হেফাজত আমীরের ফরমান নিয়ে বিতর্ক
>>সংবিধান ও ইসলামসম্মত নয়: বিশেষজ্ঞদের মত, বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, দাবি আল্লামা শফীর>>
মেয়েদের
শিক্ষা নিয়ে হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফীর ফরমান নিয়ে
বিতর্ক শুরু হয়েছে সর্বত্র। বিভিন্ন মহল থেকে এসেছে তীব্র প্রতিক্রিয়া।
শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেছেন, এ বক্তব্য শফীর ব্যক্তি মতামত। এ বক্তব্য
রাষ্ট্রীয় নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ইসলামী চিন্তাবিদ ও শিক্ষাবিদরাও
এ বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন। তারা বলছেন, ইসলাম কারও শিক্ষায়
বাধা দেয় না। বরং নারীদের শিক্ষার পরিবেশ তৈরিতে গুরুত্ব দিয়েছে। তাই
নারীদের শিক্ষা গ্রহণে বাধা না দিয়ে তাদের শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
শুক্রবার এক মাহফিলে আল্লামা শফী বলেন, মেয়েদের স্কুল-কলেজে না পড়াতে এবং পড়ালেও সর্বোচ্চ ক্লাস ফোর বা ফাইভ পর্যন্ত পড়াতে। মাহফিলে উপস্থিত শ্রোতাদের তিনি এ বিষয়ে হাত তুলে সমর্থনও নেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য জ্ঞান অর্জন ফরজ। হাদিসে আছে, নবীজী বলেছেন জ্ঞান শিক্ষার জন্য সুদূর চীন দেশেও যেতে হবে। চীনে ইসলাম শিক্ষা দেয়া হতো না তখন, চীনে ধর্ম-সংস্কৃতি শিখানো হতো; কিন্তু নবীজী তা-ও শিখতে বলেছিলেন। অর্থাৎ ইসলাম মুসলমানদেরকে বিশ্বের তাবৎ জ্ঞানরাজ্যে বিচরণের নির্দেশ দিয়েছে। বলা বাহুল্য, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা উচ্চতর না হলে জ্ঞানরাজ্যে বিচরণ করা যায় না। সুতরাং জ্ঞানের অন্বেষণের জন্য তাগিদ দেয়া হচ্ছে শুধু পুরুষদেরকে নয় বরং নারীদেরকেও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ বলেন, আল্লামা শফীর দেয়া বক্তব্য সম্পূর্ণভাবে ইসলাম বিরুদ্ধ।
ইসলাম সকল নারী-পুরুষের ওপর জ্ঞান শিক্ষা ফরজ করেছে। সেখানে বলেনি যে, কাউকে ফোর পর্যন্ত বা কাউকে সিক্স পর্যন্ত পড়তে হবে।’ তিনি বলেন, ‘পরিবেশের জন্য যদি কোনো ছেলে-মেয়ের জীবন, চরিত্র নষ্ট হয়, সেগুলো হলো পরিবেশের কারণে। কিন্তু শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে না- এ কথাটা সম্পূর্ণ ইসলাম বিরুদ্ধ কথা। ইসলাম তো প্রত্যেক নারী-পুরুষকে জ্ঞান শিক্ষা ফরজ করেছে, যেটি নবীজী বলেছেন। কোরআনের প্রথম বাণীই ছিল ‘পড়’। অধ্যাপক আব্দুর রশীদ বলেন, আমাদেরকে পরিবেশ দিতে হবে। উনি যে কথাগুলো বললেন আমার মনে হয়েছে মাথা ব্যথা করে, তা কেটে ফেলো। হ্যাঁ আমাদের সমাজে দুই-একটা ঘটনা ঘটছে।
তার সংখ্যা হয়তোবা ক্রমান্বয়ে বাড়ছেও। আমার প্রশ্ন আল্লামা শফীরা এত বড় জ্ঞানী-গুণীরা এ সমাজে থাকতে এ সমাজে এসব হবে কেন? রাসূল তো বলেছেন আমার প্রচারিত ইসলাম দ্বারা একজন যুবতী নারী দুনিয়ার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ঘুরে বেড়াবে কিন্তু তার সম্পদ ও সম্ভ্রম কোনোটারই আশংকা থাকবে না। এবং এটাই রাসূলের জীবন থেকে শুরু করে চার শ’ বছর পর্যন্ত ইসলামী বিশ্বে নিশ্চিত ছিল। তিনি বলেন, সমাজে এখন যে সমস্যা হচ্ছে এটার জন্য তো মুসলমানরাই দায়ী। আমরা তো এদেরকে (নারী) রক্ষা করতে পারছি না। যে সমাজে আল্লামা শফীরা আছেন, সে সমাজে এমনটা কেন হবে যে একটা মেয়ের হাত ধরে টান দিবে, অসম্মান করবে। এ জন্য বলছি যে, পরিবেশের কারণে আমরা তাদের শিক্ষা বন্ধ করে দিতে পারি না। কারণ মাথা ব্যথা হলে আমরা মাথাটাকে কেটে দিতে পারি না, মাথায় ওষুধ দিতে হয়।
তিনি বলেন, আমাদের পড়াশোনা ইসলামিক শিক্ষায় কাউকে নিষেধ করেনি। সবাইকে শিখতে হবে। শিখলেই কেবল দ্বীন-ধর্ম শিখা যাবে। মানুষ সুন্দর হবে, সামাজিক হবে। আল্লাহকে, আল্লাহর রাসূলকে জানতে পারবে। কিন্তু পরিবেশ আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। যে পরিবেশের কারণে আমাদের মেয়েরা লাঞ্ছিত না হয়, নির্যাতিত না হয়, নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয় সে পরিবেশ আমাদের তৈরি করতে হবে।
আল্লামা শফীর বক্তব্যের বিষয়ে শিক্ষাবিদ ড. এম শমসের আলী বলেন, আমি আজকেও (শনিবার) ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের একটা সম্মেলনে গিয়েছিলাম। সেখানে আমি বলেছি, বিজ্ঞান দরকার, ধর্মও দরকার। ধর্ম দরকার ভালো পথে থাকার জন্য আর বিজ্ঞান দরকার মানুষের সেবা করার জন্য, যেসব সৃজনশীল জিনিস, জ্ঞানকে কাজে লাগাবার জন্য। ওষুধ বানাতে হবে, গার্মেন্টসও বানাতে হবে।
বসুন্ধরাস্থ ইসলামী রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক মুফতি শাহেদ রাহমানী বলেন, ইসলাম নারী-পুরুষ উভয়ের শিক্ষার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেছে। সেক্ষেত্রে পড়াশোনা বা উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে নারীকে বিধি-নিষেধের কোনো প্রশ্নই আসে না। তিনি বলেন, আল্লামা শফী সাহেব কি বলেছেন সরাসরি সেটা আমি শুনিনি। কারো কোনো বক্তব্য নিজের কানে না শুনে কোনো মন্তব্য করাটা খুবই কঠিন।
নারীদের শিক্ষার বিষয়ে ইসলাম কি বলে এমন প্রশ্ন করলে মুফতি শাহেদ রাহমানী বলেন, ইসলাম তো নারীদের শিক্ষার বিষয়ে কোনো বিধি-নিষেধ দেয়নি। নারী-পুরুষ সবার জন্য শিক্ষার অধিকার সমান করে দিয়েছে ইসলাম। ইসলাম নারীকে অশিক্ষিত রাখতে বলেছে, এমন কথা বললে ইসলামের প্রতি কোনো সুবিচার করা হয় বলে আমি মনে করি না। এটা তো একটা সর্বজনীন বিষয় যে, ইসলাম শিক্ষার ব্যাপারে সবাইকে উৎসাহিত করেছে। নারী শিক্ষিত হোক, পুরুষ শিক্ষিত হোক সেটাও চায়। দুটো দুই বিষয়, তবে আমি এ ব্যাপারে ইসলামের যে বক্তব্য তার সঙ্গে একমত।
শুক্রবার এক মাহফিলে আল্লামা শফী বলেন, মেয়েদের স্কুল-কলেজে না পড়াতে এবং পড়ালেও সর্বোচ্চ ক্লাস ফোর বা ফাইভ পর্যন্ত পড়াতে। মাহফিলে উপস্থিত শ্রোতাদের তিনি এ বিষয়ে হাত তুলে সমর্থনও নেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য জ্ঞান অর্জন ফরজ। হাদিসে আছে, নবীজী বলেছেন জ্ঞান শিক্ষার জন্য সুদূর চীন দেশেও যেতে হবে। চীনে ইসলাম শিক্ষা দেয়া হতো না তখন, চীনে ধর্ম-সংস্কৃতি শিখানো হতো; কিন্তু নবীজী তা-ও শিখতে বলেছিলেন। অর্থাৎ ইসলাম মুসলমানদেরকে বিশ্বের তাবৎ জ্ঞানরাজ্যে বিচরণের নির্দেশ দিয়েছে। বলা বাহুল্য, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা উচ্চতর না হলে জ্ঞানরাজ্যে বিচরণ করা যায় না। সুতরাং জ্ঞানের অন্বেষণের জন্য তাগিদ দেয়া হচ্ছে শুধু পুরুষদেরকে নয় বরং নারীদেরকেও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ বলেন, আল্লামা শফীর দেয়া বক্তব্য সম্পূর্ণভাবে ইসলাম বিরুদ্ধ।
ইসলাম সকল নারী-পুরুষের ওপর জ্ঞান শিক্ষা ফরজ করেছে। সেখানে বলেনি যে, কাউকে ফোর পর্যন্ত বা কাউকে সিক্স পর্যন্ত পড়তে হবে।’ তিনি বলেন, ‘পরিবেশের জন্য যদি কোনো ছেলে-মেয়ের জীবন, চরিত্র নষ্ট হয়, সেগুলো হলো পরিবেশের কারণে। কিন্তু শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে না- এ কথাটা সম্পূর্ণ ইসলাম বিরুদ্ধ কথা। ইসলাম তো প্রত্যেক নারী-পুরুষকে জ্ঞান শিক্ষা ফরজ করেছে, যেটি নবীজী বলেছেন। কোরআনের প্রথম বাণীই ছিল ‘পড়’। অধ্যাপক আব্দুর রশীদ বলেন, আমাদেরকে পরিবেশ দিতে হবে। উনি যে কথাগুলো বললেন আমার মনে হয়েছে মাথা ব্যথা করে, তা কেটে ফেলো। হ্যাঁ আমাদের সমাজে দুই-একটা ঘটনা ঘটছে।
তার সংখ্যা হয়তোবা ক্রমান্বয়ে বাড়ছেও। আমার প্রশ্ন আল্লামা শফীরা এত বড় জ্ঞানী-গুণীরা এ সমাজে থাকতে এ সমাজে এসব হবে কেন? রাসূল তো বলেছেন আমার প্রচারিত ইসলাম দ্বারা একজন যুবতী নারী দুনিয়ার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ঘুরে বেড়াবে কিন্তু তার সম্পদ ও সম্ভ্রম কোনোটারই আশংকা থাকবে না। এবং এটাই রাসূলের জীবন থেকে শুরু করে চার শ’ বছর পর্যন্ত ইসলামী বিশ্বে নিশ্চিত ছিল। তিনি বলেন, সমাজে এখন যে সমস্যা হচ্ছে এটার জন্য তো মুসলমানরাই দায়ী। আমরা তো এদেরকে (নারী) রক্ষা করতে পারছি না। যে সমাজে আল্লামা শফীরা আছেন, সে সমাজে এমনটা কেন হবে যে একটা মেয়ের হাত ধরে টান দিবে, অসম্মান করবে। এ জন্য বলছি যে, পরিবেশের কারণে আমরা তাদের শিক্ষা বন্ধ করে দিতে পারি না। কারণ মাথা ব্যথা হলে আমরা মাথাটাকে কেটে দিতে পারি না, মাথায় ওষুধ দিতে হয়।
তিনি বলেন, আমাদের পড়াশোনা ইসলামিক শিক্ষায় কাউকে নিষেধ করেনি। সবাইকে শিখতে হবে। শিখলেই কেবল দ্বীন-ধর্ম শিখা যাবে। মানুষ সুন্দর হবে, সামাজিক হবে। আল্লাহকে, আল্লাহর রাসূলকে জানতে পারবে। কিন্তু পরিবেশ আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। যে পরিবেশের কারণে আমাদের মেয়েরা লাঞ্ছিত না হয়, নির্যাতিত না হয়, নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয় সে পরিবেশ আমাদের তৈরি করতে হবে।
আল্লামা শফীর বক্তব্যের বিষয়ে শিক্ষাবিদ ড. এম শমসের আলী বলেন, আমি আজকেও (শনিবার) ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের একটা সম্মেলনে গিয়েছিলাম। সেখানে আমি বলেছি, বিজ্ঞান দরকার, ধর্মও দরকার। ধর্ম দরকার ভালো পথে থাকার জন্য আর বিজ্ঞান দরকার মানুষের সেবা করার জন্য, যেসব সৃজনশীল জিনিস, জ্ঞানকে কাজে লাগাবার জন্য। ওষুধ বানাতে হবে, গার্মেন্টসও বানাতে হবে।
বসুন্ধরাস্থ ইসলামী রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক মুফতি শাহেদ রাহমানী বলেন, ইসলাম নারী-পুরুষ উভয়ের শিক্ষার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেছে। সেক্ষেত্রে পড়াশোনা বা উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে নারীকে বিধি-নিষেধের কোনো প্রশ্নই আসে না। তিনি বলেন, আল্লামা শফী সাহেব কি বলেছেন সরাসরি সেটা আমি শুনিনি। কারো কোনো বক্তব্য নিজের কানে না শুনে কোনো মন্তব্য করাটা খুবই কঠিন।
নারীদের শিক্ষার বিষয়ে ইসলাম কি বলে এমন প্রশ্ন করলে মুফতি শাহেদ রাহমানী বলেন, ইসলাম তো নারীদের শিক্ষার বিষয়ে কোনো বিধি-নিষেধ দেয়নি। নারী-পুরুষ সবার জন্য শিক্ষার অধিকার সমান করে দিয়েছে ইসলাম। ইসলাম নারীকে অশিক্ষিত রাখতে বলেছে, এমন কথা বললে ইসলামের প্রতি কোনো সুবিচার করা হয় বলে আমি মনে করি না। এটা তো একটা সর্বজনীন বিষয় যে, ইসলাম শিক্ষার ব্যাপারে সবাইকে উৎসাহিত করেছে। নারী শিক্ষিত হোক, পুরুষ শিক্ষিত হোক সেটাও চায়। দুটো দুই বিষয়, তবে আমি এ ব্যাপারে ইসলামের যে বক্তব্য তার সঙ্গে একমত।
No comments