কিলিং মিশনে অংশ নেয় ৮ জন
মতাদর্শের
জের ধরে হত্যা করা হয়েছে পিডিবির সাবেক চেয়ারম্যান ও কথিত পীর খিজির
খানকে। হত্যাকারীদের ভাষ্যমতে, ‘রহমতিয়া খানকাহ শরীফে’ খিজির খান যা করছিল
তা ছিল ‘শিরক’। একারণে খিজির খানকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয় তারা।
হত্যাকাণ্ডের আগে কয়েক দফা ওই খানকাহ শরীফে রেকি করে তারা। হত্যাকাণ্ডের
দিন ৮ জন দুই ভাগে ভাগ হয়ে ওই খানকাহ শরীফে ঢুকে। এক গ্রুপ ঢুকে খিজির
খানকে গোডাউন ভাড়া নেয়ার কথা বলে দোতলায় নিয়ে যায়। আরেক গ্রুপ সরাসরি
খানকাহ শরীফে গিয়ে হাত-পা বেঁধে খিজির খানকে গলা কেটে হত্যা করে। ৮ জনের এই
দলটির নেতৃত্ব দেয় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির গায়েরে এহসার সদস্য
তরিকুল ইসলাম ওরফে মিঠু। মঙ্গলবার রাতে তরিকুলকে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার থেকে
গ্রেপ্তারের পর বুধবার দিনভর তাকে নিয়ে সহযোগীদের ধরতে অভিযান চালায় ডিবি।
তবে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া অন্যদের ধরতে না পারলেও রাজধানীর মিরপুর থেকে
তাদের গাড়িচালক আলেক বেপারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে খিজির
খানের বাসা থেকে খোয়া যাওয়া দুটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল এ দুজনকে
আদালতে সোপর্দ করে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।
গতকাল দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে গ্রেপ্তার দুজনকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়। এ সময় ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম বলেন, পীর, ফকির ও মাজার সেবকদের খুনিরা পছন্দ করে না। তারা দাবি করে, ইসলামে পীর বলে কোনও শব্দ নেই। পীররা শিরক করে বলে গ্রেপ্তারকৃতদের ধারণা। তাই পীর হত্যাকে তারা ‘ঈমানি দায়িত্ব’ বলে মনে করে খিজির খানকে হত্যা করেছে। তাদের কাছ থেকে কাগজে লেখা আরেক পীরের নাম পাওয়া গেছে। ওই পীর তাদের পরবর্তী টার্গেট ছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে।
মনিরুল ইসলাম জানান, কিলিং মিশনে দুটি দলে ভাগ হয়ে ৮ জন অংশ নেয়। এক দল ঘটনাস্থল রেকি করে এবং আরেক দল হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। তারা একটি মাইক্রোবাসে করে খিজির খানের বাড্ডার বাসার সামনে এসেছিল। প্রথম দলে চারজন বাসায় ঢুকে খিজির খানের সঙ্গে কথা বলতে থাকে। ভেতরের পরিবেশ দেখে তারা বাইরের দলটিকে ভেতরে আসার সংকেত দেয়। সংকেত পেয়ে চারজনের অপর দলটি ভেতরে খানকাহ শরীফে ঢুকে খিজির খানের হাত-পা-মুখ বেঁধে মেঝেতে শুইয়ে দেয়। দলনেতা হিসেবে গ্রেপ্তারকৃত তরিকুল নিজ হাতে খিজির খানকে জবাই করে। অন্যরা তার হা-পা ধরে রাখে। পরে তারা বাসা থেকে বের হয়ে মাইক্রোবাসে করে চলে যায়। আলেক বেপারীকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে ডিবির এই যুগ্ম কমিশনার বলেন, মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার হওয়া আলেক বেপারী গাড়িচালক। তিনি সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেননি। তবে সব জেনেই খুনিদের গাড়িতে করে খিজির খানের বাসায় নিয়ে যায়। আবার পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের সাহায্য করে।
ডিবির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মাহফুজুল ইসলাম জানান, তরিকুল ২০০৫ সালে চট্টগ্রামের সিরিজ বোমা হামলার মামলায় ৫ বছর কারাভোগ করে জামিনে বের হয়। কারাগার থেকে বের হওয়ার পরপরই তিনি জেএমবিকে সংগঠিত করার চেষ্টা শুরু করেন। দুই বছর আগে থেকে তারা পীর ও মাজার সেবকদের হত্যার পরিকল্পনা করে। পীর ও মাজারের সেবকরা ‘শিরক’ করছে বলে তরিকুল দাবি করে। তাদের হত্যা করা ইমানি দায়িত্ব বলে অন্যান্য কর্মীদের মাঝে তিনি প্রচার করেন। তারা আরও পীর ও মাজারের সেবকদের হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। এদের মধ্যে একজনের নাম পাওয়া গেছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেন, রাজধানীর রাজবাজারে খুন হওয়া মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী ও গোপীবাগের ‘কথিত’ পীর লুৎফর রহমানসহ ছয়জনকে হত্যার সঙ্গে এই গ্রুপ জড়িত কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর মালামাল লুটের ব্যাপারে খুনিরা দাবি করেছে, পীরদের হত্যার পর তাদের সম্পদ ‘গনিমতের মাল’ হয়ে যায়। এসব মালামাল লুণ্ঠন করা জায়েজ আছে। এ ছাড়া জঙ্গি সদস্যরা আগের মতো অর্থ সাহায্য না পাওয়ায় অর্থ কষ্টে দিনাতিপাত করছিল। জেএমবিকে সংগঠিত করতে অর্থের প্রয়োজন। এজন্য তারা এর আগে কয়েকটি ডাকাতির ঘটনাও ঘটিয়েছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। ডিবির আরেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মোহাম্মদ শাজাহান বলেন, জঙ্গি সদস্যরা সবসময় ‘কাট আউট’ পদ্ধতিতে চলাফেরা করে। গ্রুপের সদস্যরা একে অপরের বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ-খবর রাখে না। একারণে গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে সহযোগীদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং প্রযুক্তির সহায়তায় অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, খিজির খানকে হত্যার পর এই গ্রুপটি একসঙ্গে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় চলে যায়। সেখান থেকে যে যার মতো নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যায়। মাস খানেক সবারই গা-ঢাকা দিয়ে থাকার নির্দেশনা ছিল। গ্রেপ্তারকৃত তরিকুল নিজ গ্রাম টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারের মৌলভীপাড়ার নিজ বাসায় চলে যায়। সূত্র জানায়, তরিকুলকে শনাক্তের পর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল ছদ্মবেশে দেলদুয়ারের মৌলভীপাড়ায় গিয়ে অবস্থান নেয়। ছদ্মবেশী গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তরিকুলের সঙ্গে এক সঙ্গে নামাজও আদায় করে। নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বেরনোর সঙ্গে সঙ্গেই গোয়েন্দারা তাকে আটক করে। সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারকৃত তরিকুল জেল থেকে বেরিয়ে আসার পর কয়েক ভাগ হয়ে যাওয়া জেএমবির একাংশের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। এই গ্রুপটি নেতৃত্ব দিচ্ছে ময়মনসিংহের ডা. নজরুল। যাকে অনুসারীরা ‘ডাক্তার সাহেব’ বলে ডাকে।
এদিকে আদালত সূত্রে জানা গেছে, খিজির হত্যায় গ্রেপ্তার দুজনকে গতকাল আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আজিজুর রহমান। ঢাকার মহানগর হাকিম রাশেদ তালুকদার শুনানি শেষে প্রত্যেকের ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালতে আসামি পক্ষের কোন আইনজীবী ছিল না।
গত ৫ই অক্টোবর সন্ধ্যায় রাজধানীর মধ্য বাড্ডায় নিজের বাড়িতে খুন হন খিজির খান। ওই বাড়িতে ছিল রহমানিয়া খানকা শরীফ। নিহতের বাবা কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগরের বাসিন্দা হাবিব রহমত উল্লাহও পীর ছিলেন।
গতকাল দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে গ্রেপ্তার দুজনকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়। এ সময় ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম বলেন, পীর, ফকির ও মাজার সেবকদের খুনিরা পছন্দ করে না। তারা দাবি করে, ইসলামে পীর বলে কোনও শব্দ নেই। পীররা শিরক করে বলে গ্রেপ্তারকৃতদের ধারণা। তাই পীর হত্যাকে তারা ‘ঈমানি দায়িত্ব’ বলে মনে করে খিজির খানকে হত্যা করেছে। তাদের কাছ থেকে কাগজে লেখা আরেক পীরের নাম পাওয়া গেছে। ওই পীর তাদের পরবর্তী টার্গেট ছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে।
মনিরুল ইসলাম জানান, কিলিং মিশনে দুটি দলে ভাগ হয়ে ৮ জন অংশ নেয়। এক দল ঘটনাস্থল রেকি করে এবং আরেক দল হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। তারা একটি মাইক্রোবাসে করে খিজির খানের বাড্ডার বাসার সামনে এসেছিল। প্রথম দলে চারজন বাসায় ঢুকে খিজির খানের সঙ্গে কথা বলতে থাকে। ভেতরের পরিবেশ দেখে তারা বাইরের দলটিকে ভেতরে আসার সংকেত দেয়। সংকেত পেয়ে চারজনের অপর দলটি ভেতরে খানকাহ শরীফে ঢুকে খিজির খানের হাত-পা-মুখ বেঁধে মেঝেতে শুইয়ে দেয়। দলনেতা হিসেবে গ্রেপ্তারকৃত তরিকুল নিজ হাতে খিজির খানকে জবাই করে। অন্যরা তার হা-পা ধরে রাখে। পরে তারা বাসা থেকে বের হয়ে মাইক্রোবাসে করে চলে যায়। আলেক বেপারীকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে ডিবির এই যুগ্ম কমিশনার বলেন, মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার হওয়া আলেক বেপারী গাড়িচালক। তিনি সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেননি। তবে সব জেনেই খুনিদের গাড়িতে করে খিজির খানের বাসায় নিয়ে যায়। আবার পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের সাহায্য করে।
ডিবির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মাহফুজুল ইসলাম জানান, তরিকুল ২০০৫ সালে চট্টগ্রামের সিরিজ বোমা হামলার মামলায় ৫ বছর কারাভোগ করে জামিনে বের হয়। কারাগার থেকে বের হওয়ার পরপরই তিনি জেএমবিকে সংগঠিত করার চেষ্টা শুরু করেন। দুই বছর আগে থেকে তারা পীর ও মাজার সেবকদের হত্যার পরিকল্পনা করে। পীর ও মাজারের সেবকরা ‘শিরক’ করছে বলে তরিকুল দাবি করে। তাদের হত্যা করা ইমানি দায়িত্ব বলে অন্যান্য কর্মীদের মাঝে তিনি প্রচার করেন। তারা আরও পীর ও মাজারের সেবকদের হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। এদের মধ্যে একজনের নাম পাওয়া গেছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেন, রাজধানীর রাজবাজারে খুন হওয়া মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী ও গোপীবাগের ‘কথিত’ পীর লুৎফর রহমানসহ ছয়জনকে হত্যার সঙ্গে এই গ্রুপ জড়িত কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর মালামাল লুটের ব্যাপারে খুনিরা দাবি করেছে, পীরদের হত্যার পর তাদের সম্পদ ‘গনিমতের মাল’ হয়ে যায়। এসব মালামাল লুণ্ঠন করা জায়েজ আছে। এ ছাড়া জঙ্গি সদস্যরা আগের মতো অর্থ সাহায্য না পাওয়ায় অর্থ কষ্টে দিনাতিপাত করছিল। জেএমবিকে সংগঠিত করতে অর্থের প্রয়োজন। এজন্য তারা এর আগে কয়েকটি ডাকাতির ঘটনাও ঘটিয়েছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। ডিবির আরেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মোহাম্মদ শাজাহান বলেন, জঙ্গি সদস্যরা সবসময় ‘কাট আউট’ পদ্ধতিতে চলাফেরা করে। গ্রুপের সদস্যরা একে অপরের বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ-খবর রাখে না। একারণে গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে সহযোগীদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং প্রযুক্তির সহায়তায় অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, খিজির খানকে হত্যার পর এই গ্রুপটি একসঙ্গে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় চলে যায়। সেখান থেকে যে যার মতো নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যায়। মাস খানেক সবারই গা-ঢাকা দিয়ে থাকার নির্দেশনা ছিল। গ্রেপ্তারকৃত তরিকুল নিজ গ্রাম টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারের মৌলভীপাড়ার নিজ বাসায় চলে যায়। সূত্র জানায়, তরিকুলকে শনাক্তের পর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল ছদ্মবেশে দেলদুয়ারের মৌলভীপাড়ায় গিয়ে অবস্থান নেয়। ছদ্মবেশী গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তরিকুলের সঙ্গে এক সঙ্গে নামাজও আদায় করে। নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বেরনোর সঙ্গে সঙ্গেই গোয়েন্দারা তাকে আটক করে। সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারকৃত তরিকুল জেল থেকে বেরিয়ে আসার পর কয়েক ভাগ হয়ে যাওয়া জেএমবির একাংশের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। এই গ্রুপটি নেতৃত্ব দিচ্ছে ময়মনসিংহের ডা. নজরুল। যাকে অনুসারীরা ‘ডাক্তার সাহেব’ বলে ডাকে।
এদিকে আদালত সূত্রে জানা গেছে, খিজির হত্যায় গ্রেপ্তার দুজনকে গতকাল আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আজিজুর রহমান। ঢাকার মহানগর হাকিম রাশেদ তালুকদার শুনানি শেষে প্রত্যেকের ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালতে আসামি পক্ষের কোন আইনজীবী ছিল না।
গত ৫ই অক্টোবর সন্ধ্যায় রাজধানীর মধ্য বাড্ডায় নিজের বাড়িতে খুন হন খিজির খান। ওই বাড়িতে ছিল রহমানিয়া খানকা শরীফ। নিহতের বাবা কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগরের বাসিন্দা হাবিব রহমত উল্লাহও পীর ছিলেন।
No comments