাবি করে আসছে, এই সরকার বৃটেনের গণতান্ত্রিক চর্চাকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। তবে এর উত্তরে সরকার বলছে, বিরোধিরা বৃটিশ জনগণের স্বপ্ন ব্রেক্সিট ভণ্ডুল করার চেষ্টা করছে। এ ক্ষেত্রে উভয় দলই নিজেদের দাবির পক্ষে সাংবিধানিক চর্চা ও পার্লামেন্টের আইন ব্যবহার করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর ফলে উভয় দলের মধ্যে বড় ধরনের অবিশ্বাস ও শ্রদ্ধাহীনতা সৃষ্টি হতে পারে।
হাউজ অব কমন্সের নেতা জ্যাকব রিজ মগকে বলা যেতে পারে পার্লামেন্টে উত্তেজনার বাস্তব প্রতিমূর্তি। মঙ্গলবার তাকে নিয়ে যখন বিতর্ক তুঙ্গে তখন তাকে দেখা গেছে চেম্বারের সামনের বেঞ্চে একরকম গা হেলিয়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে আছেন। এ ছবি নিয়ে ইন্টারনেটে নানা মিমও ভাইরাল হতে শুরু করেছে। এরসঙ্গে চার্ট যুক্ত করে অনেকেই সরকারের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার শূন্যে পরিণত হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। সমালোচকদের দাবি, রিস মগ হচ্ছেন বৃটেনের ফিটফাট, বেসরকারিভাবে শিক্ষিত ধনী শ্রেণির উত্তম ব্যঙ্গচিত্র। যারা অন্ধের মতো বৃটেনকে চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যার ফলে দেশটিতে সৃষ্টি হবে অর্থনৈতিক সংকট। একইসঙ্গে দেখা যেতে পারে চিকিৎসা, খাদ্য ও জ্বালানি সংকট। ব্যঙ্গচিত্রে শুধু একটি একচোখা চশমা ও মাথায় একটি টুপির অভাব ছিল।
কীভাবে বৃটিশ রাজনীতির ভিত বদল করেছে তা প্রত্যক্ষ করেছে পুরো বিশ্ব। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার বৃটিশ টিভি চ্যানেল ‘বিবিসি পার্লামেন্ট’এ অধিবেশন দেখেছেন ১৫ লাখ দর্শক। সেদিন বিদ্রোহী নেতাদের জোটের কাছে বড় ধরনের পরাজয়ের স্বীকার হয় বৃটিশ সরকার। পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট এজেন্ডার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় বিরোধী জোট। আগাম নির্বাচনের ডাক দিতে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী জনসন। চ্যানেলটির ইতিহাসে একদিনে সর্বোচ্চ দর্শকের সংখ্যা ছিল সেটি। পার্লামেন্ট অধিবেশন দেখা বৃটিশরা অতুলনীয় এক প্রদর্শনী দেখেন সেদিন। ক্ষমতায় আসার পর প্রথমবার পার্লামেন্টে পরাজয়ের স্বীকার হন জনসন। আধুনিক যুগের নজিরবিহীন মুহূর্তগুলোর একটি ছিল সেটি। তার নিজ দলের সদস্যরা তার বিরুদ্ধে ভোট দেন। বিদ্রোহী এসব নেতাদের মধ্যে ছিলেন ‘ফাদার অব দ্য হাউজ’ কেনেথ ক্লার্ক। তিনি যে সময় ধরে রাজনীতিতে আছেন, বহু এমপির বয়সও ততদিন হয়নি। এ ছাড়া আরো রয়েছেন, উইন্সটন চার্চিলের প্রপৌত্র নিকোলাস সোয়ামেস। ক্রন্দনরত অবস্থায় সোয়ামেস বলছিলেন, পরিস্থিতির এ রকম মোড় নিয়ে তিনি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। জনসনের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র ব্রেক্সিট পরিকল্পনার প্রতি সবসময় সমর্থন ছিল তার। কিন্তু বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তেমনটি করেন নি। তার বিশ্বাসঘাতকতা বাকি এমপিদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। জনসনের সমালোচনা করেন ক্লার্কও। তবে পার্লামেন্টে নাটকের অন্ত সেখানেই হয়নি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পার্লামেন্টে দেয়া তার প্রথম বক্তব্যে বিরোধীদল লেবার পার্টির অর্থনৈতিক নীতিমালাকে অশ্রাব্য শব্দে আখ্যায়িত করেন তিনি। শিখ আইনপ্রণেতা তানমানজিত সিং ধেসি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যে জাতি বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ এনে আলোচনার শীর্ষে উঠে আসেন। তাকে সমর্থন জানান অনেকে। চুক্তিহীন ব্রেক্সিট ঠেকাতে নিম্নকক্ষ হাউজ অব কমন্সে বিল পাস করে বিরোধীরা। সরকারের জন্যে আরো একটি বড় পরাজয় হয়ে দাঁড়ায় সেটি। পার্লামেন্টে নাটকীয় এসব ঘটনায় টেলিভিশনের দর্শকদের মধ্যে কেবল টান টান উত্তেজনাই সৃষ্টি করেনি, পার্লামেন্টের স্থিতিশীলতা নিয়ে তাদের মনে প্রশ্নও জাগিয়েছে। ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার জেরে বৃটেনের সংবিধান, বিল পাসের প্রক্রিয়া, বিধি ও সেসব কতটা কঠোর এসব বিষয়ের ওপর নজর পড়েছে বিশ্ববাসীর। সেখানে বহুদিন ধরে প্রচলিত রীতির লঙ্ঘনে দেশে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। জনসন পাঁচ সপ্তাহের জন্য পার্লামেন্ট স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে, চুক্তিহীন ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে বিরোধী বাধা দূর করতে এই পদক্ষেপ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বৃটেনের অলিখিত সংবিধান। কেউ কেউ বলছেন ভেঙে পড়ছে রাজনীতি, সংবিধান নয়। এসবের মধ্যে নতুন সংশয় জেগেছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বৃটেনের বের হওয়ার একটি মূল কারণ ছিল বৃটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে আনা। তবে সামপ্রতিক ঘটনাগুলোর প্রেক্ষিতে এমনটা আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকে।
বাস্তবে বৃটিশ সরকারের সঙ্গে পার্লামেন্ট, বিরোধীদল এমনকি নিজ দলের এমপিদের সঙ্গেও সংঘর্ষ সাধারণ একটি বিষয়। আগামী ৩১শে অক্টোবর পর্যন্ত সৃষ্ট উত্তেজনা বাড়তেই থাকবে। এটিই হচ্ছে বর্তমানে বৃটেনের জন্য ইইউ ছেড়ে যাওয়ার নির্ধারিত সময়সীমা। বুধবার বৃটিশ পার্লামেন্ট বড় দুই দলের এমপিদের মধ্যে যে সমঝোতা দেখা গেছে তা একটি বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত করে। সেটি হলো, পার্লামেন্টের বেশিরভাগ সদস্যই মনে পরে জনসনের সরকার এই প্রতিষ্ঠানটির প্রতি যথাযথ সম্মান দেখাচ্ছে না। বিশেষ করে লেবার পার্টি দাবি করে আসছে, এই সরকার বৃটেনের গণতান্ত্রিক চর্চাকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। তবে এর উত্তরে সরকার বলছে, বিরোধিরা বৃটিশ জনগণের স্বপ্ন ব্রেক্সিট ভণ্ডুল করার চেষ্টা করছে। এ ক্ষেত্রে উভয় দলই নিজেদের দাবির পক্ষে সাংবিধানিক চর্চা ও পার্লামেন্টের আইন ব্যবহার করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর ফলে উভয় দলের মধ্যে বড় ধরনের অবিশ্বাস ও শ্রদ্ধাহীনতা সৃষ্টি হতে পারে।
হাউজ অব কমন্সের নেতা জ্যাকব রিজ মগকে বলা যেতে পারে পার্লামেন্টে উত্তেজনার বাস্তব প্রতিমূর্তি। মঙ্গলবার তাকে নিয়ে যখন বিতর্ক তুঙ্গে তখন তাকে দেখা গেছে চেম্বারের সামনের বেঞ্চে একরকম গা হেলিয়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে আছেন। এ ছবি নিয়ে ইন্টারনেটে নানা মিমও ভাইরাল হতে শুরু করেছে। এরসঙ্গে চার্ট যুক্ত করে অনেকেই সরকারের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার শূন্যে পরিণত হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। সমালোচকদের দাবি, রিস মগ হচ্ছেন বৃটেনের ফিটফাট, বেসরকারিভাবে শিক্ষিত ধনী শ্রেণির উত্তম ব্যঙ্গচিত্র। যারা অন্ধের মতো বৃটেনকে চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যার ফলে দেশটিতে সৃষ্টি হবে অর্থনৈতিক সংকট। একইসঙ্গে দেখা যেতে পারে চিকিৎসা, খাদ্য ও জ্বালানি সংকট। ব্যঙ্গচিত্রে শুধু একটি একচোখা চশমা ও মাথায় একটি টুপির অভাব ছিল।
No comments