শিক্ষকেরা ফের রাজপথে
প্রাথমিক
শিক্ষকদের পর এবার মাঠে নেমেছেন নন-এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ,
মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা। কয়েক দিন ধরে জাতীয়
প্রেসক্লাবের সামনে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা লাগাতার
অবস্থান কর্মসূচি পালন করে এলেও গতকাল পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো
প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। শিক্ষকনেতারা জানিয়েছেন, আন্দোলনের প্রাথমিক ধাপ
হিসেবে তাঁরা অবস্থান ধর্মঘট পালন করছেন। কিন্তু সরকার দাবি না মানলে
রোববার থেকে তাঁরা আমরণ অনশনে যাবেন। সম্প্রতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
সহকারী শিক্ষকেরা বেতনবৈষম্যের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমরণ অনশন
কর্মসূচি নিয়েছিলেন। তিন দিনের মাথায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে
তাঁরা অনশন ভাঙেন। তিনি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। আমরাও
মনে করি, সরকারের নীতিনির্ধারকদের উচিত আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে
অবিলম্বে আলোচনায় বসা। যে সরকার নিজেকে শিক্ষা ও শিক্ষকবান্ধব বলে দাবি
করে, সেই সরকারের আমলে শিক্ষকদের দাবিদাওয়া আদায়ের জন্য কেন বারবার রাজপথে
নামতে হবে?
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তি নিয়ে অনেক অভিযোগ আছে। অনেক সময়
রাজনৈতিক বিবেচনায় ভালো মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত না করে খারাপ
মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
সরকারীকরণের ক্ষেত্রেও একই অভিযোগ আছে। যেসব শিক্ষক এমপিওভুক্তির দাবিতে
আন্দোলন করছেন, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন পাচ্ছেন না। বর্তমানে
নন-এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান আছে ৫ হাজার ২৪২ট এবং শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ৭৫
থেকে ৮০ হাজার। সর্বশেষ ২০১০ সালে ১ হাজার ৬২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল। গত সাত বছরে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে,
সরকার স্বীকৃতিও দিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা পাবলিক পরীক্ষায়
অংশ নিয়ে পাসও করে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবির বিষয়টি
সহানুভূতির সঙ্গে দেখা উচিত। যে সরকার চার লাখ কোটি টাকার বাজেট দিতে পারে,
সেই সরকার ৭৫ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর দায়িত্ব কেন নিতে পারবে না?
শিক্ষকেরা অভুক্ত থেকে তো শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে পারেন না। যেসব
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আইনি শর্ত মেনে চলছে এবং মানসম্পন্ন শিক্ষা দিচ্ছে, সেসব
প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হোক।
No comments