দাবার বিচিত্র ক্লাব! by মামুনুর রশীদ
ব্যস্ত
সড়ক ধরে একের পর এক ছুটে যাচ্ছে দ্রুতগামী যানবাহন। ফুটপাত ধরে হাঁটা
মানুষের সংখ্যাও কম নয়। যান্ত্রিক নগরের বিবিধ শব্দে সচকিত গোটা এলাকা। এর
মধ্যেই হাঁটার জায়গা বাঁচিয়ে ফুটপাতের ওপর নির্মিত একটা কংক্রিটের বেঞ্চে
বসে কাঠের তৈরি সাদা–কালো বোর্ডে চাল দিচ্ছেন দুজন দাবাড়ু। তাঁদের ঘিরে
আছেন কয়েকজন দর্শক। দাবাড়ুদের প্রতি চালের উত্তেজনা ছুঁয়ে যাচ্ছে
দর্শকদেরও। কেউ পরবর্তী চালের জন্য খেলোয়াড়দের পরামর্শ দিচ্ছেন, কেউ পুড়ছেন
ভুল চালের আক্ষেপে।
ঢাকার ফুটপাতগুলোতে কত ধরনের স্থাপনাই তো চোখে পড়ে। পথচারীদের হাঁটার জায়গা দখল করে নির্মিত এসব অবৈধ স্থাপনা অনেকের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই বলে ফুটপাতে দাবার ক্লাব! যে ক্লাবঘরের ছাউনি কিংবা কাঠামো কিছুই নেই। কেবল ফুটপাতঘেঁষা একটা বাড়ির দেয়ালে লাল হরফে লেখা কিছু অক্ষর ক্লাবটির অস্তিত্ব নির্দেশ করছে। আর কাঠামোহীন এই ক্লাব ঘিরেই প্রতিদিন সেখানে ভিড় করছেন এলাকার দাবাপ্রেমীরা।
আগারগাঁওয়ের নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের সামনে থেকে ৬০ ফুট সড়ক ধরে মিরপুর ২ নম্বরের দিকে খানিকটা এগিয়ে মিজান মসজিদ। মসজিদের কিছু আগে মির্জা পয়েন্ট মার্কেটের বিপরীত পাশে ফুটপাতের ওপরে ‘শেরেবাংলা নগর দাবা ক্লাব’–এর অবস্থান। স্থানীয় ব্যক্তি ও ক্লাব–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সাত–আট বছর আগে এই জায়গায় এলাকার কিছু কিশোর–তরুণ দাবার আসর বসাত। আস্তে আস্তে এই আসর ঘিরে এলাকার সব বয়সী মানুষের ভিড় বাড়ে। পরে তাঁরা সবাই মিলে কাগজে–কলমে এটাকে ক্লাবে রূপ দেন। এখন এই ক্লাবের সদস্যসংখ্যা ৭০ জনের মতো। নিয়মিত খেলায় অংশ নেওয়ার পাশাপাশি ক্লাবের সদস্যরা বছরে একটা–দুটো উন্মুক্ত টুর্নামেন্টের আয়োজনও করে থাকেন। সেই টুর্নামেন্টে এলাকার বাইরে আরও অনেকে অংশ নেন।
বাস্তবতা হচ্ছে ফুটপাতের এক পাশে ক্লাবের যে অপ্রশস্ত বেঞ্চটি বানানো হয়েছে, তাতে পাশাপাশি বড়জোর তিনজন একসঙ্গে বসতে পারেন। আর মাঝে দাবার বোর্ড নিয়ে দুজন খেলোয়াড় মুখোমুখি বসে গেলে অন্যদের দর্শক হওয়া ছাড়া গত্যন্তর থাকে না। এর এক পাশে একটা পান–সুপারির দোকান, অন্য পাশে লন্ড্রি। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় এই আসরে কথা হয় ক্লাবের সদস্য ষাটোর্ধ্ব হাশেম উদ্দীনের সঙ্গে। তিন বছর বয়সী নাতির হাত ধরে তিনি খেলা দেখছিলেন তখন। তিনি বলেন, এখানে সব বয়সের ও পেশার মানুষেরা আসেন। কেউ ব্যবসায়ী, কেউ চাকরিজীবী কেউবা শিক্ষার্থী অথবা নিখাদ খেটে খাওয়া মানুষ। দাবা সবাইকে এক সুতোয় বেঁধেছে।
বয়সে অপেক্ষাকৃত তরুণ ফারহান চৌধুরী পড়াশোনার পাশাপাশি একটা চাকরিও করেন। বিকেলে চলে আসেন দাবা খেলতে। তিনি জানালেন, এই আসরে প্রতিদিন খেলা শুরু হয় আসরের নামাজের পর থেকে। চলে রাত নয়টা–দশটা পর্যন্ত। তবে জায়গার অভাবে সবাই খেলার সুযোগ পান না।
কথা হয় ক্লাবের সভাপতি এম এ হালিম মাতুব্বরের সঙ্গে। তিনি বলেন, এই ক্লাবকে কেন্দ্র করে এলাকার সব বয়সী মানুষের মধ্যে একটা আলাদা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। আর দাবার প্রতি এখানকার তরুণদের আগ্রহও দারুণ।
তবে অপর্যাপ্ত জায়গার কারণে একসঙ্গে দুজনের বেশি খেলোয়াড় অংশ নিতে পারার বিষয়ে খেদ ঝরল ক্লাব সভাপতির কণ্ঠেও। বললেন, ‘ফুটপাতের এক পাশে হলেও মাঝেমধ্যে পুলিশ হয়রানি করে। পথচারী কিংবা এলাকার বাসিন্দাদের কিন্তু এ নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। ক্লাবের জন্য জুতসই একটা জায়গা পেলে সবার খুব সুবিধা হয়।’
ঢাকার ফুটপাতগুলোতে কত ধরনের স্থাপনাই তো চোখে পড়ে। পথচারীদের হাঁটার জায়গা দখল করে নির্মিত এসব অবৈধ স্থাপনা অনেকের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই বলে ফুটপাতে দাবার ক্লাব! যে ক্লাবঘরের ছাউনি কিংবা কাঠামো কিছুই নেই। কেবল ফুটপাতঘেঁষা একটা বাড়ির দেয়ালে লাল হরফে লেখা কিছু অক্ষর ক্লাবটির অস্তিত্ব নির্দেশ করছে। আর কাঠামোহীন এই ক্লাব ঘিরেই প্রতিদিন সেখানে ভিড় করছেন এলাকার দাবাপ্রেমীরা।
আগারগাঁওয়ের নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের সামনে থেকে ৬০ ফুট সড়ক ধরে মিরপুর ২ নম্বরের দিকে খানিকটা এগিয়ে মিজান মসজিদ। মসজিদের কিছু আগে মির্জা পয়েন্ট মার্কেটের বিপরীত পাশে ফুটপাতের ওপরে ‘শেরেবাংলা নগর দাবা ক্লাব’–এর অবস্থান। স্থানীয় ব্যক্তি ও ক্লাব–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সাত–আট বছর আগে এই জায়গায় এলাকার কিছু কিশোর–তরুণ দাবার আসর বসাত। আস্তে আস্তে এই আসর ঘিরে এলাকার সব বয়সী মানুষের ভিড় বাড়ে। পরে তাঁরা সবাই মিলে কাগজে–কলমে এটাকে ক্লাবে রূপ দেন। এখন এই ক্লাবের সদস্যসংখ্যা ৭০ জনের মতো। নিয়মিত খেলায় অংশ নেওয়ার পাশাপাশি ক্লাবের সদস্যরা বছরে একটা–দুটো উন্মুক্ত টুর্নামেন্টের আয়োজনও করে থাকেন। সেই টুর্নামেন্টে এলাকার বাইরে আরও অনেকে অংশ নেন।
বাস্তবতা হচ্ছে ফুটপাতের এক পাশে ক্লাবের যে অপ্রশস্ত বেঞ্চটি বানানো হয়েছে, তাতে পাশাপাশি বড়জোর তিনজন একসঙ্গে বসতে পারেন। আর মাঝে দাবার বোর্ড নিয়ে দুজন খেলোয়াড় মুখোমুখি বসে গেলে অন্যদের দর্শক হওয়া ছাড়া গত্যন্তর থাকে না। এর এক পাশে একটা পান–সুপারির দোকান, অন্য পাশে লন্ড্রি। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় এই আসরে কথা হয় ক্লাবের সদস্য ষাটোর্ধ্ব হাশেম উদ্দীনের সঙ্গে। তিন বছর বয়সী নাতির হাত ধরে তিনি খেলা দেখছিলেন তখন। তিনি বলেন, এখানে সব বয়সের ও পেশার মানুষেরা আসেন। কেউ ব্যবসায়ী, কেউ চাকরিজীবী কেউবা শিক্ষার্থী অথবা নিখাদ খেটে খাওয়া মানুষ। দাবা সবাইকে এক সুতোয় বেঁধেছে।
বয়সে অপেক্ষাকৃত তরুণ ফারহান চৌধুরী পড়াশোনার পাশাপাশি একটা চাকরিও করেন। বিকেলে চলে আসেন দাবা খেলতে। তিনি জানালেন, এই আসরে প্রতিদিন খেলা শুরু হয় আসরের নামাজের পর থেকে। চলে রাত নয়টা–দশটা পর্যন্ত। তবে জায়গার অভাবে সবাই খেলার সুযোগ পান না।
কথা হয় ক্লাবের সভাপতি এম এ হালিম মাতুব্বরের সঙ্গে। তিনি বলেন, এই ক্লাবকে কেন্দ্র করে এলাকার সব বয়সী মানুষের মধ্যে একটা আলাদা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। আর দাবার প্রতি এখানকার তরুণদের আগ্রহও দারুণ।
তবে অপর্যাপ্ত জায়গার কারণে একসঙ্গে দুজনের বেশি খেলোয়াড় অংশ নিতে পারার বিষয়ে খেদ ঝরল ক্লাব সভাপতির কণ্ঠেও। বললেন, ‘ফুটপাতের এক পাশে হলেও মাঝেমধ্যে পুলিশ হয়রানি করে। পথচারী কিংবা এলাকার বাসিন্দাদের কিন্তু এ নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। ক্লাবের জন্য জুতসই একটা জায়গা পেলে সবার খুব সুবিধা হয়।’
আগারগাঁওয়ে ফুটপাতে দাবার চালে মগ্ন দুই দাবারু। উপস্থিত আছেন দর্শকেরাও |
No comments