বিজেএমসি থাকুক অর্থমন্ত্রী চান না! by আবুল হাসনাত
অর্থমন্ত্রী
আবুল মাল আবদুল মুহিত এর আগে লিখেছিলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত বন্ধ পাটকলগুলো
পুনরায় চালু করে সরকার ‘মারাত্মক ভুল’ করেছে। আর এবার লিখলেন, বাংলাদেশ
জুট মিলস করপোরেশনই (বিজেএমসি) বিলুপ্ত করে দেওয়া প্রয়োজন। এই বিজেএমসি
সরকারি ২৬টি পাটকল পরিচালনার কাজটি করে থাকে।
অর্থমন্ত্রী মনে করেন, ‘বাস্তবতার নিরিখে আমি বিজেএমসির কোনো ভূমিকাই দেখতে পাই না। অথচ তারা সব মিল নিয়ন্ত্রণ করে, তাদের সময়মতো পাট খরিদ করতে দেয় না। এসব কার্যাবলিতে দীর্ঘসূত্রতার সৃষ্টি করে এবং নানাভাবে মিলগুলোকে লাভজনক হতে দেয় না।’
অর্থমন্ত্রী এক চিঠিতে এমন সব মন্তব্য করে বিজেএমসিকে বিলুপ্ত করার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছেন। আর এই চিঠিটি গত ২৮ অক্টোবর পাঠানো হয়েছে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিককে। বিজেএমসি পাট মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন একটি সংস্থা।
বিজেএমসিকে বিলুপ্ত করা হলে পাটকলগুলো কীভাবে চলবে, তার পথও বাতলে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তাঁর মতে, প্রতিটি পাটকল সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) ভিত্তিতে পরিচালিত হবে। তখন এগুলো ব্যক্তিমালিকানাধীন পাটকল হিসেবেই বিবেচিত হবে। আর এসব পাটকলের পর্যবেক্ষণ, পরিদর্শন এবং মূল্যায়ন করতে পাট মন্ত্রণালয়ে একটি ছোট সেল করা যেতে পারে।
অর্থমন্ত্রী শুধু চিঠিই লিখেননি, পাটমন্ত্রী কী পদক্ষেপ নেন তার ফলাফল দেখার অপেক্ষায় আছেন। চিঠিতে তেমনটিই উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিজেএমসির চেয়ারম্যান হুমায়ূন খালেদ কোনো মন্তব্য করেননি।
তবে পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম প্রথম আলোকে বলেন, গত কেবিনেটে অর্থমন্ত্রী বিজেএমসি বিলুপ্ত করার বিষয়টি তুলেছিলেন। নানান যুক্তিও দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তা খারিজ করে দেন। উল্টো তিনি বিজেএমসিকে আরও কার্যকর করা ও লোকসান কমানোর নির্দেশ দিয়েছেন। পাটকলগুলোর আধুনিকায়ন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
পাটমন্ত্রীর কাছে অর্থমন্ত্রী চিঠিটি লিখেছেন আলীম জুট মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জগলুল মাহমুদের এক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে। জগলুল মাহমুদ লিখেছেন, হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের মাধ্যমে তিনি এখন আলীম জুট মিলসের মালিক। রায় অনুযায়ী মিলটি হস্তান্তরের জন্য গত ১৯ ও ২৬ এপ্রিল তাদের সঙ্গে বিজেএমসির দুটি চুক্তি সই হয়। কিন্তু মিলটি এখনো তাদের সরেজমিন বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি।
জগলুল মাহমুদের দাবি, বিজেএমসির কিছু দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা আলীম জুট মিলসের অর্থ আত্মসাৎ করে নিজস্ব স্বার্থ হাসিল করছেন। এতে তিনি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। পাট মন্ত্রণালয় ও বিজেএমসি ২০০৯ সালে একবার মিলটি হস্তান্তরের জন্য প্রস্তুত হয়। তখন মিলটির দায়দেনা ছিল ১৩২ কোটি টাকা। এখন এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮৬ কোটি টাকায়। দিন দিন দেনা বাড়ছেই। তিনি এর ভাগীদার হতে চান না। তিনি মিলটি নিজের অর্থে চালু করতে চান।
অর্থমন্ত্রীও তাঁর চিঠিতে বলেছেন, বিজেএমসির কারণেই আলীম জুট মিলসের দায়দেনা ৫৪ কোটি টাকা বেড়ে গেছে।
বিজেএমসির দুর্নীতির বিষয়ে পাট প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কোন করপোরেশনে দুর্নীতি নেই। বিজেএমসিতে দুর্নীতির মাত্রাটা একটু বেশি। দুর্নীতি আর লোকসান বিজেএমসিকে শেষ করে দিয়েছে। তবে বিজেএমসির কোন কোন ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয় সেগুলো আমরা ইতিমধ্যে চিহ্নিত করেছি। সেভাবে ব্যবস্থাও নিচ্ছি। আশা করি পাঁচ-সাত বছরের মধ্যে সংস্থাটি আর লোকসানে থাকবে না।’
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘুরেফিরে বারবারই এসেছে পাটশিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করার কথা। এ জন্য সরকার বিজেএমসিকে প্রচুর টাকাও দিয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিজেএমসিকে লাভজনকভাবে পরিচালনার জন্য ২০০৯ সালে পাট মন্ত্রণালয় ও বিজেএমসি একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে। এটি বাস্তবায়নের জন্য সরকার বিজেএমসির যাবতীয় দায়দেনা পরিশোধ করতে ৫ হাজার ২৪১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা দেয়। গত অর্থবছরে আরও ২০০ কোটি দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে সরকার গত অর্থবছর পর্যন্ত বিজেএমসিকে মোট ৫ হাজার ৪৪১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা দেয়।
কিন্তু এত কিছুর পরও গত অর্থবছরে বিজেএমসির লোকসান ৪৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। আগের দুই বছর মিলিয়ে সংস্থাটির লোকসান হয় ৩২৬ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী মনে করেন, ‘বাস্তবতার নিরিখে আমি বিজেএমসির কোনো ভূমিকাই দেখতে পাই না। অথচ তারা সব মিল নিয়ন্ত্রণ করে, তাদের সময়মতো পাট খরিদ করতে দেয় না। এসব কার্যাবলিতে দীর্ঘসূত্রতার সৃষ্টি করে এবং নানাভাবে মিলগুলোকে লাভজনক হতে দেয় না।’
অর্থমন্ত্রী এক চিঠিতে এমন সব মন্তব্য করে বিজেএমসিকে বিলুপ্ত করার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছেন। আর এই চিঠিটি গত ২৮ অক্টোবর পাঠানো হয়েছে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিককে। বিজেএমসি পাট মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন একটি সংস্থা।
বিজেএমসিকে বিলুপ্ত করা হলে পাটকলগুলো কীভাবে চলবে, তার পথও বাতলে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তাঁর মতে, প্রতিটি পাটকল সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) ভিত্তিতে পরিচালিত হবে। তখন এগুলো ব্যক্তিমালিকানাধীন পাটকল হিসেবেই বিবেচিত হবে। আর এসব পাটকলের পর্যবেক্ষণ, পরিদর্শন এবং মূল্যায়ন করতে পাট মন্ত্রণালয়ে একটি ছোট সেল করা যেতে পারে।
অর্থমন্ত্রী শুধু চিঠিই লিখেননি, পাটমন্ত্রী কী পদক্ষেপ নেন তার ফলাফল দেখার অপেক্ষায় আছেন। চিঠিতে তেমনটিই উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিজেএমসির চেয়ারম্যান হুমায়ূন খালেদ কোনো মন্তব্য করেননি।
তবে পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম প্রথম আলোকে বলেন, গত কেবিনেটে অর্থমন্ত্রী বিজেএমসি বিলুপ্ত করার বিষয়টি তুলেছিলেন। নানান যুক্তিও দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তা খারিজ করে দেন। উল্টো তিনি বিজেএমসিকে আরও কার্যকর করা ও লোকসান কমানোর নির্দেশ দিয়েছেন। পাটকলগুলোর আধুনিকায়ন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
পাটমন্ত্রীর কাছে অর্থমন্ত্রী চিঠিটি লিখেছেন আলীম জুট মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জগলুল মাহমুদের এক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে। জগলুল মাহমুদ লিখেছেন, হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের মাধ্যমে তিনি এখন আলীম জুট মিলসের মালিক। রায় অনুযায়ী মিলটি হস্তান্তরের জন্য গত ১৯ ও ২৬ এপ্রিল তাদের সঙ্গে বিজেএমসির দুটি চুক্তি সই হয়। কিন্তু মিলটি এখনো তাদের সরেজমিন বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি।
জগলুল মাহমুদের দাবি, বিজেএমসির কিছু দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা আলীম জুট মিলসের অর্থ আত্মসাৎ করে নিজস্ব স্বার্থ হাসিল করছেন। এতে তিনি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। পাট মন্ত্রণালয় ও বিজেএমসি ২০০৯ সালে একবার মিলটি হস্তান্তরের জন্য প্রস্তুত হয়। তখন মিলটির দায়দেনা ছিল ১৩২ কোটি টাকা। এখন এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮৬ কোটি টাকায়। দিন দিন দেনা বাড়ছেই। তিনি এর ভাগীদার হতে চান না। তিনি মিলটি নিজের অর্থে চালু করতে চান।
অর্থমন্ত্রীও তাঁর চিঠিতে বলেছেন, বিজেএমসির কারণেই আলীম জুট মিলসের দায়দেনা ৫৪ কোটি টাকা বেড়ে গেছে।
বিজেএমসির দুর্নীতির বিষয়ে পাট প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কোন করপোরেশনে দুর্নীতি নেই। বিজেএমসিতে দুর্নীতির মাত্রাটা একটু বেশি। দুর্নীতি আর লোকসান বিজেএমসিকে শেষ করে দিয়েছে। তবে বিজেএমসির কোন কোন ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয় সেগুলো আমরা ইতিমধ্যে চিহ্নিত করেছি। সেভাবে ব্যবস্থাও নিচ্ছি। আশা করি পাঁচ-সাত বছরের মধ্যে সংস্থাটি আর লোকসানে থাকবে না।’
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘুরেফিরে বারবারই এসেছে পাটশিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করার কথা। এ জন্য সরকার বিজেএমসিকে প্রচুর টাকাও দিয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিজেএমসিকে লাভজনকভাবে পরিচালনার জন্য ২০০৯ সালে পাট মন্ত্রণালয় ও বিজেএমসি একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে। এটি বাস্তবায়নের জন্য সরকার বিজেএমসির যাবতীয় দায়দেনা পরিশোধ করতে ৫ হাজার ২৪১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা দেয়। গত অর্থবছরে আরও ২০০ কোটি দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে সরকার গত অর্থবছর পর্যন্ত বিজেএমসিকে মোট ৫ হাজার ৪৪১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা দেয়।
কিন্তু এত কিছুর পরও গত অর্থবছরে বিজেএমসির লোকসান ৪৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। আগের দুই বছর মিলিয়ে সংস্থাটির লোকসান হয় ৩২৬ কোটি টাকা।
No comments