ওআইসি সম্মেলন শুরু আজ, ঢাকায় সাজ সাজ রব
মন্ত্রী-সচিবসহ
মুসলিম বিশ্বের সাড়ে ৫ শতাধিক অতিথি নিয়ে আজ ঢাকায় শুরু হচ্ছে ওআইসি’র
৪৫তম পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন। প্রায় ২৫ বছর পর ঢাকায় ওআইসির এমন
সম্মেলন হচ্ছে। বছরব্যাপী প্রস্তুতিতে আয়োজক বাংলাদেশ কোনো কিছুরই কমতি
রাখতে চায়নি। সামর্থ্যের সবটুকু উজাড় করে দিয়ে দুই দিনের ওই আয়োজনকে
স্মরণীয় রাখাই ঢাকার একমাত্র লক্ষ্য।
অতিথিদের উষ্ণ অভ্যর্থনায় বিমানবন্দর থেকে শুরু করে সম্মেলন কেন্দ্র, আবাসস্থল এবং যাতায়াত পথ সাজানো হয়েছে নান্দনিক সাজে। ভেন্যু এলাকা থেকে শুরু করে সংশ্লিস্ট ট্রাফিক পয়েন্ট এবং অতিথিদের আবাসস্থল সংলগ্ন মোড়গুলো লাল-সবুজ বাতি দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। সেখানে ওআইসি, বাংলাদেশ এবং সম্মেলনে অংশ নেয়া দেশগুলোর জাতীয় পতাকা পত পত করে
উড়ছে। সাজগোঁজই নয়, নিরাপত্তার বিষয়ও বিবেচনায় রয়েছে আয়োজকদের। সম্মেলনকে ঘিরে রাজধানীতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অতিথিদের চলার পথে পুলিশ স্কট তো আছেই, সাদা পোশাকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং গোয়েন্দারা মাঠে থাকছেন। প্রশাসনের তরফে প্রস্তুতির বিষয়টি গতকালই রেকি করা হয়েছে। রিহার্সেল হয়েছে পুরো অনুষ্ঠানের। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নিয়ে সেই মহড়া প্রত্যক্ষ করেছেন। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে বিভিন্ন সংযোজন-বিয়োজন এবং সংশোধনীর বিষয়ে নির্দেশনাও দিয়েছেন।
দুদিন আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এ আয়োজনে অন্তত ৪০ জন মন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সহকারী মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি যোগ দিচ্ছেন। নন-ওআইসি কান্ট্রি কানাডা, কসোভো ও নর্দান সাইপ্রাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও অংশ নিচ্ছেন। পর্যবেক্ষক হিসেবে থাকছেন রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং থাইল্যান্ডের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরাও। অরগানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন ওআইসির মেগা এ ইভেন্টের রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী। সম্মেলন প্রস্তুতির সর্বশেষ অবস্থা জানাতে বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করেন মন্ত্রী। সেখানে তিনি জানান, রোহিঙ্গা সংকট ওআইসির ঢাকা বৈঠকে বিশেষভাবে স্থান পাবে এবং এ নিয়ে একটি বিশেষ অধিবেশনও হবে। যেখানে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর মন্ত্রীপর্যায়ের প্রতিনিধিরা ছাড়াও কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড এবং কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রীর রোহিঙ্গাবিষয়ক বিশেষ দূত বব রে অংশ নেবেন। কানাডা মধ্যপ্রাচ্যের বাস্তুচ্যুতদের জন্য তাদের দুয়ার খুলে দেয়ার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের বিশেষ আমন্ত্রণে ওই আয়োজনে অংশ নিচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার জন্য জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল এবং সুইডেনের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরাও ওআইসির ঢাকা সম্মেলনে আমন্ত্রিত ছিলেন। কিন্তু তারা আসতে পারছেন না।
এদিকে ওআইসি সম্মেলনে যোগ দিতে আসা মন্ত্রী, সচিবসহ অন্য অতিথিরা গতকাল সরজমিনে কক্সবাজারে সফর করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থা দেখেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ সরকারের সংশ্লিষ্টরা অতিথিদের সঙ্গে ছিলেন। ঢাকায় অতিথিদের সম্মানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একটি নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন। কাওরান বাজারের তারাকা এক হোটেলের সেই ভোজে দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিন দেশি অতিথিদের মতবিনিময় হয়েছে।
ওআইসি জানিয়েছে, এবারের ঢাকা সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘ইসলামিক ভ্যালুস ফর সাসটেনেবল পিস, সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’। বর্তমানে মুসলিম বিশ্বের বেশকিছু দেশ শান্তি, নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় হুমকি, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, মুসলিম রাষ্ট্রে বাইরের হস্তক্ষেপ, সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, ইসলামোফবিয়া ও মানবিক বিপর্যয়সহ নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে এবং একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় সংস্থাটির সম্মিলিত উদ্যোগ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ঢাকা সম্মেলন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তাছাড়া ওআইসির সংস্কার এবং নিজস্ব কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্ট সেন্টার খোলার বিষয়েও ঢাকার সম্মেলনটি গুরুত্বপূর্ণ। আশা করা হচ্ছে এবারের সম্মেলনে এ বিষয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি হবে। সম্মেলনে রোহিঙ্গা বিষয়ে তিন পাতার একটি রেজ্যুলেশন প্রস্তাব করা হয়েছে। ঢাকা আশা করছে এটিও গৃহীত হবে। ওই রেজুলেশন হবে সামনের দিনগুলোতে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ওআইসির আরও ঘনিষ্ঠভাবে ভূমিকার পথ-নকশা।
ওআইসির নির্বাচনে লড়ছে বাংলাদেশ, জয়ের আশাবাদ: এদিকে সম্মেলন আয়োজনের পাশাপাশি এবার ওআইসির সহকারী মহাসচিব (বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি) পদে লড়ছে বাংলাদেশ। সংস্থাটির প্রধান নির্বাহীর পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ওই পদে এশিয়া গ্রুপ থেকে বাংলাদশের প্রতিদ্বন্দ্বী কাজাখস্তান। কূটনৈতিক সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য মতে, দুই পক্ষ সমানে সমান ক্যাম্পেইন করেছে টানা কয়েক মাস। বাংলাদেশের প্রার্থী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল আহসান ছাড়াও মন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক ভোটার-রাষ্ট্রগুলোতে গিয়ে এবং ঢাকায় তাদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়েছেন। এশিয়া গ্রুপের ১৮টি রাষ্ট্র ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে আজ। গোপন ব্যালটে ভোট হবে। এতে বাংলাদেশের জয়ের জন্য প্রয়োজন ১০ ভোট। জয়ের ব্যাপারে ঢাকা আশাবাদী জানিয়ে সরকারের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ আমরা ১০ ভোটের বেশি পাবো।’
তবে, কোনো কারণে দুই প্রার্থী সমান সামান ভোট পেলে অর্থাৎ ৯-৯ পেলে ফের ভোট হবে এবং তাতে সব সদস্য রাষ্ট্রেরই ভোটাধিকার থাকবে। তাতে ৫৭ রাষ্ট্রের মধ্যে যে সর্বোচ্চ ভোট পাবে সেই দেশই জয়ী হবে। উল্লেখ্য, প্রায় এক যুগের বেশি সময় পর ওআইসির নীতিনির্ধারণী কোনো পদে লড়ছে বাংলাদেশ। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের আমলে সংস্থাটির সর্বোচ্চ পদ মহাসচিব পদে বাংলাদেশ নির্বাচন করেছিল। বিতর্কিত রাজনীতিবিদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুুরীকে ওআইসি মহাসচিব পদে প্রার্থী করায় সেই সময়ে দেশের ভেতরেই সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। ফলে নির্বাচনের ফল বাংলাদেশের পক্ষে যায়নি। এবারের প্রার্থিতা সহকারী মহসচিব পদে। এটি ওআইসির অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী দ্বিতীয় সারিতে। তবে, সময়ের বিবেচনায় ওই পদটি গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া ১৯৮৩ সালের পর ওআইসি পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের সম্মেলন (সিএফএম) আয়োজনের দায়িত্বপ্রাপ্ত দেশ হিসেবেও বাংলাদেশের প্রার্থিতার বাড়তি গুরুত্ব রয়েছে। বাংলাদেশে এ বছরই জাতীয় নির্বাচন হবে। নির্বাচনী বছরে ওআইসির মতো বৈশ্বিক সংস্থায় বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ। সার্বিক বিবেচনায় বাংলাদেশ ওআইসির এ নির্বাচনে বাড়তি সুবিধা পাবে এবং জয়ী হবে বলে আশাবাদী সরকারের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা।
অতিথিদের উষ্ণ অভ্যর্থনায় বিমানবন্দর থেকে শুরু করে সম্মেলন কেন্দ্র, আবাসস্থল এবং যাতায়াত পথ সাজানো হয়েছে নান্দনিক সাজে। ভেন্যু এলাকা থেকে শুরু করে সংশ্লিস্ট ট্রাফিক পয়েন্ট এবং অতিথিদের আবাসস্থল সংলগ্ন মোড়গুলো লাল-সবুজ বাতি দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। সেখানে ওআইসি, বাংলাদেশ এবং সম্মেলনে অংশ নেয়া দেশগুলোর জাতীয় পতাকা পত পত করে
উড়ছে। সাজগোঁজই নয়, নিরাপত্তার বিষয়ও বিবেচনায় রয়েছে আয়োজকদের। সম্মেলনকে ঘিরে রাজধানীতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অতিথিদের চলার পথে পুলিশ স্কট তো আছেই, সাদা পোশাকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং গোয়েন্দারা মাঠে থাকছেন। প্রশাসনের তরফে প্রস্তুতির বিষয়টি গতকালই রেকি করা হয়েছে। রিহার্সেল হয়েছে পুরো অনুষ্ঠানের। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নিয়ে সেই মহড়া প্রত্যক্ষ করেছেন। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে বিভিন্ন সংযোজন-বিয়োজন এবং সংশোধনীর বিষয়ে নির্দেশনাও দিয়েছেন।
দুদিন আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এ আয়োজনে অন্তত ৪০ জন মন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সহকারী মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি যোগ দিচ্ছেন। নন-ওআইসি কান্ট্রি কানাডা, কসোভো ও নর্দান সাইপ্রাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও অংশ নিচ্ছেন। পর্যবেক্ষক হিসেবে থাকছেন রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং থাইল্যান্ডের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরাও। অরগানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন ওআইসির মেগা এ ইভেন্টের রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী। সম্মেলন প্রস্তুতির সর্বশেষ অবস্থা জানাতে বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করেন মন্ত্রী। সেখানে তিনি জানান, রোহিঙ্গা সংকট ওআইসির ঢাকা বৈঠকে বিশেষভাবে স্থান পাবে এবং এ নিয়ে একটি বিশেষ অধিবেশনও হবে। যেখানে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর মন্ত্রীপর্যায়ের প্রতিনিধিরা ছাড়াও কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড এবং কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রীর রোহিঙ্গাবিষয়ক বিশেষ দূত বব রে অংশ নেবেন। কানাডা মধ্যপ্রাচ্যের বাস্তুচ্যুতদের জন্য তাদের দুয়ার খুলে দেয়ার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের বিশেষ আমন্ত্রণে ওই আয়োজনে অংশ নিচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার জন্য জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল এবং সুইডেনের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরাও ওআইসির ঢাকা সম্মেলনে আমন্ত্রিত ছিলেন। কিন্তু তারা আসতে পারছেন না।
এদিকে ওআইসি সম্মেলনে যোগ দিতে আসা মন্ত্রী, সচিবসহ অন্য অতিথিরা গতকাল সরজমিনে কক্সবাজারে সফর করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থা দেখেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ সরকারের সংশ্লিষ্টরা অতিথিদের সঙ্গে ছিলেন। ঢাকায় অতিথিদের সম্মানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একটি নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন। কাওরান বাজারের তারাকা এক হোটেলের সেই ভোজে দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিন দেশি অতিথিদের মতবিনিময় হয়েছে।
ওআইসি জানিয়েছে, এবারের ঢাকা সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘ইসলামিক ভ্যালুস ফর সাসটেনেবল পিস, সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’। বর্তমানে মুসলিম বিশ্বের বেশকিছু দেশ শান্তি, নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় হুমকি, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, মুসলিম রাষ্ট্রে বাইরের হস্তক্ষেপ, সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, ইসলামোফবিয়া ও মানবিক বিপর্যয়সহ নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে এবং একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় সংস্থাটির সম্মিলিত উদ্যোগ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ঢাকা সম্মেলন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তাছাড়া ওআইসির সংস্কার এবং নিজস্ব কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্ট সেন্টার খোলার বিষয়েও ঢাকার সম্মেলনটি গুরুত্বপূর্ণ। আশা করা হচ্ছে এবারের সম্মেলনে এ বিষয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি হবে। সম্মেলনে রোহিঙ্গা বিষয়ে তিন পাতার একটি রেজ্যুলেশন প্রস্তাব করা হয়েছে। ঢাকা আশা করছে এটিও গৃহীত হবে। ওই রেজুলেশন হবে সামনের দিনগুলোতে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ওআইসির আরও ঘনিষ্ঠভাবে ভূমিকার পথ-নকশা।
ওআইসির নির্বাচনে লড়ছে বাংলাদেশ, জয়ের আশাবাদ: এদিকে সম্মেলন আয়োজনের পাশাপাশি এবার ওআইসির সহকারী মহাসচিব (বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি) পদে লড়ছে বাংলাদেশ। সংস্থাটির প্রধান নির্বাহীর পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ওই পদে এশিয়া গ্রুপ থেকে বাংলাদশের প্রতিদ্বন্দ্বী কাজাখস্তান। কূটনৈতিক সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য মতে, দুই পক্ষ সমানে সমান ক্যাম্পেইন করেছে টানা কয়েক মাস। বাংলাদেশের প্রার্থী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল আহসান ছাড়াও মন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক ভোটার-রাষ্ট্রগুলোতে গিয়ে এবং ঢাকায় তাদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়েছেন। এশিয়া গ্রুপের ১৮টি রাষ্ট্র ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে আজ। গোপন ব্যালটে ভোট হবে। এতে বাংলাদেশের জয়ের জন্য প্রয়োজন ১০ ভোট। জয়ের ব্যাপারে ঢাকা আশাবাদী জানিয়ে সরকারের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ আমরা ১০ ভোটের বেশি পাবো।’
তবে, কোনো কারণে দুই প্রার্থী সমান সামান ভোট পেলে অর্থাৎ ৯-৯ পেলে ফের ভোট হবে এবং তাতে সব সদস্য রাষ্ট্রেরই ভোটাধিকার থাকবে। তাতে ৫৭ রাষ্ট্রের মধ্যে যে সর্বোচ্চ ভোট পাবে সেই দেশই জয়ী হবে। উল্লেখ্য, প্রায় এক যুগের বেশি সময় পর ওআইসির নীতিনির্ধারণী কোনো পদে লড়ছে বাংলাদেশ। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের আমলে সংস্থাটির সর্বোচ্চ পদ মহাসচিব পদে বাংলাদেশ নির্বাচন করেছিল। বিতর্কিত রাজনীতিবিদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুুরীকে ওআইসি মহাসচিব পদে প্রার্থী করায় সেই সময়ে দেশের ভেতরেই সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। ফলে নির্বাচনের ফল বাংলাদেশের পক্ষে যায়নি। এবারের প্রার্থিতা সহকারী মহসচিব পদে। এটি ওআইসির অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী দ্বিতীয় সারিতে। তবে, সময়ের বিবেচনায় ওই পদটি গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া ১৯৮৩ সালের পর ওআইসি পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের সম্মেলন (সিএফএম) আয়োজনের দায়িত্বপ্রাপ্ত দেশ হিসেবেও বাংলাদেশের প্রার্থিতার বাড়তি গুরুত্ব রয়েছে। বাংলাদেশে এ বছরই জাতীয় নির্বাচন হবে। নির্বাচনী বছরে ওআইসির মতো বৈশ্বিক সংস্থায় বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ। সার্বিক বিবেচনায় বাংলাদেশ ওআইসির এ নির্বাচনে বাড়তি সুবিধা পাবে এবং জয়ী হবে বলে আশাবাদী সরকারের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা।
No comments