পিটার মের হারিয়ে যাওয়া যৌবনে ফিরে আসা by মেজবাহ উদদীন
লেখক
পিটার মে, বিশ্বসাহিত্যর খোঁজ যারা নিয়মিত রাখেন তাদের কাছে একটি পরিচিত
নাম। আর বিশ্বসাহিত্যর অনিয়মিত পাঠকদের জন্য একটু ‘ব্যাকগ্রাউন্ড’ প্রয়োজন।
মে’র জন্ম ১৯৫১ সালের ২০ ডিসেম্বর স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো। তিনি একই সঙ্গে
অপরাধবিষয়ক লেখক, চিত্রনাট্যকার এবং ঔপন্যাসিক। তিনি ‘দি লুইস ট্রাইলজী’র
লেখক হিসেবে বেশি পরিচিত। শুধুমাত্র ইংল্যান্ডেই ‘দি লুইস ট্রাইলজী’ এর ১০
লাখের বেশি কপি বিক্রি হয়েছে! আপনার চা তৈরি, এবার কাপে নেয়া যাক।
পিটার মে’র সর্বষেশ প্রকাশিত উপন্যাস ‘রানঅ্যাওয়ে’ নিয়ে পিটার মে’র উপলব্ধিই এখানে বিষয়বস্তু। ‘রানঅ্যাওয়ে’ মে’র পলাতক কৈশরের আত্মজীবনীমূলক রচনা, যেখানে প্রায় চার দশক আগে লেখক গ্লাসগোর স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হয়ে লন্ডন পালিয়ে আসার গল্পের সঙ্গে কল্পিত কাহিনীরও মিশ্রণ ঘটিয়েছেন পরিমিত মাত্রায়। আত্মজীবনী এবং অপরাধবিষয়ক লেখা প্রায়ই একত্রে যায় না অথচ ‘রানঅ্যাওয়ে’তে তেমনটাই দেখা যায়। মে বলেন, তার নতুন উপন্যাসের লক্ষ্য অপরাধমূলক গল্পের দৃঢ় দেয়ালে ধাক্কা দেয়া। যার মাধ্যমে তিনি হয়তো সাহিত্যের একটি নতুন ধারার জন্ম দিলেন!
ঘড়ির কাঁটায় যারা সমর্পণ করেছেন নিজেদের, স্কুলের ধরাবাধা সিলেবাস তাদের জন্য। আর বই থেকে যাদের মন পালাই পালাই করে পিটার মে প্রকৃতির সেসব খেয়ালি সন্তানদেরই একজন। লেখাপড়ার চেয়ে ব্যান্ড সঙ্গীতের সুরই তাকে বেশি অভীষ্ট করে রাখত। মে’র ভাষায় ‘১১ বছর বয়স থেকেই আমি একটি ব্যান্ড দলের সঙ্গে ছিলাম যেটা আমার স্কুলের জন্য অনেক সমস্যার সৃষ্টি করছিল। লম্বা চুল আর অদ্ভুত পোশাকে আমি স্কুলে যেতাম। একদিন আমার প্রধান শিক্ষক আমাকে ধরে ফেললেন এবং বললেন, ‘মে, তুমি তোমার লম্বা চুল আর অদ্ভুত পোশাক নিয়ে বাড়ি চলে যাও এবং আর কখনও ফিরে আসবে না’। আমার স্কুল জীবনের সমাপ্তি সেখানেই’।
‘রানঅ্যাওয়ে’তে দেখা যায় ১৭ বছর বয়সের পাঁচ বন্ধু মিউজিশিয়ান হওয়ার আশায় বাড়ি থেকে পালিয়ে আসে স্বপ্নের শহর লন্ডনে, শুধুমাত্র সঙ্গীতের কিছু সরঞ্জাম নিয়ে। স্বপ্নের শহর লন্ডন যখন বাস্তবের পৃথিবী, শুরু হয় একটি মাত্র সুযোগের আশায় মিউজিক এজেন্টদের দরজায় কড়া নাড়া। কিন্তু কাক্সিক্ষত সুযোগ আর আসে না। উল্টো এক ভয়ংকর খুনির পাল্লায় পরে যায়। প্রায় মাস খানেক একই পোশাকে থাকা এবং খাবারের জন্য গান শোনানোর পর বাড়ির পথ ধরে পরাজিত হয়ে। সেই ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা কিশোর বয়সের ভুল উত্তেজনার সমাপ্তি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল। আর সেই ব্যর্থতা ছিল মে’র জীবনের একটি সন্ধিক্ষণ। মে বলন, ‘এটা আমার জন্য একটি গঠনমূলক অভিজ্ঞতা। এটা ছিল এমন একটি সময়ের সন্ধিক্ষণ যখন একটি শিশু প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ওঠে এবং এটা বুঝতে পারে যে, ছোট থেকে একটি শিশুর দৃষ্টিকোণ থেকে যে পৃথিবীকে সে দেখে এসেছে এটা তার বিপরীত! এটাই ‘রানঅ্যাওয়ে’র মূল ভিত্তি। মে বলেন’ ‘আমি জানি না কীভাবে, কিন্তু যখনই আমি কিছু লিখতে যেতাম এটা সবসময় আমার মাথায় কাজ করত’।
‘রানঅ্যাওয়ে’তে একই সঙ্গে ১৯৬৫ এবং ২০১৫ দুটি সময়কে তুলে ধরা হয়েছে। পিটার মে’র শৈশবের স্মৃতিচারণের পাশাপাশি ‘রানঅ্যাওয়ে’তে দেখা যায় প্রায় ৬০ বছর বয়সী তিনজন লোক কয়েক দশক আগের এক খুনের রহস্য উন্মোচন করার জন্য ইংল্যান্ডে ফিরে আসে। এ স্কটিস লেখক তার ‘রানঅ্যাওয়ে’ নিয়ে প্রচলিত অপরাধমূলক গল্পের চেয়ে বেশি আশাবাদী, কেননা এখানে গুপ্তচরভিত্তি এবং পুলিশি তদন্ত পরিমাণে কম।
মে বলেন, ‘রানঅ্যাওয়ে’তে শুধুমাত্র একজন খুনির সম্পর্কেই বলা হয়নি বরং আমি চাই এ উপন্যাস হবে সেই পরীক্ষার উপায় যেখানে মানুষ জীবনের মুখোমুখি’। মে আরও বলেন, ‘তুমি তোমার চারদিকে দেখ আর তুমি দেখবে তোমার চারদিকে অনেক বেদনা। এটা তোমাকে আরও গভীরভাবে ভাবতে শেখাবে বেঁচে থাকা এবং জীবন ও এর অর্জন সম্পর্কে’। ‘রানঅ্যাওয়ে’ এমন চিন্তারই একটি ফল।
মে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে, পালিয়ে যাওয়ার মৌলিক আকাক্সক্ষা এবং মুক্তির ইচ্ছা যুবক বা বৃদ্ধ কিছুটা সবার ভেতরেই থাকে’। ৬৩ বছর বয়েস আসতে তাকে পাড়ি দিতে হয়েছে কোটি কোটি সেকেন্ডের সমুদ্র। তবুও নির্বাসিত শৈশব তার স্মৃতিতে এখনও অর্নিবাপিত।
পিটার মে’র সর্বষেশ প্রকাশিত উপন্যাস ‘রানঅ্যাওয়ে’ নিয়ে পিটার মে’র উপলব্ধিই এখানে বিষয়বস্তু। ‘রানঅ্যাওয়ে’ মে’র পলাতক কৈশরের আত্মজীবনীমূলক রচনা, যেখানে প্রায় চার দশক আগে লেখক গ্লাসগোর স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হয়ে লন্ডন পালিয়ে আসার গল্পের সঙ্গে কল্পিত কাহিনীরও মিশ্রণ ঘটিয়েছেন পরিমিত মাত্রায়। আত্মজীবনী এবং অপরাধবিষয়ক লেখা প্রায়ই একত্রে যায় না অথচ ‘রানঅ্যাওয়ে’তে তেমনটাই দেখা যায়। মে বলেন, তার নতুন উপন্যাসের লক্ষ্য অপরাধমূলক গল্পের দৃঢ় দেয়ালে ধাক্কা দেয়া। যার মাধ্যমে তিনি হয়তো সাহিত্যের একটি নতুন ধারার জন্ম দিলেন!
ঘড়ির কাঁটায় যারা সমর্পণ করেছেন নিজেদের, স্কুলের ধরাবাধা সিলেবাস তাদের জন্য। আর বই থেকে যাদের মন পালাই পালাই করে পিটার মে প্রকৃতির সেসব খেয়ালি সন্তানদেরই একজন। লেখাপড়ার চেয়ে ব্যান্ড সঙ্গীতের সুরই তাকে বেশি অভীষ্ট করে রাখত। মে’র ভাষায় ‘১১ বছর বয়স থেকেই আমি একটি ব্যান্ড দলের সঙ্গে ছিলাম যেটা আমার স্কুলের জন্য অনেক সমস্যার সৃষ্টি করছিল। লম্বা চুল আর অদ্ভুত পোশাকে আমি স্কুলে যেতাম। একদিন আমার প্রধান শিক্ষক আমাকে ধরে ফেললেন এবং বললেন, ‘মে, তুমি তোমার লম্বা চুল আর অদ্ভুত পোশাক নিয়ে বাড়ি চলে যাও এবং আর কখনও ফিরে আসবে না’। আমার স্কুল জীবনের সমাপ্তি সেখানেই’।
‘রানঅ্যাওয়ে’তে দেখা যায় ১৭ বছর বয়সের পাঁচ বন্ধু মিউজিশিয়ান হওয়ার আশায় বাড়ি থেকে পালিয়ে আসে স্বপ্নের শহর লন্ডনে, শুধুমাত্র সঙ্গীতের কিছু সরঞ্জাম নিয়ে। স্বপ্নের শহর লন্ডন যখন বাস্তবের পৃথিবী, শুরু হয় একটি মাত্র সুযোগের আশায় মিউজিক এজেন্টদের দরজায় কড়া নাড়া। কিন্তু কাক্সিক্ষত সুযোগ আর আসে না। উল্টো এক ভয়ংকর খুনির পাল্লায় পরে যায়। প্রায় মাস খানেক একই পোশাকে থাকা এবং খাবারের জন্য গান শোনানোর পর বাড়ির পথ ধরে পরাজিত হয়ে। সেই ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা কিশোর বয়সের ভুল উত্তেজনার সমাপ্তি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল। আর সেই ব্যর্থতা ছিল মে’র জীবনের একটি সন্ধিক্ষণ। মে বলন, ‘এটা আমার জন্য একটি গঠনমূলক অভিজ্ঞতা। এটা ছিল এমন একটি সময়ের সন্ধিক্ষণ যখন একটি শিশু প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ওঠে এবং এটা বুঝতে পারে যে, ছোট থেকে একটি শিশুর দৃষ্টিকোণ থেকে যে পৃথিবীকে সে দেখে এসেছে এটা তার বিপরীত! এটাই ‘রানঅ্যাওয়ে’র মূল ভিত্তি। মে বলেন’ ‘আমি জানি না কীভাবে, কিন্তু যখনই আমি কিছু লিখতে যেতাম এটা সবসময় আমার মাথায় কাজ করত’।
‘রানঅ্যাওয়ে’তে একই সঙ্গে ১৯৬৫ এবং ২০১৫ দুটি সময়কে তুলে ধরা হয়েছে। পিটার মে’র শৈশবের স্মৃতিচারণের পাশাপাশি ‘রানঅ্যাওয়ে’তে দেখা যায় প্রায় ৬০ বছর বয়সী তিনজন লোক কয়েক দশক আগের এক খুনের রহস্য উন্মোচন করার জন্য ইংল্যান্ডে ফিরে আসে। এ স্কটিস লেখক তার ‘রানঅ্যাওয়ে’ নিয়ে প্রচলিত অপরাধমূলক গল্পের চেয়ে বেশি আশাবাদী, কেননা এখানে গুপ্তচরভিত্তি এবং পুলিশি তদন্ত পরিমাণে কম।
মে বলেন, ‘রানঅ্যাওয়ে’তে শুধুমাত্র একজন খুনির সম্পর্কেই বলা হয়নি বরং আমি চাই এ উপন্যাস হবে সেই পরীক্ষার উপায় যেখানে মানুষ জীবনের মুখোমুখি’। মে আরও বলেন, ‘তুমি তোমার চারদিকে দেখ আর তুমি দেখবে তোমার চারদিকে অনেক বেদনা। এটা তোমাকে আরও গভীরভাবে ভাবতে শেখাবে বেঁচে থাকা এবং জীবন ও এর অর্জন সম্পর্কে’। ‘রানঅ্যাওয়ে’ এমন চিন্তারই একটি ফল।
মে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে, পালিয়ে যাওয়ার মৌলিক আকাক্সক্ষা এবং মুক্তির ইচ্ছা যুবক বা বৃদ্ধ কিছুটা সবার ভেতরেই থাকে’। ৬৩ বছর বয়েস আসতে তাকে পাড়ি দিতে হয়েছে কোটি কোটি সেকেন্ডের সমুদ্র। তবুও নির্বাসিত শৈশব তার স্মৃতিতে এখনও অর্নিবাপিত।
No comments