পছন্দের মানুষকে নির্বাচিত করুন -আনিসুল হক
সিটি
নির্বাচনে ইলেকশন কমিশনের সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন
ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আনিসুল হক। সম্প্রতি কিছু
ঘটনায় নির্বাচনী পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে গতকাল নির্বাচনী
গণসংযোগকালে আনিসুল হক বলেন, নির্বাচন কমিশন সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেনা
মোতায়েনের সিদ্ধান্ত আমি সমর্থন করি। এতে জনমনে স্বস্তি ফিরে আসবে। ইদানীং
কিছু ঘটনায় নির্বাচনের পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে বলে মনে হচ্ছে।
ভাল নির্বাচন করার জন্য যা যা করার তাই করুক নির্বাচন কমিশন। আমি সমর্থন
দিয়ে যাবো। গতকাল আনিসুল হক তার প্রচারণা শুরু করেন মিরপুরের পল্লবী থানার
মুসলিম বাজার এলাকা থেকে। মিরপুরের এ অংশের একভাগে অবাঙালি বিহারি,
অন্যভাগে নিম্নআয়ের মানুষের বাস। পল্লবীর এ অংশটি ২নং ওয়ার্ডের ভোটব্যাংক
হিসেবে পরিচিত। এ ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৬ হাজারেরও বেশি। এ দিন
সকাল ১০টায় মুসলিমবাজার আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে এসে পৌঁছান আনিসুল হক। এ
সময় আনিসুল হকের সঙ্গে যোগ দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াসউদ্দিন মোল্লাহ,
২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। তবে
মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এ সময় আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে এক
পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আনিসুল হকের হয়ে টেবিলঘড়ি মার্কায় ভোট চান
ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ। কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের জন্যও ভোট চান তিনি। এরপর
বক্তব্য রাখেন মেয়র প্রার্থী আনিসুল হক। ভোটের আর মাত্র ৫ দিন বাকি। আপনারা
সঠিক প্রার্থী নির্বাচিত করুন- এমন আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন,
সাংবিধানিকভাবে আরও প্রায় সাড়ে তিন বছর এ সরকার ক্ষমতায় আছে। সরকারের সঙ্গে
প্রার্থীর সুসম্পর্ক থাকলে তার পক্ষে অন্যদের তুলনায় বেশি ভাল কাজ করা
সম্ভব। অতএব যিনি আপনাদের জন্য ভাল কাজ করবেন, তাকেই ভোট দিন। আমি শুধু
বলবো চাপ আসবে, অনেকে অর্থের লোভ দেখাবে। দয়া করে কেউ ভোট এবং বিবেক বিক্রি
করবেন না। আপস না করে পছন্দের মানুষকে নির্বাচিত করুন। খালেদা জিয়ার
গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় আবারও নিন্দা জানিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে
আনিসুল হক বলেন, ওই ঘটনায় আমি সবার আগে নিন্দা জানিয়েছি। দোষীদের শাস্তির
মুখোমুখি করতে পুলিশের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছি। তবে তিনি বিশাল গাড়িবহর নিয়ে
নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন, এটা নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন। পথসভা
শেষে মুসলিমবাজার মাঠে বাচ্চাদের সঙ্গে কিছুক্ষণ ক্রিকেট খেলেন এবং পুরো
এলাকার দোকানে দোকানে লিফলেট বিলি করেন। এরপর তিনি মিরপুর-১২-এর সাত্তার
মোল্লার বস্তি, ঝিলপাড় মোল্লার বস্তি হয়ে ভোলার বস্তি ঘুরে দেখেন।
বস্তিবাসীর কাছে ভোট চান। এ সময় অনেকেই জানতে চান, মেয়র নির্বাচিত হলে
বস্তিবাসীর উন্নয়নে কি করবেন? আনিসুল হক বস্তিবাসীর জীবন মান উন্নয়নে তার
যেসব কর্মসূচি আছে তার বিবরণ দেন। বিশেষ করে বস্তির শিশু ও নারীদের কল্যাণে
পদেক্ষপ নেবেন। বস্তিবাসীর জন্য লো-কষ্ট হাউজিং, নিয়মিত স্বাস্থ্য
পরীক্ষার সুযোগ, নিরাপদ খাবার পানির ব্যবস্থাসহ যা করণীয় সব করবেন বলে
আশ্বাস দেন। এ সময় অনেক বৃদ্ধ মহিলা আনিসুল হকের মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে
দেন। বস্তির জনগণ তাকে নির্বাচিত করার আশ্বাস দেন। এরপর তিনি চ্যানেল
একাত্তর ও ওয়ার্ল্ড ভিশন আয়োজিত এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে যোগ দেন। বিকালে যোগ
দেন বাউনিয়া বাঁধ এলাকার পথসভায়। সেখান থেকে সহস্র নাগরিক কমিটি আয়োজিত
মিরপুর সনি সিনেমা হলের সামনে আরেক পথসভায় যোগ দেন। এ সময় আনিসুল হকের
সঙ্গে ছিলেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব
নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, গোলাম কুদ্দুসসহ স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিরা।
সবশেষ সন্ধ্যায় ভাষানটেক এলাকায় পথসভা ও জনসংযোগের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি
শেষ করেন তিনি।
No comments