বিএনপি নির্বাচনে আসবে by আলফাজ আনাম ও হাবিবুর রহমান
আবদুল মতিন খসরু |
আবদুল
মতিন খসরু। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী। কুমিল্লায়
১৯৫০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে কুমিল্লা-৫ আসন থেকে
জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৭ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি আইন,
বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৮ ও ২০১৪
সালে তিনি আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বর্তমান আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক
সংসদীয় কমিটির সভাপতি। এ ছাড়া তিনি ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অব এশিয়ান
পলিটিক্যাল পার্টিজের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য। আগামী নির্বাচন ও বিএনপি
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা-পরবর্তী বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে
নয়া দিগন্তের সাথে কথা বলেছেন। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলফাজ আনাম ও হাবিবুর রহমান
নয়া দিগন্ত : আওয়ামী লীগ নির্বাচনের জন্য কতটা প্রস্তুত?
আবদুল মতিন খসরু : আওয়ামী লীগ শতভাগ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আওয়ামী লীগ তৃণমূল পর্যন্ত সংগঠিত সংগঠন। এমন কোনো গ্রাম নেই, ইউনিয়ন নেই, যেখানে আওয়ামী লীগের সংগঠন নেই। তৃণমূলপর্যায় থেকে আমরা নির্বাচনের জন্য কাজ করছি।
নয়া দিগন্ত : প্রধানমন্ত্রী বলছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন- সেভাবে কি প্রস্তুতি চলছে?
মতিন খসরু : দেখুন, নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের ৫ বছর সমাপ্তির তিন মাস আগে নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু করতে হয়। সে হিসাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হবে। আমরাও সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
নয়া দিগন্ত : আপনারা নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ভোট চাইছেন, কিন্তু বিএনপি তো নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেনি- সেই পরিবেশ নেই বলে তারা দাবি করছেন। এ ব্যাপারে আপনার মত কী?
মতিন খসরু : মাঠপর্যায়ে নির্বাচনের কাজ তারাও শুরু করেছে। কেন্দ্রীয়পর্যায়ে তারা সেভাবে শুরু করেনি। জেলা বা উপজেলাপর্যায়ে তারাও নির্বাচনের জন্য কাজ করছে। তবে কেন্দ্রে আমরা যেভাবে করছি, তারা সেভাবে করছে না।
নয়া দিগন্ত : বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, তাদের নেত্রীকে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। এ অবস্থানকে কিভাবে দেখছেন?
মতিন খসরু : এটা তো রাজনৈতিক বক্তব্য। আমরা হলেও এমন বক্তব্য দিতাম। কারণ নির্বাচনে যাবে কি যাবে না; তাদের নেত্রী মুক্ত থাকবেন কি থাকবেন না তা সরকারের ওপর নির্ভর করে না। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া জেলে আছেন, তাতে সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় আদালত তাকে পাঁচ বছরের জেল দিয়েছে। আপিল করলে জামিন হতেও পারে।
নয়া দিগন্ত : আগামী নির্বাচনে তার কারাদণ্ড কী ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন?
মতিন খসরু : এটা ভবিষ্যৎ বলতে পারবে।
নয়া দিগন্ত : বিএনপির জন্য নির্বাচনের চেয়ে এখন খালেদা জিয়ার রায় এবং জেলে থাকা বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে...
মতিন খসরু : স্বাভাবিক। তারা যদি জনমনে সহানুভূতি অর্জন করতে পারে, তাহলে তো রাজনৈতিক সুবিধা পাবে।
নয়া দিগন্ত : তারা কি সহানুভূতি পাচ্ছে?
মতিন খসরু : জনগণের মধ্যে এ রকম সাড়া তো আমরা দেখি না। বেগম জিয়া আদালতের মাধ্যমে জেলে যাওয়ার কারণে যে প্রতিক্রিয়া তা সে রকম দেখছি না। দল তো স্বাভাবিক চলছে।
নয়া দিগন্ত : এমন সন্দেহ আছে যে, বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে আরো যেসব মামলা আছে সেগুলোতে গ্রেফতার দেখিয়ে তার মুক্তির পথ রুদ্ধ করা হবে।
মতিন খসরু : এখনো এ ধরনের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়নি। বিএনপি নেতারা এমন কথা বললেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, এখনো শ্যোন অ্যারেস্ট বা গ্রেফতার দেখানো হয়নি। তাদের এই বক্তব্যের ভিত্তি কী, আমি বলতে পারব না।
নয়া দিগন্ত : বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখার জন্য দল ভাঙার একটা প্রচেষ্টা আছে- এমন অভিযোগ কিভাবে দেখেন?
মতিন খসরু : এত সোজা নয়। বিএনপি একটি পরিপক্ব রাজনৈতিক দল। সুতরাং আমরা বললেই বিএনপি নির্বাচনের বাইরে থাকবে না। একবার বাইরে থেকে তারা দেখেছে, কত ক্ষতি হয়েছে।
নয়া দিগন্ত : খালেদা জিয়ার জামিন পাওয়ার দিকটি একজন আইনজীবী হিসেবে কিভাবে দেখেন?
মতিন খসরু : আপিল করলে হয়তো তিনি জামিন পাবেন। একজন নারী ও বয়স্ক মানুষ, একই সাথে দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি জামিন পেতে পারেন বলে আমার ধারণা।
নয়া দিগন্ত : অভিযোগ আছে এরশাদকে খুশি করার জন্য বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে এসব মামলা। আপনার মন্তব্য কী?
মতিন খসরু : ভিত্তিহীন বক্তব্য। এরশাদের বিরুদ্ধে এখনো অনেক মামলা আছে।
নয়া দিগন্ত : কিন্তু জাতীয় পার্টির একজন মন্ত্রীসহ একাধিক মন্ত্রী রায়ের আগে বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া জেলে যাবেন’। এ নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে?
মতিন খসরু : বেগম জিয়ার জেলে যাওয়া নিয়ে মন্ত্রীরা যদি এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে থাকেন, তা আমার কাছে সমীচীন মনে হয় না। কোনো বিচারাধীন মামলার ব্যাপারে মন্তব্য করা সমীচীন নয় বলে আমি মনে করি।
নয়া দিগন্ত : ২০১৪ সালের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। সব দল অংশ নেয়নি। এবারের নির্বাচন কি অংশগ্রহণমূলক হবে বলে মনে করেন?
মতিন খসরু : দেখুন, ২০১৪ সালের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ ছিল না। কারণ, সংবিধান অনুযায়ী একটি সরকার নির্বাচিত হয় পাঁচ বছরের জন্য। পাঁচ বছর পরে একটি সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে, সে দল সরকার গঠন করে থাকে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা সব রাজনৈতিক দলের জন্য বাধ্যতামূলক ছিল। যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি; বিশেষ করে বিএনপি অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল- তারা নিজের পায়ে নিজেরা কুঠার মেরেছিল। আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তারা যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করত, হয়তো তারা সরকার গঠন করত অথবা শক্তিশালী বিরোধী দল হতো। আজকে তারা কোথাও নেই- না সরকারি দলে, না বিরোধী দলে। এই সিদ্ধান্ত বিএনপিকে ২০ বছর পিছিয়ে দিয়েছে। এখন বিএনপি এই ভুল আবার করবে বলে মনে হয় না।
নয়া দিগন্ত : নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সংশয় তো দূর হয়নি...
মতিন খসরু : এখন ছবিসহ ভোটার আইডি কার্ড, সচেতন ও সতর্ক প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া, দেশী-বিদেশী পর্যবেক্ষক থাকা অবস্থায় ইচ্ছে করলেও নির্বাচনে কারচুপি করার কোনো সুযোগ নেই। ফলে নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের কোনো কারণ নেই। আগামী নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু হবে। কোনো অবস্থাতেই কারচুপির সুযোগ নেই। জনগণ যাদের ভোট দেবে, তারা সরকার গঠন করবে।
নয়া দিগন্ত : বিএনপি কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহায়ক সরকার বা নির্বাচনকালীন সরকারের কথা বলছে। বিষয়টি কিভাবে দেখেন?
মতিন খসরু : নির্বাচনকালীন সরকার বলতে যা বলা হচ্ছে, নির্দলীয় সরকার গঠনের সুযোগ আমাদের সংবিধানে নেই। নির্বাচনকালীন সরকার হবে বিদ্যমান সরকার। নির্বাচিত সরকার থাকবে, এটাই সংবিধানের নিয়ম। তবে তারা থাকবেন নির্বাচন কমিশনের অধীন।
নয়া দিগন্ত : এই সরকারের ছোট মন্ত্রিসভা রুটিন কাজ করবে?
মতিন খসরু : রুটিন কাজ করবে- এ কথা এখানে নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ক্ষেত্রে রুটিন কাজের কথা বলা আছে। কিন্তু এখন যে সাংবিধানিক অবস্থা, তাতে স্বাভাবিক কাজ করতে পারবে। তবে কনভেনশন অনুযায়ী মন্ত্রিসভা ছোট হবে।
নয়া দিগন্ত : বিএনপি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ চায়। তা কতটুকু আছে বলে মনে করেন?
মতিন খসরু : খুব স্বাভাবিক। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সবাই চায়।
নয়া দিগন্ত : কতটা সে পরিবেশ আছে?
মতিন খসরু : আমরা মনে করি, সে পরিবেশ আছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন যেমন উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করেছে। অবশ্যই নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বিদ্যমান থাকবে। পাকিস্তান সরকারের অধীনেও তো আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। জনসমর্থন থাকলে, কেউ কারচুপি করলে জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করতে পারবে।
নয়া দিগন্ত : বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার কারণে তারা তো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারছেন না।
মতিন খসরু : আমার জানা মতে, রাজনৈতিক হয়রানির জন্য আওয়ামী লীগ সরকার কারো বিরুদ্ধে মামলা করেনি।
নয়া দিগন্ত : আপনি কি মনে করেন নির্বাচনে অংশ নেয়ার মতো সবার সমান সুযোগ আছে?
মতিন খসরু : এটা তো বিএনপি বলবে। আমরা মনে করি, এই পরিবেশে তারা নির্বাচন করতে পারেন।
নয়া দিগন্ত : আওয়ামী লীগ নির্বাচনের জন্য কতটা প্রস্তুত?
আবদুল মতিন খসরু : আওয়ামী লীগ শতভাগ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আওয়ামী লীগ তৃণমূল পর্যন্ত সংগঠিত সংগঠন। এমন কোনো গ্রাম নেই, ইউনিয়ন নেই, যেখানে আওয়ামী লীগের সংগঠন নেই। তৃণমূলপর্যায় থেকে আমরা নির্বাচনের জন্য কাজ করছি।
নয়া দিগন্ত : প্রধানমন্ত্রী বলছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন- সেভাবে কি প্রস্তুতি চলছে?
মতিন খসরু : দেখুন, নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের ৫ বছর সমাপ্তির তিন মাস আগে নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু করতে হয়। সে হিসাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হবে। আমরাও সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
নয়া দিগন্ত : আপনারা নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ভোট চাইছেন, কিন্তু বিএনপি তো নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেনি- সেই পরিবেশ নেই বলে তারা দাবি করছেন। এ ব্যাপারে আপনার মত কী?
মতিন খসরু : মাঠপর্যায়ে নির্বাচনের কাজ তারাও শুরু করেছে। কেন্দ্রীয়পর্যায়ে তারা সেভাবে শুরু করেনি। জেলা বা উপজেলাপর্যায়ে তারাও নির্বাচনের জন্য কাজ করছে। তবে কেন্দ্রে আমরা যেভাবে করছি, তারা সেভাবে করছে না।
নয়া দিগন্ত : বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, তাদের নেত্রীকে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। এ অবস্থানকে কিভাবে দেখছেন?
মতিন খসরু : এটা তো রাজনৈতিক বক্তব্য। আমরা হলেও এমন বক্তব্য দিতাম। কারণ নির্বাচনে যাবে কি যাবে না; তাদের নেত্রী মুক্ত থাকবেন কি থাকবেন না তা সরকারের ওপর নির্ভর করে না। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া জেলে আছেন, তাতে সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় আদালত তাকে পাঁচ বছরের জেল দিয়েছে। আপিল করলে জামিন হতেও পারে।
নয়া দিগন্ত : আগামী নির্বাচনে তার কারাদণ্ড কী ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন?
মতিন খসরু : এটা ভবিষ্যৎ বলতে পারবে।
নয়া দিগন্ত : বিএনপির জন্য নির্বাচনের চেয়ে এখন খালেদা জিয়ার রায় এবং জেলে থাকা বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে...
মতিন খসরু : স্বাভাবিক। তারা যদি জনমনে সহানুভূতি অর্জন করতে পারে, তাহলে তো রাজনৈতিক সুবিধা পাবে।
নয়া দিগন্ত : তারা কি সহানুভূতি পাচ্ছে?
মতিন খসরু : জনগণের মধ্যে এ রকম সাড়া তো আমরা দেখি না। বেগম জিয়া আদালতের মাধ্যমে জেলে যাওয়ার কারণে যে প্রতিক্রিয়া তা সে রকম দেখছি না। দল তো স্বাভাবিক চলছে।
নয়া দিগন্ত : এমন সন্দেহ আছে যে, বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে আরো যেসব মামলা আছে সেগুলোতে গ্রেফতার দেখিয়ে তার মুক্তির পথ রুদ্ধ করা হবে।
মতিন খসরু : এখনো এ ধরনের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়নি। বিএনপি নেতারা এমন কথা বললেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, এখনো শ্যোন অ্যারেস্ট বা গ্রেফতার দেখানো হয়নি। তাদের এই বক্তব্যের ভিত্তি কী, আমি বলতে পারব না।
নয়া দিগন্ত : বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখার জন্য দল ভাঙার একটা প্রচেষ্টা আছে- এমন অভিযোগ কিভাবে দেখেন?
মতিন খসরু : এত সোজা নয়। বিএনপি একটি পরিপক্ব রাজনৈতিক দল। সুতরাং আমরা বললেই বিএনপি নির্বাচনের বাইরে থাকবে না। একবার বাইরে থেকে তারা দেখেছে, কত ক্ষতি হয়েছে।
নয়া দিগন্ত : খালেদা জিয়ার জামিন পাওয়ার দিকটি একজন আইনজীবী হিসেবে কিভাবে দেখেন?
মতিন খসরু : আপিল করলে হয়তো তিনি জামিন পাবেন। একজন নারী ও বয়স্ক মানুষ, একই সাথে দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি জামিন পেতে পারেন বলে আমার ধারণা।
নয়া দিগন্ত : অভিযোগ আছে এরশাদকে খুশি করার জন্য বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে এসব মামলা। আপনার মন্তব্য কী?
মতিন খসরু : ভিত্তিহীন বক্তব্য। এরশাদের বিরুদ্ধে এখনো অনেক মামলা আছে।
নয়া দিগন্ত : কিন্তু জাতীয় পার্টির একজন মন্ত্রীসহ একাধিক মন্ত্রী রায়ের আগে বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া জেলে যাবেন’। এ নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে?
মতিন খসরু : বেগম জিয়ার জেলে যাওয়া নিয়ে মন্ত্রীরা যদি এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে থাকেন, তা আমার কাছে সমীচীন মনে হয় না। কোনো বিচারাধীন মামলার ব্যাপারে মন্তব্য করা সমীচীন নয় বলে আমি মনে করি।
নয়া দিগন্ত : ২০১৪ সালের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। সব দল অংশ নেয়নি। এবারের নির্বাচন কি অংশগ্রহণমূলক হবে বলে মনে করেন?
মতিন খসরু : দেখুন, ২০১৪ সালের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ ছিল না। কারণ, সংবিধান অনুযায়ী একটি সরকার নির্বাচিত হয় পাঁচ বছরের জন্য। পাঁচ বছর পরে একটি সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে, সে দল সরকার গঠন করে থাকে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা সব রাজনৈতিক দলের জন্য বাধ্যতামূলক ছিল। যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি; বিশেষ করে বিএনপি অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল- তারা নিজের পায়ে নিজেরা কুঠার মেরেছিল। আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তারা যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করত, হয়তো তারা সরকার গঠন করত অথবা শক্তিশালী বিরোধী দল হতো। আজকে তারা কোথাও নেই- না সরকারি দলে, না বিরোধী দলে। এই সিদ্ধান্ত বিএনপিকে ২০ বছর পিছিয়ে দিয়েছে। এখন বিএনপি এই ভুল আবার করবে বলে মনে হয় না।
নয়া দিগন্ত : নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সংশয় তো দূর হয়নি...
মতিন খসরু : এখন ছবিসহ ভোটার আইডি কার্ড, সচেতন ও সতর্ক প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া, দেশী-বিদেশী পর্যবেক্ষক থাকা অবস্থায় ইচ্ছে করলেও নির্বাচনে কারচুপি করার কোনো সুযোগ নেই। ফলে নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের কোনো কারণ নেই। আগামী নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু হবে। কোনো অবস্থাতেই কারচুপির সুযোগ নেই। জনগণ যাদের ভোট দেবে, তারা সরকার গঠন করবে।
নয়া দিগন্ত : বিএনপি কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহায়ক সরকার বা নির্বাচনকালীন সরকারের কথা বলছে। বিষয়টি কিভাবে দেখেন?
মতিন খসরু : নির্বাচনকালীন সরকার বলতে যা বলা হচ্ছে, নির্দলীয় সরকার গঠনের সুযোগ আমাদের সংবিধানে নেই। নির্বাচনকালীন সরকার হবে বিদ্যমান সরকার। নির্বাচিত সরকার থাকবে, এটাই সংবিধানের নিয়ম। তবে তারা থাকবেন নির্বাচন কমিশনের অধীন।
নয়া দিগন্ত : এই সরকারের ছোট মন্ত্রিসভা রুটিন কাজ করবে?
মতিন খসরু : রুটিন কাজ করবে- এ কথা এখানে নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ক্ষেত্রে রুটিন কাজের কথা বলা আছে। কিন্তু এখন যে সাংবিধানিক অবস্থা, তাতে স্বাভাবিক কাজ করতে পারবে। তবে কনভেনশন অনুযায়ী মন্ত্রিসভা ছোট হবে।
নয়া দিগন্ত : বিএনপি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ চায়। তা কতটুকু আছে বলে মনে করেন?
মতিন খসরু : খুব স্বাভাবিক। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সবাই চায়।
নয়া দিগন্ত : কতটা সে পরিবেশ আছে?
মতিন খসরু : আমরা মনে করি, সে পরিবেশ আছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন যেমন উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করেছে। অবশ্যই নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বিদ্যমান থাকবে। পাকিস্তান সরকারের অধীনেও তো আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। জনসমর্থন থাকলে, কেউ কারচুপি করলে জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করতে পারবে।
নয়া দিগন্ত : বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার কারণে তারা তো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারছেন না।
মতিন খসরু : আমার জানা মতে, রাজনৈতিক হয়রানির জন্য আওয়ামী লীগ সরকার কারো বিরুদ্ধে মামলা করেনি।
নয়া দিগন্ত : আপনি কি মনে করেন নির্বাচনে অংশ নেয়ার মতো সবার সমান সুযোগ আছে?
মতিন খসরু : এটা তো বিএনপি বলবে। আমরা মনে করি, এই পরিবেশে তারা নির্বাচন করতে পারেন।
No comments