বাঁচার স্বপ্ন দেখছে নিতু by রাশেদ আহমদ খান
১১
বছরের শিশুকন্যা নিতু। যে সময়ে অন্যান্য শিশুদের মতো ছুটে-চলে বেড়ানোর
কথা, অথচ সে বয়সে বিরল প্রজেরিয়া রোগে আক্রান্ত নিতু। অন্য শিশুদের চেয়ে
একেবারেই আলাদা। ১১ বছর বয়সী নিতুকে দেখলে মনে হয় স্থূল এক বৃদ্ধা। সমবয়সী
শিশু অনেকে ভয় পায় তাকে দেখে। স্বজন ও পাড়াপড়শীরাও তাকে দেখলে মুখ লুকাতো।
ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলছিল এ শিশুটি। তবে সম্প্রতি সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে নিতুকে নিয়ে আলোচনার পর সমাজের বিভিন্ন মহল
এগিয়ে আসে। শুরুতে মাদকবিরোধী শক্তি নামে একটি সংগঠন নিতুকে নিয়ে কাজ শুরু
করে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী জান্নাত রাখি নিতুকে আপন করে
নেন। তার মানসিক সুস্থতা ফিরিয়ে আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালান। পরে হবিগঞ্জ
সদর আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবু জাহির, জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবির
মুরাদসহ বিভিন্ন মহলের লোকজন এগিয়ে আসেন নিতুর সহযোগিতায়। গত মঙ্গলবার
সকালে সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক ও চেম্বার নেতৃবৃন্দ নিতুর চিকিৎসার জন্য
আর্থিক সহযোগিতা দান করেন। এতে আশায় বুক বেঁধেছেন নিতুর বাবা-মা। বাঁচার
স্বপ্ন দেখছে নিতুও।
নিতুর পরিবার জানায়, পড়ালেখাসহ ছবি আঁকায় দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও সমবয়সী শিশুর সঙ্গে স্কুলে পড়ার সুযোগ পায়নি সে। বাধ্য হয়ে তার পিতামাতা তাকে একটি প্রতিবন্ধী স্কুলে ভর্তি করেছেন। যদিও সে বিচার-বুদ্ধিতে স্বাভাবিক শিশুদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। দিনমজুর বাবা কামরুল হাসান ও মা জোসনা বেগমের সঙ্গে হবিগঞ্জের শায়েস্তানগরের একটি জীর্ণ বাসায় থাকে নিতু। ১১ বছর বয়সী এই শিশু দেখতে অনেকটাই প্রবীণদের মতো। এই বয়সেই সে মাথার চুল হারিয়েছে। ধীরে ধীরে পায়ের নখ পড়ে যাচ্ছে। শরীরের রগগুলো শক্ত হয়ে চামড়ার ওপর দিয়ে বেরিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে শরীরের চামড়ায় পড়েছে বার্ধক্যের ছাপ। এরই মধ্যে শারীরিক নানা জটিলতায় ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ছোট্ট শিশু নিতু। চোখ, নাক দিয়ে পানি পড়াসহ ঘন ঘন জ্বরে ভুগছে শিশুটি। হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. কায়সার রহমান জানান, এ রোগে আক্রান্তদের গড় আয়ু মাত্র ১৩ থেকে ঊর্ধ্বে ১৫ বছর। বৃদ্ধদের মতোই নিতুকে সেবা করতে হবে। ক্রমেই শিশুটির জীবন আয়ু ফুরিয়ে যাবে। নিতুর মা জোসনা বেগম মানবজমিনকে জানান, জন্মের পর থেকে ৩ মাস পর্যন্ত দেখতে সুস্থ বাচ্চা মনে হতো। ৩ মাস পর হঠাৎ তার পায়খানা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকেই জ্বরসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। অন্য শিশুদের মতো নিতুও বড় হলেও দেখতে বৃদ্ধদের মতো হতে থাকল। তখন থেকে আত্মীয়-স্বজনসহ প্রতিবেশীরা আড় চোখে দেখতে শুরু করে। তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে। ওর সঙ্গে সহজে মিশতেও চায় না। যখন সাত বছর বয়স তখন স্থানীয় হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর পর জানতে পারি নিতু প্রজেরিয়া নামক রোগে আক্রান্ত। এই রোগের কোন চিকিৎসা নেই। যতদিন সে বাঁচবে এভাবেই তাকে বাঁচতে হবে। আবেগ জড়িত কণ্ঠে তিনি জানান, মেয়েটিকে যখন সবাই অবজ্ঞা করে দূরে সরে যায় মা হিসেবে তখন খুব কষ্ট হয়। এ কারণে ওকে নিয়ে বাইরে বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম। আর এ কারণে মেয়েটিও নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছিল। নিতুর বাবা কামরুল হাসান মানবজমিনকে জানান, নিতুকে এতদিন আমরা সাধ্যমতো চিকিৎসা করিয়েছি। একবার ঢাকাও নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু অর্থের অভাবে বেশিদিন চিকিৎসা করাতে পারিনি। সকলে সহযোগিতার হাত বাড়ালে আমার মেয়ের উন্নত চিকিৎসা করাতে পারব। আল্লাহ চাইলে আমার মেয়ে সুস্থ হয়ে উঠতে পারে। হবিগঞ্জ সদর আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবু জাহির জানান, আমি প্রাথমিকভাবে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করেছি। পরে সিভিল সার্জন প্রয়োজনে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে নিতুর উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করব। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে তার পরিবারের গৃহ নির্মাণের আর্থিক বরাদ্দ প্রদান করা হবে। জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবির মুরাদ জানান, আমরা সমাজসেবা ও প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে নিতুর চিকিৎসার জন্য অর্থ বরাদ্দ দেব।
নিতুর পরিবার জানায়, পড়ালেখাসহ ছবি আঁকায় দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও সমবয়সী শিশুর সঙ্গে স্কুলে পড়ার সুযোগ পায়নি সে। বাধ্য হয়ে তার পিতামাতা তাকে একটি প্রতিবন্ধী স্কুলে ভর্তি করেছেন। যদিও সে বিচার-বুদ্ধিতে স্বাভাবিক শিশুদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। দিনমজুর বাবা কামরুল হাসান ও মা জোসনা বেগমের সঙ্গে হবিগঞ্জের শায়েস্তানগরের একটি জীর্ণ বাসায় থাকে নিতু। ১১ বছর বয়সী এই শিশু দেখতে অনেকটাই প্রবীণদের মতো। এই বয়সেই সে মাথার চুল হারিয়েছে। ধীরে ধীরে পায়ের নখ পড়ে যাচ্ছে। শরীরের রগগুলো শক্ত হয়ে চামড়ার ওপর দিয়ে বেরিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে শরীরের চামড়ায় পড়েছে বার্ধক্যের ছাপ। এরই মধ্যে শারীরিক নানা জটিলতায় ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ছোট্ট শিশু নিতু। চোখ, নাক দিয়ে পানি পড়াসহ ঘন ঘন জ্বরে ভুগছে শিশুটি। হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. কায়সার রহমান জানান, এ রোগে আক্রান্তদের গড় আয়ু মাত্র ১৩ থেকে ঊর্ধ্বে ১৫ বছর। বৃদ্ধদের মতোই নিতুকে সেবা করতে হবে। ক্রমেই শিশুটির জীবন আয়ু ফুরিয়ে যাবে। নিতুর মা জোসনা বেগম মানবজমিনকে জানান, জন্মের পর থেকে ৩ মাস পর্যন্ত দেখতে সুস্থ বাচ্চা মনে হতো। ৩ মাস পর হঠাৎ তার পায়খানা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকেই জ্বরসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। অন্য শিশুদের মতো নিতুও বড় হলেও দেখতে বৃদ্ধদের মতো হতে থাকল। তখন থেকে আত্মীয়-স্বজনসহ প্রতিবেশীরা আড় চোখে দেখতে শুরু করে। তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে। ওর সঙ্গে সহজে মিশতেও চায় না। যখন সাত বছর বয়স তখন স্থানীয় হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর পর জানতে পারি নিতু প্রজেরিয়া নামক রোগে আক্রান্ত। এই রোগের কোন চিকিৎসা নেই। যতদিন সে বাঁচবে এভাবেই তাকে বাঁচতে হবে। আবেগ জড়িত কণ্ঠে তিনি জানান, মেয়েটিকে যখন সবাই অবজ্ঞা করে দূরে সরে যায় মা হিসেবে তখন খুব কষ্ট হয়। এ কারণে ওকে নিয়ে বাইরে বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম। আর এ কারণে মেয়েটিও নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছিল। নিতুর বাবা কামরুল হাসান মানবজমিনকে জানান, নিতুকে এতদিন আমরা সাধ্যমতো চিকিৎসা করিয়েছি। একবার ঢাকাও নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু অর্থের অভাবে বেশিদিন চিকিৎসা করাতে পারিনি। সকলে সহযোগিতার হাত বাড়ালে আমার মেয়ের উন্নত চিকিৎসা করাতে পারব। আল্লাহ চাইলে আমার মেয়ে সুস্থ হয়ে উঠতে পারে। হবিগঞ্জ সদর আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবু জাহির জানান, আমি প্রাথমিকভাবে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করেছি। পরে সিভিল সার্জন প্রয়োজনে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে নিতুর উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করব। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে তার পরিবারের গৃহ নির্মাণের আর্থিক বরাদ্দ প্রদান করা হবে। জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবির মুরাদ জানান, আমরা সমাজসেবা ও প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে নিতুর চিকিৎসার জন্য অর্থ বরাদ্দ দেব।
No comments