মাদক কেনাবেচা কমছেই না
দেশে
মাদকদ্রব্যের সেবন ও কেনাবেচা কমছে না। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের
নথিপত্রে দেখা গেছে, মাদকের উদ্ধার, গ্রেপ্তার ও মামলার সংখ্যা বৃদ্ধির
পরিসংখ্যান প্রমাণ করে দেশে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি
মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে আসা রোগীর সংখ্যাও বিগত ছয় বছরের মধ্যে গত বছর
সবচেয়ে বেশি ছিল। চলতি বছরও এই ধারা অব্যাহত রয়েছে। তবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জামালউদ্দীন এ কথা মানতে চাননি। তিনি বলছেন, বেশি
উদ্ধার হওয়ার কারণেই এটা মনে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৪ মে ‘চল যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে’ শিরোনামে অভিযান শুরু করে র্যাব। দেশজুড়ে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে পুলিশও। শুধু গত এক বছরে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন ৩৮৯ জন, আত্মসমর্পণ করেন শীর্ষস্থানীয় ১০২ মাদক কারবারি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কাগজপত্র অনুযায়ী, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ২০১৪ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ৫১ হাজার ৮০১টি মামলা করেছে, গ্রেপ্তার করেছে ৬২ হাজার ৮০ জনকে। ওই বছর উদ্ধার হওয়া ইয়াবার পরিমাণ ছিল ৬৫ লাখ ১২ হাজার ৮৬৯টি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণকারী সরকারি ওই প্রতিষ্ঠানগুলো ২০১৮ সালে মামলা করেছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৭৮টি। এসব ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ১ লাখ ৬১ হাজার ৩২৩ জন। ওই বছর ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়েছিল ৫ কোটি ৩০ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪৮টি।
হেরোইনের অপব্যবহার বেড়েছে, আছে অন্য মাদকও
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা ও পুনর্বাসন) জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ধারণা, মাদকাসক্তের মোট সংখ্যা বাড়লেও আনুপাতিক হারে কমছে। ২০১৪ সালের মোট জনসংখ্যার যতজন মাদকাসক্ত ছিল, সেই তুলনায় এখন মাদকাসক্তের সংখ্যা কম। তবে এ নিয়ে কোনো গবেষণা বা জরিপ হয়নি বলেও জানান তিনি।
দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে ইয়াবা উদ্ধারের সংখ্যা ৮ গুণ বেড়েছে, মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে সেবা নিতে আসা মাদকাসক্তের সংখ্যাও বেড়েছে। ২০১৪ সালে সরকারি-বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্রে সেবা নিয়েছেন ১৬ হাজার ৯২৭ জন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৩৮ হাজার ৩৫ জন।
মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর পর ৩৯১ দিনে নিহত ৩৮৯ জন।
আত্মসমর্পণ করেন শীর্ষস্থানীয় ১০২ মাদক কারবারি।
অধিদপ্তরের নথি বলছে, মাদকের অপব্যবহার বেড়েছে।
কাগজপত্র বলছে, ইয়াবার পাশাপাশি হেরোইনের অপব্যবহারও দেশে বেড়ে গেছে। ২০১৪ সালে হেরোইন উদ্ধার হয় ৭৮ কেজির কিছু বেশি, গত বছর এই পরিমাণ ছিল প্রায় ৪৫২ কেজি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বলছে, ফেনসিডিলের পরিমাণ ২০১৫–১৬ সালের দিকে কমেছিল, ২০১৭ সালে তা বাড়ে। এখন পর্যন্ত এর অপব্যবহার কমেনি। তবে গাঁজা ও শিরায় মাদক ব্যবহারের পরিমাণ কিছুটা কমেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের তত্ত্বাবধানে বেজলাইন স্টাডি অন ড্রাগ এডিকশন ইন বাংলাদেশের কাজ চূড়ান্ত হয়েছে সম্প্রতি। এতে দেখা গেছে, মাদকসেবীদের ৫০ শতাংশ ফেনসিডিলও সেবন করছেন। এই মাদকও নিষিদ্ধ হয় ১৯৮২ সালে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, একজন মাদকসেবী একাধিক মাদক গ্রহণ করছেন। সাক্ষাৎকার যাঁরা দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ইয়াবা সেবন করে ১৩১ জন, গাঁজা ১২২ জন, ফেনসিডিল ৭৩ জন ও হেরোইন ৫৪ জন। এর বাইরে মাদকাসক্তরা দেশি ও বিদেশি মদ, রেক্টিফাইড স্পিরিট ও স্নিফিং গ্লু সেবন করে থাকেন।
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের পরিচালক ইকবাল মাসুদ স্বাস্থ্য কর্মসূচির দেখভাল করেন। গতকাল তিনি বলেন, চলমান অভিযানের কোনো প্রভাব তাঁদের চোখে পড়েনি।
পুলিশের দাবি ফলপ্রসূ, বিজিবির না
পুলিশের দাবি, দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান ফলপ্রসূ হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) মো. সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে দেশের সার্বিক মাদক পরিস্থিতির ‘বেশ উন্নতি’ হয়েছে। মাদকের বিস্তার কমেছে, জনসচেতনতা বেড়েছে।
টেকনাফ বিজিবির অধিনায়ক মোহাম্মদ ফয়সাল হাসান খান গতকাল বলেন, সীমান্তে কড়াকড়ির পরও ইয়াবার চালান টেকনাফে ঢুকছে। ইয়াবার পাচার কমেনি। চলতি মাসেই বিজিবি ১৭ লাখ ইয়াবা জব্দ করেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৪ মে ‘চল যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে’ শিরোনামে অভিযান শুরু করে র্যাব। দেশজুড়ে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে পুলিশও। শুধু গত এক বছরে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন ৩৮৯ জন, আত্মসমর্পণ করেন শীর্ষস্থানীয় ১০২ মাদক কারবারি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কাগজপত্র অনুযায়ী, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ২০১৪ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ৫১ হাজার ৮০১টি মামলা করেছে, গ্রেপ্তার করেছে ৬২ হাজার ৮০ জনকে। ওই বছর উদ্ধার হওয়া ইয়াবার পরিমাণ ছিল ৬৫ লাখ ১২ হাজার ৮৬৯টি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণকারী সরকারি ওই প্রতিষ্ঠানগুলো ২০১৮ সালে মামলা করেছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৭৮টি। এসব ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ১ লাখ ৬১ হাজার ৩২৩ জন। ওই বছর ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়েছিল ৫ কোটি ৩০ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪৮টি।
হেরোইনের অপব্যবহার বেড়েছে, আছে অন্য মাদকও
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা ও পুনর্বাসন) জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ধারণা, মাদকাসক্তের মোট সংখ্যা বাড়লেও আনুপাতিক হারে কমছে। ২০১৪ সালের মোট জনসংখ্যার যতজন মাদকাসক্ত ছিল, সেই তুলনায় এখন মাদকাসক্তের সংখ্যা কম। তবে এ নিয়ে কোনো গবেষণা বা জরিপ হয়নি বলেও জানান তিনি।
দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে ইয়াবা উদ্ধারের সংখ্যা ৮ গুণ বেড়েছে, মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে সেবা নিতে আসা মাদকাসক্তের সংখ্যাও বেড়েছে। ২০১৪ সালে সরকারি-বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্রে সেবা নিয়েছেন ১৬ হাজার ৯২৭ জন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৩৮ হাজার ৩৫ জন।
মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর পর ৩৯১ দিনে নিহত ৩৮৯ জন।
আত্মসমর্পণ করেন শীর্ষস্থানীয় ১০২ মাদক কারবারি।
অধিদপ্তরের নথি বলছে, মাদকের অপব্যবহার বেড়েছে।
কাগজপত্র বলছে, ইয়াবার পাশাপাশি হেরোইনের অপব্যবহারও দেশে বেড়ে গেছে। ২০১৪ সালে হেরোইন উদ্ধার হয় ৭৮ কেজির কিছু বেশি, গত বছর এই পরিমাণ ছিল প্রায় ৪৫২ কেজি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বলছে, ফেনসিডিলের পরিমাণ ২০১৫–১৬ সালের দিকে কমেছিল, ২০১৭ সালে তা বাড়ে। এখন পর্যন্ত এর অপব্যবহার কমেনি। তবে গাঁজা ও শিরায় মাদক ব্যবহারের পরিমাণ কিছুটা কমেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের তত্ত্বাবধানে বেজলাইন স্টাডি অন ড্রাগ এডিকশন ইন বাংলাদেশের কাজ চূড়ান্ত হয়েছে সম্প্রতি। এতে দেখা গেছে, মাদকসেবীদের ৫০ শতাংশ ফেনসিডিলও সেবন করছেন। এই মাদকও নিষিদ্ধ হয় ১৯৮২ সালে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, একজন মাদকসেবী একাধিক মাদক গ্রহণ করছেন। সাক্ষাৎকার যাঁরা দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ইয়াবা সেবন করে ১৩১ জন, গাঁজা ১২২ জন, ফেনসিডিল ৭৩ জন ও হেরোইন ৫৪ জন। এর বাইরে মাদকাসক্তরা দেশি ও বিদেশি মদ, রেক্টিফাইড স্পিরিট ও স্নিফিং গ্লু সেবন করে থাকেন।
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের পরিচালক ইকবাল মাসুদ স্বাস্থ্য কর্মসূচির দেখভাল করেন। গতকাল তিনি বলেন, চলমান অভিযানের কোনো প্রভাব তাঁদের চোখে পড়েনি।
পুলিশের দাবি ফলপ্রসূ, বিজিবির না
পুলিশের দাবি, দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান ফলপ্রসূ হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) মো. সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে দেশের সার্বিক মাদক পরিস্থিতির ‘বেশ উন্নতি’ হয়েছে। মাদকের বিস্তার কমেছে, জনসচেতনতা বেড়েছে।
টেকনাফ বিজিবির অধিনায়ক মোহাম্মদ ফয়সাল হাসান খান গতকাল বলেন, সীমান্তে কড়াকড়ির পরও ইয়াবার চালান টেকনাফে ঢুকছে। ইয়াবার পাচার কমেনি। চলতি মাসেই বিজিবি ১৭ লাখ ইয়াবা জব্দ করেছে।
No comments