ট্রাম্পকে জেতাতে টাকা ঢেলেছে রাশিয়া
২০১৬
সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জেতাতে কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ ঢেলেছে
রাশিয়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে, বিজ্ঞাপন বানিয়ে,
হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে অনলাইন বিক্ষোভকারীদের অর্থ দেয়াসহ নানাভাবে
প্রপাগান্ডা চালিয়েছে রাশিয়া। এমনকি মার্কিনি সেজে অনলাইনে ট্রাম্পের পক্ষে
প্রচারণা চালিয়েছেন রাশিয়ানরা। নির্বাচনে রুশ সংযোগ নিয়ে গঠিত বিশেষ
কাউন্সেল রবার্ট মুলারের তদন্ত জালে এসব ধরা পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের
নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগে শুক্রবার ১৩ রুশ ও তিন প্রতিষ্ঠানের
বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজনের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি
ব্যবহার করে আর্থিক জালিয়াতি এবং পাঁচজনের বিরুদ্ধে অন্যের পরিচয়
ব্যবহারেরও অভিযোগ আনা হয়েছে। নির্বাচনে প্রভাব খাটাতে যেসব অস্ত্র ব্যবহার
করেছে রাশিয়া, তার বর্ণনা দিয়েছে এএফপি। মুলারের তদন্তের আলোকে বলা হচ্ছে,
রাশিয়ানরা নিজেদের পরিচয় লুকিয়ে মার্কিন নাগরিক সেজে সামাজিক
যোগাযোগমাধ্যমে হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়েছিলেন। পরিচয়
পাল্টে তারা আর্থিক লেনদেন ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে, যেন সাধারণ
আমেরিকানরা তাদের ভিনদেশি না ভাবে। অভিযুক্তের তালিকায় থাকা ইন্টারনেট
রিসার্চ এজেন্সি এলএলসি রুশ প্রেসিডেন্ট ভাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ ইয়েভগেনি
ভিক্টরভিচ প্রিগোঝিনের অর্থায়নে পরিচালিত।
সেইন্ট পিটার্সবার্গভিত্তিক
সংস্থাটি ২০১৪ সাল থেকে প্রচারণা শুরু করে। রুশ গণমাধ্যম এর আগে প্রতিবেদনে
জানায়, কোম্পানিটির সঙ্গে রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার আঁতাত রয়েছে। মুলারের
তদন্ত নিয়ে আদালতের অভিযোগে বলা হয়, রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক দলের
নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকে ট্রাম্পের পক্ষে ও হিলারির বিরুদ্ধে কাজ
শুরু করে এলএলসি কোম্পানি। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে এক মাসে ১২ লাখ ডলার
অর্থ ব্যয় করে রাশিয়ার কোম্পানিটি। ভোটারদের কিনে নিতেও এসব অর্থ ব্যবহার
করা হয়েছে। রাশিয়ানরা বিভিন্নজনের কাছ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার
করে অর্থও সংগ্রহ করে। প্রাথমিকভাবে তাদের লক্ষ্য ছিল হিলারি সম্পর্কে
অপমানজনক তথ্য সরবরাহ। তারা টেড ক্রুজ ও মার্কো রুবিওর মতো অন্যান্য
মনোনয়নপ্রত্যাশীদের প্রচারে কালি লেপনের কাজেও নিয়োজিত ছিল। তাদের সমর্থন
ছিল প্রথমে বার্নি স্যান্ডার্সের প্রতি এবং পরে ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রড রজেনস্টাইন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন,
অভিযুক্তরা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও প্রার্থীদের মধ্যে অবিশ্বাসের বাতাবরণ
ছড়িয়ে দিতে ‘তথ্যযুদ্ধ’ শুরু করেছিল। অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, ফেসবুক,
টুইটার, ইন্সটাগ্রামসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া অ্যাকাউন্ট ও
পেজ খুলে রাশিয়ার ওই কোম্পানিটি। এসব পেজের মধ্যে ছিল সিকিউরড বর্ডার,
ব্লাকটিভিস্ট, ইউনাইটেড মুসলিমস অব আমেরিকা অ্যান্ড আর্মি অব জেসাস
ইত্যাদি।
No comments