মানিকগঞ্জে স্কুলে ঢুকে শিক্ষক পেটালেন ছাত্রলীগ নেতা by রিপন আনসারী
মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের নয়া কমিটির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক রুবেল স্কুলে ঢুকে পিটালেন এক শিক্ষককে। ছাত্রলীগ নেতাদের কাণ্ড দেখে স্কুলের সরস্বতী পূজার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে ভয়ে চলে যায় শিক্ষার্থীরা। আহত শিক্ষককে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। রোববার দুপুরে মানিকগঞ্জ সরকারি এস কে সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সহসভাপতি শাহিনুল ইসলাম রোববার দুপুরে এসে প্রধান শিক্ষক রেবেকা জাহানের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর চান শিক্ষকদের কাছে। শিক্ষকরা জানান, প্রধান শিক্ষক কিছুক্ষণের মধ্যে বিদ্যালয়ে আসবেন। শাহিনকে তারা অপেক্ষা করতে বলেন। এসময় শাহিন শিক্ষকদের জানান, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বিদ্যালয়ের বাইরে অবস্থান করছেন। দ্রুত মোবাইল নম্বর দেন, নেতার সময় নেই অপেক্ষা করার। শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের মোবাইল নম্বর না দেয়াতে শাহিন বাইরে চলে যায়। এর পাঁচ মিনিট পর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক রুবেলের নেতৃত্বে ১০/১৫ জন ছাত্রলীগ নেতা স্কুলের ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় জীব বিজ্ঞানের শিক্ষক মতিয়ার রহমান ছাত্রলীগ নেতাদের স্কুলে আসার কারণ জিজ্ঞাসা করায় রুবেলের নেতৃত্বে তার ওপর হামলা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শিক্ষক সেলিনা আক্তার ও সুকুমার রায় মতিয়ার রহমানকে মারপিটের হাত থেকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তাদের ওপরও হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠানের গান-বাজনা ও অন্যান্য অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা ভয়ে স্কুল থেকে চলে যায়। এরপর পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। প্রধান শিক্ষক রেবেকা জাহান জানান, শিক্ষকদের মারধরের ঘটনা শুনে তিনি স্কুলে আসেন। এরপর বিষয়টি তিনি বিদ্যালয়ের সভাপতি জেলা প্রশাসক রাশিদা ফেরদৌসকে জানান। কিছুক্ষণ পর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম বিদ্যালয়ে এসে ঘটনা শোনেন। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালামকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম জানান, ছাত্রলীগের নেতারা যা করেছে তা নিন্দনীয়। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। অভিযুক্ত জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক রুবেল জানান, প্রধান শিক্ষকের মোবাইল ফোন নম্বর না দেয়াতে শিক্ষকদের সঙ্গে তর্কবিতর্ক হয়েছে। শিক্ষকদের মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি। এদিকে এ ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মহিউদ্দিনের বাসায় দলীয় নেতাকর্মী ও শিক্ষক নিয়ে এক বৈঠকে বসেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন সুরাহা হয়নি।
No comments