ঢাকায় জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ৬ ভাগ -ক্যাবের প্রতিবেদন
বেসরকারি
প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) রাজধানী ঢাকার খুচরা
বাজার ও বিভিন্ন সেবার দাম বিশ্লেষণ করে বলেছে, ২০১৮ সালে মানুষের
জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ৬ শতাংশ। পণ্যমূল্য ও সেবা সার্ভিসের মূল্য বেড়েছে
৫.১৯ শতাংশ। এর আগে ২০১৭ সালে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছিল ৮.৪৪ শতাংশ,
পণ্যমূল্য ও সেবা সার্ভিসের মূল্য বেড়েছিল ৭.১৭ শতাংশ। অর্থাৎ আগের বছরের
চেয়ে গত বছর জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, প্রবৃদ্ধির হার কমেছে
২.৪৪ শতাংশ। আর সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে প্রসাধনী পণ্য সাবানের। পণ্যটির
মূল্য গড়ে বেড়েছে ২০ শতাংশ।
গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাব এ তথ্য প্রকাশ করেছে। এতে শিক্ষা, চিকিৎসা ও যাতায়াত ব্যয় বাদ দিয়ে জীবনযাপনের ব্যয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করে সংগঠনটি।
এ সময় ক্যাবের উপদেষ্টা এম শামসুল আলম, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
ক্যাবের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান জানান, ঢাকা শহরের ১৫টি খুচরা বাজারের ১১৪টি খাদ্যপণ্য, ২২টি নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী এবং ১৪টি সেবা সংস্থার তথ্য নিয়ে এই পর্যালোচনা প্রতিবেদন তৈরি করেছেন তারা। ভোক্তার ঝুলিতে যেসব পণ্য ও সেবা রয়েছে সেসব পণ্য ও সেবা পরিবারের মোট ব্যয়ের সঙ্গে তুলনা করে পণ্য ও সেবার ওজনের ভিত্তিতে শহুরে জীবনযাত্রার ব্যয়ের এই হিসাব বের করেছে ক্যাব।
দেশের মোট জনসংখ্যার বড় অংশ গ্রামে থাকলেও নিজেদের সামর্থ্যের অভাবে ব্যয়ের সার্বিক চিত্র তুলে আনা সম্ভব হয়নি জানিয়ে ক্যাব চেয়ারম্যান বলেন, শহুরে এই হিসাব সার্বিক চিত্র সম্পর্কে একটি আংশিক ধারণা দেবে।
ক্যাব সভাপতি বলেন, আমাদের আয় বৈষম্য বাড়ছে। এটা শুভ লক্ষণ নয়। তবে, আমাদের আয় বাড়ছে। সেক্ষেত্রে কারো আয় বেড়েছে কোটি টাকা, কারো শত টাকা। তবে, মানুষের মধ্যে আয় বাড়ায় একটু স্বস্তির ভাব রয়েছে। যেভাবে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে সেভাবে যদি আয় বাড়ার বিষয়ে সরকার নজর দেয় তাহলে ব্যয় নিয়ে মানুষ স্বস্তিবোধ করবে।
তিনি বলেন- ক্যাবের পর্যবেক্ষণ, ২০১৮ সালে অধিকাংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ছিল। মোটা চালের দাম ১৫ শতাংশ, ডালের দাম গড়ে ১৭ শতাংশ, তেলের দাম ২ শতাংশ, মসলার দাম ২২ শতাংশ, শাক-সবজির দাম প্রায় ১১ শতাংশ এবং চিনির দাম ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ কমেছে।
২০১৮ সালে দাম বেড়েছে: ক্যাবের হিসাবে ২০১৮ সালে এর আগের বছরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে সাবানের। এই পণ্যটির দাম ২০ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া চালের গড় মূল্য ৮.৯১ শতাংশ, মাছের দাম ১৩.৫০ শতাংশ, শাক-সবজিতে ৯.৩৮ শতাংশ, পান-সুপারিতে ৭.১৮ শতাংশ, তরল দুধে ১৩.৩৩ শতাংশ দাম বেড়েছে।
২০১৮ সালে দাম কমেছে: ২০১৮ সালে এর আগের বছরের তুলনায় ডাল, লবণ, মসলা, চিনির দাম কিছুটা কমেছে। দেশি মসুর ডালে ১২.৪৩ শতাংশ, আমদানি করা মসুর ডালে ১০.৮৪ শতাংশ, আস্ত ছোলার দাম ৩.৩৭ শতাংশ, দেশি রসুন ২০.৫৩ শতাংশ, আমদানি রসুন ৩২.৩৭ শতাংশ কমেছে। ভোজ্য তেল, গুঁড়ো দুধ, গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল ও রেলের ভাড়া এই বছর ছিল অপরিবর্তিত।
এই ব্যয়বৃদ্ধি যৌক্তিক কী না- এ প্রশ্নের জবাবে গোলাম রহমান বলেন, ব্যয় বৃদ্ধির এই হার ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ভিন্ন রকম ফল বয়ে আনতে পারে। ব্যয় অনুপাতে একজন ব্যক্তির আয় বৃদ্ধি না পেলে তো সেটা স্বস্তিদায়ক হবে না। আয় বৃদ্ধির ওপর আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। যদি ব্যয় বৃদ্ধির তুলনায় মানুষের আয় বৃদ্ধি হয় তাহলে সেটাই হবে স্বস্তিদায়ক।
ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, গত বছর আমদানি শুল্ক বাবদ এক লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা দিতে হয়েছে ভোক্তাদের। এটি প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশের তুলনায় অনেক বেশি। ভোক্তাদের উপর থেকে এই শুল্কের হার কমাতে হবে।
বাংলাদেশে আমদানি পণ্যের ওপর ২০১৭ সালে গড়ে ২৫.৬৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। ২০১৬ সালে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে গড়ে শুল্ক ছিল ৪.৭৩ শতাংশ, কেবল দক্ষিণ এশিয়ায় এর হার ছিল ১২.১৯ শতাংশ।
ক্যাবের সুপারিশ: ক্যাবের প্রস্তাব অনুযায়ী বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সংস্কার এবং ‘প্রাইস স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড’ গঠন করে দেশে জ্বালানি তেলের দাম স্থিতিশীল রাখা। এলএনজি আমদানি সকল প্রকার শুল্ক-কর মুক্ত রেখে গ্যাসের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা। চিকিৎসকদের ফিসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ, ওষুধের মান ও মূল্য নিয়ন্ত্রণ, বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সুলভে মানসম্মত চিকিৎসা সেবা প্রদান নিশ্চিত করা। শিক্ষা খাতে অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করার লক্ষ্যে অবিলম্বে শিক্ষা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা। শিক্ষার মান উন্নয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও ভোক্তা-স্বার্থ সংরক্ষণে প্রণীত আইন ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯, প্রতিযোগিতা আইন ২০১২, নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩, ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৫ এর বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাব এ তথ্য প্রকাশ করেছে। এতে শিক্ষা, চিকিৎসা ও যাতায়াত ব্যয় বাদ দিয়ে জীবনযাপনের ব্যয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করে সংগঠনটি।
এ সময় ক্যাবের উপদেষ্টা এম শামসুল আলম, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
ক্যাবের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান জানান, ঢাকা শহরের ১৫টি খুচরা বাজারের ১১৪টি খাদ্যপণ্য, ২২টি নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী এবং ১৪টি সেবা সংস্থার তথ্য নিয়ে এই পর্যালোচনা প্রতিবেদন তৈরি করেছেন তারা। ভোক্তার ঝুলিতে যেসব পণ্য ও সেবা রয়েছে সেসব পণ্য ও সেবা পরিবারের মোট ব্যয়ের সঙ্গে তুলনা করে পণ্য ও সেবার ওজনের ভিত্তিতে শহুরে জীবনযাত্রার ব্যয়ের এই হিসাব বের করেছে ক্যাব।
দেশের মোট জনসংখ্যার বড় অংশ গ্রামে থাকলেও নিজেদের সামর্থ্যের অভাবে ব্যয়ের সার্বিক চিত্র তুলে আনা সম্ভব হয়নি জানিয়ে ক্যাব চেয়ারম্যান বলেন, শহুরে এই হিসাব সার্বিক চিত্র সম্পর্কে একটি আংশিক ধারণা দেবে।
ক্যাব সভাপতি বলেন, আমাদের আয় বৈষম্য বাড়ছে। এটা শুভ লক্ষণ নয়। তবে, আমাদের আয় বাড়ছে। সেক্ষেত্রে কারো আয় বেড়েছে কোটি টাকা, কারো শত টাকা। তবে, মানুষের মধ্যে আয় বাড়ায় একটু স্বস্তির ভাব রয়েছে। যেভাবে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে সেভাবে যদি আয় বাড়ার বিষয়ে সরকার নজর দেয় তাহলে ব্যয় নিয়ে মানুষ স্বস্তিবোধ করবে।
তিনি বলেন- ক্যাবের পর্যবেক্ষণ, ২০১৮ সালে অধিকাংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ছিল। মোটা চালের দাম ১৫ শতাংশ, ডালের দাম গড়ে ১৭ শতাংশ, তেলের দাম ২ শতাংশ, মসলার দাম ২২ শতাংশ, শাক-সবজির দাম প্রায় ১১ শতাংশ এবং চিনির দাম ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ কমেছে।
২০১৮ সালে দাম বেড়েছে: ক্যাবের হিসাবে ২০১৮ সালে এর আগের বছরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে সাবানের। এই পণ্যটির দাম ২০ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া চালের গড় মূল্য ৮.৯১ শতাংশ, মাছের দাম ১৩.৫০ শতাংশ, শাক-সবজিতে ৯.৩৮ শতাংশ, পান-সুপারিতে ৭.১৮ শতাংশ, তরল দুধে ১৩.৩৩ শতাংশ দাম বেড়েছে।
২০১৮ সালে দাম কমেছে: ২০১৮ সালে এর আগের বছরের তুলনায় ডাল, লবণ, মসলা, চিনির দাম কিছুটা কমেছে। দেশি মসুর ডালে ১২.৪৩ শতাংশ, আমদানি করা মসুর ডালে ১০.৮৪ শতাংশ, আস্ত ছোলার দাম ৩.৩৭ শতাংশ, দেশি রসুন ২০.৫৩ শতাংশ, আমদানি রসুন ৩২.৩৭ শতাংশ কমেছে। ভোজ্য তেল, গুঁড়ো দুধ, গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল ও রেলের ভাড়া এই বছর ছিল অপরিবর্তিত।
এই ব্যয়বৃদ্ধি যৌক্তিক কী না- এ প্রশ্নের জবাবে গোলাম রহমান বলেন, ব্যয় বৃদ্ধির এই হার ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ভিন্ন রকম ফল বয়ে আনতে পারে। ব্যয় অনুপাতে একজন ব্যক্তির আয় বৃদ্ধি না পেলে তো সেটা স্বস্তিদায়ক হবে না। আয় বৃদ্ধির ওপর আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। যদি ব্যয় বৃদ্ধির তুলনায় মানুষের আয় বৃদ্ধি হয় তাহলে সেটাই হবে স্বস্তিদায়ক।
ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, গত বছর আমদানি শুল্ক বাবদ এক লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা দিতে হয়েছে ভোক্তাদের। এটি প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশের তুলনায় অনেক বেশি। ভোক্তাদের উপর থেকে এই শুল্কের হার কমাতে হবে।
বাংলাদেশে আমদানি পণ্যের ওপর ২০১৭ সালে গড়ে ২৫.৬৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। ২০১৬ সালে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে গড়ে শুল্ক ছিল ৪.৭৩ শতাংশ, কেবল দক্ষিণ এশিয়ায় এর হার ছিল ১২.১৯ শতাংশ।
ক্যাবের সুপারিশ: ক্যাবের প্রস্তাব অনুযায়ী বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সংস্কার এবং ‘প্রাইস স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড’ গঠন করে দেশে জ্বালানি তেলের দাম স্থিতিশীল রাখা। এলএনজি আমদানি সকল প্রকার শুল্ক-কর মুক্ত রেখে গ্যাসের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা। চিকিৎসকদের ফিসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ, ওষুধের মান ও মূল্য নিয়ন্ত্রণ, বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সুলভে মানসম্মত চিকিৎসা সেবা প্রদান নিশ্চিত করা। শিক্ষা খাতে অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করার লক্ষ্যে অবিলম্বে শিক্ষা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা। শিক্ষার মান উন্নয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও ভোক্তা-স্বার্থ সংরক্ষণে প্রণীত আইন ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯, প্রতিযোগিতা আইন ২০১২, নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩, ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৫ এর বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
No comments