হত্যার বিচার চান না মিলনের মা
১৯৯০
সালের ২৭শে ডিসেম্বর। স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে, সামরিক শাসক
এরশাদের পতন যখন সময়ের ব্যাপার, তখনই রাজধানীর টিএসসি এলাকায় সকালের দিকে
প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয় স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনের অগ্রসৈনিক ডা.
শামসুল আলম খান মিলনকে। এ হত্যায় এরশাদবিরোধী আন্দোলনের বারুদ জ্বলে ওঠে।
কিছুদিনের মধ্যেই পতন হয় এরশাদ সরকারের। হত্যাকাণ্ডের পর দীর্ঘ দুই যুগের
বেশি সময় পার হয়েছে। ছেলে হত্যার বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন
মিলনের অসহায় মা সেলিনা আখতার। কিন্তু বিচারের বাণী কেঁদেছে নীরবে-নিভৃতে।
বিচারের আশা জলাঞ্জলি দিয়ে মিলনের স্ত্রী-কন্যাও পাড়ি জমিয়েছেন বিদেশে।
হতাশ সেলিনা আখতার এবার পণ করেছেন আমৃত্যু তিনি আর ছেলে হত্যার বিচার
চাইবেন না। একরাশ হতাশা নিয়ে তিনি বলেন, ছেলে হত্যার বিচার কার কাছে চাইব?
কে বিচার করবে? এ বিষয়টি এখন পুরনো হয়ে গেছে। যারা আমার ছেলে হত্যার বিচার
করবে তারাই তো হত্যাকারীদের পুনর্বাসিত করেছে। হত্যার হুকুমদাতারা এখন
সদর্পে রাজনীতি করে। সংসদে যায়। রাষ্ট্রের নানা পদে আসীন হয়। গণতন্ত্রের
কথা বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে। কি হাস্যকর লাগে তখন আমার! বুকে যন্ত্রণা
তখন আরও বাড়ে। কিন্তু এটা আমার জন্যই শুধু নয়, সমগ্র জাতির জন্য লজ্জাস্কর।
সম্প্রতি মানবজমিনের সঙ্গে আলাপকালে শহীদ ডা. মিলনের মা সেলিনা আখতার ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, যারা গণতন্ত্রের জন্য প্রাণপাত করেছেন, তারাই এখন গণতন্ত্রবিরোধীদের নিয়ে দেশ চালাচ্ছেন। কিন্তু এ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমার মতো আরও যারা সন্তান হারিয়েছেন তাদের কথা কেউ একবারও চিন্তা করলেন না। কি যন্ত্রণা বুকে নিয়ে দুই যুগের বেশি সময় ধরে একপ্রকার জীবমৃত অবস্থায় আমরা বেঁচে আছি। কিন্তু এখন আর স্বপ্ন দেখি না। ছেলে হত্যার বিচারও আর চাই না। আমি বুঝে গেছি এ সরকার এ রাষ্ট্র আমার সন্তান হত্যার বিচার করবে না। তিনি বলেন, দেশের যা পরিস্থিতি সেখানে কার কাছে বিচার চাইব? একে একে ব্লগার ও মুক্তমনাদের হত্যা করা হচ্ছে। বুদ্ধিজীবীদের হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে। মনে হচ্ছে একাত্তরের ভয়াবহতা আবারও ফিরে এসেছে। কিন্তু এখন তো একাত্তর নয়। দেশে সরকার আছে। আইন, আদালত আছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে। কিন্তু তার পরও কেন খুনিদের ধরা সম্ভব হচ্ছে না। কেন তারা বারবার প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী ও মুক্তমনাদের ওপর হামলে পড়ছে। মিলনরা রক্তের বিনিময়ে কি এ দেশ চেয়েছিল?
সাবেক স্বৈরশাসক এরশাদের দিকে ইঙ্গিত করে সেলিনা আখতার বলেন, তিনি এখন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত। তার দল এখন তথাকথিত বিরোধী দলে। তিনি এখন গণতন্ত্রের কথা বলেন। যখন বলেন তখন আমার আর কিছুই বলার থাকে না। আমি স্তব্ধ হয়ে যাই। ছেলে হারানোর শোক ভুলে থাকতে চেষ্টা করি। কিন্তু তার কথা শুনলেই সেই শোক আরও বাড়ে। তিনি বলেন, পৃথিবীর সব দেশেই একনায়ক ও স্বৈরশাসকরা একসময় হয় নির্বাসনে গিয়েছেন, কারাগারে থেকেছেন নয়তো অন্য কোন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছেন। বিশ্বের এমন কোথাও নজির নেই, একজন হত্যাকারী, পতিত, স্বৈরশাসক আবার সদর্পে ফিরে এসে রাজনীতি করেছে। পবিত্র সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসেছে। রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন পদে আসীন হয়েছে। আবার ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্নও দেখছে। এর চেয়ে দুঃখজনক আর কি হতে পারে? কি দুর্ভাগ্য এ দেশের!
১৯৫৭ সালের ২১শে আগস্ট জন্ম নেয়া ডা. শামসুল আলম খান মিলনের পরিবার ও স্বজনরা জানান, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফিজিওলজি বিভাগের প্রভাষক ছিলেন তিনি। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও এ সময় দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী শামসুল হক মিলন জাসদ ছাত্রলীগের তুখোড় নেতা ছিলেন। ১৯৮৩ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি (ব্যাচ কে-৩৪) অর্জন করেই জড়িয়ে পড়েন এরশাদবিরোধী আন্দোলনে। সরকার ঘোষিত গণবিরোধী, সাম্রাজ্যবাদনির্ভর স্বাস্থ্যনীতির বিরুদ্ধে বিএমএ পরিচালিত আন্দোলনে অন্যতম প্রধান সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন তিনি। এ অপরাধে অন্যায়ভাবে তাকে রংপুরের রৌমারীতে বদলি করা হয়। তখনকার সরকারের কেউ কেউ তাকে দেখে নেয়ারও হুমকি দেন। আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন ২৭শে ডিসেম্বর পিজি হাসপাতালে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে হাসপাতাল) বিএমএর সভায় যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে সকালে আজিমপুরের বাসা থেকে বের হন মিলন। পথিমধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সতীর্থ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে রিকশায় করে পিজি হাসপাতালে আসার সময় টিএসসি এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন ডা. শামসুল হক মিলন।
সেই দিনের স্মৃতি হাতড়ে মিলনের মা সেলিনা আখতার বলেন, ইডেন মহিলা কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষিকা হিসেবে আজিমপুর কোয়ার্টারে আমার সঙ্গেই থাকতো মিলন, তার স্ত্রী মাহমুদা শিকদার ও একমাত্র কন্যা শামা বিজয়া আলম। সকালে খিচুরি খেয়ে সংগঠনের জরুরি কাজ আছে বলে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। এর পরই খবর পাই গুলিতে নিহত হয়েছে আমার আদরের সন্তান। মৃত্যুর আগে মিলন বলেছিল জাতীয় পার্টি তখনকার একজন প্রভাবশালী নেতা তাকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। খুনিদেরও বিদেশে পালিয়ে যেতে সহায়তা করা হয়েছিল। কিন্তু আজও জানতে পারলা মনা কি অপরাধ ছিল ওর। কেনই বা সেই সময়ের সরকার মিলনকে খুন করে আমার বুক খালি করেছে।
তিনি জানান, মিলনের স্ত্রী মাহমুদা শিকদার বিচারের আশায় ছিলেন বহুদিন। একসময় একরাশ হতাশা নিয়ে তিনি পাড়ি জমিয়েছেন বিদেশে। বর্তমানে তিনি থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। মিলনের একমাত্র কন্যা শামা বিজয়া আলম থাকেন ওয়াইহোতে। সেখানে চিকিৎসা বিষয়ে পড়ছেন তিনি। মিলনের মা সেলিনা আখতার জানান, মিলন মারা যাওয়ার সময় শামার বয়স ছিল মাত্র ২ বছর। তাই বাবার স্মৃতি তার কিছুই মনে নেই। বাবার স্নেহ, আদর থেকেও বঞ্চিত হয়েছে সে। বাবার সঙ্গে অন্তরঙ্গ সময়ের কিছুই তার মনে নেই। মাঝে মাঝে দেশে আসে শামা। বাবার স্মৃতি হাতড়ে বেড়ায়। নীরবে চোখের জল ফেলে। আমার কাছে তার পিতার বীরত্বের কথা জানতে চায়। কারা কেন তার বাবাকে এমন নির্মমভাবে হত্যা করেছে তাও জানতে চায়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে যাওয়ায় সেও পিতা হত্যার বিচারের আশা ছেড়ে দিয়েছে।
মিলন হত্যার মামলার বাদী ছিলেন তার সহযাত্রী ডা. মোস্তাক হোসেন। মানবজমিনকে তিনি বলেন, মামলার পর ঢাকার একটি আদালত রায় ঘোষণা করেন। সম্ভবত সেটা ১৯৯৩ সালে। কিন্তু রায়ে তখনকার দুজন ডাকসাইটে ছাত্রনেতাসহ কয়েকজনকে মামলায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ পাওয়া যায়নি মর্মে তাদের খালাশ দেয়া হয়। এরপর মলিনের মায়ের পক্ষে অ্যাডভোকেট শামসুল হক চৌধুরী নামে একজন আইনজীবী হত্যা মামলাটি তদন্ত করার জন্য আদালতে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু এরপর আর কি হয়েছে আমার জানা নেই।
সম্প্রতি মানবজমিনের সঙ্গে আলাপকালে শহীদ ডা. মিলনের মা সেলিনা আখতার ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, যারা গণতন্ত্রের জন্য প্রাণপাত করেছেন, তারাই এখন গণতন্ত্রবিরোধীদের নিয়ে দেশ চালাচ্ছেন। কিন্তু এ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমার মতো আরও যারা সন্তান হারিয়েছেন তাদের কথা কেউ একবারও চিন্তা করলেন না। কি যন্ত্রণা বুকে নিয়ে দুই যুগের বেশি সময় ধরে একপ্রকার জীবমৃত অবস্থায় আমরা বেঁচে আছি। কিন্তু এখন আর স্বপ্ন দেখি না। ছেলে হত্যার বিচারও আর চাই না। আমি বুঝে গেছি এ সরকার এ রাষ্ট্র আমার সন্তান হত্যার বিচার করবে না। তিনি বলেন, দেশের যা পরিস্থিতি সেখানে কার কাছে বিচার চাইব? একে একে ব্লগার ও মুক্তমনাদের হত্যা করা হচ্ছে। বুদ্ধিজীবীদের হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে। মনে হচ্ছে একাত্তরের ভয়াবহতা আবারও ফিরে এসেছে। কিন্তু এখন তো একাত্তর নয়। দেশে সরকার আছে। আইন, আদালত আছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে। কিন্তু তার পরও কেন খুনিদের ধরা সম্ভব হচ্ছে না। কেন তারা বারবার প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী ও মুক্তমনাদের ওপর হামলে পড়ছে। মিলনরা রক্তের বিনিময়ে কি এ দেশ চেয়েছিল?
সাবেক স্বৈরশাসক এরশাদের দিকে ইঙ্গিত করে সেলিনা আখতার বলেন, তিনি এখন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত। তার দল এখন তথাকথিত বিরোধী দলে। তিনি এখন গণতন্ত্রের কথা বলেন। যখন বলেন তখন আমার আর কিছুই বলার থাকে না। আমি স্তব্ধ হয়ে যাই। ছেলে হারানোর শোক ভুলে থাকতে চেষ্টা করি। কিন্তু তার কথা শুনলেই সেই শোক আরও বাড়ে। তিনি বলেন, পৃথিবীর সব দেশেই একনায়ক ও স্বৈরশাসকরা একসময় হয় নির্বাসনে গিয়েছেন, কারাগারে থেকেছেন নয়তো অন্য কোন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছেন। বিশ্বের এমন কোথাও নজির নেই, একজন হত্যাকারী, পতিত, স্বৈরশাসক আবার সদর্পে ফিরে এসে রাজনীতি করেছে। পবিত্র সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসেছে। রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন পদে আসীন হয়েছে। আবার ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্নও দেখছে। এর চেয়ে দুঃখজনক আর কি হতে পারে? কি দুর্ভাগ্য এ দেশের!
১৯৫৭ সালের ২১শে আগস্ট জন্ম নেয়া ডা. শামসুল আলম খান মিলনের পরিবার ও স্বজনরা জানান, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফিজিওলজি বিভাগের প্রভাষক ছিলেন তিনি। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও এ সময় দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী শামসুল হক মিলন জাসদ ছাত্রলীগের তুখোড় নেতা ছিলেন। ১৯৮৩ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি (ব্যাচ কে-৩৪) অর্জন করেই জড়িয়ে পড়েন এরশাদবিরোধী আন্দোলনে। সরকার ঘোষিত গণবিরোধী, সাম্রাজ্যবাদনির্ভর স্বাস্থ্যনীতির বিরুদ্ধে বিএমএ পরিচালিত আন্দোলনে অন্যতম প্রধান সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন তিনি। এ অপরাধে অন্যায়ভাবে তাকে রংপুরের রৌমারীতে বদলি করা হয়। তখনকার সরকারের কেউ কেউ তাকে দেখে নেয়ারও হুমকি দেন। আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন ২৭শে ডিসেম্বর পিজি হাসপাতালে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে হাসপাতাল) বিএমএর সভায় যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে সকালে আজিমপুরের বাসা থেকে বের হন মিলন। পথিমধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সতীর্থ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে রিকশায় করে পিজি হাসপাতালে আসার সময় টিএসসি এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন ডা. শামসুল হক মিলন।
সেই দিনের স্মৃতি হাতড়ে মিলনের মা সেলিনা আখতার বলেন, ইডেন মহিলা কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষিকা হিসেবে আজিমপুর কোয়ার্টারে আমার সঙ্গেই থাকতো মিলন, তার স্ত্রী মাহমুদা শিকদার ও একমাত্র কন্যা শামা বিজয়া আলম। সকালে খিচুরি খেয়ে সংগঠনের জরুরি কাজ আছে বলে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। এর পরই খবর পাই গুলিতে নিহত হয়েছে আমার আদরের সন্তান। মৃত্যুর আগে মিলন বলেছিল জাতীয় পার্টি তখনকার একজন প্রভাবশালী নেতা তাকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। খুনিদেরও বিদেশে পালিয়ে যেতে সহায়তা করা হয়েছিল। কিন্তু আজও জানতে পারলা মনা কি অপরাধ ছিল ওর। কেনই বা সেই সময়ের সরকার মিলনকে খুন করে আমার বুক খালি করেছে।
তিনি জানান, মিলনের স্ত্রী মাহমুদা শিকদার বিচারের আশায় ছিলেন বহুদিন। একসময় একরাশ হতাশা নিয়ে তিনি পাড়ি জমিয়েছেন বিদেশে। বর্তমানে তিনি থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। মিলনের একমাত্র কন্যা শামা বিজয়া আলম থাকেন ওয়াইহোতে। সেখানে চিকিৎসা বিষয়ে পড়ছেন তিনি। মিলনের মা সেলিনা আখতার জানান, মিলন মারা যাওয়ার সময় শামার বয়স ছিল মাত্র ২ বছর। তাই বাবার স্মৃতি তার কিছুই মনে নেই। বাবার স্নেহ, আদর থেকেও বঞ্চিত হয়েছে সে। বাবার সঙ্গে অন্তরঙ্গ সময়ের কিছুই তার মনে নেই। মাঝে মাঝে দেশে আসে শামা। বাবার স্মৃতি হাতড়ে বেড়ায়। নীরবে চোখের জল ফেলে। আমার কাছে তার পিতার বীরত্বের কথা জানতে চায়। কারা কেন তার বাবাকে এমন নির্মমভাবে হত্যা করেছে তাও জানতে চায়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে যাওয়ায় সেও পিতা হত্যার বিচারের আশা ছেড়ে দিয়েছে।
মিলন হত্যার মামলার বাদী ছিলেন তার সহযাত্রী ডা. মোস্তাক হোসেন। মানবজমিনকে তিনি বলেন, মামলার পর ঢাকার একটি আদালত রায় ঘোষণা করেন। সম্ভবত সেটা ১৯৯৩ সালে। কিন্তু রায়ে তখনকার দুজন ডাকসাইটে ছাত্রনেতাসহ কয়েকজনকে মামলায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ পাওয়া যায়নি মর্মে তাদের খালাশ দেয়া হয়। এরপর মলিনের মায়ের পক্ষে অ্যাডভোকেট শামসুল হক চৌধুরী নামে একজন আইনজীবী হত্যা মামলাটি তদন্ত করার জন্য আদালতে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু এরপর আর কি হয়েছে আমার জানা নেই।
No comments