বিউটির ময়নাতদন্তে ছাত্রলীগের বাধা
দিনভর
নানা নাটকীয়তা, দফায় দফায় বৈঠক, ছাত্রলীগ ও ইন্টার্নি ডাক্তারদের বাধা ও
বিক্ষোভ উপেক্ষা করে অবশেষে পুলিশের দৃঢ় অবস্থানের ফলে খুলনা মেডিক্যাল
কলেজের ছাত্রী আরমনি সুলতানা বিউটির (২৪) ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। হিমঘর
থেকে গতকাল সকাল ৯টার দিকে লাশ ফরেনসিক বিভাগে হস্তান্তর করা হলেও ছাত্রলীগ
ও ইন্টার্নি ডাক্তারদের একাংশের বাধার কারণে বিকালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।
ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের ভাই মোহা. ইকবাল হোসেনের কাছে লাশ হস্তান্তর করা
হয়েছে। এদিকে ময়নাতদন্ত করাকে কেন্দ্র করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে
তুলকালাম কাণ্ড ঘটে যায়। ময়নাতদন্তে আত্মহত্যার আসল রহস্য বের হতে পারে এমন
আশঙ্কায় এমন ঘটনা ঘটেছে বলে নিহতের সহপাঠীরা অভিযোগ করেছেন। খবর পেয়ে
চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা থেকে বিউটির বড় ভাই মো. ইকবাল হোসেন বুধবার রাতে
খুলনায় এসে পৌঁছান।
পারিবারিক ও কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, বিউটি ২০০৭ সালে চট্টগ্রামের ভক্তিয়াপাড়া চারপীর আউলিয়া (রহ.) উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০০৯ সালে চট্টগ্রাম সরকারি হাজী মুহম্মদ মহসিন কলেজ থেকে এইচএসসি পাসের পর ২০১০ সালে খুলনা মেডিক্যালে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হন। তার পিতার নাম মোহা. ইদ্রিস মিয়া এবং মায়ের নাম রাজিয়া সুলতানা মেডিক্যাল কলেজের ভর্তি বিবরণী ফরমে অভিভাবক হিসেবে দেয়া রয়েছে।
অপরদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, নিহতের বড় ভাই মো. ইকবাল হোসেন সকালে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে আসলে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের নেতা, ইন্টার্নি চিকিৎসক পরিষদের একাংশ ও ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক হয়। একপর্যায়ে দুপুরে নিহতের ভাই ইকবালও বলেন, ময়নাতদন্ত ছাড়াই আমার বোনের লাশ নিয়ে যেতে চাই। এরপর সে ও কলেজের উপাধ্যক্ষ এসকে বল্লভ প্রথমে সোনাডাঙ্গা থানা ওসি ও কেএমপি কমিশনারের কাছে গেলে সেখান থেকে ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ হস্তান্তর করা যাবে না বললে নিরুপায় হয়ে বিকালে ময়নাতদন্ত করা হয়। ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. আতাউর রহমানের নেতৃত্বে ডা. জাহিদ মাহমুদ, আসিফ রায়হান ও মুসলিমা ইয়াসমিন সুইটি ময়নাতদন্ত করেন। ময়নাতদন্ত শেষে আসরবাদ মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে জানাযা শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে লাশ নিয়ে এম্বুলেন্সযোগে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বন্দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
এদিকে বেলা ১১টার দিকে সাংবাদিকরা মেডিক্যাল কলেজে গেলে ছাত্রলীগ ও ইন্টার্নি চিকিৎসকদের একাংশের বাধার কারণে ঢুকতে পারেনি। এ সময় তাদের ওপর মারমুখী হলে পুলিশ সাংবাদিকদের উদ্ধার করে নিরাপদে পাঠিয়ে দেন। মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আপেল মাহমুদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কর্মীরা কলেজ গেটে বিক্ষোভ করে। লাশ ঘরের সামনে তারা সকাল থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত অবস্থান নেয়। এ সময় তারা এ ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকরা বেশি বাড়াবাড়ি করছে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে। তারা বলে আমরা থাকতে এই লাশের ময়নাতদন্ত করতে দেবো না। ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ চট্টগ্রামে পাঠিয়ে দেয়া হবে। এ ব্যাপারে কলেজ সাধারণ সম্পাদক আপেল মাহমুদ বলেন, আমরা চেয়েছিলাম ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে। তিনি দাবি করেন, আত্মহত্যাকারী ছাত্রীর সঙ্গে কোন শিক্ষকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। তবে আত্মহত্যার কারণ কি তা আমি বলতে পারবো না।
তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সরদার ইব্রাহিম হোসেন সোহেল বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেছে। গতকাল সকাল ৯টা ১০ মিনিটে হিমঘর থেকে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেন। কিন্তু কিছু সংখ্যক ছাত্রদের বাধার কারণে ময়নাতদন্ত করতে বিলম্ব হয়। পুলিশের দৃঢ় অবস্থানের কারণে ময়নাতদন্তের বাধাপ্রদানকারীরা ব্যর্থ হয়। বিকাল ৪টার দিকে ময়নাতদন্তের কাজ শুরু হয়। সন্ধ্যায় লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তিনি বলেন, আত্মহত্যার ক্লু উদ্ধার করতে তার ব্যবহৃত মোবাইলসহ কিছু মালামাল জব্দ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে মোবাইল মেসেজে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে, সেগুলো ধরে তদন্ত করলে আত্মহত্যার আসল রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।
খুমেক হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডের (ইউনিট-২) রেজিস্ট্রার ডা. মৃণাল কান্তি দাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিউটি তার সরাসরি ছাত্রী ছিল। গত কয়েকদিন সে ক্লাস করেনি। কয়েকদিন আগেও সে প্যারাসিটামল, ঘুমের ওষুধ খেয়েছে। সব সময় তার মধ্যে একটি স্নায়ুচাপ বিরাজ করতো। নিজে নিজে কয়েকবার হাতও কেটেছে। কোন একটা হতাশা তার মধ্যে কাজ করতো।’
খুলনা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ আল মাহবুব স্বাক্ষরিত এক শোক বার্তায় বলা হয়, এমবিবিএস কোর্সে অধ্যয়নরত ৫ম বর্ষে ছাত্রী আরমনি সুলতানা বিউটির মৃত্যুতে কলেজ কর্তৃপক্ষ গভীর শোক প্রকাশ করছে এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছে।
পারিবারিক ও কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, বিউটি ২০০৭ সালে চট্টগ্রামের ভক্তিয়াপাড়া চারপীর আউলিয়া (রহ.) উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০০৯ সালে চট্টগ্রাম সরকারি হাজী মুহম্মদ মহসিন কলেজ থেকে এইচএসসি পাসের পর ২০১০ সালে খুলনা মেডিক্যালে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হন। তার পিতার নাম মোহা. ইদ্রিস মিয়া এবং মায়ের নাম রাজিয়া সুলতানা মেডিক্যাল কলেজের ভর্তি বিবরণী ফরমে অভিভাবক হিসেবে দেয়া রয়েছে।
অপরদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, নিহতের বড় ভাই মো. ইকবাল হোসেন সকালে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে আসলে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের নেতা, ইন্টার্নি চিকিৎসক পরিষদের একাংশ ও ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক হয়। একপর্যায়ে দুপুরে নিহতের ভাই ইকবালও বলেন, ময়নাতদন্ত ছাড়াই আমার বোনের লাশ নিয়ে যেতে চাই। এরপর সে ও কলেজের উপাধ্যক্ষ এসকে বল্লভ প্রথমে সোনাডাঙ্গা থানা ওসি ও কেএমপি কমিশনারের কাছে গেলে সেখান থেকে ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ হস্তান্তর করা যাবে না বললে নিরুপায় হয়ে বিকালে ময়নাতদন্ত করা হয়। ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. আতাউর রহমানের নেতৃত্বে ডা. জাহিদ মাহমুদ, আসিফ রায়হান ও মুসলিমা ইয়াসমিন সুইটি ময়নাতদন্ত করেন। ময়নাতদন্ত শেষে আসরবাদ মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে জানাযা শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে লাশ নিয়ে এম্বুলেন্সযোগে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বন্দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
এদিকে বেলা ১১টার দিকে সাংবাদিকরা মেডিক্যাল কলেজে গেলে ছাত্রলীগ ও ইন্টার্নি চিকিৎসকদের একাংশের বাধার কারণে ঢুকতে পারেনি। এ সময় তাদের ওপর মারমুখী হলে পুলিশ সাংবাদিকদের উদ্ধার করে নিরাপদে পাঠিয়ে দেন। মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আপেল মাহমুদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কর্মীরা কলেজ গেটে বিক্ষোভ করে। লাশ ঘরের সামনে তারা সকাল থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত অবস্থান নেয়। এ সময় তারা এ ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকরা বেশি বাড়াবাড়ি করছে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে। তারা বলে আমরা থাকতে এই লাশের ময়নাতদন্ত করতে দেবো না। ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ চট্টগ্রামে পাঠিয়ে দেয়া হবে। এ ব্যাপারে কলেজ সাধারণ সম্পাদক আপেল মাহমুদ বলেন, আমরা চেয়েছিলাম ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে। তিনি দাবি করেন, আত্মহত্যাকারী ছাত্রীর সঙ্গে কোন শিক্ষকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। তবে আত্মহত্যার কারণ কি তা আমি বলতে পারবো না।
তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সরদার ইব্রাহিম হোসেন সোহেল বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেছে। গতকাল সকাল ৯টা ১০ মিনিটে হিমঘর থেকে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেন। কিন্তু কিছু সংখ্যক ছাত্রদের বাধার কারণে ময়নাতদন্ত করতে বিলম্ব হয়। পুলিশের দৃঢ় অবস্থানের কারণে ময়নাতদন্তের বাধাপ্রদানকারীরা ব্যর্থ হয়। বিকাল ৪টার দিকে ময়নাতদন্তের কাজ শুরু হয়। সন্ধ্যায় লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তিনি বলেন, আত্মহত্যার ক্লু উদ্ধার করতে তার ব্যবহৃত মোবাইলসহ কিছু মালামাল জব্দ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে মোবাইল মেসেজে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে, সেগুলো ধরে তদন্ত করলে আত্মহত্যার আসল রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।
খুমেক হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডের (ইউনিট-২) রেজিস্ট্রার ডা. মৃণাল কান্তি দাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিউটি তার সরাসরি ছাত্রী ছিল। গত কয়েকদিন সে ক্লাস করেনি। কয়েকদিন আগেও সে প্যারাসিটামল, ঘুমের ওষুধ খেয়েছে। সব সময় তার মধ্যে একটি স্নায়ুচাপ বিরাজ করতো। নিজে নিজে কয়েকবার হাতও কেটেছে। কোন একটা হতাশা তার মধ্যে কাজ করতো।’
খুলনা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ আল মাহবুব স্বাক্ষরিত এক শোক বার্তায় বলা হয়, এমবিবিএস কোর্সে অধ্যয়নরত ৫ম বর্ষে ছাত্রী আরমনি সুলতানা বিউটির মৃত্যুতে কলেজ কর্তৃপক্ষ গভীর শোক প্রকাশ করছে এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছে।
No comments