বাতরোগের চিকিৎসায় সার্জারি by ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল
ব্যথা
কমাতে ও অস্থিসন্ধির উন্নতি ঘটাতে অস্থিসন্ধিতে অপারেশনের প্রয়োজন হতে
পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটা অস্থিসন্ধির ক্ষয় হওয়ার প্রক্রিয়াকে মন্থর
করে।
প্রশ্ন : বাতরোগে কোন ধরনের সার্জারি করা হয়?
উত্তর : বিভিন্ন ধরনের অপারেশন করা হতে পারে, যেমন- অস্থিসন্ধিতে সাইনোভিয়াল টিস্যু কেটে ফেলা, জয়েন্ট ক্যাপসুলের মৃত টিস্যু দূর করা, অমসৃণ কার্টিলেজকে মসৃণ করা ইত্যাদি। এতে হাঁটুর নড়াচড়ার উন্নতি ঘটে, অস্থিসন্ধিগুলো স্থিত হয়। অবর্ণনীয় ব্যথা কমাতে ও অকার্যকর অস্থিসন্ধির জন্য অস্থিসন্ধির প্রতিস্থাপন করা হতে পারে।
প্রশ্ন : অস্থিসন্ধির কার্যকারিতা ফিরিয়ে আনতে কিংবা উপসর্গগুলো দূরীভূত করতে চিকিৎসক অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে রোগী কতদিন ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা চালিয়ে যাবে?
উত্তর : এই প্রশ্নের কোনো সুনির্দিষ্ট উত্তর নেই। এটা এক রোগী থেকে আরেক রোগীর ক্ষেত্রে ভিন্ন হতে পারে। আপনাকে জানতে হবে যে, যেকোনো ধরনের আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় সার্জারিকে খুব কম ক্ষেত্রেই প্রথম সারির চিকিৎসা পদ্ধতি হিসাবে গণ্য করা হয়। তাই বলে এটি যে একেবারে চিকিৎসার সর্বশেষ ধাপ সেটা ভাবারও কোনো কারণ নেই। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপারেশনে যাওয়ার আগে আপনি ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা নিয়ে কিংবা আক্রান্ত অস্থিসন্ধিতে স্টেরয়েড ইনজেকশন প্রয়োগ করে বেশ কিছু দিন দেখতে পারেন।
কিছু কিছু সার্জারি অস্থিসন্ধির আয়ু বাড়ায় বটে, তবে আর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রে চূড়ান্তভাবে সার্জারির প্রয়োজন নাও হতে পারে।
একজন বিশেষজ্ঞই নির্ধারণ করবেন আপনার কোন ধরনের সার্জারি প্রয়োজন।
প্রশ্ন : সার্জারি করলে লাভ হবে কি না তা আমি বুঝব কী করে?
উত্তর : যদি আপনার অস্থিসন্ধির ব্যথা দীর্ঘ দিন নন সার্জিক্যাল চিকিৎসায় যেমন ওষুধ, বিশ্রাম, স্পিন্টিং কিংবা স্টেরয়েড ইনজেকশনে ভালো না হয়, তাহলে আপনার চিকিৎসক আপনাকে একজন অর্থোপেডিক সার্জনের কাছে রেফার করবেন। অর্থোপেডিক সার্জনকে মাঝে মাঝে কেউ কেউ অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ বলে থাকেন।
এক্স-রে বা অন্য কোনো ইমেজিং টেকনিকের দ্বারা আপনার অস্থিসন্ধিতে কিছু নির্দিষ্ট সমস্যা পাওয়া গেলে সার্জারি করালে অবস্থার উন্নতি ঘটতে পারে। উদাহরণস্বরূপ আপনার সাইনোভিয়াম মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেলে, বাঁকা হাঁটু থাকলে কিংবা অন্য কোনো অস্থিসন্ধির স্থিতিগত সমস্যা থাকলে, হাঁটুর এক দিকে কার্টিলেজ থাকলে বা হাঁটুতে কিছু দিন পরপর ব্যথা হলে আপনার চিকিৎসক আপনাকে সার্জারি করার জন্য একজন অর্থোপেডিক সার্জনের কাছে রেফার করতে পারেন।
প্রশ্ন : অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ কী করবেন?
উত্তর : অর্থোপেডিক সার্জন আপনার অস্থিসন্ধি বা হাড়ের জোড়া পরীক্ষা করে দেখবেন, আপনাকে এক্স-রে করাবেন এবং আরো কিছু পরীক্ষাও করাতে পারেন। এরপর সিদ্ধান্ত নেবেন কোন ধরনের সার্জারি করলে আপনি উপকৃত হবেন।
প্রশ্ন : কীভাবে নিশ্চিত হবো যে, আমি সবচেয়ে ভালো সার্জনের কাছে অপারেশন করাচ্ছি এবং সবচেয়ে উৎকৃষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি?
উত্তর : যেকোনো সময় আপনাকে ছুরি-কাঁচির নিচে যাওয়া লাগতে পারে এবং অনেক ক্ষেত্রে আপনাকে অ্যানেস্থেশিয়া দেয়া হতে পারে। আপনি ইচ্ছা করলেই অনেক অভিজ্ঞ ও দক্ষ সার্জন এবং অ্যানেস্থেশিস্ট পেতে পারেন। জয়েন্ট সার্জারি, বিশেষ করে টোটাল রিপ্লেসমেন্ট হলো খুব উচ্চ ধরনের বিশেষ অপারেশন। শুধু সার্জনের জন্য নয়, সমগ্র সার্জিক্যাল টিমের জন্যও বটে, অ্যানেস্থেশিস্টসহ। তার মানে হচ্ছে আপনার অপারেশনের জন্য সবচেয়ে ভালো স্থান হলো সেই হাসপাতাল যে হাসপাতালে এ ধরনের অপারেশন সচরাচর হয়ে থাকে। আর সবচেয়ে ভালো সার্জন হলেন তিনি, যিনি এ অপারেশন সপ্তাহে কয়েকটি করে থাকেন। আপনি আপনার চিকিৎসকের সাথে ব্যাপারটি নিয়ে কথা বলতে পারেন, যেখানে আপনি অপারেশন করাতে চান। আপনার সার্জিক্যাল টিমের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার বিষয়ে জানার জন্য প্রশ্ন করতে কোনো ধরনের লজ্জা করবেন না।
প্রশ্ন : আর্থ্রাইটিসের রোগীর সাধারণত কী ধরনের অপারেশন করা হয়?
উত্তর : রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের রোগীর সচরাচর যে অপারেশনটি বেশি করা হয় তার নাম সাইনোভেকটমি। এ ক্ষেত্রে সাইনোভিয়ামের কিছু অংশ কেটে বাদ দেয়া হয়। সাইনোভিয়াম হলো অস্থিসন্ধির চার দিকের তরল পদার্থপূর্ণ ক্যাপসুলের আবরণ। স্বাভাবিক সাইনোভিয়াম পাতলা কাগজের মতো পুরু। কিন্তু রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস দ্বারা অস্থিসন্ধি আক্রান্ত হলে সাইনোভিয়ামে প্রদাহ হয় এবং সাইনোভিয়াম অস্বাভাবিকভাবে বড় হয়, জয়েন্ট ক্যাপসুলকে আক্রমণ করে। ফলে কার্টিলেজ ও হাড় ক্ষয় হয়।
সাইনোভেকটমি করা হয়ে থাকে হাঁটু, কব্জি ও আঙুলগুলোতে, এটি হিপে করা হয় না।
প্রশ্ন : জয়েন্ট ক্যাপসুলের ভেতরে সার্জন কিভাবে কাজ করেন? পুরো অস্থিসন্ধিটাই কি কেটে খোলা হয়?
উত্তর : একটি অপরিহার্য নয়। হাঁটুর অস্থিসন্ধির ক্ষেত্রে আর্থ্রোস্কপিক সার্জারি করা যেতে পারে।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, অর্থোপেডিকস ও ট্রমাটোলজি বিভাগ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ । চেম্বার : পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিঃ, ২ ইংলিশ রোড, ঢাকা। ফোন: ০১৬৮৬৭২২৫৭৭
প্রশ্ন : বাতরোগে কোন ধরনের সার্জারি করা হয়?
উত্তর : বিভিন্ন ধরনের অপারেশন করা হতে পারে, যেমন- অস্থিসন্ধিতে সাইনোভিয়াল টিস্যু কেটে ফেলা, জয়েন্ট ক্যাপসুলের মৃত টিস্যু দূর করা, অমসৃণ কার্টিলেজকে মসৃণ করা ইত্যাদি। এতে হাঁটুর নড়াচড়ার উন্নতি ঘটে, অস্থিসন্ধিগুলো স্থিত হয়। অবর্ণনীয় ব্যথা কমাতে ও অকার্যকর অস্থিসন্ধির জন্য অস্থিসন্ধির প্রতিস্থাপন করা হতে পারে।
প্রশ্ন : অস্থিসন্ধির কার্যকারিতা ফিরিয়ে আনতে কিংবা উপসর্গগুলো দূরীভূত করতে চিকিৎসক অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে রোগী কতদিন ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা চালিয়ে যাবে?
উত্তর : এই প্রশ্নের কোনো সুনির্দিষ্ট উত্তর নেই। এটা এক রোগী থেকে আরেক রোগীর ক্ষেত্রে ভিন্ন হতে পারে। আপনাকে জানতে হবে যে, যেকোনো ধরনের আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় সার্জারিকে খুব কম ক্ষেত্রেই প্রথম সারির চিকিৎসা পদ্ধতি হিসাবে গণ্য করা হয়। তাই বলে এটি যে একেবারে চিকিৎসার সর্বশেষ ধাপ সেটা ভাবারও কোনো কারণ নেই। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপারেশনে যাওয়ার আগে আপনি ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা নিয়ে কিংবা আক্রান্ত অস্থিসন্ধিতে স্টেরয়েড ইনজেকশন প্রয়োগ করে বেশ কিছু দিন দেখতে পারেন।
কিছু কিছু সার্জারি অস্থিসন্ধির আয়ু বাড়ায় বটে, তবে আর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রে চূড়ান্তভাবে সার্জারির প্রয়োজন নাও হতে পারে।
একজন বিশেষজ্ঞই নির্ধারণ করবেন আপনার কোন ধরনের সার্জারি প্রয়োজন।
প্রশ্ন : সার্জারি করলে লাভ হবে কি না তা আমি বুঝব কী করে?
উত্তর : যদি আপনার অস্থিসন্ধির ব্যথা দীর্ঘ দিন নন সার্জিক্যাল চিকিৎসায় যেমন ওষুধ, বিশ্রাম, স্পিন্টিং কিংবা স্টেরয়েড ইনজেকশনে ভালো না হয়, তাহলে আপনার চিকিৎসক আপনাকে একজন অর্থোপেডিক সার্জনের কাছে রেফার করবেন। অর্থোপেডিক সার্জনকে মাঝে মাঝে কেউ কেউ অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ বলে থাকেন।
এক্স-রে বা অন্য কোনো ইমেজিং টেকনিকের দ্বারা আপনার অস্থিসন্ধিতে কিছু নির্দিষ্ট সমস্যা পাওয়া গেলে সার্জারি করালে অবস্থার উন্নতি ঘটতে পারে। উদাহরণস্বরূপ আপনার সাইনোভিয়াম মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেলে, বাঁকা হাঁটু থাকলে কিংবা অন্য কোনো অস্থিসন্ধির স্থিতিগত সমস্যা থাকলে, হাঁটুর এক দিকে কার্টিলেজ থাকলে বা হাঁটুতে কিছু দিন পরপর ব্যথা হলে আপনার চিকিৎসক আপনাকে সার্জারি করার জন্য একজন অর্থোপেডিক সার্জনের কাছে রেফার করতে পারেন।
প্রশ্ন : অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ কী করবেন?
উত্তর : অর্থোপেডিক সার্জন আপনার অস্থিসন্ধি বা হাড়ের জোড়া পরীক্ষা করে দেখবেন, আপনাকে এক্স-রে করাবেন এবং আরো কিছু পরীক্ষাও করাতে পারেন। এরপর সিদ্ধান্ত নেবেন কোন ধরনের সার্জারি করলে আপনি উপকৃত হবেন।
প্রশ্ন : কীভাবে নিশ্চিত হবো যে, আমি সবচেয়ে ভালো সার্জনের কাছে অপারেশন করাচ্ছি এবং সবচেয়ে উৎকৃষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি?
উত্তর : যেকোনো সময় আপনাকে ছুরি-কাঁচির নিচে যাওয়া লাগতে পারে এবং অনেক ক্ষেত্রে আপনাকে অ্যানেস্থেশিয়া দেয়া হতে পারে। আপনি ইচ্ছা করলেই অনেক অভিজ্ঞ ও দক্ষ সার্জন এবং অ্যানেস্থেশিস্ট পেতে পারেন। জয়েন্ট সার্জারি, বিশেষ করে টোটাল রিপ্লেসমেন্ট হলো খুব উচ্চ ধরনের বিশেষ অপারেশন। শুধু সার্জনের জন্য নয়, সমগ্র সার্জিক্যাল টিমের জন্যও বটে, অ্যানেস্থেশিস্টসহ। তার মানে হচ্ছে আপনার অপারেশনের জন্য সবচেয়ে ভালো স্থান হলো সেই হাসপাতাল যে হাসপাতালে এ ধরনের অপারেশন সচরাচর হয়ে থাকে। আর সবচেয়ে ভালো সার্জন হলেন তিনি, যিনি এ অপারেশন সপ্তাহে কয়েকটি করে থাকেন। আপনি আপনার চিকিৎসকের সাথে ব্যাপারটি নিয়ে কথা বলতে পারেন, যেখানে আপনি অপারেশন করাতে চান। আপনার সার্জিক্যাল টিমের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার বিষয়ে জানার জন্য প্রশ্ন করতে কোনো ধরনের লজ্জা করবেন না।
প্রশ্ন : আর্থ্রাইটিসের রোগীর সাধারণত কী ধরনের অপারেশন করা হয়?
উত্তর : রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের রোগীর সচরাচর যে অপারেশনটি বেশি করা হয় তার নাম সাইনোভেকটমি। এ ক্ষেত্রে সাইনোভিয়ামের কিছু অংশ কেটে বাদ দেয়া হয়। সাইনোভিয়াম হলো অস্থিসন্ধির চার দিকের তরল পদার্থপূর্ণ ক্যাপসুলের আবরণ। স্বাভাবিক সাইনোভিয়াম পাতলা কাগজের মতো পুরু। কিন্তু রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস দ্বারা অস্থিসন্ধি আক্রান্ত হলে সাইনোভিয়ামে প্রদাহ হয় এবং সাইনোভিয়াম অস্বাভাবিকভাবে বড় হয়, জয়েন্ট ক্যাপসুলকে আক্রমণ করে। ফলে কার্টিলেজ ও হাড় ক্ষয় হয়।
সাইনোভেকটমি করা হয়ে থাকে হাঁটু, কব্জি ও আঙুলগুলোতে, এটি হিপে করা হয় না।
প্রশ্ন : জয়েন্ট ক্যাপসুলের ভেতরে সার্জন কিভাবে কাজ করেন? পুরো অস্থিসন্ধিটাই কি কেটে খোলা হয়?
উত্তর : একটি অপরিহার্য নয়। হাঁটুর অস্থিসন্ধির ক্ষেত্রে আর্থ্রোস্কপিক সার্জারি করা যেতে পারে।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, অর্থোপেডিকস ও ট্রমাটোলজি বিভাগ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ । চেম্বার : পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিঃ, ২ ইংলিশ রোড, ঢাকা। ফোন: ০১৬৮৬৭২২৫৭৭
No comments