লণ্ডভণ্ড গ্রামীণ অর্থনীতি
বাংলা ভাষায় একটা লোকবাক্য আছে- ‘শাসন করা তারই সাজে, সোহাগ করে যে গো’। এই লোকবাক্যে সেই শাসকের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে যিনি আমাদের ঘরে ঘরে অবস্থান করে সংসারগুলোর ইঞ্জিন চালু রাখেন- অর্থাৎ বাঙালি মা’কে লক্ষ্য করে। বাংলাদেশের সুদীর্ঘ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন দুই নারী; একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে নির্বাচিত শাসক রূপে দু’জনই ভাগাভাগি করে প্রায় ২৫ বছর এই দেশটি পরিচালনা করেছেন। কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি এবং ব্যতিক্রম সত্ত্বেও তাদের শাসনে মানুষ সন্তুষ্ট ছিল। দেশে গণতন্ত্রের চর্চা এবং প্রয়োগে এদের অবদান অবশ্যই স্বীকার করতে হবে, কেননা এরাই বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার ভিত্তি রচনা করেছেন। এরা মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে এনেছিলেন। সেই অধিকার সুসংহত করে যখন দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির কাজ করায় ব্রতী হওয়া প্রয়োজন, তখনই যেন তাদের রথ কাদায় আটকে গেল। তাদের শাসনে আমরা আর ‘সোহাগে’র তিলার্ধও খুঁজে পাচ্ছি না। তারা শাসনে-সহিংসতায় বিপর্যস্ত করে তুলেছেন গোটা দেশ। তাদের ‘কেউ কারে নাহি ছাড়ে, সমানে সমান’ অবস্থান বিপন্ন করে তুলছে দেশের কোটি কোটি মানুষের জীবন ও জীবিকা।
রোববারের যুগান্তরে ছাপা হয়েছে ‘লণ্ডভণ্ড গ্রামীণ অর্থনীতি’ শীর্ষক প্রতিবেদন। কৃষকের কৃষিপণ্য জমিতে পচছে, উৎপাদিত দুধ রাস্তায় ঢেলে নষ্ট করে প্রতিবাদ জানাচ্ছে খামারিরা, কৃষকের কাছে সার, কীটনাশক পৌঁছাচ্ছে না, কারণ চলছে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ। কঠোর শাসন ও সহিংসতায় কার কী লাভ হচ্ছে সেটা কে বলবে। তবে মানুষের যে অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে, দেশের যে ক্ষতি হচ্ছে সেটা স্পষ্ট। রোববারের অন্যান্য সহযোগী দৈনিকগুলোর আরও কিছু শিরোনাম তুলে ধরছি- ২শ’ কোটি টাকার ফল আটকা পড়েছে বন্দরে; অবরোধে বেচাকেনায় ধস; অর্থনীতির উল্টোপথে যাত্রা; উত্তরাঞ্চলে ২০ লাখ শ্রমিক পরিবারে হাহাকার; শিল্প মেশিনারিজ আমদানিতে ধস। শিরোনামের এই তালিকা আরও দীর্ঘ হবে- এগুলো প্রমাণ নয়, বাস্তব পরিস্থিতি। অবস্থা কতদূর নাজুক হয়েছে তা উপলব্ধি করা যাবে যুগান্তরে প্রকাশিত একটি ঘটনার উদাহরণ থেকে। সংবাদে সেটি তুলে ধরা হয়েছে- ঠাকুরগাঁও থেকে কারওয়ান বাজারে ট্রাকভর্তি বাঁধাকপি নিয়ে এসে মোকছেদ মিয়া তা বিক্রি করতে না পেরে, ট্রাকের ভাড়া পরিশোধ করতে না পেরে পালিয়ে গেছেন। পরে ট্রাকচালক ওই বাঁধাকপি পানির দরে বিক্রি করে তার ট্রাকের ভাড়া আংশিক সংগ্রহ করেছেন। আমাদের সবার সমস্ত শ্রম এভাবে পণ্ডশ্রমে পরিণত হচ্ছে। রবিঠাকুর তার ‘সোনার তরী’তে শেষ পর্যন্ত ঠাঁই পাননি, সে তরী ভর্তি ছিল সোনালি শস্যে। আর আজ স্বাধীন-সার্বভৌম দেশে আমাদের সকল শ্রম পণ্ডশ্রমে পরিণত হচ্ছে কঠোর শাসন আর সহিংসতায়। একটুখানি সোহাগের অভাবে, ছাড়ের অভাবে এভাবেই কি ধ্বংস হয়ে যাবে এই প্রিয় জš§ভূমি? বিবিসি সংলাপে যুধ্যমান দুই দলের নেতারা তিস্তার পানির হিস্যা আদায়ে এবং বাংলাদেশের ক্রিকেটের সাফল্যে ঐকমত্য পোষণ করেছেন- সংলাপের ব্যাপারে কোনো ঐকমত্য হয়নি। অর্থাৎ, সবচেয়ে জরুরি বিষয়টিতে তারা ঐকমত্যে উপনীত হতে অপারগ- এটা অনাকাক্সিক্ষত, এটা অনভিপ্রেত।
আমরা আশা করি, শুধু এক সন্তানের মৃত্যু সংবাদে সান্ত্বনা জোগাতেই নয়, হাজার সন্তানের কষ্ট নিবারণে দুই নেত্রী তাদের অনড় অবস্থান থেকে সরে এসে দেশের মানুষকে স্বস্তি দেবেন। দেশকে বাঁচাবেন। তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন।
রোববারের যুগান্তরে ছাপা হয়েছে ‘লণ্ডভণ্ড গ্রামীণ অর্থনীতি’ শীর্ষক প্রতিবেদন। কৃষকের কৃষিপণ্য জমিতে পচছে, উৎপাদিত দুধ রাস্তায় ঢেলে নষ্ট করে প্রতিবাদ জানাচ্ছে খামারিরা, কৃষকের কাছে সার, কীটনাশক পৌঁছাচ্ছে না, কারণ চলছে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ। কঠোর শাসন ও সহিংসতায় কার কী লাভ হচ্ছে সেটা কে বলবে। তবে মানুষের যে অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে, দেশের যে ক্ষতি হচ্ছে সেটা স্পষ্ট। রোববারের অন্যান্য সহযোগী দৈনিকগুলোর আরও কিছু শিরোনাম তুলে ধরছি- ২শ’ কোটি টাকার ফল আটকা পড়েছে বন্দরে; অবরোধে বেচাকেনায় ধস; অর্থনীতির উল্টোপথে যাত্রা; উত্তরাঞ্চলে ২০ লাখ শ্রমিক পরিবারে হাহাকার; শিল্প মেশিনারিজ আমদানিতে ধস। শিরোনামের এই তালিকা আরও দীর্ঘ হবে- এগুলো প্রমাণ নয়, বাস্তব পরিস্থিতি। অবস্থা কতদূর নাজুক হয়েছে তা উপলব্ধি করা যাবে যুগান্তরে প্রকাশিত একটি ঘটনার উদাহরণ থেকে। সংবাদে সেটি তুলে ধরা হয়েছে- ঠাকুরগাঁও থেকে কারওয়ান বাজারে ট্রাকভর্তি বাঁধাকপি নিয়ে এসে মোকছেদ মিয়া তা বিক্রি করতে না পেরে, ট্রাকের ভাড়া পরিশোধ করতে না পেরে পালিয়ে গেছেন। পরে ট্রাকচালক ওই বাঁধাকপি পানির দরে বিক্রি করে তার ট্রাকের ভাড়া আংশিক সংগ্রহ করেছেন। আমাদের সবার সমস্ত শ্রম এভাবে পণ্ডশ্রমে পরিণত হচ্ছে। রবিঠাকুর তার ‘সোনার তরী’তে শেষ পর্যন্ত ঠাঁই পাননি, সে তরী ভর্তি ছিল সোনালি শস্যে। আর আজ স্বাধীন-সার্বভৌম দেশে আমাদের সকল শ্রম পণ্ডশ্রমে পরিণত হচ্ছে কঠোর শাসন আর সহিংসতায়। একটুখানি সোহাগের অভাবে, ছাড়ের অভাবে এভাবেই কি ধ্বংস হয়ে যাবে এই প্রিয় জš§ভূমি? বিবিসি সংলাপে যুধ্যমান দুই দলের নেতারা তিস্তার পানির হিস্যা আদায়ে এবং বাংলাদেশের ক্রিকেটের সাফল্যে ঐকমত্য পোষণ করেছেন- সংলাপের ব্যাপারে কোনো ঐকমত্য হয়নি। অর্থাৎ, সবচেয়ে জরুরি বিষয়টিতে তারা ঐকমত্যে উপনীত হতে অপারগ- এটা অনাকাক্সিক্ষত, এটা অনভিপ্রেত।
আমরা আশা করি, শুধু এক সন্তানের মৃত্যু সংবাদে সান্ত্বনা জোগাতেই নয়, হাজার সন্তানের কষ্ট নিবারণে দুই নেত্রী তাদের অনড় অবস্থান থেকে সরে এসে দেশের মানুষকে স্বস্তি দেবেন। দেশকে বাঁচাবেন। তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন।
No comments