‘প্রধান বিচারপতির আচরণ সংবিধানবিরোধী’
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা ‘সংবিধান, আইন ও প্রথাবিরোধী’ আচরণ করছেন বলে আবারও অভিযোগ করেছেন আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেছেন, অবসরে যাওয়ার পর যেসব রায় ও আদেশ তিনি লিখেছেন, তা জমা দিতে চাইলেও প্রধান বিচারপতির ‘নির্দেশনার কারণে’ তা নেওয়া হয়নি। অবসরে যাওয়ার পর লেখা সেসব রায় ও আদেশ গ্রহণ করতে রোববার প্রধান বিচারপতির কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন চার মাস আগে অবসরে যাওয়া এই বিচারক। সেই চিঠিতেই এসব অভিযোগের কথা এসেছে। প্রধান বিচারপতিকে তিনি লিখেছেন, “আমি ইতিপূর্বে আপনাকে অবহিত করেছি যে, আপনার এরূপ আচরণ সংবিধান, আইন ও প্রথাবিরোধী ও একই সাথে ন্যায়বিচারের পরিপন্থি।” দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ওই চিঠির বিষয়বস্তু সাংবাদিকদের সামনেও তুলে ধরেন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী। গত ৪ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার কাছে তিনি এই চিঠিটি দেন। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারের কার্যালয় বলছে, এ ধরনের কোনো চিঠি তারা হাতে পাননি। তিনি লিখেছেন, “আমার প্রিজাইডিং জজ, মাননীয় বিচারপতি জনাব মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিয়াকে আমার লেখা সমাপ্ত হওয়া রায় ও আদেশগুলো গ্রহণ করার অনুরোধ করলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করে বলেন যে, মাননীয় প্রধান বিচারপতির নির্দেশনা অনুসারে কোনো অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির লিখিত রায় ও আদেশ গ্রহণ করা যাচ্ছে না।” অবসরের পর ‘বৈষম্যমূলকভাবে’ তার অফিস তালাবন্ধ করে দেওয়ায় এবং অফিসের সব কর্মী ও সুবিধা থেকে তাকে ‘বঞ্চিত’ করায় হাতে লেখা রায়গুলো ‘টাইপ করতে’ পারেননি বলেও উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। প্রধান বিচারপতি পদে দায়িত্ব নেওয়ার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে গত ১৯ জানুয়ারি দেওয়া এক বাণীতে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, কোনো কোনো বিচারপতি অবসর গ্রহণের দীর্ঘদিন পর পর্যন্ত রায় লেখা অব্যাহত রাখেন, যা আইন ও সংবিধান পরিপন্থী। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে প্রধান বিচারপতি বাণীতে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা বাংলাদেশের সংবিধান, আইনের রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধানের শপথ গ্রহণ করেন। কোনো বিচারপতি অবসর গ্রহণের পর তিনি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে গণ্য হন বিধায় তার গৃহীত শপথও বহাল থাকে না। এই বক্তব্যের সূত্র ধরে আইন অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়।
No comments