প্রেসিডেন্টের ক্ষমায় মুক্ত জোসেফ তোলপাড়
নব্বই
দশকের আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী তোফায়েল আহমেদ জোসেফ প্রেসিডেন্ট আব্দুল
হামিদের ক্ষমায় কারামুক্ত হয়েছেন। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এ আসামিকে বিদেশে
চিকিৎসারও অনুমতি দেয়া হয়েছে। গত রোববার তিনি মুক্তি পেলেও এ খবর প্রকাশ
হয়েছে গতকাল। জোসেফ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি ক্যাবিনে কারা
কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. জাহাঙ্গীর কবির মানবজমিনকে বলেন, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদি তোফায়েল আহমেদ জোসেফের প্রেসিডেন্টের কাছে করা অনুকম্পা ও তার মুক্তির আদেশের কপি গত রোববার বেলা ১২টায় পাই। এরপর একজন ডেপুটি জেল সুপারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালের ১১১ নম্বর কেবিনে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ডেপুটি জেলার তার সঙ্গে নেয়া কারা রেজিস্ট্রারে কয়েদির স্বাক্ষর নিয়ে বিকাল পৌনে চারটায় তাকে মুক্তি দেন। এরপর তিনি কোথায় গেছেন তা আমাদের জানা নেই। তিনি বলেন, জোসেফ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ৩০ বছর মেয়াদের মধ্যে ২৬ বছর জেল খেটেছেন। তার সাজার মেয়াদ বাকি ছিল আর মাত্র ৪ বছর। যাবজ্জীবন সাজার আসামির ২০ বছর কারাভোগ পার হলে কারা কর্তৃপক্ষ তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানায়। সেই সঙ্গে তার পাওনা ছুটির তথ্যও দেয়া হয়।
জোসেফের কারামুক্তির বিষয়ে গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেন, তোফায়েল আহমেদ জোসেফের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট তাকে ক্ষমা করে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দিয়েছেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আগে তিনি বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া বার্নিকাটের সঙ্গে বৈঠক করেন। জোসেফ এখন কোথায়? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জোসেফের যে প্রসঙ্গটা, তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল। তিনি অলরেডি ২০ বছর কারাভোগ করেছেন।
২০ বছর কারাভোগের পরই তিনি ডিউ প্রসেসে, যেভাবে প্রসেস হয় সেভাবে আবেদন করেছেন। সেই আবেদনটি মহামান্য (প্রেসিডেন্ট) পর্যন্ত যায়। জোসেফ ভারতে চলে গেছে- একজন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ইন্ডিয়াতে চলে গেছে আপনি দেখেছেন নাকি? ওই সাংবাদিক তখন বলেন, আমি দেখিনি। পত্রিকায় খবর এসেছে। জোসেফ জেলে আছে নাকি বেরিয়ে গেছে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি (জোসেফ) আবেদন করেছিলেন ভয়ানক অসুস্থ, এক বছর না দেড় বছর বাকি ছিল (সাজা), এক বছর কয়েক মাস।
সেটার জন্য তিনি মার্সি পিটিশন (ক্ষমা প্রার্থনা) করেছিলেন, সেটি খুব সম্ভব প্রেসিডেন্ট অনুমোদন করেছেন...এক বছর কয়েক দিন, তার কিছু অর্থদণ্ডও ছিল। সেগুলো আদায় সাপেক্ষে তাকে বিদেশে চিকিৎসার পারমিশন (অনুমতি) দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট। এটুকু আমি জানি, এর চেয়ে বেশি কিছু জানি না। পুলিশের বিশেষ শাখার এক কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, দুই দশক কারাগারে থাকার পর মুক্তি পেয়ে জোসেফ ইতিমধ্যে ভারতে পাড়ি জমিয়েছেন। যদিও এ বিষয়ে জোসেফের পরিবারের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন জোসেফ। সেখান থেকেই মুক্তি পান ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের এ অন্যতম নিয়ন্ত্রক। ১৯৯৯ সালের একটি হত্যাকাণ্ডে জোসেফের মৃত্যুদণ্ড হয়। হাইকোর্টও এ রায় বহাল রাখেন। পরবর্তী সময়ে আপিল বিভাগ সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এদিকে বিমান বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ওয়াদুদ আহমেদের ছোট ছেলে তোফায়েল আহমেদ জোসেফের বড় ভাই হারিস আহমেদের নামও রয়েছে পুলিশের শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায়। হারিস বর্তমানে ভারতে পালিয়ে আছেন বলে ধারণা করা হয়।
নব্বইয়ের দশকে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন তাদের আরেক ভাই সাঈদ আহমেদ টিপু। আর তাদের বড় ভাই লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ আহমদ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের মহাপরিচালক ছিলেন। ফ্রিডম পার্টির নেতা মোস্তফা হত্যা মামলায় ২০০৪ সালে জোসেফকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ঢাকার জজ আদালত। হাইকোর্ট ওই রায় বহাল রাখলেও ২০১৫ সালে আপিল বিভাগ তার সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।
জোসেফ ২০ বছর আগে গ্রেপ্তার হওয়ার সময় তার নামে ঢাকার বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি, খুন, অবৈধ অস্ত্র বহনের অভিযোগে অন্তত ১১টি মামলা ছিল। এর মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান হত্যা মামলা ছাড়া বাকিগুলোর নিষ্পত্তি হয়েছিল আগেই। সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলে জোসেফের বড় ভাই হারিস আহমেদ নিজেকে মোহাম্মদপুর এলাকায় জাতীয় পার্টির নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেন। এরশাদ সরকারের পতনের পর তিনি নিজের পরিচয় দিতে শুরু করেন মোহাম্মদপুর থানা যুবলীগের নেতা হিসেবে।
ঢাকার ৪৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কমিশনার পদে নির্বাচনও করেছিলেন তিনি। জোসেফও এক সময় নিজেকে ছাত্রলীগের মোহাম্মদপুর থানার নেতা হিসেবে দাবি করতেন। তবে সংগঠনের কোনো পদে তিনি ছিলেন না। এদিকে যাবজ্জীবন সাজায় কারাগারে থাকার মধ্যে জোসেফ জটিল কোনো রোগ না থাকার পরও টানা ২০ মাসের বেশি সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কাটালে বিষয়টি গত বছর সংবাদ শিরোনাম হয়। এ নিয়ে আলোচনা শুরু হলে তাকে হাসপাতাল থেকে কারাগারে ফেরত নেয় কারা কর্তৃপক্ষ। পরে আবার অসুস্থতার জন্য ঢাকা মেডিকেলের ১১১ নম্বর কেবিনে আসেন। ওই কেবিন থেকেই তাকে মুক্তি দেয়া হয়।
কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. জাহাঙ্গীর কবির মানবজমিনকে বলেন, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদি তোফায়েল আহমেদ জোসেফের প্রেসিডেন্টের কাছে করা অনুকম্পা ও তার মুক্তির আদেশের কপি গত রোববার বেলা ১২টায় পাই। এরপর একজন ডেপুটি জেল সুপারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালের ১১১ নম্বর কেবিনে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ডেপুটি জেলার তার সঙ্গে নেয়া কারা রেজিস্ট্রারে কয়েদির স্বাক্ষর নিয়ে বিকাল পৌনে চারটায় তাকে মুক্তি দেন। এরপর তিনি কোথায় গেছেন তা আমাদের জানা নেই। তিনি বলেন, জোসেফ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ৩০ বছর মেয়াদের মধ্যে ২৬ বছর জেল খেটেছেন। তার সাজার মেয়াদ বাকি ছিল আর মাত্র ৪ বছর। যাবজ্জীবন সাজার আসামির ২০ বছর কারাভোগ পার হলে কারা কর্তৃপক্ষ তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানায়। সেই সঙ্গে তার পাওনা ছুটির তথ্যও দেয়া হয়।
জোসেফের কারামুক্তির বিষয়ে গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেন, তোফায়েল আহমেদ জোসেফের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট তাকে ক্ষমা করে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দিয়েছেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আগে তিনি বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া বার্নিকাটের সঙ্গে বৈঠক করেন। জোসেফ এখন কোথায়? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জোসেফের যে প্রসঙ্গটা, তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল। তিনি অলরেডি ২০ বছর কারাভোগ করেছেন।
২০ বছর কারাভোগের পরই তিনি ডিউ প্রসেসে, যেভাবে প্রসেস হয় সেভাবে আবেদন করেছেন। সেই আবেদনটি মহামান্য (প্রেসিডেন্ট) পর্যন্ত যায়। জোসেফ ভারতে চলে গেছে- একজন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ইন্ডিয়াতে চলে গেছে আপনি দেখেছেন নাকি? ওই সাংবাদিক তখন বলেন, আমি দেখিনি। পত্রিকায় খবর এসেছে। জোসেফ জেলে আছে নাকি বেরিয়ে গেছে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি (জোসেফ) আবেদন করেছিলেন ভয়ানক অসুস্থ, এক বছর না দেড় বছর বাকি ছিল (সাজা), এক বছর কয়েক মাস।
সেটার জন্য তিনি মার্সি পিটিশন (ক্ষমা প্রার্থনা) করেছিলেন, সেটি খুব সম্ভব প্রেসিডেন্ট অনুমোদন করেছেন...এক বছর কয়েক দিন, তার কিছু অর্থদণ্ডও ছিল। সেগুলো আদায় সাপেক্ষে তাকে বিদেশে চিকিৎসার পারমিশন (অনুমতি) দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট। এটুকু আমি জানি, এর চেয়ে বেশি কিছু জানি না। পুলিশের বিশেষ শাখার এক কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, দুই দশক কারাগারে থাকার পর মুক্তি পেয়ে জোসেফ ইতিমধ্যে ভারতে পাড়ি জমিয়েছেন। যদিও এ বিষয়ে জোসেফের পরিবারের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন জোসেফ। সেখান থেকেই মুক্তি পান ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের এ অন্যতম নিয়ন্ত্রক। ১৯৯৯ সালের একটি হত্যাকাণ্ডে জোসেফের মৃত্যুদণ্ড হয়। হাইকোর্টও এ রায় বহাল রাখেন। পরবর্তী সময়ে আপিল বিভাগ সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এদিকে বিমান বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ওয়াদুদ আহমেদের ছোট ছেলে তোফায়েল আহমেদ জোসেফের বড় ভাই হারিস আহমেদের নামও রয়েছে পুলিশের শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায়। হারিস বর্তমানে ভারতে পালিয়ে আছেন বলে ধারণা করা হয়।
নব্বইয়ের দশকে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন তাদের আরেক ভাই সাঈদ আহমেদ টিপু। আর তাদের বড় ভাই লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ আহমদ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের মহাপরিচালক ছিলেন। ফ্রিডম পার্টির নেতা মোস্তফা হত্যা মামলায় ২০০৪ সালে জোসেফকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ঢাকার জজ আদালত। হাইকোর্ট ওই রায় বহাল রাখলেও ২০১৫ সালে আপিল বিভাগ তার সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।
জোসেফ ২০ বছর আগে গ্রেপ্তার হওয়ার সময় তার নামে ঢাকার বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি, খুন, অবৈধ অস্ত্র বহনের অভিযোগে অন্তত ১১টি মামলা ছিল। এর মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান হত্যা মামলা ছাড়া বাকিগুলোর নিষ্পত্তি হয়েছিল আগেই। সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলে জোসেফের বড় ভাই হারিস আহমেদ নিজেকে মোহাম্মদপুর এলাকায় জাতীয় পার্টির নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেন। এরশাদ সরকারের পতনের পর তিনি নিজের পরিচয় দিতে শুরু করেন মোহাম্মদপুর থানা যুবলীগের নেতা হিসেবে।
ঢাকার ৪৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কমিশনার পদে নির্বাচনও করেছিলেন তিনি। জোসেফও এক সময় নিজেকে ছাত্রলীগের মোহাম্মদপুর থানার নেতা হিসেবে দাবি করতেন। তবে সংগঠনের কোনো পদে তিনি ছিলেন না। এদিকে যাবজ্জীবন সাজায় কারাগারে থাকার মধ্যে জোসেফ জটিল কোনো রোগ না থাকার পরও টানা ২০ মাসের বেশি সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কাটালে বিষয়টি গত বছর সংবাদ শিরোনাম হয়। এ নিয়ে আলোচনা শুরু হলে তাকে হাসপাতাল থেকে কারাগারে ফেরত নেয় কারা কর্তৃপক্ষ। পরে আবার অসুস্থতার জন্য ঢাকা মেডিকেলের ১১১ নম্বর কেবিনে আসেন। ওই কেবিন থেকেই তাকে মুক্তি দেয়া হয়।
No comments