এক অদ্ভুত বিপন্ন সময় by সাজেদুল হক
এ
এক অদ্ভুত, বিষণ্ন সময়। চারদিকে অসহায়ত্ব, অস্থিরতা, উদ্বেগ ও আতঙ্ক। এ
এমন এক সময় যখন পিতা তার সন্তানের হত্যার বিচার চান না। একের পর এক
দুর্ঘটনায় বাকরুদ্ধ, স্তব্ধ মানুষ। গোরস্তানমুখী এ মিছিল কোথায় নিয়ে যাবে এ
জাতিকে- সে প্রশ্ন এখন উচ্চকিত। ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আর রাজনীতির খেলা
বাংলাদেশকে এক বিপর্যয়ের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। অনেকেরই আশঙ্কা, সামনে আরও
ঝড় আসছে।
তিন মাসের অবরোধ-পেট্রল সন্ত্রাসের পর প্রায় ছয় মাস ভালোই চলছিল দেশ। গণতন্ত্রের সংকট যদিও ছিল। নতুন একটি নির্বাচন নিয়েও রাজনীতির অন্দরমহলে আলোচনা চলছিল। কিন্তু গত ২৮শে সেপ্টেম্বর হঠাৎ এক নতুন বিপদের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। যখন রাজধানীর কূটনৈতিক পাড়ায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ইতালীয় নাগরিক সিজার তাভেলা। জঙ্গি সংগঠন আইএস ওই হত্যার দায় স্বীকার করলেও বাংলাদেশ সরকার ওই দাবি নাকচ করে দেয়। তবে এখন জানা যাচ্ছে, ফাইভ আইজ নামে পাঁচটি দেশের গোয়েন্দা জোট সেপ্টেম্বরে তথ্য পেয়েছিল বাংলাদেশে বিদেশীদের ওপর হামলা হতে পারে। ‘ফাইভ আইজ’ জোটের দেশগুলো হলো- অস্ট্রেলিয়া, বৃটেন, কানাডা, নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র। এর পরই অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর স্থগিত হয়। কয়েকটি দেশ বাংলাদেশ সফরের ব্যাপারে সতর্কতা জারি করে। নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, মার্কিন কর্মকর্তারা সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিল, ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশের ভূখণ্ডে তৎপরতা বৃদ্ধি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এরপর ২৮শে সেপ্টেম্বর থেকে ১লা নভেম্বর। এ সময় সিজার তাভেলার পর খুন হয়েছেন জাপানের নাগরিক কুনিও হোশি। ঢাকায় ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতি সভায় হামলা হয়েছে। এতে এ পর্যন্ত দুজন নিহত হয়েছেন। সর্বশেষ শনিবার ঢাকায় দুটি প্রকাশনা দপ্তরে হামলা হয়েছে। নিহত হয়েছেন এক প্রকাশক। আনসার আল ইসলাম (আল-কায়েদার ভারত উপমহাদেশ শাখা) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। ক্ষমতাসীনরা অবশ্য এখনও এসবকে বিচ্ছিন্ন ঘটনাই মনে করছেন। যদিও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু তার নিজের ওপরও হামলার আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন।
একের পর এক অঘটন বাংলাদেশের অর্থনীতিকেও চাপে ফেলছে। পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হতে শুরু করলেও প্রকাশক হত্যা পুরো বিষয়টিকে আবার নাজুক করে ফেলছে। দেশী-বিদেশী সবার মধ্যেই বিরাজ করছে নিরাপত্তাহীনতা। সরকারের অনুরোধ সত্ত্বেও পশ্চিমা কোন দেশই এখনও সতর্কতা প্রত্যাহার করেনি। যদিও কিছু কিছু সংবাদ খাওয়ানোর চেষ্টা হয়েছে। পশ্চিমা কূটনীতিকদের কেউ কেউ বিশ্বাস করেন বাংলাদেশে কোন না কোন মাত্রায় আইএসের কার্যক্রম রয়েছে। খুব সহসাই বর্তমান পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে বলে তারা মনে করেন না।
চলমান পরিস্থিতিতে সংকটের গোড়ার দিকেও অনেকে দৃষ্টিপাত করেছেন। বিস্ময়কর হলেও সত্য, ফয়সাল আরেফিন দীপনের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক এ বিপর্যয়ের মধ্যেও শুভবুদ্ধির উদয়ের আশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি কোন বিচার চাই না। আমি চাই শুভবুদ্ধির উদয় হোক। যারা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ নিয়ে রাজনীতি করছেন, যারা রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছেন উভয় পক্ষ দেশের সর্বনাশ করছেন। উভয় পক্ষের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। এটুকুই আমার কামনা। জেল-ফাঁসি দিয়ে কী হবে।’ এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বুদ্ধিজীবী ও চিন্তক ফরহাদ মজহার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, অবিশ্বাস্য শোক মাথায় নিয়ে আবুল কাসেম ফজলুল হক এ কথাটা স্পষ্টভাবে বলতে পেরেছেন। আমরা দেশকে বিভক্ত করে দিয়েছি। আমরা দুই পক্ষেই আমাদের সন্তানদের হারাতে থাকবো। আমরা কাঁদতে ভুলে যাবো। নিজ নিজ সন্তানের লাশ কাঁধে নিয়ে গোরস্তানের দিকে যাবো, আর সন্তানের রক্তে আমাদের শরীর ভিজে যাবে। কে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী সেকুলার মুক্তবুদ্ধিওয়ালা আর কে ধর্মান্ধ বা ইসলামী জঙ্গি গোরস্তান তার বিচার করে না। শুধু কবরের ওপর ঘাস গজায়, আর একদা ঐতিহাসিকরা গবেষণা করতে বসে কীভাবে একটি জাতি তাদের বেয়াকুবির জন্য ধ্বংস হয়ে গেল। যেহেতু আমরা মৃত্যু নিয়ে ভাবতে অভ্যস্ত নই, তাই জীবনের কোন মূল্য আমরা দিতে জানি না। আমি দেখছি, বিভক্ত ও দ্বিখণ্ডিত বাংলাদেশে দুই দিক থেকে দুটো মিছিল গোরস্তানের দিকে যাচ্ছে। দীপন, আমি প্রাণপণ এ বিভক্তি ঠেকাতে চেষ্টা করেছি। এ ভয়াবহ বিভাজনের পরিণতি সম্পর্কে আমি জানপরান সবাইকে হুঁশিয়ার করার চেষ্টা করেছি। চেষ্টা করে যাবো। কিন্তু তাতে কি যারা চলে গেছে ফিরে আসবে? কেউই প্রত্যাবর্তন করে না। এ লাশের ভার অনেক ভারি, বাংলাদেশ বহন করতে পারবে কি? সেই দূরদর্শিতা ও বিচক্ষণতার চর্চা আমরা করি না, যা আমাদের গোরস্তানের দিকে নয়, সপ্রতিভ জীবনের দিকে নিয়ে যায়। কে জাগে?
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের অধ্যাপক আলী রীয়াজ লিখেছেন, কে কার কাছে কিসের প্রতিবাদ করবে? কে কার কাছে কিসের বিচার চাইবে? কে চিহ্নিত করবে আততায়ীকে? রক্তের এই স্রোত ও মৃত্যুর এই ধারা দেশকে কোথায় নিয়ে যাবে? কতটা অন্ধকার নামলে আমরা বুঝবো যে আলো নেই।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ লিখেছেন, ‘বর্তমান সরকারের ক্ষমতায় থাকার যৌক্তিকতা হিসেবে বক্তব্য সমাজে ব্যাপকভাবে প্রচারিত- তা হলো যদি এ সরকার ক্ষমতায় না থাকে দেশ জঙ্গি সন্ত্রাসীরা দখল করে নেবে, সাম্প্রদায়িকতা বাড়বে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী তৎপরতা বাড়বে। এ যুক্তিতে সরকার গণতান্ত্রিক অধিকারের অনেক কিছু নিশ্চিন্তে সংকুচিত করেছে, অনেক লেখক, শিল্পী ও বুদ্ধিজীবী বহু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতেও মুখ বন্ধ রেখেছেন পাছে এই সরকারের ক্ষতি হয়। একের পর এক যখন সন্ত্রাসী হুমকি, হামলা, লেখক-প্রকাশক খুন, সাম্প্রদায়িক আক্রমণ, ধর্মান্ধতা, জাতিগত ধর্মীয় বিদ্বেষ, দখল-লুণ্ঠন ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী তৎপরতা বেড়েই যাচ্ছে, তখন কি এ প্রশ্ন করতে পারি দেশে এখন কোন সরকার ক্ষমতায় আছে?’
সরকারি ভাষ্য বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তবে একের পর এক হামলা, হত্যায় আতঙ্ক ক্রমেই বাড়ছে। অনিশ্চয়তার এক গভীর গর্তে পড়েছে বাংলাদেশ। আতঙ্কের জনপদে কবে ফিরবে স্বাভাবিক জীবন, কেউ জানেন না।
তিন মাসের অবরোধ-পেট্রল সন্ত্রাসের পর প্রায় ছয় মাস ভালোই চলছিল দেশ। গণতন্ত্রের সংকট যদিও ছিল। নতুন একটি নির্বাচন নিয়েও রাজনীতির অন্দরমহলে আলোচনা চলছিল। কিন্তু গত ২৮শে সেপ্টেম্বর হঠাৎ এক নতুন বিপদের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। যখন রাজধানীর কূটনৈতিক পাড়ায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ইতালীয় নাগরিক সিজার তাভেলা। জঙ্গি সংগঠন আইএস ওই হত্যার দায় স্বীকার করলেও বাংলাদেশ সরকার ওই দাবি নাকচ করে দেয়। তবে এখন জানা যাচ্ছে, ফাইভ আইজ নামে পাঁচটি দেশের গোয়েন্দা জোট সেপ্টেম্বরে তথ্য পেয়েছিল বাংলাদেশে বিদেশীদের ওপর হামলা হতে পারে। ‘ফাইভ আইজ’ জোটের দেশগুলো হলো- অস্ট্রেলিয়া, বৃটেন, কানাডা, নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র। এর পরই অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর স্থগিত হয়। কয়েকটি দেশ বাংলাদেশ সফরের ব্যাপারে সতর্কতা জারি করে। নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, মার্কিন কর্মকর্তারা সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিল, ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশের ভূখণ্ডে তৎপরতা বৃদ্ধি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এরপর ২৮শে সেপ্টেম্বর থেকে ১লা নভেম্বর। এ সময় সিজার তাভেলার পর খুন হয়েছেন জাপানের নাগরিক কুনিও হোশি। ঢাকায় ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতি সভায় হামলা হয়েছে। এতে এ পর্যন্ত দুজন নিহত হয়েছেন। সর্বশেষ শনিবার ঢাকায় দুটি প্রকাশনা দপ্তরে হামলা হয়েছে। নিহত হয়েছেন এক প্রকাশক। আনসার আল ইসলাম (আল-কায়েদার ভারত উপমহাদেশ শাখা) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। ক্ষমতাসীনরা অবশ্য এখনও এসবকে বিচ্ছিন্ন ঘটনাই মনে করছেন। যদিও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু তার নিজের ওপরও হামলার আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন।
একের পর এক অঘটন বাংলাদেশের অর্থনীতিকেও চাপে ফেলছে। পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হতে শুরু করলেও প্রকাশক হত্যা পুরো বিষয়টিকে আবার নাজুক করে ফেলছে। দেশী-বিদেশী সবার মধ্যেই বিরাজ করছে নিরাপত্তাহীনতা। সরকারের অনুরোধ সত্ত্বেও পশ্চিমা কোন দেশই এখনও সতর্কতা প্রত্যাহার করেনি। যদিও কিছু কিছু সংবাদ খাওয়ানোর চেষ্টা হয়েছে। পশ্চিমা কূটনীতিকদের কেউ কেউ বিশ্বাস করেন বাংলাদেশে কোন না কোন মাত্রায় আইএসের কার্যক্রম রয়েছে। খুব সহসাই বর্তমান পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে বলে তারা মনে করেন না।
চলমান পরিস্থিতিতে সংকটের গোড়ার দিকেও অনেকে দৃষ্টিপাত করেছেন। বিস্ময়কর হলেও সত্য, ফয়সাল আরেফিন দীপনের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক এ বিপর্যয়ের মধ্যেও শুভবুদ্ধির উদয়ের আশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি কোন বিচার চাই না। আমি চাই শুভবুদ্ধির উদয় হোক। যারা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ নিয়ে রাজনীতি করছেন, যারা রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছেন উভয় পক্ষ দেশের সর্বনাশ করছেন। উভয় পক্ষের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। এটুকুই আমার কামনা। জেল-ফাঁসি দিয়ে কী হবে।’ এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বুদ্ধিজীবী ও চিন্তক ফরহাদ মজহার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, অবিশ্বাস্য শোক মাথায় নিয়ে আবুল কাসেম ফজলুল হক এ কথাটা স্পষ্টভাবে বলতে পেরেছেন। আমরা দেশকে বিভক্ত করে দিয়েছি। আমরা দুই পক্ষেই আমাদের সন্তানদের হারাতে থাকবো। আমরা কাঁদতে ভুলে যাবো। নিজ নিজ সন্তানের লাশ কাঁধে নিয়ে গোরস্তানের দিকে যাবো, আর সন্তানের রক্তে আমাদের শরীর ভিজে যাবে। কে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী সেকুলার মুক্তবুদ্ধিওয়ালা আর কে ধর্মান্ধ বা ইসলামী জঙ্গি গোরস্তান তার বিচার করে না। শুধু কবরের ওপর ঘাস গজায়, আর একদা ঐতিহাসিকরা গবেষণা করতে বসে কীভাবে একটি জাতি তাদের বেয়াকুবির জন্য ধ্বংস হয়ে গেল। যেহেতু আমরা মৃত্যু নিয়ে ভাবতে অভ্যস্ত নই, তাই জীবনের কোন মূল্য আমরা দিতে জানি না। আমি দেখছি, বিভক্ত ও দ্বিখণ্ডিত বাংলাদেশে দুই দিক থেকে দুটো মিছিল গোরস্তানের দিকে যাচ্ছে। দীপন, আমি প্রাণপণ এ বিভক্তি ঠেকাতে চেষ্টা করেছি। এ ভয়াবহ বিভাজনের পরিণতি সম্পর্কে আমি জানপরান সবাইকে হুঁশিয়ার করার চেষ্টা করেছি। চেষ্টা করে যাবো। কিন্তু তাতে কি যারা চলে গেছে ফিরে আসবে? কেউই প্রত্যাবর্তন করে না। এ লাশের ভার অনেক ভারি, বাংলাদেশ বহন করতে পারবে কি? সেই দূরদর্শিতা ও বিচক্ষণতার চর্চা আমরা করি না, যা আমাদের গোরস্তানের দিকে নয়, সপ্রতিভ জীবনের দিকে নিয়ে যায়। কে জাগে?
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের অধ্যাপক আলী রীয়াজ লিখেছেন, কে কার কাছে কিসের প্রতিবাদ করবে? কে কার কাছে কিসের বিচার চাইবে? কে চিহ্নিত করবে আততায়ীকে? রক্তের এই স্রোত ও মৃত্যুর এই ধারা দেশকে কোথায় নিয়ে যাবে? কতটা অন্ধকার নামলে আমরা বুঝবো যে আলো নেই।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ লিখেছেন, ‘বর্তমান সরকারের ক্ষমতায় থাকার যৌক্তিকতা হিসেবে বক্তব্য সমাজে ব্যাপকভাবে প্রচারিত- তা হলো যদি এ সরকার ক্ষমতায় না থাকে দেশ জঙ্গি সন্ত্রাসীরা দখল করে নেবে, সাম্প্রদায়িকতা বাড়বে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী তৎপরতা বাড়বে। এ যুক্তিতে সরকার গণতান্ত্রিক অধিকারের অনেক কিছু নিশ্চিন্তে সংকুচিত করেছে, অনেক লেখক, শিল্পী ও বুদ্ধিজীবী বহু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতেও মুখ বন্ধ রেখেছেন পাছে এই সরকারের ক্ষতি হয়। একের পর এক যখন সন্ত্রাসী হুমকি, হামলা, লেখক-প্রকাশক খুন, সাম্প্রদায়িক আক্রমণ, ধর্মান্ধতা, জাতিগত ধর্মীয় বিদ্বেষ, দখল-লুণ্ঠন ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী তৎপরতা বেড়েই যাচ্ছে, তখন কি এ প্রশ্ন করতে পারি দেশে এখন কোন সরকার ক্ষমতায় আছে?’
সরকারি ভাষ্য বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তবে একের পর এক হামলা, হত্যায় আতঙ্ক ক্রমেই বাড়ছে। অনিশ্চয়তার এক গভীর গর্তে পড়েছে বাংলাদেশ। আতঙ্কের জনপদে কবে ফিরবে স্বাভাবিক জীবন, কেউ জানেন না।
No comments