বিএনপির বিদেশনীতিতে অগ্রাধিকার পাচ্ছে চীন by সালমান তারেক শাকিল
বিএনপির
নতুন বিদেশিনীতিতে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম
অর্থনীতির দেশ চীনকে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চীনকে
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যসম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে
দেশটির সঙ্গে ইতোমধ্যে সম্পাদিত চুক্তিগুলোকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার পক্ষে
অবস্থান নিয়েছে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। একইসঙ্গে ‘অভ্যন্তরীণ রাজনীতি’
প্রশ্নে চীনের ভূমিকা চাইলেও প্রকাশ্যে বিষয়টি সম্পর্কে নীরবতার পক্ষে
অবস্থান নিয়েছে বিএনপি। দলটির কূটনৈতিক উইংয়ের নির্ভরযোগ্য একাধিকসূত্র এ
তথ্য নিশ্চিত করেছে।
দলটির কূটনৈতিক উইংয়ের দায়িত্বে থাকা নেতারা বলছেন, বাংলাদেশ-চীনের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক আরও বেশি ‘বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক’ করার তৎপরতা থাকবে বিএনপিতে।
এই বছরের মার্চে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের নতুন রাষ্ট্রদূত ঝাং জাও বলেছেন, ‘ঢাকার রাজনীতির ওপর বেইজিং নজর রাখছে। বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় চীন।’
জানা গেছে, সিল্করুট নিয়ে ‘ভারতের স্বার্থ’ বিবেচনা করে ‘ভারসাম্যমূলক পররাষ্ট্রনীতি ও কৌশল’ প্রণয়ন করবে বিএনপি। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চীন সফর করার কথা রয়েছে।
বিএনপির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আন্তর্জাতিক সম্পাদক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক প্রসার বাড়ানো হবে। আওয়ামী লীগের সময়ে সম্পাদিত চুক্তিগুলোকে বাস্তবে রূপ দেওয়া হবে।’
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, বিএনপির প্রতি চীনকে আগ্রহী করে তুলতে বাংলাদেশে গভীর সমুদ্রবন্দর, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা নেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রয়োজনে নির্বাচনের আগেই গভীর সমুদ্রবন্দরের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব জানিয়ে রাখবে দলটি।
বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক ব্যারিস্টার নওশাদ জমির বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘‘চীনের সঙ্গে আরও গভীরভাবে সম্পর্ক তৈরি করার জন্য বিএনপির চীন-দৃষ্টিভঙ্গিই সবচেয়ে বড়। বিএনপি ‘ওয়ান চায়না প্রিন্সিপালে’(এক চীন নীতি) এবং আওয়ামী লীগ ‘ওয়ান চায়না পলিসি’তে বিশ্বাস করে। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ‘ওয়ান চায়না পলিসি’তে বিশ্বাস করতেন।’’ আর ‘এই নীতির কারণেই চীনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিএনপি’—এমন বিশ্বাস এই নেতার।
বিএনপি নেতারা বলছেন, ১৯৭৬ সাল থেকে বিএনপির সঙ্গে চীনের আন্তরিক সম্পর্কের সূচনা। ওই সময়ে বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের উদ্যোগের কারণেই চীন এগিয়ে আসে। এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মহাচীনের সঙ্গে বিএনপিই নয় কেবল, বাংলাদেশেরও সম্পর্ক অনেক গভীর-আন্তরিক। তারা আমাদের দেশে অর্থনৈতিক উন্নতির লক্ষ্যে সহযোগিতা করে যাচ্ছে, যার সূচনা হয়েছিল রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আন্তরিক সদিচ্ছায়।’
এই প্রসঙ্গে স্মরণ করা যেতে পারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক তারেক শামসুর রহমানের ‘চার দশকের পররাষ্ট্রনীতি’ শীর্ষক প্রবন্ধের কথা। ওই রচনায় তিনি লিখেছেন, ‘চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রশ্নে তার (জিয়াউর রহমান) অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি। তিনি চীনের সঙ্গে শুধু সম্পর্ক বৃদ্ধিই করেননি, বরং বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতিতে চীনের উপস্থিতিকে প্রয়োজনীয় করে তুলেছিলেন।’
তারেক শামসুর রহমান আরও উল্লেখ করেন, ‘বেগম জিয়ার (১৯৯১-৯৬, ২০০১-২০০৬) বৈদেশিক নীতির উল্লেখযোগ্য দিক ছিল—চীনের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেওয়া।’
এদিকে, এসময়ের সবচেয়ে বড় সমস্যা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে বিএনপির কূটনৈতিক উইংসূত্র জানায়, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানেও চীনকে প্রাধান্য দেওয়ার একটা সিদ্ধান্ত ছিল। দলটির নেতারা মনে করেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীনের অংশগ্রহণই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ কর মিয়ানমারে চীনের বিনিয়োগ থাকায় রোহিঙ্গা-সংকট সমাধানে দেশটিকে সামনে আনতে চেয়েছিল বিএনপি। যদিও ‘ভারত নাখোশ’ হবে—এমন আশঙ্কায় দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব এ অবস্থান থেকে সরে আসে।
সূত্রগুলো জানায়, রোহিঙ্গা-সংকট মোকাবিলায় চীনকে সামনে আনার প্রস্তাব না করলেও অর্থনৈতিক-রাজনৈতিকভাবে দেশটির হস্থক্ষেপকে অনেকটাই সাধুবাদ জানাতে প্রস্তুত বিএনপি। যদিও আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তারেক শামসুর রাহমান লিখেছেন, ‘চীনের পররাষ্ট্রনীতি এখন ব্যবসানির্ভর। ‘আইডোলজি’ এখানে প্রাধান্য পায় না। ফলে বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ বাড়ানো কিংবা গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে আগ্রহ সবকিছুই আবর্তিত হচ্ছে চীনের ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণের আলোকে।’
বিএনপির আন্তর্জাতিক উইংয়ে একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপের দেশগুলোকে আহ্বান জানানো গেলেও চীনের সহযোগিতা চাওয়ার তেমন সুযোগ নেই। ফলে, নির্বাচনে চীনের কাছ থেকে বিএনপির প্রাপ্তির কিছু নেই।’
বিএনপির কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, জোট সরকারের সময় ঢাকায় তাইওয়ানের কনসুল ওপেন করাকে কেন্দ্র করে চীনের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে বিএনপি। যদিও এরইমধ্যে দেশটির সঙ্গে এই সংকট কাটিয়ে উঠেছে বলে দাবি করেন দলটির নেতারা। বিশেষ করে ২০১২ সালে বিরোধী দলীয় নেত্রী হিসেবে খালেদা জিয়া চীন সফর করেন। ওই সময় দুই দলের হৃদ্য সম্পর্ক আরও বেড়ে যায়। বিএনপির কূটনৈতিক কোরের অন্যতম সদস্য শামা ওবায়েদ বলেন, ‘ডিপ্লোমেসির মাধ্যমে এটা কেটে গেছে। এরপর তো খালেদা জিয়া চীন সফরে গেছেন। তাকে ভিআইপি রিসিপশন দিয়েছে চীন।’
বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের একজন সদস্য জানান, ২০১২ সালের অক্টোবরে খালেদা জিয়া চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে দেশটিতে সফরে যান। সফরকালে তিনি চীনের রাষ্ট্রীয় ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন। খালেদা জিয়ার চীন সফরের একদিন পর বিএনপি ঘোষণা দেয়, দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে চীন সরকারের বিনিয়োগের বিষয়ে খালেদা জিয়াকে নিশ্চিত করেছেন চীনা নেতারা।
এ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা সাবেক সেনাপ্রধান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দলীয় প্রধান কয়েকবার চীন সফর করেছেন। ফলে এখন চীনের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক খুব স্বাভাবিক রয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির কূটনৈতিক কোরের সদস্য ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চীনের বিদেশনীতি হচ্ছে নন ইন্টারফেয়ারিং। তারা অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ইন্টারফেয়ার করে না। তারা তাদের বাণিজ্য নিয়ে বেশি ইন্টারেস্টেড। বাংলাদেশের সব সরকারের সময়েই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ধারাবাহিক ছিল চীনের।’ বিএনপির সঙ্গেও সেই সম্পর্ক থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
দলটির কূটনৈতিক উইংয়ের দায়িত্বে থাকা নেতারা বলছেন, বাংলাদেশ-চীনের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক আরও বেশি ‘বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক’ করার তৎপরতা থাকবে বিএনপিতে।
এই বছরের মার্চে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের নতুন রাষ্ট্রদূত ঝাং জাও বলেছেন, ‘ঢাকার রাজনীতির ওপর বেইজিং নজর রাখছে। বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় চীন।’
জানা গেছে, সিল্করুট নিয়ে ‘ভারতের স্বার্থ’ বিবেচনা করে ‘ভারসাম্যমূলক পররাষ্ট্রনীতি ও কৌশল’ প্রণয়ন করবে বিএনপি। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চীন সফর করার কথা রয়েছে।
বিএনপির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আন্তর্জাতিক সম্পাদক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক প্রসার বাড়ানো হবে। আওয়ামী লীগের সময়ে সম্পাদিত চুক্তিগুলোকে বাস্তবে রূপ দেওয়া হবে।’
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, বিএনপির প্রতি চীনকে আগ্রহী করে তুলতে বাংলাদেশে গভীর সমুদ্রবন্দর, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা নেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রয়োজনে নির্বাচনের আগেই গভীর সমুদ্রবন্দরের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব জানিয়ে রাখবে দলটি।
বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক ব্যারিস্টার নওশাদ জমির বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘‘চীনের সঙ্গে আরও গভীরভাবে সম্পর্ক তৈরি করার জন্য বিএনপির চীন-দৃষ্টিভঙ্গিই সবচেয়ে বড়। বিএনপি ‘ওয়ান চায়না প্রিন্সিপালে’(এক চীন নীতি) এবং আওয়ামী লীগ ‘ওয়ান চায়না পলিসি’তে বিশ্বাস করে। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ‘ওয়ান চায়না পলিসি’তে বিশ্বাস করতেন।’’ আর ‘এই নীতির কারণেই চীনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিএনপি’—এমন বিশ্বাস এই নেতার।
বিএনপি নেতারা বলছেন, ১৯৭৬ সাল থেকে বিএনপির সঙ্গে চীনের আন্তরিক সম্পর্কের সূচনা। ওই সময়ে বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের উদ্যোগের কারণেই চীন এগিয়ে আসে। এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মহাচীনের সঙ্গে বিএনপিই নয় কেবল, বাংলাদেশেরও সম্পর্ক অনেক গভীর-আন্তরিক। তারা আমাদের দেশে অর্থনৈতিক উন্নতির লক্ষ্যে সহযোগিতা করে যাচ্ছে, যার সূচনা হয়েছিল রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আন্তরিক সদিচ্ছায়।’
এই প্রসঙ্গে স্মরণ করা যেতে পারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক তারেক শামসুর রহমানের ‘চার দশকের পররাষ্ট্রনীতি’ শীর্ষক প্রবন্ধের কথা। ওই রচনায় তিনি লিখেছেন, ‘চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রশ্নে তার (জিয়াউর রহমান) অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি। তিনি চীনের সঙ্গে শুধু সম্পর্ক বৃদ্ধিই করেননি, বরং বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতিতে চীনের উপস্থিতিকে প্রয়োজনীয় করে তুলেছিলেন।’
তারেক শামসুর রহমান আরও উল্লেখ করেন, ‘বেগম জিয়ার (১৯৯১-৯৬, ২০০১-২০০৬) বৈদেশিক নীতির উল্লেখযোগ্য দিক ছিল—চীনের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেওয়া।’
এদিকে, এসময়ের সবচেয়ে বড় সমস্যা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে বিএনপির কূটনৈতিক উইংসূত্র জানায়, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানেও চীনকে প্রাধান্য দেওয়ার একটা সিদ্ধান্ত ছিল। দলটির নেতারা মনে করেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীনের অংশগ্রহণই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ কর মিয়ানমারে চীনের বিনিয়োগ থাকায় রোহিঙ্গা-সংকট সমাধানে দেশটিকে সামনে আনতে চেয়েছিল বিএনপি। যদিও ‘ভারত নাখোশ’ হবে—এমন আশঙ্কায় দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব এ অবস্থান থেকে সরে আসে।
সূত্রগুলো জানায়, রোহিঙ্গা-সংকট মোকাবিলায় চীনকে সামনে আনার প্রস্তাব না করলেও অর্থনৈতিক-রাজনৈতিকভাবে দেশটির হস্থক্ষেপকে অনেকটাই সাধুবাদ জানাতে প্রস্তুত বিএনপি। যদিও আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তারেক শামসুর রাহমান লিখেছেন, ‘চীনের পররাষ্ট্রনীতি এখন ব্যবসানির্ভর। ‘আইডোলজি’ এখানে প্রাধান্য পায় না। ফলে বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ বাড়ানো কিংবা গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে আগ্রহ সবকিছুই আবর্তিত হচ্ছে চীনের ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণের আলোকে।’
বিএনপির আন্তর্জাতিক উইংয়ে একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপের দেশগুলোকে আহ্বান জানানো গেলেও চীনের সহযোগিতা চাওয়ার তেমন সুযোগ নেই। ফলে, নির্বাচনে চীনের কাছ থেকে বিএনপির প্রাপ্তির কিছু নেই।’
বিএনপির কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, জোট সরকারের সময় ঢাকায় তাইওয়ানের কনসুল ওপেন করাকে কেন্দ্র করে চীনের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে বিএনপি। যদিও এরইমধ্যে দেশটির সঙ্গে এই সংকট কাটিয়ে উঠেছে বলে দাবি করেন দলটির নেতারা। বিশেষ করে ২০১২ সালে বিরোধী দলীয় নেত্রী হিসেবে খালেদা জিয়া চীন সফর করেন। ওই সময় দুই দলের হৃদ্য সম্পর্ক আরও বেড়ে যায়। বিএনপির কূটনৈতিক কোরের অন্যতম সদস্য শামা ওবায়েদ বলেন, ‘ডিপ্লোমেসির মাধ্যমে এটা কেটে গেছে। এরপর তো খালেদা জিয়া চীন সফরে গেছেন। তাকে ভিআইপি রিসিপশন দিয়েছে চীন।’
বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের একজন সদস্য জানান, ২০১২ সালের অক্টোবরে খালেদা জিয়া চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে দেশটিতে সফরে যান। সফরকালে তিনি চীনের রাষ্ট্রীয় ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন। খালেদা জিয়ার চীন সফরের একদিন পর বিএনপি ঘোষণা দেয়, দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে চীন সরকারের বিনিয়োগের বিষয়ে খালেদা জিয়াকে নিশ্চিত করেছেন চীনা নেতারা।
এ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা সাবেক সেনাপ্রধান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দলীয় প্রধান কয়েকবার চীন সফর করেছেন। ফলে এখন চীনের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক খুব স্বাভাবিক রয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির কূটনৈতিক কোরের সদস্য ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চীনের বিদেশনীতি হচ্ছে নন ইন্টারফেয়ারিং। তারা অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ইন্টারফেয়ার করে না। তারা তাদের বাণিজ্য নিয়ে বেশি ইন্টারেস্টেড। বাংলাদেশের সব সরকারের সময়েই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ধারাবাহিক ছিল চীনের।’ বিএনপির সঙ্গেও সেই সম্পর্ক থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
No comments