শুভেচ্ছা সফরটিও অনেক গুরুত্ব বহন করে by সালমা ইসলাম
বাংলাদেশ
ও ভারতের অমীমাংসিত ইস্যুগুলোর মধ্যে তিস্তা চুক্তি ও স্থলসীমান্ত চুক্তির
বিষয়টি সম্প্রতি ব্যাপক আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। ২০১১ সালে ভারতের
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় পশ্চিমবঙ্গের
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ মুহূর্তে তার পূর্বনির্ধারিত
বাংলাদেশ সফর বাতিল করার পর থেকেই বিভিন্ন আলোচনায় যে বিষয়টি বারবার উঠে
আসে তা হল উল্লিখিত দুই চুক্তিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে আগ্রহী নন। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ
সময়। এ সময়ে উল্লিখিত দুই ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থান সম্পর্কে
বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন লেখক তাদের মন্তব্য প্রকাশ করলেও মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে তার অবস্থান স্পষ্ট করা হয়নি।
দীর্ঘ সময় পর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার স্থলসীমান্ত চুক্তির বিষয়ে তার অবস্থান স্পষ্ট করলেও দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত তিস্তা চুক্তির বিষয়টি অস্পষ্টই রয়ে যায়। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলাদেশ সফরের দ্বিতীয় দিনেও সাংবাদিকসহ অনেকের প্রশ্নের জবাবে এ বিষয়ে তার ওপর আস্থা রাখার কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশে তার সফরের তৃতীয় দিনে অর্থাৎ ২১ ফেব্র“য়ারি-২০১৫ তারিখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানান, স্থলসীমান্ত চুক্তির পাশাপাশি তিস্তা চুক্তিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবেন বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর এ মনোভাব বাংলাদেশের জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
যেহেতু পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ (দুই হাজার কিলোমিটারের বেশি) স্থলসীমান্ত রয়েছে, তাই বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার স্থলসীমান্ত চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার পর তা বাস্তবায়নে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের সরকার ও জনগণকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। এ প্রেক্ষাপটে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর তিনদিনের বাংলাদেশ সফরটি সৌজন্যমূলক সফর হলেও তার এ সফর বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
সাংস্কৃতিক ঐক্যের কারণে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের জনগণের মধ্যকার যে কোনো যৌথ প্রকল্প বাস্তবায়নে যে গতি আসবে ভারতের অন্য কোনো রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের কোনো যৌথ চুক্তি প্রকল্প বাস্তবায়নে তেমনটা হবে না। পশ্চিমবঙ্গের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জনগোষ্ঠীর পূর্বপুরুষের আবাস বাংলাদেশ। এ কারণে বাংলাদেশের প্রতি ভারতের উল্লিখিত জনগণ কী অকৃত্রিম আবেগ অনুভব করেন, তা বিভিন্ন উপলক্ষে সাধারণ মানুষের আচরণে এবং বিভিন্ন লেখকের লেখায় ও বিভিন্ন বক্তৃতায় প্রকাশ পায়। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যকার সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে এই অনুভূতি কী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে তা সহজেই অনুমান করা যায়।
বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ যৌথ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে কিভাবে উপকৃত হতে পারে এ বিষয়ে সম্প্রতি ব্যাপক আলোচনা চলছে। শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের ঘন ঘন বৈঠক অব্যাহত না থাকলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেসব সম্ভাবনা রয়েছে তা সময়মতো আলোর মুখ দেখার বিষয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এবার বাংলাদেশ সফরকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন বিষয়ে যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের সামনে তিনি যেসব বক্তব্য দিয়েছেন তার মধ্য দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বড় কিছু করার আবেগই প্রকাশ পেয়েছে।
একজন লেখক হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশেষ পরিচিতি রয়েছে। কাজেই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বই সহজলভ্য করার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের পাঠকগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণের ক্ষেত্রে তিনি আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন এটাই প্রত্যাশিত। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের বই বাংলাদেশে এবং বাংলাদেশের বই পশ্চিমবঙ্গে সহজলভ্য করার ক্ষেত্রে নতুন কী কী সুযোগ তৈরি হয়, সেদিকেই থাকবে আগ্রহী পাঠকদের দৃষ্টি। বর্তমান বাস্তবতায় বই পাঠের প্রতি সব স্তরের জনগণের আগ্রহ বাড়ানো কতটা জরুরি তাও বিশেষভাবে আলোচিত। বাংলাদেশ ও ভারত সরকার জ্ঞানের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের ক্ষেত্রে
যেসব যৌথ উদ্যোগ নেবে সেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এটাই জনগণের প্রত্যাশা। কারণ জ্ঞানচর্চার নতুন অধ্যায়ের সূচনা না হলে উচ্চতর প্রযুক্তির গবেষণা প্রকল্প যথাযথভাবে বাস্তবায়নে নানা রকম অনিশ্চয়তা দেখা দেবে।
২.
বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্যের বিনা শুল্কে ভারতে প্রবেশের সুবিধা থাকলেও রাজ্য সরকারের আলাদা শুল্ক বিদ্যমান থাকায় বাংলাদেশী যে কোনো পণ্য ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের খুচরা ক্রেতার হাত পর্যন্ত পৌঁছাতে মূল্য অনেক বেড়ে যায়। এতে স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশী বিভিন্ন পণ্যের প্রতি ভারতের জনগণের আকর্ষণ কমে যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। রাজ্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত শুল্ক কমানোর ক্ষেত্রে তিনি ভূমিকা রাখলে বাংলাদেশী যে কোনো পণ্য খুচরা কম দামে পাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। এতে পশ্চিমবঙ্গের জনগণের পাশাপাশি বাংলাদেশী শিল্প-উদ্যোক্তাদেরও বিশেষভাবে উপকৃত হওয়ার ক্ষেত্র তৈরি হবে। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার আরও উন্নতি হলে বাংলাদেশের কোনো শিল্প-উদ্যোক্তারা যত কম মূল্যে পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন পণ্য সরবরাহ করতে পারবেন, অন্য কোনো দেশের শিল্প-উদ্যোক্তা তা পারবেন না। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন পণ্যের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের আগ্রহও বাড়ছে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিদ্যমান বাধা দূর হবে, বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের জনগণ এটাও আশা করে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হলে একদিকে যেমন পশ্চিমবঙ্গের শিল্প-উদ্যোক্তারাও বিশেষভাবে উপকৃত হবেন, তেমনি বাংলাদেশের জনগণও বিশেষভাবে উপকৃত হবে।
উচ্চতর গবেষণার ক্ষেত্রে ভারতের দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার বিষয়টি বর্তমানে বিশেষ আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতেও ভারত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এসব উচ্চতর গবেষণার অভিজ্ঞতা আমরা কিভাবে কাজে লাগাতে পারি এ বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। আমার মনে হয়, প্রাথমিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের যৌথ গবেষণা কার্যক্রম চালু করা হলে যে অভিজ্ঞতা হবে, তা ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ গবেষণা কার্যক্রম চালু করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। উল্লেখ্য, বর্তমানে নাসাসহ আধুনিক বিশ্বের যে কোনো গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভারতের বিভিন্ন উচ্চতর গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে থাকে। সম্প্রতি ভারতের সফল মঙ্গল অভিযান ভারতের উচ্চতর গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি বিশ্ববাসীর আস্থার নতুন মাত্রা যোগ করেছে। উচ্চতর গবেষণা খাতে ভারতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর জন্য ইতিমধ্যে বাংলাদেশে যেসব কার্যক্রম শুরু হয়েছে, তা জোরদার করার জন্য বহুমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে।
অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি : প্রকাশক দৈনিক যুগান্তর
দীর্ঘ সময় পর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার স্থলসীমান্ত চুক্তির বিষয়ে তার অবস্থান স্পষ্ট করলেও দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত তিস্তা চুক্তির বিষয়টি অস্পষ্টই রয়ে যায়। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলাদেশ সফরের দ্বিতীয় দিনেও সাংবাদিকসহ অনেকের প্রশ্নের জবাবে এ বিষয়ে তার ওপর আস্থা রাখার কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশে তার সফরের তৃতীয় দিনে অর্থাৎ ২১ ফেব্র“য়ারি-২০১৫ তারিখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানান, স্থলসীমান্ত চুক্তির পাশাপাশি তিস্তা চুক্তিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবেন বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর এ মনোভাব বাংলাদেশের জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
যেহেতু পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ (দুই হাজার কিলোমিটারের বেশি) স্থলসীমান্ত রয়েছে, তাই বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার স্থলসীমান্ত চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার পর তা বাস্তবায়নে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের সরকার ও জনগণকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। এ প্রেক্ষাপটে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর তিনদিনের বাংলাদেশ সফরটি সৌজন্যমূলক সফর হলেও তার এ সফর বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
সাংস্কৃতিক ঐক্যের কারণে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের জনগণের মধ্যকার যে কোনো যৌথ প্রকল্প বাস্তবায়নে যে গতি আসবে ভারতের অন্য কোনো রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের কোনো যৌথ চুক্তি প্রকল্প বাস্তবায়নে তেমনটা হবে না। পশ্চিমবঙ্গের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জনগোষ্ঠীর পূর্বপুরুষের আবাস বাংলাদেশ। এ কারণে বাংলাদেশের প্রতি ভারতের উল্লিখিত জনগণ কী অকৃত্রিম আবেগ অনুভব করেন, তা বিভিন্ন উপলক্ষে সাধারণ মানুষের আচরণে এবং বিভিন্ন লেখকের লেখায় ও বিভিন্ন বক্তৃতায় প্রকাশ পায়। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যকার সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে এই অনুভূতি কী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে তা সহজেই অনুমান করা যায়।
বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ যৌথ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে কিভাবে উপকৃত হতে পারে এ বিষয়ে সম্প্রতি ব্যাপক আলোচনা চলছে। শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের ঘন ঘন বৈঠক অব্যাহত না থাকলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেসব সম্ভাবনা রয়েছে তা সময়মতো আলোর মুখ দেখার বিষয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এবার বাংলাদেশ সফরকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন বিষয়ে যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের সামনে তিনি যেসব বক্তব্য দিয়েছেন তার মধ্য দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বড় কিছু করার আবেগই প্রকাশ পেয়েছে।
একজন লেখক হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশেষ পরিচিতি রয়েছে। কাজেই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বই সহজলভ্য করার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের পাঠকগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণের ক্ষেত্রে তিনি আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন এটাই প্রত্যাশিত। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের বই বাংলাদেশে এবং বাংলাদেশের বই পশ্চিমবঙ্গে সহজলভ্য করার ক্ষেত্রে নতুন কী কী সুযোগ তৈরি হয়, সেদিকেই থাকবে আগ্রহী পাঠকদের দৃষ্টি। বর্তমান বাস্তবতায় বই পাঠের প্রতি সব স্তরের জনগণের আগ্রহ বাড়ানো কতটা জরুরি তাও বিশেষভাবে আলোচিত। বাংলাদেশ ও ভারত সরকার জ্ঞানের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের ক্ষেত্রে
যেসব যৌথ উদ্যোগ নেবে সেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এটাই জনগণের প্রত্যাশা। কারণ জ্ঞানচর্চার নতুন অধ্যায়ের সূচনা না হলে উচ্চতর প্রযুক্তির গবেষণা প্রকল্প যথাযথভাবে বাস্তবায়নে নানা রকম অনিশ্চয়তা দেখা দেবে।
২.
বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্যের বিনা শুল্কে ভারতে প্রবেশের সুবিধা থাকলেও রাজ্য সরকারের আলাদা শুল্ক বিদ্যমান থাকায় বাংলাদেশী যে কোনো পণ্য ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের খুচরা ক্রেতার হাত পর্যন্ত পৌঁছাতে মূল্য অনেক বেড়ে যায়। এতে স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশী বিভিন্ন পণ্যের প্রতি ভারতের জনগণের আকর্ষণ কমে যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। রাজ্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত শুল্ক কমানোর ক্ষেত্রে তিনি ভূমিকা রাখলে বাংলাদেশী যে কোনো পণ্য খুচরা কম দামে পাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। এতে পশ্চিমবঙ্গের জনগণের পাশাপাশি বাংলাদেশী শিল্প-উদ্যোক্তাদেরও বিশেষভাবে উপকৃত হওয়ার ক্ষেত্র তৈরি হবে। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার আরও উন্নতি হলে বাংলাদেশের কোনো শিল্প-উদ্যোক্তারা যত কম মূল্যে পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন পণ্য সরবরাহ করতে পারবেন, অন্য কোনো দেশের শিল্প-উদ্যোক্তা তা পারবেন না। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন পণ্যের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের আগ্রহও বাড়ছে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিদ্যমান বাধা দূর হবে, বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের জনগণ এটাও আশা করে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হলে একদিকে যেমন পশ্চিমবঙ্গের শিল্প-উদ্যোক্তারাও বিশেষভাবে উপকৃত হবেন, তেমনি বাংলাদেশের জনগণও বিশেষভাবে উপকৃত হবে।
উচ্চতর গবেষণার ক্ষেত্রে ভারতের দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার বিষয়টি বর্তমানে বিশেষ আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতেও ভারত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এসব উচ্চতর গবেষণার অভিজ্ঞতা আমরা কিভাবে কাজে লাগাতে পারি এ বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। আমার মনে হয়, প্রাথমিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের যৌথ গবেষণা কার্যক্রম চালু করা হলে যে অভিজ্ঞতা হবে, তা ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ গবেষণা কার্যক্রম চালু করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। উল্লেখ্য, বর্তমানে নাসাসহ আধুনিক বিশ্বের যে কোনো গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভারতের বিভিন্ন উচ্চতর গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে থাকে। সম্প্রতি ভারতের সফল মঙ্গল অভিযান ভারতের উচ্চতর গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি বিশ্ববাসীর আস্থার নতুন মাত্রা যোগ করেছে। উচ্চতর গবেষণা খাতে ভারতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর জন্য ইতিমধ্যে বাংলাদেশে যেসব কার্যক্রম শুরু হয়েছে, তা জোরদার করার জন্য বহুমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে।
অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি : প্রকাশক দৈনিক যুগান্তর
No comments