সিলেটের নদে মিলল ইলিশ! by উজ্জ্বল মেহেদী
পাহাড়ি
ঢলের ঘোলা পানি। নৌকা নিয়ে মাঝ নদে জাল ফেলে টানছিলেন মৎস্যজীবী বাচ্চু
মিয়া। নদের গভীর থেকে হাতের কাছে জাল আসতেই অন্য রকম এক মাছের ঝিলিক। ঠিক
অনুমান করতে পারছিলেন না। জাল থেকে হাতে নিয়ে দেখলেন ইলিশ।
সম্প্রতি পাহাড়ি ঢলের পর সিলেটের চেঙ্গেরখালে বাচ্চু মিয়ার জালে ধরা পড়া ইলিশ-কথা ছড়িয়ে পড়েছে মৎস্যজীবী মহলে। এর আগে সিলেট অঞ্চলের বড় হাওর হাকালুকিতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরার কাহিনি চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল। এবার নদে ইলিশ ধরা পড়ায় একই চাঞ্চল্য মৎস্যজীবী মহলেও দেখা গেছে। গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চেঙ্গেরখালে ভাসান পানিতে মাছ ধরায় নিয়োজিত মৎস্যজীবীদের অন্যতম আকর্ষণ এখন ইলিশ। তরতাজা ইলিশ ধরা পড়ায় দামও ভালো। এক হালি ইলিশ নদীতীরে বসে চার থেকে পাঁচ শ টাকায় বিক্রি করছেন মৎস্যজীবীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এম নিয়ামুল নাসের বলেছেন, ‘আগে আমাদের দেশে ইলিশের ব্যাপ্তি ছিল বেশি। অনেক জায়গায় মিলত এ মাছ। এর প্রবণতা কমে গিয়েছিল। বছর দু-এক হলো সিলেট অঞ্চলে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। এটা শুভ সংবাদ।’
গত শনিবার চেঙ্গেরখাল এলাকার বাওরকান্দিতে গিয়ে মৎস্যজীবীদের সঙ্গে কথা বলে ইলিশ ধরা পড়ার বিষয়ে জানা গেছে। যাঁর জালে প্রথম ইলিশ ধরা পড়েছিল, বাচ্চু মিয়া নামের এই মৎস্যজীবীর বাড়ি বাওরকান্দি গ্রামে। বাচ্চু মিয়া জানান, বছর তিনেক হলো ইলিশ ধরা পড়ছে হাওরে ও সুরমা নদীতে। চেঙ্গেরখালে এবারই প্রথম ধরা পড়েছে। গত এক সপ্তাহে তাঁর মতো অনেক মৎস্যজীবীর জালে ধরা পড়ছে ইলিশ।
বাচ্চু মিয়া বলছিলেন, পাহাড়ি ঢল নামলে নদের পানি ঘোলা হয়। আর ঘোলা পানিতে ইলিশ জালে আটকার সম্ভাবনা থাকে বেশি। এ ইলিশের ওজন ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম। মাঝেমধ্যে ৮০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজনের ইলিশও উঠছে। এ মৌসুমে প্রথম ইলিশ ধরা বাচ্চু বলেন, 'বাজারও চেঙ্গেরখালের ইলিশ বলে আলাদা কদর মিলছে!'
চেঙ্গেরখালের নদের আগে সুরমা নদীতে জেলের জালে ইলিশ ধরা পড়ে। ২০১৬ ও ২০১৭ সালে সিলেট অঞ্চলের সবচেয়ে বড় হাওর মৌলভীবাজারের হাকালুকিতে ধরা পড়েছিল ইলিশ।
চেঙ্গরখাল নদ সিলেট অঞ্চলে সীমান্ত নদনদী ও হাওর-বিলের সঙ্গে সংযোগের একটি অন্যতম শাখা নদ। সুরমায় মিলিত হওয়া এ নদে সারা বছরই পানি থাকে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢলের পানি সীমান্ত নদী হয়ে চেঙ্গেরখাল হয়ে সুরমা নদীতে গিয়ে পড়ে। সুরমা নদীতে নাব্যতা সংকট থাকায় চেঙ্গেরখালে পাহাড়ি ঢলের তোড় বেশি বলে জানিয়েছেন নদীতীরের বাসিন্দারা। এ জন্য সিলেটের হাওর কিংবা সুরমা নদীর ইলিশ চেঙ্গেরখালে পাওয়া যাচ্ছে বলে মৎস্যজীবীসহ স্থানীয়দের ধারণা।
হাওরে ইলিশ ধরা পড়ার কারণ সম্পর্কে মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, হাকালুকির সঙ্গে কুশিয়ারা নদীর সংযোগ। এই কুশিয়ারা মেঘনার সঙ্গে মিলিত হওয়ায় সেখান থেকে ইলিশ হাওরে যেতে পারে। এই ধারায় হাকালুকিতে মাঝেমধ্যে ইলিশ ধরা পড়ত জেলের জালে। ২০১৬ সালের পর জুন-জুলাইয়ের দিকে ইলিশ বেশি ধরা পড়ছে। এর মধ্যে ২০১৭ সালে ছিল বেশি। এবার হাকালুকির ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকার কুশিয়ারা নদী-সংলগ্ন এলাকা এবং হাওরের গভীর অংশে অন্যান্য বছরের তুলনায় ইলিশ কম ধরা পড়ছে।
সিলেটের চেঙ্গেরখাল নদে ইলিশ ধরা পড়ার বিষয়টি শুনেছেন বলে জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ। আজ সোমবার তিনি প্রথম আলোকে বলেন, 'সিলেট অঞ্চলে নদনদী, হাওরে ইলিশ ধরা পড়ার বিষয়টি নিয়ে আশ্চর্য হওয়ার কোনো কারণ নেই। বরং জাটকা নিধন না করার সুফল এটি। দেশের বিভিন্ন নদ-নদীগুলো একে অপরের সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে। সে যোগসূত্রের মধ্য দিয়েই ওই নদে ইলিশ আসতে পারে।
আবুল কালাম আজাদ জানান, সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর গভীর অংশেও ইলিশ পাওয়ার তথ্য রয়েছে। এ ছাড়া জাটকা নিধন বন্ধে ব্যাপক অভিযান হচ্ছে। যাতে মানুষ অনেক সচেতন হচ্ছে। ইলিশের বংশবৃদ্ধি হওয়ায় বিভিন্ন নদ-নদী পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছে।
সম্প্রতি পাহাড়ি ঢলের পর সিলেটের চেঙ্গেরখালে বাচ্চু মিয়ার জালে ধরা পড়া ইলিশ-কথা ছড়িয়ে পড়েছে মৎস্যজীবী মহলে। এর আগে সিলেট অঞ্চলের বড় হাওর হাকালুকিতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরার কাহিনি চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল। এবার নদে ইলিশ ধরা পড়ায় একই চাঞ্চল্য মৎস্যজীবী মহলেও দেখা গেছে। গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চেঙ্গেরখালে ভাসান পানিতে মাছ ধরায় নিয়োজিত মৎস্যজীবীদের অন্যতম আকর্ষণ এখন ইলিশ। তরতাজা ইলিশ ধরা পড়ায় দামও ভালো। এক হালি ইলিশ নদীতীরে বসে চার থেকে পাঁচ শ টাকায় বিক্রি করছেন মৎস্যজীবীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এম নিয়ামুল নাসের বলেছেন, ‘আগে আমাদের দেশে ইলিশের ব্যাপ্তি ছিল বেশি। অনেক জায়গায় মিলত এ মাছ। এর প্রবণতা কমে গিয়েছিল। বছর দু-এক হলো সিলেট অঞ্চলে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। এটা শুভ সংবাদ।’
গত শনিবার চেঙ্গেরখাল এলাকার বাওরকান্দিতে গিয়ে মৎস্যজীবীদের সঙ্গে কথা বলে ইলিশ ধরা পড়ার বিষয়ে জানা গেছে। যাঁর জালে প্রথম ইলিশ ধরা পড়েছিল, বাচ্চু মিয়া নামের এই মৎস্যজীবীর বাড়ি বাওরকান্দি গ্রামে। বাচ্চু মিয়া জানান, বছর তিনেক হলো ইলিশ ধরা পড়ছে হাওরে ও সুরমা নদীতে। চেঙ্গেরখালে এবারই প্রথম ধরা পড়েছে। গত এক সপ্তাহে তাঁর মতো অনেক মৎস্যজীবীর জালে ধরা পড়ছে ইলিশ।
বাচ্চু মিয়া বলছিলেন, পাহাড়ি ঢল নামলে নদের পানি ঘোলা হয়। আর ঘোলা পানিতে ইলিশ জালে আটকার সম্ভাবনা থাকে বেশি। এ ইলিশের ওজন ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম। মাঝেমধ্যে ৮০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজনের ইলিশও উঠছে। এ মৌসুমে প্রথম ইলিশ ধরা বাচ্চু বলেন, 'বাজারও চেঙ্গেরখালের ইলিশ বলে আলাদা কদর মিলছে!'
চেঙ্গেরখালের নদের আগে সুরমা নদীতে জেলের জালে ইলিশ ধরা পড়ে। ২০১৬ ও ২০১৭ সালে সিলেট অঞ্চলের সবচেয়ে বড় হাওর মৌলভীবাজারের হাকালুকিতে ধরা পড়েছিল ইলিশ।
চেঙ্গরখাল নদ সিলেট অঞ্চলে সীমান্ত নদনদী ও হাওর-বিলের সঙ্গে সংযোগের একটি অন্যতম শাখা নদ। সুরমায় মিলিত হওয়া এ নদে সারা বছরই পানি থাকে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢলের পানি সীমান্ত নদী হয়ে চেঙ্গেরখাল হয়ে সুরমা নদীতে গিয়ে পড়ে। সুরমা নদীতে নাব্যতা সংকট থাকায় চেঙ্গেরখালে পাহাড়ি ঢলের তোড় বেশি বলে জানিয়েছেন নদীতীরের বাসিন্দারা। এ জন্য সিলেটের হাওর কিংবা সুরমা নদীর ইলিশ চেঙ্গেরখালে পাওয়া যাচ্ছে বলে মৎস্যজীবীসহ স্থানীয়দের ধারণা।
হাওরে ইলিশ ধরা পড়ার কারণ সম্পর্কে মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, হাকালুকির সঙ্গে কুশিয়ারা নদীর সংযোগ। এই কুশিয়ারা মেঘনার সঙ্গে মিলিত হওয়ায় সেখান থেকে ইলিশ হাওরে যেতে পারে। এই ধারায় হাকালুকিতে মাঝেমধ্যে ইলিশ ধরা পড়ত জেলের জালে। ২০১৬ সালের পর জুন-জুলাইয়ের দিকে ইলিশ বেশি ধরা পড়ছে। এর মধ্যে ২০১৭ সালে ছিল বেশি। এবার হাকালুকির ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকার কুশিয়ারা নদী-সংলগ্ন এলাকা এবং হাওরের গভীর অংশে অন্যান্য বছরের তুলনায় ইলিশ কম ধরা পড়ছে।
সিলেটের চেঙ্গেরখাল নদে ইলিশ ধরা পড়ার বিষয়টি শুনেছেন বলে জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ। আজ সোমবার তিনি প্রথম আলোকে বলেন, 'সিলেট অঞ্চলে নদনদী, হাওরে ইলিশ ধরা পড়ার বিষয়টি নিয়ে আশ্চর্য হওয়ার কোনো কারণ নেই। বরং জাটকা নিধন না করার সুফল এটি। দেশের বিভিন্ন নদ-নদীগুলো একে অপরের সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে। সে যোগসূত্রের মধ্য দিয়েই ওই নদে ইলিশ আসতে পারে।
আবুল কালাম আজাদ জানান, সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর গভীর অংশেও ইলিশ পাওয়ার তথ্য রয়েছে। এ ছাড়া জাটকা নিধন বন্ধে ব্যাপক অভিযান হচ্ছে। যাতে মানুষ অনেক সচেতন হচ্ছে। ইলিশের বংশবৃদ্ধি হওয়ায় বিভিন্ন নদ-নদী পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছে।
No comments