মাহমুদুর রহমান মান্না আটক, অবস্থান পরিষ্কার করতে পারলেন না

কথোপকথনের অডিও টেপ প্রচারের পর এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। নিজের ফেসবুক পেজে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছন, দেশের এই যুগসন্ধিক্ষণে কারও চরিত্র হননের কাজ এই সঙ্কটকে আরও ঘনীভুত করবে।  তিনি বলেন, সামগ্রিক ঘটনায় আমি বিস্মিত, দুঃখিত, মর্মাহত। এ পর্যন্ত আমার রাজনীতি জীবনে কখনও সহিংসতা, ষড়যন্ত্রকে প্রশ্রয় দেইনি। আমার অতীত ইতিহাস সাক্ষ্য দেবে। যে দুটো সাক্ষাৎকার ছেপেছে পাঠকদের অনুরোধ করবো যেন ভালো করে সেটা শোনা এবং পড়ে দেখার। কোথাও কোন ষড়যন্ত্রের গন্ধ নেই, উস্কানি নেই। সাদেক হোসেন খোকার সঙ্গে কথা হয়েছে আলাপচারিতার মতো আন্দোলনের প্রসঙ্গ এসেছে আমি বলেছি, গণতন্ত্রের দাবিতে আমি আন্দোলনে সমর্থন করি। সহিংসতা সমর্থন করি না। এ থেকে বেরিয়ে আসার জন্যে ব্যাপক জনগণকে সংযুক্ত করার চেষ্টা করা উচিত। সহিংসতা দায়িত্ব নিয়ে বর্জন করা উচিত। এ আন্দোলনে এখনও ছাত্ররা অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। এ জন্যই বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ছাত্র আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত ও বিস্তৃত করতে হবে। এটা করতে গিয়ে যদি পুলিশি বা সন্ত্রাসী হামলায় দু’চার জনের জীবনও যায় কিছু করার নেই। এমনিতেই তো মানুষ মরছে। আমার এই বক্তব্যকে বিকৃতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যেন আমি লাশ চাই। একইভাবে সেনাবাহিনীর কোন কোন কর্মকর্তা আমার সাথে কথা বলতে আগ্রহী হলে বলব কি না সে কথা জানতে চাইলে, আমি বলেছি রাজি আছি। আমি রাজনীতি করি সবার সঙ্গে কথা বলতে হয়। এটা থেকে এক এগারো বা সামরিক কু’য়ের ষড়যন্ত্রের আবিষ্কার হয় কিভাবে? যেখানে এরকম কোন বৈঠকই হয়নি। দেশের এই যুগসন্ধিক্ষণে কারও চরিত্র হননের কাজ সঙ্কটকে আরও ঘণীভূতই করবে। আমি আশা করি সবাই শুভ বুদ্ধিতে জাগ্রত হবেন এবং এই সঙ্কটকে ইতিবাচকভাবে মোকাবিলা করবেন। মাহমুদুর রহমান মান্নার সঙ্গে একজন রাজনৈতিক নেতা ও অজ্ঞাত একজনের ফোনালাপের রেকর্ড গোয়েন্দা সংস্থার বরাতে প্রকাশ করেছে কয়েকটি গণমাধ্যম। এ নিয়ে গতকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে ব্যাপক আলোচনা। আলোচনা সমালোচনার মধ্যেই মান্না তার প্রতিক্রিয়া জানালেন।
অবস্থান পরিষ্কার করতে পারলেন না মান্না
ফোনালাপ নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কে অবস্থান পরিষ্কার করতে পারলেন না নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। আজ সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করার কথা ছিল তার। ব্যাখ্যা দেয়ার কথা ছিল ফোনালাপের। কিন্তু এরআগে রাত সাড়ে ৩টার দিকে বনানীর এক আত্মীয়ের বাসা থেকে তাকে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্যরা আটক করেছেন বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী মেহের নিগার। ভাতিজি শাহনামা শারমিনের বাসা থেকে মান্নাকে আটক করা হয়। শাহনামা শারমিন জানিয়েছেন, রাতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাদের ঘরের দরজা নক করা হয়। দরজা খোলার পর তারা মান্নাকে নিয়ে যায়। তাদেরকে বলা হয়, তাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু ঢাকা মহানগর গোযেন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার ও ডিএমপির মুখপাত্র মনিরুল ইসলামের দাবি মাহমুদুর রহমান মান্নাকে আটক করেনি ডিবি পুলিশ। তিনি বলেছেন, ‘মাহমুদুর রহমান মান্নার বিরুদ্ধে একাধিক জিডি দায়ের করা হয়েছে। এসব ডিবির তদন্ত শেষেই হয়তো তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হবে। কিন্তু তাকে ডিবি পুলিশ আটক বা গ্রেপ্তার করেনি।’ মাহমুদুর রহমান মান্নাকে নিয়ে উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় রয়েছে তার পরিবার। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে তিনি আসলে কোথায়? ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না একসময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। রোববার বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা ও এক অজ্ঞাত ব্যক্তির সঙ্গে  তার ফোনালাপ প্রকাশিত হওয়ার পর নানা আলোচনা-সমালাচনা তৈরি হয়।

No comments

Powered by Blogger.