ইংরেজি ও গণিতের প্রভাব সবখানে
পরীক্ষার
ফলে প্রতিবছরই মাইলফলক ভাঙছিল পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির খুদে শিক্ষার্থীরা।
কিন্তু এবার তাতে ছেদ পড়েছে। পাসের হার ও জিপিএ-৫ সহ প্রায় সব সূচকেই এবার
বেশ খারাপ ফল করেছে এই দুই স্তরের শিক্ষার্থীরা। অষ্টম শ্রেণির জেএসসিতে
পাসের হার গেলবারের চেয়ে এক লাফে প্রায় ১০ শতাংশ কমেছে। সর্বোচ্চ ফল
জিপিএ-৫ কমেছে সাড়ে ৫০ হাজারের বেশি। আর পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক শিক্ষা
সমাপনীতে পাসের হার ৩ শতাংশের বেশি কমেছে। ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে,
জেএসসিতে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের ফল বিপর্যয় এবং সব বোর্ডেই ইংরেজি ও
গণিতের ফল আগের বছরের চেয়ে খারাপ হওয়ায় সার্বিক ফলে প্রভাব পড়েছে। ইংরেজি ও
গণিতে খারাপ করায় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ফলও তুলনামূলক খারাপ
হয়েছে। জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার
প্রথম আলোকে বলেন, ইংরেজি ও গণিতের ফল খারাপ এবং এসএসসি ও এইচএসসি
পরীক্ষার মতো জেএসসিতে উত্তরপত্র মূল্যায়নে আনা পরিবর্তনও প্রভাব ফেলেছে।
একাধিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রথম আলোকে বলেন, এবার শারীরিক
শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, কর্মমুখী শিক্ষা এবং চারু ও কারুকলা-ব্যবহারিকনির্ভর
এই তিন বিষয়ের পরীক্ষা বোর্ডের অধীনে হয়নি। বিদ্যালয়ে এ বিষয়গুলোর
ধারাবাহিকভাবে মূল্যায়ন হচ্ছে। ধারাবাহিক মূল্যায়নের ফল বোর্ডে পাঠানো হলেও
তা ফলাফলে ভূমিকা রাখবে না। প্রথমবারের মতো হওয়ায় এটাও ফলাফলে প্রভাব
ফেলেছে। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও জেএসসি এবং সমমানের পরীক্ষার ফল গতকাল
শনিবার প্রকাশ করা হয়েছে। জেএসসিতে আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন এবার
মোট পরীক্ষা দিয়েছিল ২১ লাখ ৩ হাজার ৭৬৩ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৭ লাখ ৭
হাজার ২৪ জন।
পাসের হার গতবারের চেয়ে ৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ বিন্দু কমেছে। এবার
পাসের হার ৮৩ দশমিক ১০ শতাংশ। যা গতবার ছিল ৯২ দশমিক ৮৯ শতাংশ। এবার
জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ১ লাখ ৮৪ হাজার ৩৯৭। গতবার ছিল ২ লাখ ৩৫ হাজার ৫৯
জন। কমেছে ৫০ হাজার ৬৬২ জন। শুধু তাই নয়, জেএসসিতে শতভাগ শিক্ষার্থী পাস
করা প্রতিষ্ঠান গতবারের চেয়ে ২ হাজার ৬৮৮টি কমেছে। এবার এমন প্রতিষ্ঠান ৩
হাজার ৫৫৯টি। যা গতবার ছিল ৬ হাজার ২৪৭টি। আর শূন্য পাস করা বিদ্যালয়ও
বেড়েছে। গত বছর আটটি বিদ্যালয় থেকে কেউ পাস করেনি। এবার এমন প্রতিষ্ঠান
বেড়ে হয়েছে ৩৪টি। বোর্ডগুলোর বিষয়ভিত্তিক ফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ‘কঠিন’
বিষয় হিসেবে পরিচিত ইংরেজি ও গণিতের ফল এবার আগের বছরের চেয়ে বেশ খারাপ
হয়েছে। ঢাকা বোর্ডে এবার ইংরেজি বিষয়ে পাসের হার প্রায় ৬ শতাংশ বিন্দু
কমেছে। পাসের হার ৮৮ দশমিক ২৫ শতাংশ। যা গতবার ছিল ৯৪ দশমিক ১৪। এই বোর্ডে
গণিতেও পাসের হার প্রায় ৬ শতাংশ বিন্দু কমেছে। এবার এ বিষয়ে পাসের হার ৯১
দশমিক ৩৯ শতাংশ। ঢাকা বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় সার্বিক হারেও
এর প্রভাব পড়ে। এই বোর্ডে পাসের হার ৮১ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা জেএসসির গড়
পাসের হারের চেয়ে কম। ইংরেজি ও গণিতে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষার্থীরা
আরও বেশি খারাপ করেছে। এই বোর্ডে ইংরেজি বিষয়ে পাস করেছে ৭০ দশমিক ৭০
শতাংশ শিক্ষার্থী। এখানে ইংরেজিতে গতবারের চেয়ে ২১ দশমিক ৩৮ শতাংশ বিন্দু
কম পাস করেছে। গণিতেও এই বোর্ডের শিক্ষার্থীরা খারাপ করেছে। এবার গণিতে এই
বোর্ডে পাসের হার ৮২ দশমিক ৪৬ শতাংশ। যা গতবার ছিল ৯৭ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং একাধিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রথম
আলোকে বলেন, ইংরেজি ও গণিতে বিপর্যয়ের কারণে কুমিল্লা বোর্ডের ফলও বিপর্যয়
হয়েছে। এই বোর্ডে এবার পাসের হার ৬২ দশমিক ৮৩ শতাংশ। যা গড় পাসের চেয়েও ২০
দশমিক ২৭ শতাংশ কম। গত এইচএসসিতেও কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের ফল বিপর্যয়
হয়েছিল। যা সার্বিক ফলে প্রভাব পড়েছিল। ফল খারাপের কারণ জানতে চাইলে
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সচিবালয়ে ফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ
সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা কোনো কিছু গোপন করি না, যা ফল হয়েছে তাই প্রকাশ
করেছি। সার্বিক মূল্যায়নের জন্য সময় দরকার।’
প্রাথমিকের খারাপের কারণও ইংরেজি-গণিত
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় মোট ২৬ লাখ ৯৬ হাজার ২১৬ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ২৫ লাখ ৬৬ হাজার ২৭১ জন। গড় পাসের হার ৯৫ দশমিক ১৮ শতাংশ। যা গতবার ছিল ৯৮ দশমিক ৫১ শতাংশ। ফল বিশ্লেষণে পাসের হার কমে যাওয়ার কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, গতবারের চেয়ে এবার ইংরেজিতে প্রায় ২ শতাংশ কম পাস করেছে। এবার ‘কঠিন’ বিষয় হিসেবে পরিচিত ইংরেজি বিষয়ে পাসের হার ৯৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। ২০১২ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত ছয় বছরে বিষয়ভিত্তিক ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, এবারই ইংরেজিতে পাসের হার সবচেয়ে কম। এর আগে সব সময়ই এ বিষয়ে পাসের হার ৯৯ শতাংশের বেশি ছিল। গণিতেও এবার গতবারের চেয়ে ১ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী কম পাস করেছে। মূলত এই দুই বিষয়ের ফল তুলনামূলক খারাপ করার কারণেই মোট পাসের হার কমেছে।
ফল খারাপের কারণ জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান সচিবালয়ে ফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এটা মূল্যায়ন করে বলতে হবে।
মেয়েরা এগিয়ে
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দিক দিয়ে যেমন ছাত্রীরা এগিয়ে ছিল, তেমনি পাসের হারেও ছাত্রীরা এগিয়ে। প্রাথমিক সমাপনীতে ছাত্রীদের পাসের হার ৯৫ দশমিক ৪০ শতাংশ। অন্যদিকে ছাত্রদের পাসের হার ৯৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে জিপিএ-৫ পাওয়ার ক্ষেত্রেও মেয়েরা এগিয়ে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ লাখ ৬২ হাজার ৬০৯ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ১ লাখ ৪৭ হাজার ৬১ জন এবং ছাত্র ১ লাখ ১৫ হাজার ৫৪৮ জন।
জেএসসি ও সমমানের পরীক্ষাতেও ছাত্রীরা ভালো করেছে। জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৯১ হাজার ৬২৮ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ১ লাখ ১০ হাজার ৭৩০ জন। এই দুই পরীক্ষায় পাসের হারেও ছাত্রীরা এগিয়ে। ছাত্রীদের পাসের হার ৮৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ, ছাত্রদের ৮৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
সমাপনীতে গোপালগঞ্জ এগিয়ে
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে এবার ৬৪ জেলার মধ্যে গোপালগঞ্জ জেলা প্রথম হয়েছে। এই জেলায় ৯৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করেছে। জেলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে ঝালকাঠি। পাসের হার ৮৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এ ছাড়া বিভাগগুলোর মধ্যে বরিশাল শীর্ষে এবং সিলেট পিছিয়ে। আর যশোরের কেশবপুর উপজেলায় পাসের হার সবচেয়ে কম। এবারের খারাপ ফলাফলের বিষয়ে জানতে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী প্রথম আলোকে বলেন, এটা ঠিক যে ইংরেজি ও গণিতের ফল খারাপ ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে। কিন্তু এই দুই বিষয়ে খারাপের কারণ হলো বিষয়ভিত্তিক দক্ষ শিক্ষকের অভাব। মফস্বলে এই দুই বিষয়ে দক্ষ শিক্ষকের ঘাটতি প্রকট। এর প্রভাব পড়ছে। আর এখন তো পড়াশোনা কোচিং-প্রাইভেটনির্ভর হয়ে গেছে। শ্রেণিকক্ষে পড়াশোনা কমে গেছে। সার্বিকভাবে এর প্রভাবও পড়েছে।
প্রাথমিকের খারাপের কারণও ইংরেজি-গণিত
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় মোট ২৬ লাখ ৯৬ হাজার ২১৬ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ২৫ লাখ ৬৬ হাজার ২৭১ জন। গড় পাসের হার ৯৫ দশমিক ১৮ শতাংশ। যা গতবার ছিল ৯৮ দশমিক ৫১ শতাংশ। ফল বিশ্লেষণে পাসের হার কমে যাওয়ার কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, গতবারের চেয়ে এবার ইংরেজিতে প্রায় ২ শতাংশ কম পাস করেছে। এবার ‘কঠিন’ বিষয় হিসেবে পরিচিত ইংরেজি বিষয়ে পাসের হার ৯৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। ২০১২ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত ছয় বছরে বিষয়ভিত্তিক ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, এবারই ইংরেজিতে পাসের হার সবচেয়ে কম। এর আগে সব সময়ই এ বিষয়ে পাসের হার ৯৯ শতাংশের বেশি ছিল। গণিতেও এবার গতবারের চেয়ে ১ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী কম পাস করেছে। মূলত এই দুই বিষয়ের ফল তুলনামূলক খারাপ করার কারণেই মোট পাসের হার কমেছে।
ফল খারাপের কারণ জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান সচিবালয়ে ফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এটা মূল্যায়ন করে বলতে হবে।
মেয়েরা এগিয়ে
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দিক দিয়ে যেমন ছাত্রীরা এগিয়ে ছিল, তেমনি পাসের হারেও ছাত্রীরা এগিয়ে। প্রাথমিক সমাপনীতে ছাত্রীদের পাসের হার ৯৫ দশমিক ৪০ শতাংশ। অন্যদিকে ছাত্রদের পাসের হার ৯৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে জিপিএ-৫ পাওয়ার ক্ষেত্রেও মেয়েরা এগিয়ে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ লাখ ৬২ হাজার ৬০৯ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ১ লাখ ৪৭ হাজার ৬১ জন এবং ছাত্র ১ লাখ ১৫ হাজার ৫৪৮ জন।
জেএসসি ও সমমানের পরীক্ষাতেও ছাত্রীরা ভালো করেছে। জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৯১ হাজার ৬২৮ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ১ লাখ ১০ হাজার ৭৩০ জন। এই দুই পরীক্ষায় পাসের হারেও ছাত্রীরা এগিয়ে। ছাত্রীদের পাসের হার ৮৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ, ছাত্রদের ৮৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
সমাপনীতে গোপালগঞ্জ এগিয়ে
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে এবার ৬৪ জেলার মধ্যে গোপালগঞ্জ জেলা প্রথম হয়েছে। এই জেলায় ৯৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করেছে। জেলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে ঝালকাঠি। পাসের হার ৮৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এ ছাড়া বিভাগগুলোর মধ্যে বরিশাল শীর্ষে এবং সিলেট পিছিয়ে। আর যশোরের কেশবপুর উপজেলায় পাসের হার সবচেয়ে কম। এবারের খারাপ ফলাফলের বিষয়ে জানতে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী প্রথম আলোকে বলেন, এটা ঠিক যে ইংরেজি ও গণিতের ফল খারাপ ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে। কিন্তু এই দুই বিষয়ে খারাপের কারণ হলো বিষয়ভিত্তিক দক্ষ শিক্ষকের অভাব। মফস্বলে এই দুই বিষয়ে দক্ষ শিক্ষকের ঘাটতি প্রকট। এর প্রভাব পড়ছে। আর এখন তো পড়াশোনা কোচিং-প্রাইভেটনির্ভর হয়ে গেছে। শ্রেণিকক্ষে পড়াশোনা কমে গেছে। সার্বিকভাবে এর প্রভাবও পড়েছে।
No comments