আমরা বাংলাদেশ পাহারা দিই by ইকবাল সিদ্দিকী
রিকশাচালক
জসিমের জন্য দিনটি ছিল অন্য রকম। যে মানুষটি আরাম-আয়েশের স্বাভাবিক জীবন
ছেড়ে শান্তির দাবিতে মতিঝিলের ফুটপাথে জীবন কাটাচ্ছেন, তিনি নাকি পথশিশু ও
শ্রমজীবী মানুষের সাথে শুক্রবার দুপুরের খাবার খাবেন। এ রকম কখনো হয় নাকি?
এমন কথা ভাবতে ভাবতে আনমনা হয়ে রিকশা নিয়ে সেই জায়গাটায় আসে সে, যেখানে গত
দেড় মাস ধরে অবস্থান করছেন মুক্তিযুদ্ধের এক কিংবদন্তি সিপাহসালার, বঙ্গবীর
কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম।
অদূরে রিকশার সিটের ওপর বসেই অবাক দৃষ্টিতে দেখল সে, তার মতোই দু’জন রিকশাচালককে পাশে নিয়ে খেতে বসে পড়লেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। কত জনের মুখে তার কত বীরত্বের কথা শুনেছে, সেই লোকটাই কিনা তার মতোই দু’জন মানুষকে পাশে বসিয়ে ভাত খাচ্ছেন। ইশ, পাশের লোকটি যদি আমি হতাম! এমন ভাবতে ভাবতে খেয়াল করল, হাতের ইশারায় তাকেই ডাকছেন উনি। সঙ্কোচ-সংশয় নিয়ে এগিয়ে গেল সে। তিনি বলছেন, ‘এই ফরিদ, ওকে একটা প্লেট দেও। বসেন বসেন, এখানেই বসে পড়েন।’ চোখে-মুখে অপার বিস্ময় নিয়ে জসিম দেখলÑ তিনি নিজে খাচ্ছেন, পরম যতেœ তার পাতেও তুলে দিচ্ছেন খাবার।
এতণ যে বর্ণনা করলাম, তা গত ১৩ মার্চ মতিঝিলের একটি ঘটনা। অনেকেরই অভিজ্ঞতা এমন। বিরোধী জোটের গত ৫ জানুয়ারির সমাবেশ ভণ্ডুল করার কৌশল করতে গিয়ে সরকার যে অঘোষিত অবরোধ শুরু করেছিল, সেই অবরোধকেই টেনে নিয়ে যাচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। টানা অবরোধে জনজীবন বিপর্যস্ত, শিার্থীদের শিাজীবন এলোমেলো, কৃষকের মাথায় হাত, ব্যবসায়ীরা উৎকণ্ঠিত ও চিন্তিত; কিন্তু সরকার নির্বিকার। এমনই এক দুঃসহ অবস্থায় বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী সিদ্ধান্ত নিলেন শান্তির দাবি নিয়ে তিনি অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন রাস্তায় বসে। প্রথমে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতাকর্মীদের বেশির ভাগই এই প্রস্তাবে সায় দিতে পারছিলেন না। বঙ্গবীর বললেন, ‘দলের সভাপতি হিসেবে নয়, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এই কর্মসূচি পালন করব, যাদের পে সম্ভব তারা আমার সাথে থেকো। না থাকতে পারলেও অসুবিধা নাই।’
‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আলোচনায় বসুনÑ দেশ বাঁচান, বেগম খালেদা জিয়া অবরোধ প্রত্যাহার করুনÑ মানুষ বাঁচান।’ এই দাবি নিয়ে তিনি বসে পড়লেন মতিঝিলে দলীয় কার্যালয়ের সামনের ফুটপাথে। দেশের দুঃসময়ে ঘরে বসে আফসোস করার চেয়ে ফুটপাথে থেকে প্রতিবাদ করাকেই শ্রেয় মনে করলেন। যুদ্ধ করে, নিজের শরীরের রক্ত ঝরিয়ে দেশটাকে স্বাধীন করেছিলেন। হানাদারদের গুলিতে সহযোদ্ধাদের যখন লুটিয়ে পড়তে দেখেছেন, তখন দাঁতে দাঁত চেপে আরো দৃঢ় করেছেন মনোবল। প্রতিশোধস্পৃহায় শক্ত হয়েছে পেশি, টগবগ করে উঠেছে রক্ত, বিপুল উদ্দীপনায় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন শত্রুপক্ষের ওপর। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর দেশের বর্তমান দুরবস্থা দেখে চুপ করে ঘরে বসে থাকতে পারেননি মুক্তিযুদ্ধের এই কিংবদন্তি। এক দিকে অবরোধের সহিংসতায় প্রাণ যাচ্ছে নিরীহ মানুষের, অন্য দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নৃশংসতায় গুম-খুন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক দিকে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে দগ্ধ মানুষের হৃদয়বিদারক আহাজারি, অন্য দিকে গুম-খুন হয়ে যাওয়া মানুষের স্বজনদের চোখের লোনাজল স্থির থাকতে দিলো না তাকে। অস্থির চিত্ত নিয়ে ঘরে বসে না থেকে অহিংস ও শান্তিপূর্ণ এক আন্দোলনের সূচনা করলেন তিনি। এক দুই তিন করে পার হয়ে গেছে দেড় মাসেরও বেশি সময়। শীত বিদায় নিয়ে বসন্ত এসেছে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা, ঝড়বৃষ্টি কোনো কিছু ফুটপাথ থেকে সরাতে পারেনি তাকে।
শাহবাগের আন্দোলনকে প্যাকেট খাবার, পানির বোতল, ভ্রাম্যমাণ টয়লেট ইত্যাদি দিয়ে যেভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়েছে বঙ্গবীরের কর্মসূচিতে সেরকম কোনো পৃষ্ঠপোষকতা যে পাওয়া যাবে না, এ বিষয়ে আমরা নিশ্চিত ছিলাম। তাই কর্মীদের খাওয়াদাওয়া, অবস্থান, সর্বোপরি বঙ্গবীরের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা ছিলাম চিন্তিত। কিন্তু না, এত দিন ধরে এই অবস্থান কর্মসূচিতে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থেকে আমাদের অন্তরচু খুলে গেছে। বড় বড় পুঁজিপতি, করপোরেট মোগলদের সহায়তা আমরা পাইনি। কিন্তু অসংখ্য সাধারণ মানুষ যেভাবে খাবার নিয়ে এসেছে, তাতে কর্মীদের খাওয়া নিয়ে যে দুশ্চিন্তা আমাদের ছিল, তা একেবারেই অমূলক প্রমাণিত হলো। খাবারের সমস্যা তো নেই-ই, উল্টো প্রতি বেলায়ই কর্মী ছাড়াও অনেকে আমাদের সাথে খাচ্ছেন।
কর্মসূচির প্রথম দিকে গভীর রাতে ছাউনির চট, কাঠ, বাঁশ, চেয়ার, মাইক ইত্যাদি নিয়ে গেল পুলিশ। তবুও অটল কাদের সিদ্দিকী। রাতে মঞ্চ নিয়ে যায় ওরা, দিনে আবার তৈরি হয়। একে একে সাত নেতাকর্মীকে আটক করে নিয়ে গেল, তবুও দমলেন না। ফেব্রুয়ারির ৬ তারিখে যথারীতি জুমার নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন বায়তুল মোকাররমে। ফিরে এসে দেখেন, ফুটপাথ থেকে সব কিছু নিয়ে গেছে পুলিশ। তারপরও তিনি অনড়। ঘোষণা দিলেন, এরপর পুলিশ ডিস্টার্ব করলে প্রধানমন্ত্রীর গণভবনের সামনে গিয়ে বসবেন। এ কথাকে অনেকেই নিছক হুমকি মনে করলেও আমরা জানি, পরিণতি যা-ই হোক, যা বলেছেন তাই তিনি করবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও নিশ্চয়ই এটা জানেন। সে কারণেই বোধ হয় পুলিশি হয়রানি বন্ধ হলো।
কেউ কেউ অবস্থান কর্মসূচিকে ‘অনশন’ আখ্যা দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন, রাতে ফুটপাথে থাকেন না এমন কথা অপপ্রচার করতেও চেষ্টা করেছেন কেউ কেউ। কিন্তু কোনো হীন চেষ্টাই কাজে লাগেনি।
গত ২৮ জানুয়ারি থেকে এযাবৎ বঙ্গবীরের অবস্থান কর্মসূচির প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। দেশ বরেণ্য রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী এবং বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা সংহতি প্রকাশ করতে এসে কেউ কেউ পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন। সাধারণ মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা ও সহানুভূতির তোড়ে সেসব আফসোস ভেসে গেছে।
স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার দাবিতে স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন শ্রেষ্ঠ বীরকে রাস্তায় শুয়ে থাকতে দেখে আমাদের কাছে মনে হয়Ñ ওখানে ‘স্বাধীনতা’ শুয়ে আছে, শুয়ে আছে গোটা বাংলাদেশ। বঙ্গবীর ঘুমিয়ে যাওয়ার পর প্রতি রাতেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পুলিশ আসে, কখনো আসে সাংবাদিক। বঙ্গবীরের নিরাপত্তায় জেগে থাকা কর্মীদের প্রশ্ন করেন, ‘এত রাতে আপনারা রাস্তায় কী করেন?’ কর্মীদের নির্লিপ্ত অথচ দৃঢ় উত্তর, ‘আমরা বাংলাদেশ পাহারা দেই।’
লেখক : কেন্দ্রীয় নেতা কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগ
অদূরে রিকশার সিটের ওপর বসেই অবাক দৃষ্টিতে দেখল সে, তার মতোই দু’জন রিকশাচালককে পাশে নিয়ে খেতে বসে পড়লেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। কত জনের মুখে তার কত বীরত্বের কথা শুনেছে, সেই লোকটাই কিনা তার মতোই দু’জন মানুষকে পাশে বসিয়ে ভাত খাচ্ছেন। ইশ, পাশের লোকটি যদি আমি হতাম! এমন ভাবতে ভাবতে খেয়াল করল, হাতের ইশারায় তাকেই ডাকছেন উনি। সঙ্কোচ-সংশয় নিয়ে এগিয়ে গেল সে। তিনি বলছেন, ‘এই ফরিদ, ওকে একটা প্লেট দেও। বসেন বসেন, এখানেই বসে পড়েন।’ চোখে-মুখে অপার বিস্ময় নিয়ে জসিম দেখলÑ তিনি নিজে খাচ্ছেন, পরম যতেœ তার পাতেও তুলে দিচ্ছেন খাবার।
এতণ যে বর্ণনা করলাম, তা গত ১৩ মার্চ মতিঝিলের একটি ঘটনা। অনেকেরই অভিজ্ঞতা এমন। বিরোধী জোটের গত ৫ জানুয়ারির সমাবেশ ভণ্ডুল করার কৌশল করতে গিয়ে সরকার যে অঘোষিত অবরোধ শুরু করেছিল, সেই অবরোধকেই টেনে নিয়ে যাচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। টানা অবরোধে জনজীবন বিপর্যস্ত, শিার্থীদের শিাজীবন এলোমেলো, কৃষকের মাথায় হাত, ব্যবসায়ীরা উৎকণ্ঠিত ও চিন্তিত; কিন্তু সরকার নির্বিকার। এমনই এক দুঃসহ অবস্থায় বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী সিদ্ধান্ত নিলেন শান্তির দাবি নিয়ে তিনি অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন রাস্তায় বসে। প্রথমে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতাকর্মীদের বেশির ভাগই এই প্রস্তাবে সায় দিতে পারছিলেন না। বঙ্গবীর বললেন, ‘দলের সভাপতি হিসেবে নয়, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এই কর্মসূচি পালন করব, যাদের পে সম্ভব তারা আমার সাথে থেকো। না থাকতে পারলেও অসুবিধা নাই।’
‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আলোচনায় বসুনÑ দেশ বাঁচান, বেগম খালেদা জিয়া অবরোধ প্রত্যাহার করুনÑ মানুষ বাঁচান।’ এই দাবি নিয়ে তিনি বসে পড়লেন মতিঝিলে দলীয় কার্যালয়ের সামনের ফুটপাথে। দেশের দুঃসময়ে ঘরে বসে আফসোস করার চেয়ে ফুটপাথে থেকে প্রতিবাদ করাকেই শ্রেয় মনে করলেন। যুদ্ধ করে, নিজের শরীরের রক্ত ঝরিয়ে দেশটাকে স্বাধীন করেছিলেন। হানাদারদের গুলিতে সহযোদ্ধাদের যখন লুটিয়ে পড়তে দেখেছেন, তখন দাঁতে দাঁত চেপে আরো দৃঢ় করেছেন মনোবল। প্রতিশোধস্পৃহায় শক্ত হয়েছে পেশি, টগবগ করে উঠেছে রক্ত, বিপুল উদ্দীপনায় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন শত্রুপক্ষের ওপর। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর দেশের বর্তমান দুরবস্থা দেখে চুপ করে ঘরে বসে থাকতে পারেননি মুক্তিযুদ্ধের এই কিংবদন্তি। এক দিকে অবরোধের সহিংসতায় প্রাণ যাচ্ছে নিরীহ মানুষের, অন্য দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নৃশংসতায় গুম-খুন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক দিকে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে দগ্ধ মানুষের হৃদয়বিদারক আহাজারি, অন্য দিকে গুম-খুন হয়ে যাওয়া মানুষের স্বজনদের চোখের লোনাজল স্থির থাকতে দিলো না তাকে। অস্থির চিত্ত নিয়ে ঘরে বসে না থেকে অহিংস ও শান্তিপূর্ণ এক আন্দোলনের সূচনা করলেন তিনি। এক দুই তিন করে পার হয়ে গেছে দেড় মাসেরও বেশি সময়। শীত বিদায় নিয়ে বসন্ত এসেছে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা, ঝড়বৃষ্টি কোনো কিছু ফুটপাথ থেকে সরাতে পারেনি তাকে।
শাহবাগের আন্দোলনকে প্যাকেট খাবার, পানির বোতল, ভ্রাম্যমাণ টয়লেট ইত্যাদি দিয়ে যেভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়েছে বঙ্গবীরের কর্মসূচিতে সেরকম কোনো পৃষ্ঠপোষকতা যে পাওয়া যাবে না, এ বিষয়ে আমরা নিশ্চিত ছিলাম। তাই কর্মীদের খাওয়াদাওয়া, অবস্থান, সর্বোপরি বঙ্গবীরের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা ছিলাম চিন্তিত। কিন্তু না, এত দিন ধরে এই অবস্থান কর্মসূচিতে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থেকে আমাদের অন্তরচু খুলে গেছে। বড় বড় পুঁজিপতি, করপোরেট মোগলদের সহায়তা আমরা পাইনি। কিন্তু অসংখ্য সাধারণ মানুষ যেভাবে খাবার নিয়ে এসেছে, তাতে কর্মীদের খাওয়া নিয়ে যে দুশ্চিন্তা আমাদের ছিল, তা একেবারেই অমূলক প্রমাণিত হলো। খাবারের সমস্যা তো নেই-ই, উল্টো প্রতি বেলায়ই কর্মী ছাড়াও অনেকে আমাদের সাথে খাচ্ছেন।
কর্মসূচির প্রথম দিকে গভীর রাতে ছাউনির চট, কাঠ, বাঁশ, চেয়ার, মাইক ইত্যাদি নিয়ে গেল পুলিশ। তবুও অটল কাদের সিদ্দিকী। রাতে মঞ্চ নিয়ে যায় ওরা, দিনে আবার তৈরি হয়। একে একে সাত নেতাকর্মীকে আটক করে নিয়ে গেল, তবুও দমলেন না। ফেব্রুয়ারির ৬ তারিখে যথারীতি জুমার নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন বায়তুল মোকাররমে। ফিরে এসে দেখেন, ফুটপাথ থেকে সব কিছু নিয়ে গেছে পুলিশ। তারপরও তিনি অনড়। ঘোষণা দিলেন, এরপর পুলিশ ডিস্টার্ব করলে প্রধানমন্ত্রীর গণভবনের সামনে গিয়ে বসবেন। এ কথাকে অনেকেই নিছক হুমকি মনে করলেও আমরা জানি, পরিণতি যা-ই হোক, যা বলেছেন তাই তিনি করবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও নিশ্চয়ই এটা জানেন। সে কারণেই বোধ হয় পুলিশি হয়রানি বন্ধ হলো।
কেউ কেউ অবস্থান কর্মসূচিকে ‘অনশন’ আখ্যা দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন, রাতে ফুটপাথে থাকেন না এমন কথা অপপ্রচার করতেও চেষ্টা করেছেন কেউ কেউ। কিন্তু কোনো হীন চেষ্টাই কাজে লাগেনি।
গত ২৮ জানুয়ারি থেকে এযাবৎ বঙ্গবীরের অবস্থান কর্মসূচির প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। দেশ বরেণ্য রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী এবং বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা সংহতি প্রকাশ করতে এসে কেউ কেউ পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন। সাধারণ মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা ও সহানুভূতির তোড়ে সেসব আফসোস ভেসে গেছে।
স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার দাবিতে স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন শ্রেষ্ঠ বীরকে রাস্তায় শুয়ে থাকতে দেখে আমাদের কাছে মনে হয়Ñ ওখানে ‘স্বাধীনতা’ শুয়ে আছে, শুয়ে আছে গোটা বাংলাদেশ। বঙ্গবীর ঘুমিয়ে যাওয়ার পর প্রতি রাতেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পুলিশ আসে, কখনো আসে সাংবাদিক। বঙ্গবীরের নিরাপত্তায় জেগে থাকা কর্মীদের প্রশ্ন করেন, ‘এত রাতে আপনারা রাস্তায় কী করেন?’ কর্মীদের নির্লিপ্ত অথচ দৃঢ় উত্তর, ‘আমরা বাংলাদেশ পাহারা দেই।’
লেখক : কেন্দ্রীয় নেতা কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগ
No comments