ইরাকে কিংমেকার মুক্তাদা আল সদর
আমেরিকা-বিরোধী
শিয়া ধর্মীয় নেতা মুক্তাদা আল সদরের জোট ইরাকের পার্লামেন্ট নির্বাচনে
সর্বোচ্চ সংখ্যক আসন পেয়েছে। ২০০৩ সাল থেকে ইরাকের নির্বাচনে প্রভাব
বিস্তার করার চেষ্টা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান। দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে
স্বতন্ত্র জাতীয়তাবাদী হিসেবে পরিচয় দেওয়া মুক্তাদা আল সদর উভয় দেশেরই
শত্রু। সিএনএন’র এক খবরে বলা হয়েছে, দুর্নীতি বিরোধীতা ছিল তার প্রধান
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি। নির্বাচনে জিততে সদর মিত্রতা করেছেন ইরাকের
কম্যুনিস্ট পার্টি ও ধর্মনিরপেক্ষ অনেক দলের সঙ্গেও। ওয়াশিংটনের প্রিয়
প্রার্থী প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদিকে ধুয়ে দিয়েছেন তিনি। নির্বাচনে
আবাদি হয়েছেন তৃতীয়। তবে এরপরও জটিল মারপ্যাঁচে ফের প্রধানমন্ত্রী হতে
পারেন আবাদিই।
২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধের সময় মুক্তাদা আল সদরের বাহিনীর হাতে বহু আমেরিকান সেনা মারা গেছে। আর সেই মুক্তাদা আল সদরই হতে পারেন ইরাকের ভবিষ্যৎ রাজনীতির প্রধান কারিগর, কিংমেকার। তবে অনেক মার্কিন বিশ্লেষক বলছেন, গেল বছরগুলোতে ইরাকে আমেরিকান সেনা উপস্থিতি সয়ে নিয়েছেন তিনি। বিশেষ করে, ইসলামিক স্টেট বিরোধী লড়াইয়ে আমেরিকান সেনাদের ভূমিকা স্মরণ রেখেছেন তিনি।
কিন্তু মুক্তাদা আল সদরের নির্বাচনী বিজয় কার জন্য খারাপ সংবাদ? আমেরিকা নাকি ইরান? ওয়াশিংটন-ভিত্তিক মিডল ইস্ট ইন্সটিটিউটের সংঘাত নিরসন বিষয়ক পরিচালক র্যান্ডা স্লিম এই প্রশ্নই করেছেন। উত্তরও দিয়েছেন তিনি। তার মতে, ‘এটি উভয় দেশের জন্যই খারাপ সংবাদ। আমি মনে করি অনেকেই উদ্বেগে আছেন তাকে নিয়ে। তবে কেউ যদি তার রাজনৈতিক ও আদর্শিক পরিবর্তনের দিকে খেয়াল রাখেন, তাহলে বলতে বাধ্য হবেন যে, তিনি অনেকটাই বাস্তববাদী একজন খেলোয়াড় হয়ে উঠেছেন।’
স্লিম আরও উল্লেখ করেছেন, মুকতাদা আল সদর প্রকাশ্যেই বলেছেন আইএস-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মার্কিন উপস্থিতি নিয়ে তার কোনো সমস্যা নেই। আপত্তি নেই ইরাকি সৈন্যদেরকে প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রসস্ত্র দেওয়ার ক্ষেত্রেও, যতক্ষণ পর্যন্ত তা ইরাকের স্বার্বভৌমত্ব লঙ্ঘণ না করে। বর্তমানে প্রায় ৫ হাজার মার্কিন সেনা ইরাকে অবস্থান করছে। আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনের পর নিরপেক্ষ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।
তবে মুক্তাদা আল সদরের এই বিজয় প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের জন্য জটিলতা বয়ে আনতে পারে। জ্যেষ্ঠ অনেক মার্কিন সেনা কমান্ডার মনে করেন, বহু মার্কিন সেনার মৃত্যুর জন্য আল সদর দায়ী। এই সেনা কমান্ডাররা খুব ঘনিষ্ঠভাবেই পরিস্থিতির দিকে নজর রাখবেন।
আল সদরের ওপর দীর্ঘদিন ধরেই তীক্ষ্ম নজর রেখেছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। ২০০৪ সালে ইরাকে মার্কিন দখলদার বাহিনীর প্রধান কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল রিকার্ডো সানচেজ বলেছিলেন, ‘ইরাকে মার্কিন বাহিনীর মিশন হলো মুক্তাদা আল সদরকে আটক বা হত্যা করা। এটাই আমাদের মিশন।’
মঙ্গলবার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিসকে এই নির্বাচনী ফল নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। ম্যাটিস নিজেও দীর্ঘদিন ইরাকে শীর্ষ মার্কিন কমান্ডার ও পরে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের নেতৃত্বে ছিলেন। প্রতিক্রিয়ায় ম্যাটিস বলেন, ‘আমরা অপেক্ষা করবো। নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফলের দিকে নজর রাখবো। তবে আমরা ইরাকি জনগণের নেওয়া সিদ্ধান্তের পক্ষে।’
তবে আল সদর জিতলেও নির্বাচনে তৃতীয় হওয়া প্রধানমন্ত্রী আবাদি জনগণ ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতি ফলাফলের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন। অবশ্য ইরাকের গোত্রগত বিভেদের কারণেও অনেকে উদ্বেগে আছেন। সাদ্দাম হোসেনের পতনের পর এই প্রথম কোনো সুন্নি বা কুর্দি দলের সমর্থন ছাড়াই শিয়া দলগুলো সরকার গঠনের সামর্থ্য অর্জন করেছে।
ইরাকে দুই শীর্ষ মার্কিন কমান্ডারের প্রাক্তন গোয়েন্দা উপদেষ্টা ও বর্তমানে হাডসন ইন্সটিটিউটের জ্যেষ্ঠ ফেলো মিশেল প্রিজেন্ট বলেন, অতীতে ইরাকে ইরানের প্রভাবের বিরুদ্ধে দেওয়াল হিসেবে কাজ করেছে সুন্নি আরব ও কুর্দিরা। পাশাপাশি তার আইএস ও আল কায়দার মতো জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধেও লড়েছে। কিন্তু এখন শিয়া দলগুলো যদি অন্যদের সহায়তা ছাড়াই সরকার গঠন করে, তাহলে ইরাকে অস্থিতিশীলতা বাড়বে। ইরাকের অনেক শিয়া দলের সঙ্গে ইরানের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।
তবে স্লিম বলেছেন, শিয়া হলেও মুক্তাদা আল সদর কিন্তু ইরানের বিরোধী। তিনি ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছেন যে, ইরান-পন্থী দলগুলোর সঙ্গে তিনি জোট গঠন করবেন না। তিনি সুন্নিদের সঙ্গে হৃদ্যতা বাড়িয়েছেন। এমনকি নির্বাচনের কয়েক মাস আগে ইরানের প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরবে গিয়ে সেখানকার ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
স্লিম মনে করেন, মূলত কুর্দি দল ও আবাদির সঙ্গে জোট গঠন করতে পারেন আল সদর। আবার ইরাকের অনিশ্চয়তাময় জটিল রাজনীতিতে, এমনটা হওয়াও অসম্ভব নয় যে, মুক্তাদা আল সদর হয়তো ক্ষমতার ধারেকাছেও থাকবেন না। অন্য দলগুলো জোট করে ক্ষমতা দখল করবে।
ইতিমধ্যে, ইরান-পন্থী দলগুলো আল সদরকে হটিয়ে আবাদি বা অন্য কারও সঙ্গে জোট গঠন করার চেষ্টা শুরু করেছে। বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ইরানের ক্ষমতাধর কমান্ডার কাসেম সোলেমানি এই সপ্তাহেই আবাদি ও ইরানপন্থী রাজনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেক্ষেত্রেও তৃতীয় স্থানে থাকা আবাদি হতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।
২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধের সময় মুক্তাদা আল সদরের বাহিনীর হাতে বহু আমেরিকান সেনা মারা গেছে। আর সেই মুক্তাদা আল সদরই হতে পারেন ইরাকের ভবিষ্যৎ রাজনীতির প্রধান কারিগর, কিংমেকার। তবে অনেক মার্কিন বিশ্লেষক বলছেন, গেল বছরগুলোতে ইরাকে আমেরিকান সেনা উপস্থিতি সয়ে নিয়েছেন তিনি। বিশেষ করে, ইসলামিক স্টেট বিরোধী লড়াইয়ে আমেরিকান সেনাদের ভূমিকা স্মরণ রেখেছেন তিনি।
কিন্তু মুক্তাদা আল সদরের নির্বাচনী বিজয় কার জন্য খারাপ সংবাদ? আমেরিকা নাকি ইরান? ওয়াশিংটন-ভিত্তিক মিডল ইস্ট ইন্সটিটিউটের সংঘাত নিরসন বিষয়ক পরিচালক র্যান্ডা স্লিম এই প্রশ্নই করেছেন। উত্তরও দিয়েছেন তিনি। তার মতে, ‘এটি উভয় দেশের জন্যই খারাপ সংবাদ। আমি মনে করি অনেকেই উদ্বেগে আছেন তাকে নিয়ে। তবে কেউ যদি তার রাজনৈতিক ও আদর্শিক পরিবর্তনের দিকে খেয়াল রাখেন, তাহলে বলতে বাধ্য হবেন যে, তিনি অনেকটাই বাস্তববাদী একজন খেলোয়াড় হয়ে উঠেছেন।’
স্লিম আরও উল্লেখ করেছেন, মুকতাদা আল সদর প্রকাশ্যেই বলেছেন আইএস-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মার্কিন উপস্থিতি নিয়ে তার কোনো সমস্যা নেই। আপত্তি নেই ইরাকি সৈন্যদেরকে প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রসস্ত্র দেওয়ার ক্ষেত্রেও, যতক্ষণ পর্যন্ত তা ইরাকের স্বার্বভৌমত্ব লঙ্ঘণ না করে। বর্তমানে প্রায় ৫ হাজার মার্কিন সেনা ইরাকে অবস্থান করছে। আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনের পর নিরপেক্ষ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।
তবে মুক্তাদা আল সদরের এই বিজয় প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের জন্য জটিলতা বয়ে আনতে পারে। জ্যেষ্ঠ অনেক মার্কিন সেনা কমান্ডার মনে করেন, বহু মার্কিন সেনার মৃত্যুর জন্য আল সদর দায়ী। এই সেনা কমান্ডাররা খুব ঘনিষ্ঠভাবেই পরিস্থিতির দিকে নজর রাখবেন।
আল সদরের ওপর দীর্ঘদিন ধরেই তীক্ষ্ম নজর রেখেছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। ২০০৪ সালে ইরাকে মার্কিন দখলদার বাহিনীর প্রধান কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল রিকার্ডো সানচেজ বলেছিলেন, ‘ইরাকে মার্কিন বাহিনীর মিশন হলো মুক্তাদা আল সদরকে আটক বা হত্যা করা। এটাই আমাদের মিশন।’
মঙ্গলবার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিসকে এই নির্বাচনী ফল নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। ম্যাটিস নিজেও দীর্ঘদিন ইরাকে শীর্ষ মার্কিন কমান্ডার ও পরে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের নেতৃত্বে ছিলেন। প্রতিক্রিয়ায় ম্যাটিস বলেন, ‘আমরা অপেক্ষা করবো। নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফলের দিকে নজর রাখবো। তবে আমরা ইরাকি জনগণের নেওয়া সিদ্ধান্তের পক্ষে।’
তবে আল সদর জিতলেও নির্বাচনে তৃতীয় হওয়া প্রধানমন্ত্রী আবাদি জনগণ ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতি ফলাফলের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন। অবশ্য ইরাকের গোত্রগত বিভেদের কারণেও অনেকে উদ্বেগে আছেন। সাদ্দাম হোসেনের পতনের পর এই প্রথম কোনো সুন্নি বা কুর্দি দলের সমর্থন ছাড়াই শিয়া দলগুলো সরকার গঠনের সামর্থ্য অর্জন করেছে।
ইরাকে দুই শীর্ষ মার্কিন কমান্ডারের প্রাক্তন গোয়েন্দা উপদেষ্টা ও বর্তমানে হাডসন ইন্সটিটিউটের জ্যেষ্ঠ ফেলো মিশেল প্রিজেন্ট বলেন, অতীতে ইরাকে ইরানের প্রভাবের বিরুদ্ধে দেওয়াল হিসেবে কাজ করেছে সুন্নি আরব ও কুর্দিরা। পাশাপাশি তার আইএস ও আল কায়দার মতো জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধেও লড়েছে। কিন্তু এখন শিয়া দলগুলো যদি অন্যদের সহায়তা ছাড়াই সরকার গঠন করে, তাহলে ইরাকে অস্থিতিশীলতা বাড়বে। ইরাকের অনেক শিয়া দলের সঙ্গে ইরানের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।
তবে স্লিম বলেছেন, শিয়া হলেও মুক্তাদা আল সদর কিন্তু ইরানের বিরোধী। তিনি ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছেন যে, ইরান-পন্থী দলগুলোর সঙ্গে তিনি জোট গঠন করবেন না। তিনি সুন্নিদের সঙ্গে হৃদ্যতা বাড়িয়েছেন। এমনকি নির্বাচনের কয়েক মাস আগে ইরানের প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরবে গিয়ে সেখানকার ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
স্লিম মনে করেন, মূলত কুর্দি দল ও আবাদির সঙ্গে জোট গঠন করতে পারেন আল সদর। আবার ইরাকের অনিশ্চয়তাময় জটিল রাজনীতিতে, এমনটা হওয়াও অসম্ভব নয় যে, মুক্তাদা আল সদর হয়তো ক্ষমতার ধারেকাছেও থাকবেন না। অন্য দলগুলো জোট করে ক্ষমতা দখল করবে।
ইতিমধ্যে, ইরান-পন্থী দলগুলো আল সদরকে হটিয়ে আবাদি বা অন্য কারও সঙ্গে জোট গঠন করার চেষ্টা শুরু করেছে। বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ইরানের ক্ষমতাধর কমান্ডার কাসেম সোলেমানি এই সপ্তাহেই আবাদি ও ইরানপন্থী রাজনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেক্ষেত্রেও তৃতীয় স্থানে থাকা আবাদি হতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।
No comments