প্রমাণ করবো কাজের মানুষ
নির্বাচনী
প্রচারণা জমে উঠেছে ঢাকা দক্ষিণের কামরাঙ্গীরচর থানার অধীন ৫৫ নম্বর
ওয়ার্ডে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এই প্রথম কামরাঙ্গীরচরে ভোটাররা ভোট
দিচ্ছেন। তাই এ থানার বিভিন্ন ওয়ার্ডে চলছে নির্বাচনী উৎসবের আমেজ। সাধারণ ও
সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে নামা প্রার্থীরা এরই মধ্যে রাতদিন চষে
বেড়াচ্ছেন ওয়ার্ডের অলিগলি। প্রার্থীরাও রয়েছেন ভোট দেয়ার প্রতীক্ষায়।
সরজমিনে ৫৫ নম্বর ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, পোস্টারে ছেয়ে গেছে এলাকার
রাস্তা, ঘরের দেয়াল। ভোটের মাঠে জিততে চাইছেন সব প্রার্থী। এজন্য কাউন্সিলর
প্রার্থীরা ভোটার ও এলাকাবাসীকে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। তবে, এলাকার
অধিকাংশ রাস্তাই ভাঙাচোরা, খানাখন্দে ভরা। এলাকাবাসীর অভিযোগ দীর্ঘদিন হয়ে
গেলেও এসব মেরামত করার উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে
সম্প্রতি ওয়ার্ডের কিছু কিছু এলাকার রাস্তা মেরামত শুরু হয়েছে। এখন নতুন
ওয়ার্ড কাউন্সিলের প্রত্যাশায় তারা। ওয়ার্ডের কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা
বললে তারা জানান, এলাকায় মাদক ও সন্ত্রাস ভয়াভহ রূপ নিয়েছে। রাস্তাও
ভাঙাচোরা। খানাখন্দে ভরা। সঙ্গে রয়েছে জলাবদ্ধতা সমস্যা। তাই মাদকের
বিস্তার রোধ, সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ, অসমাপ্ত ও ভাঙাচোরা রাস্তা নির্মাণের
জন্য তারা একজন যোগ্য কাউন্সিলর চান। যিনি এলাকার সামাজিক ও উন্নয়নমূলক
কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকবেন এমন প্রার্থীকেই দেখে, শুনে, বোঝে ভোট দেবেন তারা।
ঝাউচর, ঢাউলাহাটি, নয়াগাঁও, হাসাননগর, মুন্সিরহাটি, আমিনবাগ, টেকেরহাটি,
পশ্চিম নবীনগর, সিরাজনগর, মনসুরবাগ নিয়ে গঠিত ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডে মোট ভোটারের
সংখ্যা ৪১ হাজার ৫শ’র কিছু বেশি। এই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সমর্থনে
কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন কামরাঙ্গীরচর থানা আওয়ামী লীগের
সহ-সভাপতি হাজী মো. নূরে আলম (ঠেলাগাড়ি)। নূরে আলম ও তার সমর্থকদের অভিযোগ
থানা ও ওয়ার্ডে কোন পদপদবি না থাকলেও আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে এই ওয়ার্ডে
কাউন্সিলর পদে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ছেন কেরামত
আলী মেম্বার (কাটা চামচ), ইঞ্জিনিয়ার মহিউদ্দিন আহমেদ (ঘুড়ি) ও হাজী মো.
শহীদুল্লাহ (ঝুড়ি)। আওয়ামী ঘরানার একাধিক প্রার্থী থাকায় আওয়ামী লীগ
সমর্থিত প্রার্থীর এই ওয়ার্ডে জয়লাভ কঠিন বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। এ
ক্ষেত্রে এখানকার বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল
হক (লাটিম) রয়েছেন কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে। তিনি এই ওয়ার্ডে বিএনপির একক
প্রার্থী। তবে, শহীদুল হকের অভিযোগ- আওয়ামী লীগের নেতা ও পুলিশের কারণে
তিনি প্রচার-প্রচারণায় নামতে পারছেন না। তার নামে একাধিক রাজনৈতিক ও
উদ্দেশ্যমূলক মামলা রয়েছে। তবে, এত কিছুর পরও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিনিই এই
ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে জয়লাভ করবেন বলে দৃঢ়বিশ্বাস তার। শহীদুল হক বলেন,
আমার নামে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা রয়েছে। নির্বাচনের মাঠ থেকে সরিয়ে
রাখার জন্য আমাকে প্রতিনিয়ত হয়রানি করা হচ্ছে। আমি প্রচার-প্রচারণায় অংশ
নিতে পারছি না। আমার নামে টানানো পোস্টার, ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। এমনকি
আমাকে হত্যার চেষ্টাও করা হচ্ছে। তবে, এলাকাবাসী আমাকে চিনে-জানে। তারা
আমার প্রতি আস্থা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারা আমাকেই
ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন। আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী হাজী মো.
নূরে আলম বলেন, নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। আমি কাউন্সিলর পদে
নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়নে কাজ করে যাব। এজন্য আমি এলাকাবাসীকে
প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছি। অপর প্রার্থী কেরামত আলী মেম্বার দাবি করেছেন তিনি
জন্মগত ও পারিবারিকভাবে আওয়ামী লীগের হলেও নির্বাচনে তিনি সতন্ত্র প্রার্থী
হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগের নামে নয়। তিনি বলেন, আমি এবং
আমার পরিবার ঐতিহ্যগতভাবেই আওয়ামী লীগ পরিবার। তারপরও আমি স্বতন্ত্র
প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ছি এবং এলাকাবাসীর কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া
পাচ্ছি। ইনশাল্লাহ আমি নির্বাচিত হবো। কামরাঙ্গীরচর থানার ৫৫, ৫৬ ও ৫৭
নম্বর ওয়ার্ডে সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন
আওয়ামী লীগ সমর্থিত শিউলি হোসেন সরকার (কেটলি)। অন্যদিকে বিএনপি এই ওয়ার্ডে
সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে কাউকেই সমর্থন না দেয়ায় এখানে রিনা আক্তার
(স্টিলের আলমারি) ও সালমা আক্তার (মোড়া)সহ তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা
করছেন।
No comments