নেপালের সঙ্গে বাণিজ্য আটকে গেছে by জাহাঙ্গীর শাহ ও শহীদুল ইসলাম
বেশ
কয়েক দিন ধরে ভারত-নেপালের কাঁকরভিটা সীমান্তে বাংলাদেশের ওয়ালটনের ৩০০
রেফ্রিজারেটরের চালান আটকে আছে। পথেই আটকে গেছে বাংলাদেশি এ পণ্যের চালান।
নেপালে জ্বালানিসংকটে পণ্য পরিবহন করা যাচ্ছে না, তাই এ চালানটি নেপাল
সীমান্তে পড়ে আছে।
এ সমস্যার কারণে আরও ২ হাজার ৪০০ রেফ্রিজারেটরের অর্ডার থাকলেও বাংলাদেশ থেকেই পাঠানো হচ্ছে না। এমনকি চাহিদা সত্ত্বেও নেপাল থেকে আপাতত কোনো অর্ডারও নিচ্ছে না ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।
নেপালে পরিবহনে জ্বালানি সরবরাহ প্রায় বন্ধ থাকা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য-সংকটের কারণে এভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে নেপালের বাণিজ্য শ্লথ হয়ে গেছে। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে এই অবস্থা চলছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়ালটনের অপারেটিভ পরিচালক উদয় হাকিম প্রথম আলোকে বলেন, নেপাল-সংকটের কারণে আপাতত নতুন কোনো অর্ডার নেওয়া হচ্ছে না। সংকট কেটে গেলে আবারও স্বাভাবিকভাবে নেপালে পণ্য যাবে। নেপালে পরিবেশকের মাধ্যমে মূলত রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন, মোটরসাইকেল ও মুঠোফোন বাজারজাত করে ওয়ালটন।
অন্যদিকে জুস, ড্রিংকস, চকলেট, বেকারি পণ্য, বিস্কুটসহ বিভিন্ন পণ্য নেপালে রপ্তানি করে থাকে দেশের অন্যতম প্রধান শিল্পগোষ্ঠী প্রাণ। ঈদের পর থেকে এসব পণ্য নেপালে রপ্তানি করতে পারেনি এ প্রতিষ্ঠান। গত সোমবার থেকে সীমিত পরিসরে কিছু পণ্য রপ্তানি শুরু হয়েছে।
এ প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি বিভাগের প্রধান মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, ২০-২৫ দিনে ধরে পণ্য রপ্তানি বন্ধ থাকায় প্রায় ১৫ লাখ ডলারের বিক্রি কমেছে। এ সংকটের কারণে নেপালের সঙ্গে বাণিজ্য শঙ্কার মধ্যে পড়েছে বলে তিনি মনে করেন।
গত মাসের শেষ দিকে ভূবেষ্টিত নেপালের নতুন সংবিধান অনুমোদন, ক্ষমতার পট পরিবর্তনের কারণে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। মাধেসি জনগোষ্ঠীর সড়ক অবরোধে পণ্য সরবরাহ বিঘ্নিত হতে থাকে। ভারতের রপ্তানিকারকেরাও নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে পণ্য জ্বালানিসহ নিত্যপণ্য রপ্তানি প্রায় বন্ধ রাখে। তাই নেপালজুড়ে চলছে তীব্র জ্বালানিসংকট।
নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের বেশির ভাগ বাণিজ্য হয় উত্তরের পঞ্চগড় জেলার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে। এ বন্দর দিয়ে ডাল, ঔষধি গাছগাছড়া ও প্রসাধন পণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি করে নেপাল। আর বাংলাদেশ থেকে ফ্রিজ, টেলিভিশন, তৈরি পোশাক, তুলা, ওষুধ,
ব্যাটারি, সুতা, ফলের রস, আলু, গুঁড়া দুধ, বিস্কুট, পাটের কাঁচামাল ও সোলার টিউবলাইট আমদানি করা হয়। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে পণ্যের চালান ভারতের পানিটাংকি সীমান্ত দিয়ে নেপালের কাঁকরভিটায় পৌঁছায়।
ঈদের ছুটি ও নেপালের সংকটের কারণে গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে নেপালে পণ্য রপ্তানি ১৮ দিন বন্ধ থাকে। ৮ অক্টোবর সীমিত আকারে পণ্য যেতে শুরু করে। তবে নেপাল থেকে পণ্য আমদানি হয়নি বললেই চলে। গত সাত দিনে ‘ডাবর নেপাল’-এর মাত্র দুই ট্রাক প্রসাধনসামগ্রী বাংলাদেশে আসে। এ পণ্য সংকট তৈরির আগেই নেপাল সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে এসেছিল। আর নেপাল থেকে যত টাকার পণ্য বাংলাদেশে আসে, এর অর্ধেকের বেশিই ডাল। কিন্তু তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে নেপালি ডালের কোনো চালান আসেনি।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, আগে এ বন্দর দিয়ে দৈনিক ৫০ থেকে ৬০টি ট্রাক পণ্য ভারতে আসা-যাওয়া করত। চলতি সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ১০-১২টি পণ্যবাহী ট্রাক গেছে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার ব্যাটারি, সুতা, ফলের রস ও পাটের ১২ ট্রাক পণ্য নেপালের উদ্দেশে বাংলাদেশ সীমান্ত পার হয়েছে। তবে এ পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে ভারত-নেপাল সীমান্তে গিয়ে বসে থাকতে হবে।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনার পর দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি ব্যাহত হয়েছে। নতুন করে চালু হলেও আগের মতো আর হচ্ছে না। আশা করছি শিগগিরই এই অচলাবস্থা কেটে যাবে।’
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ থেকে সীমিত আকারে পণ্য রপ্তানি হলেও নেপাল থেকে কোনো পণ্য আসছে না। নেপালি সিঅ্যান্ডএফ প্রতিনিধিরা তাঁকে জানিয়েছেন, নেপালে সড়ক-মহাসড়কে অবরোধের কারণে সেখান থেকে পণ্য নিয়ে কোনো ট্রাক আসতে পারছে না।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে আসা নেপালের ঝাপা জেলার কাঁকরভিটা এলাকার সিঅ্যান্ডএফ প্রতিনিধি নবীন দাহাল ও দিলীপ থিমসিনা বলেন, ‘রাজনৈতিক অচলাবস্থার কারণে নেপালের প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানি করতে পারছে না।’
এক দশক পর গত অর্থবছরে দুই দেশের বাণিজ্য বাংলাদেশের পক্ষে রয়েছে। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ প্রায় আড়াই শ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি করেছে। অন্যদিকে নেপাল থেকে এসেছে ১১৫ কোটি টাকার পণ্য।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে কাঁকরভিটা-ফুলবাড়ী-বাংলাবান্ধা পথে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য শুরু হয়। নেপালি ট্রাক শিলিগুড়ির ফুলবাড়ী স্থলবন্দর পর্যন্ত এসে পণ্য পরিবহন করে থাকে।
এ সমস্যার কারণে আরও ২ হাজার ৪০০ রেফ্রিজারেটরের অর্ডার থাকলেও বাংলাদেশ থেকেই পাঠানো হচ্ছে না। এমনকি চাহিদা সত্ত্বেও নেপাল থেকে আপাতত কোনো অর্ডারও নিচ্ছে না ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।
নেপালে পরিবহনে জ্বালানি সরবরাহ প্রায় বন্ধ থাকা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য-সংকটের কারণে এভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে নেপালের বাণিজ্য শ্লথ হয়ে গেছে। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে এই অবস্থা চলছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়ালটনের অপারেটিভ পরিচালক উদয় হাকিম প্রথম আলোকে বলেন, নেপাল-সংকটের কারণে আপাতত নতুন কোনো অর্ডার নেওয়া হচ্ছে না। সংকট কেটে গেলে আবারও স্বাভাবিকভাবে নেপালে পণ্য যাবে। নেপালে পরিবেশকের মাধ্যমে মূলত রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন, মোটরসাইকেল ও মুঠোফোন বাজারজাত করে ওয়ালটন।
অন্যদিকে জুস, ড্রিংকস, চকলেট, বেকারি পণ্য, বিস্কুটসহ বিভিন্ন পণ্য নেপালে রপ্তানি করে থাকে দেশের অন্যতম প্রধান শিল্পগোষ্ঠী প্রাণ। ঈদের পর থেকে এসব পণ্য নেপালে রপ্তানি করতে পারেনি এ প্রতিষ্ঠান। গত সোমবার থেকে সীমিত পরিসরে কিছু পণ্য রপ্তানি শুরু হয়েছে।
এ প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি বিভাগের প্রধান মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, ২০-২৫ দিনে ধরে পণ্য রপ্তানি বন্ধ থাকায় প্রায় ১৫ লাখ ডলারের বিক্রি কমেছে। এ সংকটের কারণে নেপালের সঙ্গে বাণিজ্য শঙ্কার মধ্যে পড়েছে বলে তিনি মনে করেন।
গত মাসের শেষ দিকে ভূবেষ্টিত নেপালের নতুন সংবিধান অনুমোদন, ক্ষমতার পট পরিবর্তনের কারণে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। মাধেসি জনগোষ্ঠীর সড়ক অবরোধে পণ্য সরবরাহ বিঘ্নিত হতে থাকে। ভারতের রপ্তানিকারকেরাও নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে পণ্য জ্বালানিসহ নিত্যপণ্য রপ্তানি প্রায় বন্ধ রাখে। তাই নেপালজুড়ে চলছে তীব্র জ্বালানিসংকট।
নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের বেশির ভাগ বাণিজ্য হয় উত্তরের পঞ্চগড় জেলার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে। এ বন্দর দিয়ে ডাল, ঔষধি গাছগাছড়া ও প্রসাধন পণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি করে নেপাল। আর বাংলাদেশ থেকে ফ্রিজ, টেলিভিশন, তৈরি পোশাক, তুলা, ওষুধ,
ব্যাটারি, সুতা, ফলের রস, আলু, গুঁড়া দুধ, বিস্কুট, পাটের কাঁচামাল ও সোলার টিউবলাইট আমদানি করা হয়। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে পণ্যের চালান ভারতের পানিটাংকি সীমান্ত দিয়ে নেপালের কাঁকরভিটায় পৌঁছায়।
ঈদের ছুটি ও নেপালের সংকটের কারণে গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে নেপালে পণ্য রপ্তানি ১৮ দিন বন্ধ থাকে। ৮ অক্টোবর সীমিত আকারে পণ্য যেতে শুরু করে। তবে নেপাল থেকে পণ্য আমদানি হয়নি বললেই চলে। গত সাত দিনে ‘ডাবর নেপাল’-এর মাত্র দুই ট্রাক প্রসাধনসামগ্রী বাংলাদেশে আসে। এ পণ্য সংকট তৈরির আগেই নেপাল সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে এসেছিল। আর নেপাল থেকে যত টাকার পণ্য বাংলাদেশে আসে, এর অর্ধেকের বেশিই ডাল। কিন্তু তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে নেপালি ডালের কোনো চালান আসেনি।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, আগে এ বন্দর দিয়ে দৈনিক ৫০ থেকে ৬০টি ট্রাক পণ্য ভারতে আসা-যাওয়া করত। চলতি সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ১০-১২টি পণ্যবাহী ট্রাক গেছে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার ব্যাটারি, সুতা, ফলের রস ও পাটের ১২ ট্রাক পণ্য নেপালের উদ্দেশে বাংলাদেশ সীমান্ত পার হয়েছে। তবে এ পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে ভারত-নেপাল সীমান্তে গিয়ে বসে থাকতে হবে।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনার পর দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি ব্যাহত হয়েছে। নতুন করে চালু হলেও আগের মতো আর হচ্ছে না। আশা করছি শিগগিরই এই অচলাবস্থা কেটে যাবে।’
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ থেকে সীমিত আকারে পণ্য রপ্তানি হলেও নেপাল থেকে কোনো পণ্য আসছে না। নেপালি সিঅ্যান্ডএফ প্রতিনিধিরা তাঁকে জানিয়েছেন, নেপালে সড়ক-মহাসড়কে অবরোধের কারণে সেখান থেকে পণ্য নিয়ে কোনো ট্রাক আসতে পারছে না।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে আসা নেপালের ঝাপা জেলার কাঁকরভিটা এলাকার সিঅ্যান্ডএফ প্রতিনিধি নবীন দাহাল ও দিলীপ থিমসিনা বলেন, ‘রাজনৈতিক অচলাবস্থার কারণে নেপালের প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানি করতে পারছে না।’
এক দশক পর গত অর্থবছরে দুই দেশের বাণিজ্য বাংলাদেশের পক্ষে রয়েছে। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ প্রায় আড়াই শ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি করেছে। অন্যদিকে নেপাল থেকে এসেছে ১১৫ কোটি টাকার পণ্য।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে কাঁকরভিটা-ফুলবাড়ী-বাংলাবান্ধা পথে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য শুরু হয়। নেপালি ট্রাক শিলিগুড়ির ফুলবাড়ী স্থলবন্দর পর্যন্ত এসে পণ্য পরিবহন করে থাকে।
No comments