আবারও খেয়ালখুশির নিয়োগ! by শাহদীন মালিক
পাঠক
হয়তো ভাবছেন কে আবার নিয়োগ পেল, যা এই কলাম লেখকের অপছন্দ? না, নিয়োগ
হয়নি। হবে হবে করছে। আদালতপাড়ায় বেশ কিছুদিন ধরে জল্পনা-কল্পনা-গুঞ্জন ও
গুজব। উনি বিচারপতি হচ্ছেন আর অন্য কারও সম্পর্কে হয়তো বলা হচ্ছে যে তিনি
হতে পারবেন না; কেউ বলছে, নতুন বিচারপতি হবেন ১০ জন; কারও মতে এক কুড়ি।
আপিল বিভাগ নিয়েও গুঞ্জন আছে। ওখানে যাচ্ছেন ২,৩ অথবা ৫ জন। নানা মুনির
নানা মত। তবে আমরা যারা আদালতের বারান্দা দিয়ে হাঁটাহাঁটি করি, তাদের এসব
হরেক গুজবে কান না দিয়ে উপায় নেই। মাঝেমধ্যে সাংবাদিকেরাও পাকড়াও
করেন-স্যার, কিছু শুনলেন, কে কে হচ্ছেন? তাঁদের ধারণা, আদার ব্যাপারী বোধ
হয় জাহাজের খবর রাখে। নিজে নিজের জন্যই দোয়া করি-ওদের ইচ্ছা বাস্তবায়িত
হোক, জাহাজের খবর চলে আসুক। তবে অদ্যাবধি সেই খবর আসেনি। বিচারপতিদের নিয়োগ
হয়ে গেলে আজকের শিরোনাম দিয়ে লিখলে নির্ঘাত বড় বিপদে পড়তে হতো। সদ্য নিয়োগ
পাওয়া মাননীয় বিচারপতিদের সবাই না হলেও অন্তত তাঁদের দু-চারজন হয়তো
ভাবতেন-ব্যাটার এত বড় সাহস, আমাদের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলে! নিজের বিপদ
নিজে ডেকে আনার কোনো মনোবাসনা এই অধমের নেই। তাই প্রকৃত নিয়োগের আগেই এই
লেখা।
২. নিয়োগ-সংক্রান্ত আইন থাকলেই যে নিয়োগ অতি উত্তম হবে, কোনো ধানাইপানাই হবে না, তার শতভাগ নিশ্চয়তা নেই। পত্রপত্রিকায় দেখছি, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কোনো উপাচার্য নাকি আজকাল পিয়ন-দপ্তরির বেলায়ও লাখ লাখ টাকার নিয়োগ-বাণিজ্য করেন। সুহৃদ পাঠকদের অনেকেই নিশ্চয় চাকরি করেন ব্যাংক, বিমা, প্রাইভেট কোম্পানি, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে; হয়তো এনজিও বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানে অথবা সরকারি, আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে। ছোটখাটো প্রাইভেট কোম্পানি বাদ দিলে আজকাল প্রতিষ্ঠিত সব প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ আইন আছে। অর্থাৎ চাকরিতে নিয়োগ পেতে যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, সেকেন্ড ডিভিশন বা ফার্স্ট ক্লাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নাকি যেকোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হলেই চলবে অথবা পাক্কা বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি লাগবে-এসব কথাও বলা থাকতে পারে। আজকাল তো দেখছি কোনো কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগের জন্য বলেই দিচ্ছে যে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া বা যুক্তরাজ্যের ডিগ্রি লাগবে। আসল কথা হলো, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা-সংক্রান্ত শর্ত ছাড়া নিয়োগ দেওয়া হলে সেই নিয়োগ স্বেচ্ছাচারী হতে বাধ্য, যাতে ভাগনে বা ভাতিজা বা নিজের লোক না হয়ে দক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তি নিয়োগ পায়। সে জন্যই বড় বড় প্রতিষ্ঠানের, সরকারের এবং আত্মমর্যাদাসম্পন্ন সব প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ-সংক্রান্ত বিধি বা আইন থাকে। পাড়ায় মুদিদোকানের পান-বিড়ি, দরজি, সেলুন বা মিষ্টির দোকানের নিয়োগবিধি আছে বলে শুনিনি। মুদির দোকানটা চলে ভাই, ভাতিজা, শ্যালক বা অন্য কোনো আপনজনের সাহায্যে। তাঁরা নিয়োগ পান নিয়োগবিধি ছাড়াই। অন্য কথায় যেখানে বিশেষ কোনো দক্ষতা ও যোগ্যতার প্রয়োজন নেই, সেখানে ‘আপন লোক’ প্রয়োজন, সেটাই দক্ষতা। সেটাই যোগ্যতা। কিন্তু শুধু মুদির দোকান, সেলুন আর দরজির সেলাইখানা দিয়ে তো আর দেশ চলবে না। নিয়ম অনুযায়ী সরকারি পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য তো আছে একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। সরকারি কর্মকমিশন বা পাবলিক সার্ভিস কমিশন অথবা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের কাজই হলো সরকারের কর্মে নিয়োগ দেওয়া। তবে খোদ সরকারি কর্মকমিশনে কারা মেম্বার-চেয়ারম্যান হবেন, তার কোনো আইন নেই নির্বাচনের জন্য। আর বলা বাহুল্য, কোনো আইন নেই বিচারপতিদের জন্যও। ইদানীং নির্বাচন কমিশনের মেম্বার ও চেয়ারম্যান নিয়োগে কী যেন সার্চ কমিটি বা ওই গোছের কিছু একটা করা হয়েছিল। বদ নিয়ত। নিম্ন আদালতের প্রবেশপদ, অর্থাৎ সহকারী বিচারকদের নিয়োগের জন্য ন্যূনতম যোগ্যতার বিধান আছে, তারপর এমসিকিউ, দশ না বারো পেপারে লিখিত পরীক্ষা, ইন্টারভিউ এবং সবশেষে স্বাস্থ্য ও গোয়েন্দা পরীক্ষা। সহকারী বিচারক নিয়োগ-সংক্রান্ত এসব কর্মীর জন্য আছে আলাদা প্রতিষ্ঠান, অর্থাৎ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন। সার্চ কমিটি কাদের নিয়ে গঠিত হবে, অর্থাৎ কারা পরীক্ষা নেবেন, সেটাও আইনে বলে দেওয়া আছে। যেহেতু আইনে বলে দেওয়া আছে, সেহেতু স্ট্যান্টবাজির দরকার নেই।
৩. সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৫ (২) (গ)-তে বিচারপতিদের নিয়োগের জন্য আইন দ্বারা যোগ্যতা নির্ধারণের নির্দেশনা আছে। এই নিয়ে আলাপ-আলোচনা, লেখালেখি, সেমিনার-টক শো হচ্ছে বছরের পর বছর। সর্বশেষ দেখলাম মিজানুর রহমান খান লিখেছেন প্রথম আলোয় ‘সুপ্রিম কোর্টকেই নেতৃত্ব দিতে হবে’ এই শিরোনামে (প্রথম আলো, ১৪ ফেব্রুয়ারি, পৃষ্ঠা ১০)। মুখে আইনের শাসন ও গণতন্ত্রের কথা যতই ঘন ঘন বলা হোক না কেন, ক্ষমতাকে কেউ আইন দ্বারা সীমিত করতে চায় না। রাজা-বাদশাহদের সময় ওনাদের, অর্থাৎ জাহাঁপনাদের ক্ষমতা কোনো আইনের দ্বারা সীমিত ছিল না। কাকে কোন পদে বসাবেন, সেটা ছিল তাদের একচ্ছত্র এখতিয়ার। সেই যুগ আর নেই। বলা হয়, আমরা এখন প্রজাতন্ত্র, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের যুগে ঢুকে গেছি, কিন্তু ইচ্ছেমতো নিয়োগ দেওয়ার খায়েশটা ছাড়তে পারছি না। পূর্বপুরুষেরা জমিদার থাকুক না থাকুক। কোথায় যেন পড়েছিলাম বা শুনেছিলাম, পাকিস্তানের বেনজির ভুট্টো নাকি মৃত্যুর আগে উইল করে বলেছিলেন, তাঁর মৃত্যুর পর পাকিস্তান পিপলস পার্টির প্রধান হবেন তাঁর পুত্র। হয়েছিলও তা-ই, বেনজির ভুট্টো নিহত হওয়ার পর। তখন তাঁর পুত্রের বয়স ছিল ১৯ বা ২০। এখন দেখছি আমাদের বিএনপিও সেই পথে এগোচ্ছে। পার্টি নাকি চলছে সুদূর লন্ডন থেকে। ব্যক্তিবিশেষের খায়েশের রাজনীতি ও গণতন্ত্রে স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। ষোড়শ সংশোধনী মামলায় সাতজনের মধ্যে ছয়জনই ছোট-বড় আলাদা আলাদা রায় দিয়েছেন। ওই মামলায় বিচারপতি মির্জা হোসেন হায়দারের পৃথক রায়ের প্রায় পুরোটা জুড়েই বিচারপতি নিয়োগের আইনের প্রয়োজনীয়তার কথা উঠে এসেছে। তাঁর মোদ্দা কথা হলো, বিচারপতি নিয়োগ-সংক্রান্ত আইন ছাড়া বিচার বিভাগ সঠিকভাবে স্বাধীন হয় না। বর্তমান সরকার বা তার আগের সরকার কেউই চায়নি যে বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন হোক। আর তাই বিচারপতি নিয়োগে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা বহাল রাখতে এ-সংক্রান্ত আইন পাস হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’ স্লোগানটা বিচারপতি নিয়োগকে লক্ষ্য করে রচিত হয়নি।
ড. শাহদীন মালিক : সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের আইনের শিক্ষক।
২. নিয়োগ-সংক্রান্ত আইন থাকলেই যে নিয়োগ অতি উত্তম হবে, কোনো ধানাইপানাই হবে না, তার শতভাগ নিশ্চয়তা নেই। পত্রপত্রিকায় দেখছি, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কোনো উপাচার্য নাকি আজকাল পিয়ন-দপ্তরির বেলায়ও লাখ লাখ টাকার নিয়োগ-বাণিজ্য করেন। সুহৃদ পাঠকদের অনেকেই নিশ্চয় চাকরি করেন ব্যাংক, বিমা, প্রাইভেট কোম্পানি, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে; হয়তো এনজিও বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানে অথবা সরকারি, আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে। ছোটখাটো প্রাইভেট কোম্পানি বাদ দিলে আজকাল প্রতিষ্ঠিত সব প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ আইন আছে। অর্থাৎ চাকরিতে নিয়োগ পেতে যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, সেকেন্ড ডিভিশন বা ফার্স্ট ক্লাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নাকি যেকোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হলেই চলবে অথবা পাক্কা বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি লাগবে-এসব কথাও বলা থাকতে পারে। আজকাল তো দেখছি কোনো কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগের জন্য বলেই দিচ্ছে যে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া বা যুক্তরাজ্যের ডিগ্রি লাগবে। আসল কথা হলো, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা-সংক্রান্ত শর্ত ছাড়া নিয়োগ দেওয়া হলে সেই নিয়োগ স্বেচ্ছাচারী হতে বাধ্য, যাতে ভাগনে বা ভাতিজা বা নিজের লোক না হয়ে দক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তি নিয়োগ পায়। সে জন্যই বড় বড় প্রতিষ্ঠানের, সরকারের এবং আত্মমর্যাদাসম্পন্ন সব প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ-সংক্রান্ত বিধি বা আইন থাকে। পাড়ায় মুদিদোকানের পান-বিড়ি, দরজি, সেলুন বা মিষ্টির দোকানের নিয়োগবিধি আছে বলে শুনিনি। মুদির দোকানটা চলে ভাই, ভাতিজা, শ্যালক বা অন্য কোনো আপনজনের সাহায্যে। তাঁরা নিয়োগ পান নিয়োগবিধি ছাড়াই। অন্য কথায় যেখানে বিশেষ কোনো দক্ষতা ও যোগ্যতার প্রয়োজন নেই, সেখানে ‘আপন লোক’ প্রয়োজন, সেটাই দক্ষতা। সেটাই যোগ্যতা। কিন্তু শুধু মুদির দোকান, সেলুন আর দরজির সেলাইখানা দিয়ে তো আর দেশ চলবে না। নিয়ম অনুযায়ী সরকারি পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য তো আছে একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। সরকারি কর্মকমিশন বা পাবলিক সার্ভিস কমিশন অথবা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের কাজই হলো সরকারের কর্মে নিয়োগ দেওয়া। তবে খোদ সরকারি কর্মকমিশনে কারা মেম্বার-চেয়ারম্যান হবেন, তার কোনো আইন নেই নির্বাচনের জন্য। আর বলা বাহুল্য, কোনো আইন নেই বিচারপতিদের জন্যও। ইদানীং নির্বাচন কমিশনের মেম্বার ও চেয়ারম্যান নিয়োগে কী যেন সার্চ কমিটি বা ওই গোছের কিছু একটা করা হয়েছিল। বদ নিয়ত। নিম্ন আদালতের প্রবেশপদ, অর্থাৎ সহকারী বিচারকদের নিয়োগের জন্য ন্যূনতম যোগ্যতার বিধান আছে, তারপর এমসিকিউ, দশ না বারো পেপারে লিখিত পরীক্ষা, ইন্টারভিউ এবং সবশেষে স্বাস্থ্য ও গোয়েন্দা পরীক্ষা। সহকারী বিচারক নিয়োগ-সংক্রান্ত এসব কর্মীর জন্য আছে আলাদা প্রতিষ্ঠান, অর্থাৎ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন। সার্চ কমিটি কাদের নিয়ে গঠিত হবে, অর্থাৎ কারা পরীক্ষা নেবেন, সেটাও আইনে বলে দেওয়া আছে। যেহেতু আইনে বলে দেওয়া আছে, সেহেতু স্ট্যান্টবাজির দরকার নেই।
৩. সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৫ (২) (গ)-তে বিচারপতিদের নিয়োগের জন্য আইন দ্বারা যোগ্যতা নির্ধারণের নির্দেশনা আছে। এই নিয়ে আলাপ-আলোচনা, লেখালেখি, সেমিনার-টক শো হচ্ছে বছরের পর বছর। সর্বশেষ দেখলাম মিজানুর রহমান খান লিখেছেন প্রথম আলোয় ‘সুপ্রিম কোর্টকেই নেতৃত্ব দিতে হবে’ এই শিরোনামে (প্রথম আলো, ১৪ ফেব্রুয়ারি, পৃষ্ঠা ১০)। মুখে আইনের শাসন ও গণতন্ত্রের কথা যতই ঘন ঘন বলা হোক না কেন, ক্ষমতাকে কেউ আইন দ্বারা সীমিত করতে চায় না। রাজা-বাদশাহদের সময় ওনাদের, অর্থাৎ জাহাঁপনাদের ক্ষমতা কোনো আইনের দ্বারা সীমিত ছিল না। কাকে কোন পদে বসাবেন, সেটা ছিল তাদের একচ্ছত্র এখতিয়ার। সেই যুগ আর নেই। বলা হয়, আমরা এখন প্রজাতন্ত্র, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের যুগে ঢুকে গেছি, কিন্তু ইচ্ছেমতো নিয়োগ দেওয়ার খায়েশটা ছাড়তে পারছি না। পূর্বপুরুষেরা জমিদার থাকুক না থাকুক। কোথায় যেন পড়েছিলাম বা শুনেছিলাম, পাকিস্তানের বেনজির ভুট্টো নাকি মৃত্যুর আগে উইল করে বলেছিলেন, তাঁর মৃত্যুর পর পাকিস্তান পিপলস পার্টির প্রধান হবেন তাঁর পুত্র। হয়েছিলও তা-ই, বেনজির ভুট্টো নিহত হওয়ার পর। তখন তাঁর পুত্রের বয়স ছিল ১৯ বা ২০। এখন দেখছি আমাদের বিএনপিও সেই পথে এগোচ্ছে। পার্টি নাকি চলছে সুদূর লন্ডন থেকে। ব্যক্তিবিশেষের খায়েশের রাজনীতি ও গণতন্ত্রে স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। ষোড়শ সংশোধনী মামলায় সাতজনের মধ্যে ছয়জনই ছোট-বড় আলাদা আলাদা রায় দিয়েছেন। ওই মামলায় বিচারপতি মির্জা হোসেন হায়দারের পৃথক রায়ের প্রায় পুরোটা জুড়েই বিচারপতি নিয়োগের আইনের প্রয়োজনীয়তার কথা উঠে এসেছে। তাঁর মোদ্দা কথা হলো, বিচারপতি নিয়োগ-সংক্রান্ত আইন ছাড়া বিচার বিভাগ সঠিকভাবে স্বাধীন হয় না। বর্তমান সরকার বা তার আগের সরকার কেউই চায়নি যে বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন হোক। আর তাই বিচারপতি নিয়োগে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা বহাল রাখতে এ-সংক্রান্ত আইন পাস হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’ স্লোগানটা বিচারপতি নিয়োগকে লক্ষ্য করে রচিত হয়নি।
ড. শাহদীন মালিক : সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের আইনের শিক্ষক।
No comments