পাসপোর্ট পেতে গলদঘর্ম, ভোগান্তি by দীন ইসলাম ও মারুফ কিবরিয়া
মেশিন
রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) যেন সোনার হরিণ। অতিরিক্ত জরুরি ফি দিয়ে দুই
মাসেও মিলছে না পাসপোর্ট। দেশের বিভিন্ন জেলা শহরের পাসপোর্ট অফিসগুলোয়
পাসপোর্ট পেতে রীতিমতো হাহাকার চলছে। রাজধানীর কেরানীগঞ্জ ও উত্তরা
পাসপোর্ট অফিসের পাসপোর্ট জট ধীরে ধীরে কমছে বলে জানালেন ওই দুই অফিসের
দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। কেরানীগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের উপ- পরিচালক সাইদুর
রহমান মানবজমিনকে বলেন, পাসপোর্ট পেতে মাঝখানে কিছুটা সমস্যা ছিল। এটা ধীরে
ধীরে ঠিক হয়ে যাচ্ছে। আশা করছি কয়েক দিনের মধ্যে পুরোপুরি ঠিক হয়ে যাবে।
কোনো সমস্যা হবে না। গতকাল সরজমিনে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিস ঘুরে দেখা যায়,
অতি জরুরি ফি দিয়েও ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। তাদের
প্রতিদিনই অপেক্ষায় থাকতে হয় কখন হাতে পাবেন পাসপোর্ট। কিন্তু বেঁধে দেয়া
নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে যাওয়ার পরও তা পাচ্ছেন না আবেদনকারীরা। কয়েক জন
আবেদনকারী জানান, ৩০ দিনের মধ্যে যে পাসপোর্ট পাওয়ার কথা সেটা হাতে পাচ্ছেন
দুই মাসের মাথায়। কারো কারো ক্ষেত্রে সময় এর চেয়েও বেশি লেগে যাচ্ছে।
নির্দিষ্ট দিনক্ষণের অধিক সময় কেটে যাওয়ার পর পাসপোর্ট হাতে পেলেও গ্রাহকদের ভাষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকেও দায়ী করছেন। বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, এমআরপি বুকলেট সংকটের কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তাই তড়িঘড়ি করে পাসপোর্ট চাইলেও প্রিন্ট করে দেয়া যাচ্ছে না। চাহিদা অনুযায়ী যোগান কম থাকার কারণে পাসপোর্টের চরম সংকট তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার বাইরের বিভিন্ন বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসগুলোর এমআরপি প্রিন্ট করতে প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়। খুলনা ও যশোরসহ কয়েকটি বিভাগীয় অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাসপোর্টের আবেদন জমা নেয়ার সময় তারা সফটওয়্যার উল্লিখিত তারিখ বলে দিচ্ছেন। পাশাপাশি মৌখিকভাবে পাসপোর্ট পেতে দেরি হতে পারে এ বিষয়টিও জানিয়ে দিচ্ছেন। তবে যাদের খুব জরুরি দরকার তাদের আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করতে বলে দেয়া হয়। তবে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করেও নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
গতকাল আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে কথা হয় পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের বাসিন্দা সম্রাটের সঙ্গে। তিনি মানবজমিনকে বলেন, আবেদন অনুযায়ী সব প্রক্রিয়া শেষও হয়েছে। নির্ধারিত সময় ৩০ দিনের মধ্যে পাওয়ার কথা থাকলেও আমার পাসপোর্ট পেতে সময় লেগেছে ৫৯ দিন। সম্রাট বলেন, পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার পর থেকে নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী পাইনি। আজ পর্যন্ত ৫৯ দিন গুনতে হয়েছে। এর মধ্যে দুবার এসে ফিরেও গিয়েছি। আজ আবার এলাম। এখানে এসে পাসপোর্টের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। সুনির্দিষ্ট কোনো নিয়ম নেই। আমার সিরিয়ালের আগে অনেকে পাসপোর্ট নিয়ে বের হয়ে গেছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও পাসপোর্ট পাচ্ছি না। তবে অভিযোগকারী সম্রাট দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করে পাসপোর্ট হাতে পেলেও কর্তৃপক্ষের এমন ঢিলেঢালাভাবে বিরক্তিই প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, পাসপোর্ট নয় যেন সোনার হরিণ। এত লম্বা সময় লেগে যাওয়াটা সত্যিই বিরক্তকর। আর্মিদের কাজ জানতাম খুব সুন্দর ও গোছানো। কিন্তু এভাবে সময় লাগাবে তা ভাবতেই পারিনি।
পাসপোর্ট গ্রহণ করতে আসা সানজিদা নামের এক আবেদনকারী বলেন, নিয়ম অনুযায়ী আমি ৩০ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট হাতে পাই। কিন্তু আমার লেগে গেলো ৭৩ দিন। এত সময় কেন লাগলো কিছুই বুঝলাম না। পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর যেটা খুব সহজে পাওয়ার কথা সেটা এতটা কঠিন হয়ে গেল। নিউজিল্যান্ডে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করবো। কিন্তু পাসপোর্ট দেরিতে হয়ে যাওয়ায় সামনের সেমিস্টার ধরতে সময় লেগে যাবে। তবে এতটা বিড়ম্বনা হবে ভাবতেই পারিনি। স্বামী নিয়ে ঈদে ছুটি কাটাতে বাইরে যেতে চান নাজমা সুলতানা তানিয়া। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পাসপোর্ট। নবায়ন করতে দেয়ার নির্দিষ্ট ডেলিভারির তারিখের একমাস পরও তিনি ও তার কন্যার পাসপোর্ট পাননি। তীব্র ভোগান্তিতে তানিয়ার পরিবার।
গত দুই মাস ধরে পাসপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছিলেন সায়েম হোসেন নামের এক যুবক। বাবাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভারত যাবেন। কিন্তু গত ৬০ দিনে পাসপোর্টই হাতে পাননি সায়েম। তিনি বলেন, বাবাকে চিকিৎসার জন্য ভারত নিয়ে যেতে হবে। এক মাসের মধ্যে পাসপোর্ট হাতে পাবো বলে সব গুছিয়ে নিয়েছি। কিন্তু এখন সেটা দুই মাসে গিয়ে ঠেকেছে। পাসপোর্ট দিতে এত দেরি হলে তো চিকিৎসার আগেই মারা যাবে মানুষ। আমি সত্যিই হতাশ। আজ কী বলে জানি না। হয়তো আজও হাতে পাবো না পাসপোর্টটা।
৭৫ দিন কেটে যাওয়ার পরও পাসপোর্ট হাতে পাননি শারমিন নামের এক গ্রহীতা। পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পর ঠিকঠাকভাবে পাসপোর্ট হাতে পাবেন বলে প্রত্যাশায় ছিলেন তিনি। কিন্তু এক মাস কেটে যাওয়ার পর শারমিনকে অপেক্ষা করতে হয়েছে আরো ৪৫ দিন। পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ঢিলেঢালা মনোভাবে দেশের বাইরে যাওয়ায় বিলম্ব হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। শারমিন বলেন, সাধারণ নিয়মে পাসপোর্ট পাবো এক মাসে। কিন্তু আজ ৭৫ দিন হয়ে গেছে হাতে পাইনি। এত দেরি কেন হয়? এরা কি করে? পাসপোর্ট তো আমরা শখের বশে করি না। নিশ্চয়ই জরুরি কোনো কাজে এটা করতে হয়। বিষয়টা এমন যে কেউ কোনো গুরুত্বই দিচ্ছে না।
নির্দিষ্ট দিনক্ষণের অধিক সময় কেটে যাওয়ার পর পাসপোর্ট হাতে পেলেও গ্রাহকদের ভাষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকেও দায়ী করছেন। বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, এমআরপি বুকলেট সংকটের কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তাই তড়িঘড়ি করে পাসপোর্ট চাইলেও প্রিন্ট করে দেয়া যাচ্ছে না। চাহিদা অনুযায়ী যোগান কম থাকার কারণে পাসপোর্টের চরম সংকট তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার বাইরের বিভিন্ন বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসগুলোর এমআরপি প্রিন্ট করতে প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়। খুলনা ও যশোরসহ কয়েকটি বিভাগীয় অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাসপোর্টের আবেদন জমা নেয়ার সময় তারা সফটওয়্যার উল্লিখিত তারিখ বলে দিচ্ছেন। পাশাপাশি মৌখিকভাবে পাসপোর্ট পেতে দেরি হতে পারে এ বিষয়টিও জানিয়ে দিচ্ছেন। তবে যাদের খুব জরুরি দরকার তাদের আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করতে বলে দেয়া হয়। তবে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করেও নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
গতকাল আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে কথা হয় পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের বাসিন্দা সম্রাটের সঙ্গে। তিনি মানবজমিনকে বলেন, আবেদন অনুযায়ী সব প্রক্রিয়া শেষও হয়েছে। নির্ধারিত সময় ৩০ দিনের মধ্যে পাওয়ার কথা থাকলেও আমার পাসপোর্ট পেতে সময় লেগেছে ৫৯ দিন। সম্রাট বলেন, পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার পর থেকে নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী পাইনি। আজ পর্যন্ত ৫৯ দিন গুনতে হয়েছে। এর মধ্যে দুবার এসে ফিরেও গিয়েছি। আজ আবার এলাম। এখানে এসে পাসপোর্টের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। সুনির্দিষ্ট কোনো নিয়ম নেই। আমার সিরিয়ালের আগে অনেকে পাসপোর্ট নিয়ে বের হয়ে গেছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও পাসপোর্ট পাচ্ছি না। তবে অভিযোগকারী সম্রাট দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করে পাসপোর্ট হাতে পেলেও কর্তৃপক্ষের এমন ঢিলেঢালাভাবে বিরক্তিই প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, পাসপোর্ট নয় যেন সোনার হরিণ। এত লম্বা সময় লেগে যাওয়াটা সত্যিই বিরক্তকর। আর্মিদের কাজ জানতাম খুব সুন্দর ও গোছানো। কিন্তু এভাবে সময় লাগাবে তা ভাবতেই পারিনি।
পাসপোর্ট গ্রহণ করতে আসা সানজিদা নামের এক আবেদনকারী বলেন, নিয়ম অনুযায়ী আমি ৩০ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট হাতে পাই। কিন্তু আমার লেগে গেলো ৭৩ দিন। এত সময় কেন লাগলো কিছুই বুঝলাম না। পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর যেটা খুব সহজে পাওয়ার কথা সেটা এতটা কঠিন হয়ে গেল। নিউজিল্যান্ডে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করবো। কিন্তু পাসপোর্ট দেরিতে হয়ে যাওয়ায় সামনের সেমিস্টার ধরতে সময় লেগে যাবে। তবে এতটা বিড়ম্বনা হবে ভাবতেই পারিনি। স্বামী নিয়ে ঈদে ছুটি কাটাতে বাইরে যেতে চান নাজমা সুলতানা তানিয়া। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পাসপোর্ট। নবায়ন করতে দেয়ার নির্দিষ্ট ডেলিভারির তারিখের একমাস পরও তিনি ও তার কন্যার পাসপোর্ট পাননি। তীব্র ভোগান্তিতে তানিয়ার পরিবার।
গত দুই মাস ধরে পাসপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছিলেন সায়েম হোসেন নামের এক যুবক। বাবাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভারত যাবেন। কিন্তু গত ৬০ দিনে পাসপোর্টই হাতে পাননি সায়েম। তিনি বলেন, বাবাকে চিকিৎসার জন্য ভারত নিয়ে যেতে হবে। এক মাসের মধ্যে পাসপোর্ট হাতে পাবো বলে সব গুছিয়ে নিয়েছি। কিন্তু এখন সেটা দুই মাসে গিয়ে ঠেকেছে। পাসপোর্ট দিতে এত দেরি হলে তো চিকিৎসার আগেই মারা যাবে মানুষ। আমি সত্যিই হতাশ। আজ কী বলে জানি না। হয়তো আজও হাতে পাবো না পাসপোর্টটা।
৭৫ দিন কেটে যাওয়ার পরও পাসপোর্ট হাতে পাননি শারমিন নামের এক গ্রহীতা। পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পর ঠিকঠাকভাবে পাসপোর্ট হাতে পাবেন বলে প্রত্যাশায় ছিলেন তিনি। কিন্তু এক মাস কেটে যাওয়ার পর শারমিনকে অপেক্ষা করতে হয়েছে আরো ৪৫ দিন। পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ঢিলেঢালা মনোভাবে দেশের বাইরে যাওয়ায় বিলম্ব হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। শারমিন বলেন, সাধারণ নিয়মে পাসপোর্ট পাবো এক মাসে। কিন্তু আজ ৭৫ দিন হয়ে গেছে হাতে পাইনি। এত দেরি কেন হয়? এরা কি করে? পাসপোর্ট তো আমরা শখের বশে করি না। নিশ্চয়ই জরুরি কোনো কাজে এটা করতে হয়। বিষয়টা এমন যে কেউ কোনো গুরুত্বই দিচ্ছে না।
No comments