৪৫০ কোটি টাকার বাঁধ হুমকিতে by বরুণ রায়
(ভাঙন
রোধ প্রকল্পের আওতাভুক্ত মোহনগঞ্জ থেকে কৈতোলা পাম্পিং স্টেশন পর্যন্ত
যমুনার প্রায় পাঁচ কিলোমিটার অংশে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বালু
তুলছেন) পাবনার
বেড়া উপজেলায় যমুনা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কাছ থেকে অবৈধভাবে
বালু তোলা হচ্ছে। এতে ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত যমুনার পশ্চিম তীর
সংরক্ষণ প্রকল্পটি মারাত্মক হুমকিতে পড়েছে। অন্তত দশটি গ্রামও ভাঙনের
হুমকিতে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও এলাকাবাসী জানায়,
যমুনা-মেঘনা ভাঙন রোধ প্রকল্পের আওতায় ২০০১ সালে বেড়ায় যমুনা নদীর
পশ্চিম তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে
২০০৫ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। প্রকল্পের আওতায় উপজেলার মোহনগঞ্জ থেকে
রাকশা পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার পর্যন্ত নদীর পশ্চিম তীরে (ডান তীর)
প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এতে এ অংশের ভাঙন বন্ধ হয়ে যায়। ভাঙন
থেকে রক্ষা পায় পাবনা সেচ প্রকল্পের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও কৈতোলা
পাম্পিং স্টেশনসহ ৩০টি গ্রাম।
এলাকাবাসী জানান, ভাঙন রোধ প্রকল্পের আওতাভুক্ত মোহনগঞ্জ থেকে কৈতোলা পাম্পিং স্টেশন পর্যন্ত যমুনার প্রায় পাঁচ কিলোমিটার অংশে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা খননযন্ত্রের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু তুলছেন। এর মধ্যে হরিরামপুর, বিজয়গঞ্জ ও আওয়াল বাঁধ নামক স্থানে বালু তোলা হচ্ছে বাঁধের ১০০ ফুটের মধ্যে। বালু তুলে স্তূপ করা হচ্ছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ঢালু জায়গায়। এরপর বালু উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ীসহ বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হচ্ছে। এ ছাড়া হরিরামপুর, আওয়াল বাঁধসহ কয়েকটি এলাকায় খননযন্ত্রের সঙ্গে মোটা পাইপের সংযোগ দিয়ে সরাসরি পাশের নিচু এলাকা ভরাট করা হচ্ছে। বালু তোলার কারণে ইতিমধ্যে কয়েকটি স্থানে তীর সংরক্ষণ কাজে ব্যবহৃত সিসি ব্লক ধসে পড়েছে। কোনো কোনো স্থানে বালুর বস্তা সরে গেছে। একই সঙ্গে হরিরামপুর, বিজয়গঞ্জ, মাছখালী, ঘিওর, বেঙ্গালিয়া, জয়নগর, কৈতোলা, নাকালিয়াসহ অন্তত ১০টি গ্রামে ভাঙনের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমান বলেন, বেড়ায় বালু তোলার জন্য কারও বৈধ অনুমোদন বা ইজারা নেই। অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাউবো বেড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী কবিবুর রহমান বলেন, ‘যেভাবে বালু তোলা হচ্ছে, তা অত্যন্ত বিপজ্জনক। কারণ, বাঁধের কাছ থেকে বালু তোলার কারণে যে গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে, তা পূরণ হচ্ছে বাঁধের প্রান্তভাগসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার বালু দিয়ে। এতে বাঁধে ধস দেখা দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, ‘১৫ দিন আগে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বেড়া থানায় এফআইআর দাখিল করেছি। বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়সহ পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।’
বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে যমুনা নদীতে বালু উত্তোলন নিয়ে গত বছরের ৪ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কিছুদিন বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল। কিন্তু আড়াই মাস ধরে আবারও বেপরোয়াভাবে বালু তোলা হচ্ছে। নাকালিয়া সাঁড়াশিয়া বণিক উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কৈতোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত ওসমান বলেন, ‘পাউবো থেকে শুরু করে প্রশাসনের বিভিন্ন কার্যালয়ে আমরা বালু উত্তোলন বন্ধের আবেদন দিয়েছি। কিন্তু কাজ হয়নি।’
নাকালিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম বলেন, ‘ইতিমধ্যেই কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। একসময় ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে স্বস্তি পেয়েছিলাম। এখন অবৈধভাবে বালু তোলায় আট-দশ গ্রামের মানুষ আবারও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।’
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কৈতোলা ইউপির সদস্য ভোলা মোল্লা, সাবেক ইউপি সদস্য সুজাউদ্দিনসহ কয়েকজনের ছত্রচ্ছায়ায় বালু তোলা হচ্ছে। এ বিষয়ে ভোলা মোল্লার সঙ্গে কথা বলার জন্য তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। মুঠোফোনে রিং বাজলেও তিনি ধরেননি। তবে সুজাউদ্দিন দাবি করেন, বালু তোলার ফলে কোনো ক্ষতি হচ্ছে না।
এলাকাবাসী জানান, ভাঙন রোধ প্রকল্পের আওতাভুক্ত মোহনগঞ্জ থেকে কৈতোলা পাম্পিং স্টেশন পর্যন্ত যমুনার প্রায় পাঁচ কিলোমিটার অংশে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা খননযন্ত্রের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু তুলছেন। এর মধ্যে হরিরামপুর, বিজয়গঞ্জ ও আওয়াল বাঁধ নামক স্থানে বালু তোলা হচ্ছে বাঁধের ১০০ ফুটের মধ্যে। বালু তুলে স্তূপ করা হচ্ছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ঢালু জায়গায়। এরপর বালু উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ীসহ বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হচ্ছে। এ ছাড়া হরিরামপুর, আওয়াল বাঁধসহ কয়েকটি এলাকায় খননযন্ত্রের সঙ্গে মোটা পাইপের সংযোগ দিয়ে সরাসরি পাশের নিচু এলাকা ভরাট করা হচ্ছে। বালু তোলার কারণে ইতিমধ্যে কয়েকটি স্থানে তীর সংরক্ষণ কাজে ব্যবহৃত সিসি ব্লক ধসে পড়েছে। কোনো কোনো স্থানে বালুর বস্তা সরে গেছে। একই সঙ্গে হরিরামপুর, বিজয়গঞ্জ, মাছখালী, ঘিওর, বেঙ্গালিয়া, জয়নগর, কৈতোলা, নাকালিয়াসহ অন্তত ১০টি গ্রামে ভাঙনের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমান বলেন, বেড়ায় বালু তোলার জন্য কারও বৈধ অনুমোদন বা ইজারা নেই। অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাউবো বেড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী কবিবুর রহমান বলেন, ‘যেভাবে বালু তোলা হচ্ছে, তা অত্যন্ত বিপজ্জনক। কারণ, বাঁধের কাছ থেকে বালু তোলার কারণে যে গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে, তা পূরণ হচ্ছে বাঁধের প্রান্তভাগসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার বালু দিয়ে। এতে বাঁধে ধস দেখা দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, ‘১৫ দিন আগে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বেড়া থানায় এফআইআর দাখিল করেছি। বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়সহ পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।’
বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে যমুনা নদীতে বালু উত্তোলন নিয়ে গত বছরের ৪ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কিছুদিন বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল। কিন্তু আড়াই মাস ধরে আবারও বেপরোয়াভাবে বালু তোলা হচ্ছে। নাকালিয়া সাঁড়াশিয়া বণিক উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কৈতোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত ওসমান বলেন, ‘পাউবো থেকে শুরু করে প্রশাসনের বিভিন্ন কার্যালয়ে আমরা বালু উত্তোলন বন্ধের আবেদন দিয়েছি। কিন্তু কাজ হয়নি।’
নাকালিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম বলেন, ‘ইতিমধ্যেই কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। একসময় ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে স্বস্তি পেয়েছিলাম। এখন অবৈধভাবে বালু তোলায় আট-দশ গ্রামের মানুষ আবারও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।’
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কৈতোলা ইউপির সদস্য ভোলা মোল্লা, সাবেক ইউপি সদস্য সুজাউদ্দিনসহ কয়েকজনের ছত্রচ্ছায়ায় বালু তোলা হচ্ছে। এ বিষয়ে ভোলা মোল্লার সঙ্গে কথা বলার জন্য তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। মুঠোফোনে রিং বাজলেও তিনি ধরেননি। তবে সুজাউদ্দিন দাবি করেন, বালু তোলার ফলে কোনো ক্ষতি হচ্ছে না।
No comments