রাজধানীতে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ২
রাজধানীর
রামপুরায় র্যাবের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ অজ্ঞাতনামা দুই যুবক নিহত
হয়েছেন। রোববার রাত পৌনে ৩টায় দিকে রামপুরার বনশ্রী এলাকায় এই
‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে। র্যাবের দাবি, ওই দুই যুবক দুষ্কৃতকারী। তাদের
সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে দুই র্যাব সদস্য আহত হয়েছেন বলেও দাবি করা হয়েছে। ভোরে
নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে
পুলিশ। কিন্তু গতকাল সারা দিনেও নিহত দুই যুবককে শনাক্ত করতে ঢামেক মর্গে
কেউ যায়নি। নিহতদের একজনের আনুমানিক বয়স ৩৫ বছর। অন্যজনের বয়স ৪০ বছর হবে।
৪০ বছর বয়সী ব্যক্তির মুখে দাঁড়ি রয়েছে। তার পরনে ক্যালো জ্যাকেট। তার
বুকে, পিঠে, কোমরে গুলির ১৬টি ছিদ্র। অপর যুবকের পরনে সাদা শার্ট ও জিন্সের
প্যান্ট। তার দেহে গুলির সাতটি ছিদ্র। রামপুরা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই)
টিপু সুলতান জানান, চল্লিশ বছর বয়সী নিহত ব্যক্তির দেহে সাত থেকে আটটি এবং
অন্যজনের দেহে তিনটি গুলি বিদ্ধ হয়েছে। গুলি শরীর ভেদ করে বের হয়ে যাওয়ায়
গুলির চেয়ে ছিদ্র বেশি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এসআই জানান,
বন্দুকযুদ্ধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ভোর ৪টায় লাশ দু’টি উদ্ধার করে
ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গতকাল তাদের ময়নাতদন্ত
সম্পন্ন হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক সঙ্কটের কারণে
তাদের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়নি। এ দিকে র্যাব জানিয়েছে, শনিবার রাত
২টায় র্যাব ৩-এর ডিএডি জাকির হোসেনের নেতৃত্বে বনশ্রী এলাকার ওই
চেকপোস্টটি রাত ২টায় বসানো হয়। রাত পৌনে ৩টায় র্যাবের চেকপোস্টে একটি
প্রাইভেটকারকে থামার সংকেত দেয়া হয়। এ সময় ওই গাড়ি থেকে দুই যুবক র্যাব
সদস্যদের দিকে গুলি ছুড়তে শুরু করে। এক পর্যায়ে র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়।
এ সময় দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হন। তখন ওই প্রাইভেট কারের চালক গাড়ি ফেলে
পালিয়ে যায়। দুই যুবকের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ র্যাবের সদস্য মনিরুল ও আনিস
আহত হন বলে র্যাব দাবি করেছে। র্যাব ৩-এর অপারেশন অফিসার এএসপি সাইফুল
ইসলাম জানান, আহত র্যাব সদস্য মনিরুলের শরীরে জ্যাকেটে একটি গুলি লাগে
কিন্তু তার পরনে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট থাকায় তা বিদ্ধ হয়নি। তবে তিনি আহত
হয়েছেন। র্যাবের অপর সদস্য আনিস দুর্বৃত্তদের ধরার জন্য দৌড় দিলে সড়কে
পড়ে গিয়ে আহত হন। র্যাব জানিয়েছেন, দুর্বৃত্তদের ফেলে যাওয়া প্রাইভেট
কারটি (ঢাকা মেট্টো-গ-২৩৫০৪৭) গত বছরের ২১শে ডিসেম্বর রাজধানীর কলাবাগান
থেকে চুরি হয়। এ বিষয়ে গাড়ির মালিক কলাবাগান এলাকার রেন্ট এ কার ব্যবসায়ী
নাসির উদ্দিন কলাবাগান থানায় একটি মামলা করেছিলেন। ‘বন্দুকযুদ্ধে’র পর
গাড়িটি উদ্ধার করেছে র্যাব। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল ও ছয় রাউন্ড
গুলি এবং গাড়ি থেকে একটি পিস্তল, গোয়েন্দা পুলিশের দু’টি জ্যাকেট, একটি
ওয়াকিটকি ও একটি হাতকড়া উদ্ধার করা হয়। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার
পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, নিহত দুই যুবক চোরাই গাড়ি দিয়ে
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে ডাকাতি ও ছিনতাই করে আসছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
র্যাবের চেকপোস্টে ধরা পড়ার ভয়ে তারা র্যাবকে লক্ষ্য করে প্রথমে গুলি
ছুড়ে বলে জানান তিনি।
No comments