বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীরা জিয়ার বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়
৭ই
নভেম্বর ঘটনার কয়েক দিন পর ১২ই নভেম্বর আমাকে রংপুরে বদলি করা হয়। সেখানে
তখন সেনাবিদ্রোহ চলছিল। বদলির নির্দেশ পেয়ে আমি সেখানে যাই। সেনা সদস্যদের
মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা সেনা কর্মকর্তারা রীতিমতো ইউনিট লাইনে
রাতযাপন করতে থাকি। এই সময় জিয়া নিজেও সেনাবাহিনীর শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার
জন্য বিভিন্ন সেনানিবাসে যেতে থাকেন। রংপুরেও তিনি আসেন। এসে ধমকের সুরে
বলেন, সবাই যেন নিজ নিজ অস্ত্র অস্ত্রাগারে জমা দিয়ে দেয়। তারপর থেকেই
শৃঙ্খলা ফিরে আসতে শুরু করে। প্রয়াত মেজর জেনারেল আমীন আহম্মেদ চৌধুরী
‘১৯৭১ ও আমার সামরিক জীবন’ বইয়ে এসব কথা লিখেছেন। প্রথমা থেকে প্রকাশিত এ
বইয়ে আরও লেখা হয়েছে, এর মধ্যে সেনাবাহিনীর কাঠামো ও চরিত্র নিয়ে জিয়ার
সঙ্গে তাহেরের বিরোধ চরমে ওঠে। ১২ই নভেম্বরের পরই জিয়া কর্নেল তাহেরের কাছ
থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে শুরু করেন। ২৪শে নভেম্বর জিয়া তাহেরকে বন্দি করেন।
কিছু দিনের মধ্যেই সামরিক আদালতে তার বিচার শুরু হয়। বিচারে তার ফাঁসি হয়।
দ্রুততার সঙ্গে, ১৯৭৬ সালের ২১শে জুলাই তাহেরের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
এদিকে জিয়ার প্রচেষ্টায় সামরিক বাহিনীতে কিছুটা শৃঙ্খলাও ফিরে আসে। কিন্তু এই শৃঙ্খলা বেশি দিন থাকেনি। আবার একের পর এক নানা ঘটনা ঘটতে থাকে। ১৯৭৬ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী রশিদ-ফারুক বিদেশ থেকে দেশে ফিরে আসে। ফারুক সরাসরি বগুড়ায় চলে যায় এবং সেখানে সেনাবিদ্রোহ ঘটায়। তখন আমাকে ২৪ ইস্ট বেঙ্গলকে সঙ্গে নিয়ে বগুড়ায় পাঠানো হয় সেনাবিদ্রোহ দমনের জন্য। এটা করার জন্য কিছুটা কৌশল অবলম্বন করা হয়েছিল। সেই কৌশল হলো, ফারুককে আটক বা বগুড়া থেকে নিয়ে গেলেই বিদ্রোহী সেনারা মনোবল হারিয়ে ফেলবে। তখন অনায়াসেই বিদ্রোহ দমন করা সম্ভব হবে। পাইলট ইয়াসমিন ছিল ফারুকের বোন। ইয়াসমিনের বেশ প্রভাব ছিল ফারুকের ওপর। জিয়ার নির্দেশে সেনা কর্তৃপক্ষ ইয়াসমিনকে ফ্লাইং ক্লাবের প্লেনে বগুড়ায় পাঠায়। তিনি বগুড়ায় গিয়ে তার ভাইকে জোর করে প্লেনে উঠিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসেন। এরপর বিদ্রোহী সেনারা মনোবল হারিয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীরা ১৯৮০ সালের শেষের দিকে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে একটি অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর জিয়াউর রহমানই এদের বিদেশে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিলেন। তবে রশিদ-ফারুক সেই চাকরি নেয়নি। অন্যরা নিয়েছিল। জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান ঘটানোর ব্যর্থ চেষ্টার পর এবার তারা সবাই চাকরিচ্যুত হয় এবং বিদেশে ফেরারি জীবনযাপন করতে থাকে। ১৯৮১ সালের পর এরশাদ আবার তাদের পুনর্বাসন করেন এবং বকেয়া বেতন দেন। তাদের এই সুযোগ-সুবিধা ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বহাল ছিল।
এদিকে জিয়ার প্রচেষ্টায় সামরিক বাহিনীতে কিছুটা শৃঙ্খলাও ফিরে আসে। কিন্তু এই শৃঙ্খলা বেশি দিন থাকেনি। আবার একের পর এক নানা ঘটনা ঘটতে থাকে। ১৯৭৬ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী রশিদ-ফারুক বিদেশ থেকে দেশে ফিরে আসে। ফারুক সরাসরি বগুড়ায় চলে যায় এবং সেখানে সেনাবিদ্রোহ ঘটায়। তখন আমাকে ২৪ ইস্ট বেঙ্গলকে সঙ্গে নিয়ে বগুড়ায় পাঠানো হয় সেনাবিদ্রোহ দমনের জন্য। এটা করার জন্য কিছুটা কৌশল অবলম্বন করা হয়েছিল। সেই কৌশল হলো, ফারুককে আটক বা বগুড়া থেকে নিয়ে গেলেই বিদ্রোহী সেনারা মনোবল হারিয়ে ফেলবে। তখন অনায়াসেই বিদ্রোহ দমন করা সম্ভব হবে। পাইলট ইয়াসমিন ছিল ফারুকের বোন। ইয়াসমিনের বেশ প্রভাব ছিল ফারুকের ওপর। জিয়ার নির্দেশে সেনা কর্তৃপক্ষ ইয়াসমিনকে ফ্লাইং ক্লাবের প্লেনে বগুড়ায় পাঠায়। তিনি বগুড়ায় গিয়ে তার ভাইকে জোর করে প্লেনে উঠিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসেন। এরপর বিদ্রোহী সেনারা মনোবল হারিয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীরা ১৯৮০ সালের শেষের দিকে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে একটি অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর জিয়াউর রহমানই এদের বিদেশে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিলেন। তবে রশিদ-ফারুক সেই চাকরি নেয়নি। অন্যরা নিয়েছিল। জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান ঘটানোর ব্যর্থ চেষ্টার পর এবার তারা সবাই চাকরিচ্যুত হয় এবং বিদেশে ফেরারি জীবনযাপন করতে থাকে। ১৯৮১ সালের পর এরশাদ আবার তাদের পুনর্বাসন করেন এবং বকেয়া বেতন দেন। তাদের এই সুযোগ-সুবিধা ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বহাল ছিল।
No comments