গ্যাস সংকটে চট্টগ্রামবাসী! by ইব্রাহিম খলিল
সিএনজি
রিফুয়েলিং স্টেশনগুলো প্রায় অচল। কাফকো-সিউএফএলসহ সবগুলো শিল্প-কারখানায়
নেমে এসেছে স্থবিরতা। জ্বলছে না চুলা। চারদিকে শুধু এক আওয়াজ-গ্যাস নেই,
গ্যাস নেই।
কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানি (কেজিডিসিএল) এলএনজি সরবরাহ ও শীতে গ্যাসের প্রবাহ কমে যাওয়ার কথা বলেছেন।
নগরবাসী বলছেন, এলএনজিআসলে গ্যাসের কোনো সংকট থাকবে না বলে আমাদের শোনানো হয়েছিল। অথচ এখন কি হচ্ছে?
নগরবাসী জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চট্টগ্রামের বেশিরভাগ আবাসিক এলাকায় দিনের বেলা গ্যাসের চুলা জ্বলেনি। দুপুরের পর গ্যাস এলেও মধ্যরাতের আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে না। সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না।
সকাল ১০টার পর থেকেই গ্যাসের প্রেসার একেবারে কমে আসছে। আবার তা স্বাভাবিক হচ্ছে মধ্যরাতে। ফলে রান্নাবান্না থেকে শুরু করে গ্যাসনির্ভর সব কাজই বন্ধ থাকে।
নগরীর ইপিজেড ও হালিশহরের মতো ঘনবসতি এলাকায় গ্যাসের অভাব চরম আকার ধারণ করেছে। বিভিন্ন পোশাক কারখানার হাজার হাজার শ্রমিক ভোরে উঠে রান্না করেন। কিন্তু ভোর থেকে চুলা না জ্বলায় তারা পড়েছেন সমস্যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর রহমতগঞ্জ, আসকার দীঘিরপাড়, বাকলিয়া, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, ফরিদের পাড়া, সমশের পাড়া, পাথরঘাটা, ঘাটফরহাদাবেগ, খুলশী, নাসিরাবাদ, মুরাদপুর, লালখান বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গ্যাস থাকছে না।
মৌসুমী আবাসিক এলাকার গৃহিণী মমতাজ বেগম বলেন, সকাল ৬টা থেকে তার বাসায় গ্যাস থাকে না। আসে দুপুর দেড়টা-দুটার দিকে। এই সময়ে চুলায় গ্যাস একেবারেই থাকে না। ভাত রান্না তো দূরের কথা পানিও গরম করা যায় না।
তিনি বলেন, গ্যাস যেহেতু থাকেই না তাই বিকল্প উপায়ে রান্নার ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। এলএনজি আসলে গ্যাসের কোনো সংকট থাকবে না বলেও আমাদের শোনানো হয়েছিল। অথচ এখন কী দেখছি।
কেবল আবাসিক এলাকায় নয়, শিল্প এলাকায়ও চাপ কম। বিশেষ করে তৈরি পোশাক রপ্তানি শিল্পে এর প্রভাব প্রত্যক্ষভাবে পড়েছে। অনেক কারখানায় বয়লার ঠিকমতো কাজ করছে না।
সিইউএফএলের উৎপাদন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় কারখানা প্রায় অচল। সার উৎপাদনের ভর মৌসুমে গ্যাসের অভাবে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে চাষাবাদের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।
আবদুল আলী নামের একজন সিএনজি চালক দামপাড়াস্থ সিটি করপোরেশনের সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনে বলেন, গাড়ির গ্যাস দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। আগে যে গ্যাস দিয়ে গাড়ি ১২০ কিলোমিটার চলতে পারতো এখন তা ৮০-৯০ কিলোমিটারে নেমে এসেছে। এতে দফায় দফায় গ্যাস স্টেশনে গিয়ে লাইন ধরতে হচ্ছে। আবার বিকাল তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন বন্ধ থাকায় গ্যাস নেয়া সম্ভব হয় না। ফলে অসহায়ভাবে বসে থাকা ছাড়া কোনো গত্যন্তর নেই।
ইউসুফ অ্যান্ড সন্স রিফুয়েলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপক আনিসুল হক জানান, গ্যাসের প্রেসার ২০০ বার-এর কমে গেলে প্রবাহ কমে যায়। এতে করে সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না। প্রেসার না থাকায় কোনো কোনো সিএনজি স্টেশনে গ্যাসই থাকছে না। কোনো কোনোটিতে থাকলেও প্রেসার কম থাকায় গাড়িতে পর্যাপ্ত গ্যাস ঢুকছে না। ফলে কমে গেছে গাড়ির মাইলেজ।
কেজিডিসিএল কর্মকর্তা মোহময় দত্ত বলেন, শীতকালে এমনিতেই গ্যাসের ব্যবহার একটু বেড়ে যায়। তার ওপর কমেছে এলএনজি সরবরাহ। চট্টগ্রামে গ্যাসের চাহিদা ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি। এখানে গ্যাস দেয়া হচ্ছে ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুটের কম।
এরমধ্যে আমদানিকৃত এলএনজি রয়েছে ২৭০ মিলিয়ন ঘনফুট। বাকিটুকু ন্যাশনাল গ্রিড থেকে দেয়া হয়। এই গ্যাসের প্রায় অর্ধেকটাই চলে যাচ্ছে দুটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, কাফকো ও সিইউএফএলে এবং কর্ণফুলী পেপার মিলে। তাই রেশনিং করেও গ্যাস সংকট কাটানো যাচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, সামনের কৃষি মৌসুমকে সামনে রেখে কাফকো এবং সিইউএফএল একই সঙ্গে উৎপাদনে গেছে। ফলে আমদানিকৃত এলএনজির একটি বড় অংশ চলে যাচ্ছে সার উৎপাদনে। কাফকো এবং সিইউএফএল বর্তমানে ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ব্যবহার করে সার উৎপাদন করছে। তাতেও চাপ কম।
এ ছাড়া রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, শিকলবাহা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কর্ণফুলী পেপার মিলে একশ’ মিলিয়ন ঘনফুটেরও বেশি গ্যাস ব্যবহার করে। হাতে থাকা বাকি ১০০ মিলিয়নেরও কম গ্যাস দিয়ে চট্টগ্রামের শিল্পখাত, বাণিজ্যিক খাত, ৬০টিরও বেশি সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন, ছয় লাখেরও বেশি আবাসিক গ্রাহকের গ্যাসের যোগান দিতে হচ্ছে। এতে করে গ্যাসের স্বাভাবিক প্রেসার অত্যন্ত কমে গেছে। প্রয়োজনীয় গ্যাসের সংস্থান করাটা কঠিন হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে কেজিডিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার খায়ের আহমদ মজুমদার বলেন, এলএনজি সরবরাহ না থাকায় এ সংকট চলছে। শুধু কাতার থেকে এলএনজি আসছে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এলএনজি নিয়ে চতুর্থ জাহাজটি আসলে এলএনজি সরবরাহ কিছুটা বাড়ানো যাবে। কাতার থেকে প্রয়োজনীয় এলএনজি না আসা পর্যন্ত এই সংকট চলবে। তবে আমাদের প্রকৌশলীরা চেষ্টা করছেন প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে। এ ছাড়া শীতের সময় গ্যাসের প্রবাহে কিছুটা সমস্যা হয়। শীত চলে গেলে সংকট এত থাকবে না।
কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানি (কেজিডিসিএল) এলএনজি সরবরাহ ও শীতে গ্যাসের প্রবাহ কমে যাওয়ার কথা বলেছেন।
নগরবাসী বলছেন, এলএনজিআসলে গ্যাসের কোনো সংকট থাকবে না বলে আমাদের শোনানো হয়েছিল। অথচ এখন কি হচ্ছে?
নগরবাসী জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চট্টগ্রামের বেশিরভাগ আবাসিক এলাকায় দিনের বেলা গ্যাসের চুলা জ্বলেনি। দুপুরের পর গ্যাস এলেও মধ্যরাতের আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে না। সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না।
সকাল ১০টার পর থেকেই গ্যাসের প্রেসার একেবারে কমে আসছে। আবার তা স্বাভাবিক হচ্ছে মধ্যরাতে। ফলে রান্নাবান্না থেকে শুরু করে গ্যাসনির্ভর সব কাজই বন্ধ থাকে।
নগরীর ইপিজেড ও হালিশহরের মতো ঘনবসতি এলাকায় গ্যাসের অভাব চরম আকার ধারণ করেছে। বিভিন্ন পোশাক কারখানার হাজার হাজার শ্রমিক ভোরে উঠে রান্না করেন। কিন্তু ভোর থেকে চুলা না জ্বলায় তারা পড়েছেন সমস্যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর রহমতগঞ্জ, আসকার দীঘিরপাড়, বাকলিয়া, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, ফরিদের পাড়া, সমশের পাড়া, পাথরঘাটা, ঘাটফরহাদাবেগ, খুলশী, নাসিরাবাদ, মুরাদপুর, লালখান বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গ্যাস থাকছে না।
মৌসুমী আবাসিক এলাকার গৃহিণী মমতাজ বেগম বলেন, সকাল ৬টা থেকে তার বাসায় গ্যাস থাকে না। আসে দুপুর দেড়টা-দুটার দিকে। এই সময়ে চুলায় গ্যাস একেবারেই থাকে না। ভাত রান্না তো দূরের কথা পানিও গরম করা যায় না।
তিনি বলেন, গ্যাস যেহেতু থাকেই না তাই বিকল্প উপায়ে রান্নার ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। এলএনজি আসলে গ্যাসের কোনো সংকট থাকবে না বলেও আমাদের শোনানো হয়েছিল। অথচ এখন কী দেখছি।
কেবল আবাসিক এলাকায় নয়, শিল্প এলাকায়ও চাপ কম। বিশেষ করে তৈরি পোশাক রপ্তানি শিল্পে এর প্রভাব প্রত্যক্ষভাবে পড়েছে। অনেক কারখানায় বয়লার ঠিকমতো কাজ করছে না।
সিইউএফএলের উৎপাদন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় কারখানা প্রায় অচল। সার উৎপাদনের ভর মৌসুমে গ্যাসের অভাবে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে চাষাবাদের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।
আবদুল আলী নামের একজন সিএনজি চালক দামপাড়াস্থ সিটি করপোরেশনের সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনে বলেন, গাড়ির গ্যাস দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। আগে যে গ্যাস দিয়ে গাড়ি ১২০ কিলোমিটার চলতে পারতো এখন তা ৮০-৯০ কিলোমিটারে নেমে এসেছে। এতে দফায় দফায় গ্যাস স্টেশনে গিয়ে লাইন ধরতে হচ্ছে। আবার বিকাল তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন বন্ধ থাকায় গ্যাস নেয়া সম্ভব হয় না। ফলে অসহায়ভাবে বসে থাকা ছাড়া কোনো গত্যন্তর নেই।
ইউসুফ অ্যান্ড সন্স রিফুয়েলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপক আনিসুল হক জানান, গ্যাসের প্রেসার ২০০ বার-এর কমে গেলে প্রবাহ কমে যায়। এতে করে সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না। প্রেসার না থাকায় কোনো কোনো সিএনজি স্টেশনে গ্যাসই থাকছে না। কোনো কোনোটিতে থাকলেও প্রেসার কম থাকায় গাড়িতে পর্যাপ্ত গ্যাস ঢুকছে না। ফলে কমে গেছে গাড়ির মাইলেজ।
কেজিডিসিএল কর্মকর্তা মোহময় দত্ত বলেন, শীতকালে এমনিতেই গ্যাসের ব্যবহার একটু বেড়ে যায়। তার ওপর কমেছে এলএনজি সরবরাহ। চট্টগ্রামে গ্যাসের চাহিদা ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি। এখানে গ্যাস দেয়া হচ্ছে ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুটের কম।
এরমধ্যে আমদানিকৃত এলএনজি রয়েছে ২৭০ মিলিয়ন ঘনফুট। বাকিটুকু ন্যাশনাল গ্রিড থেকে দেয়া হয়। এই গ্যাসের প্রায় অর্ধেকটাই চলে যাচ্ছে দুটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, কাফকো ও সিইউএফএলে এবং কর্ণফুলী পেপার মিলে। তাই রেশনিং করেও গ্যাস সংকট কাটানো যাচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, সামনের কৃষি মৌসুমকে সামনে রেখে কাফকো এবং সিইউএফএল একই সঙ্গে উৎপাদনে গেছে। ফলে আমদানিকৃত এলএনজির একটি বড় অংশ চলে যাচ্ছে সার উৎপাদনে। কাফকো এবং সিইউএফএল বর্তমানে ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ব্যবহার করে সার উৎপাদন করছে। তাতেও চাপ কম।
এ ছাড়া রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, শিকলবাহা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কর্ণফুলী পেপার মিলে একশ’ মিলিয়ন ঘনফুটেরও বেশি গ্যাস ব্যবহার করে। হাতে থাকা বাকি ১০০ মিলিয়নেরও কম গ্যাস দিয়ে চট্টগ্রামের শিল্পখাত, বাণিজ্যিক খাত, ৬০টিরও বেশি সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন, ছয় লাখেরও বেশি আবাসিক গ্রাহকের গ্যাসের যোগান দিতে হচ্ছে। এতে করে গ্যাসের স্বাভাবিক প্রেসার অত্যন্ত কমে গেছে। প্রয়োজনীয় গ্যাসের সংস্থান করাটা কঠিন হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে কেজিডিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার খায়ের আহমদ মজুমদার বলেন, এলএনজি সরবরাহ না থাকায় এ সংকট চলছে। শুধু কাতার থেকে এলএনজি আসছে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এলএনজি নিয়ে চতুর্থ জাহাজটি আসলে এলএনজি সরবরাহ কিছুটা বাড়ানো যাবে। কাতার থেকে প্রয়োজনীয় এলএনজি না আসা পর্যন্ত এই সংকট চলবে। তবে আমাদের প্রকৌশলীরা চেষ্টা করছেন প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে। এ ছাড়া শীতের সময় গ্যাসের প্রবাহে কিছুটা সমস্যা হয়। শীত চলে গেলে সংকট এত থাকবে না।
No comments