দুই আনার মন্ত্রী যেভাবে দেখছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র by কাউসার মুমিন
‘দুই
আনার মন্ত্রী’ তত্ত্ব নিয়ে মুখ খুললো যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল এ বিষয়ে মার্কিন
স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, আমরা এই মন্তব্যগুলো দেখেছি। আমরা মনে করি, যে
মন্ত্রী এই মন্তব্যগুলো করেছেন, এগুলোর ব্যাখ্যার ভারও তাদেরকেই
(মন্তব্যকারী মন্ত্রীদেরই) নিতে হবে। এ ধরনের মন্তব্যের ফলে
যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে যাচ্ছে কি না-
মানবজমিনের এমন প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্টের
মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক এখন অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে
অধিকতর শক্তিশালী। সমপ্রতি বাংলাদেশ সফরকারী মার্কিন সহকারী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল-এর সঙ্গে বাংলাদেশের সাবেক
প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বৈঠককে কেন্দ্র করে
বাংলাদেশ সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম মার্কিন মন্ত্রী
নিশা দেশাইকে ‘দুই আনার মন্ত্রী’ বলে মন্তব্য করেন। এর ফলে বাংলাদেশসহ
দেশ-বিদেশের বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশী আমেরিকানদের মধ্যে
ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এমনকি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক
রাজনীতিবোদ্ধারা, সামরিক ও কূটনৈতিক বিশ্লেষকগণ যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এরই আলোকে মানবজমিন-এর পক্ষ
থেকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে যোগাযোগ করা হলে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক
একজন মুখপাত্র গতকাল এই প্রতিনিধির নিকট এক লিখিত প্রতিক্রিয়ায় বলেন, উভয়
দেশের গণমানুষের কল্যাণে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এখন
অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে অধিকতর বিস্তৃত, গভীর এবং শক্তিশালী।
(যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সম্পর্ক বিষয়ে) বাংলাদেশ সরকারের বেশ কয়েকজন
মন্ত্রীর মন্তব্য আমরা দেখেছি। (মন্ত্রীদের) এই মন্তব্যগুলো তাদের নিজেদেরই
ব্যাখ্যা করা উচিত বলে আমরা মনে করি।
এদিকে স্টেট ডিপার্টমেন্টের উল্লিখিত প্রতিক্রিয়া জানার পর এ বিষয়ে বাংলাদেশে প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী থিংকট্যাংক প্রতিষ্ঠান উইলসন সেন্টারের সিনিয়র ফেলো রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম-এর সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিনিধির। ‘স্টেট ডিপার্টমেন্ট এই প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশকে মূলত কি বার্তা দিতে চেয়েছে, একজন প্রাক্তন কূটনৈতিক হিসেবে আপনি এর মর্মার্থ কি বলে মনে করেন?’ এমন প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম মাইলাম বলেন, ‘স্টেট ডিপার্টমেন্ট যে প্রতিক্রিয়া জানালো তার কূটনৈতিক ব্যাখ্যা আমি এই বলে মনে করি যে, স্টেট ডিপার্টমেন্ট উপরিক্ত মন্তব্যের মাধ্যমে মূলত এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে চেয়েছে। কেননা, বিষয়টি এত ট্রিভিয়াল যে এ ধরনের কোন আলোচনায় অংশ না নেয়াই যে কোন সম্মানিত প্রতিপক্ষের জন্য ডিগনিটির পরিচয়।’
সমপ্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এক প্রেস কনফারেন্সে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাংকের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বাতিল করিয়েছিল, এ বিষয়ে আপনার কোন পর্যবেক্ষণ আছে কি? জবাবে উইলিয়াম মাইলাম বলেন, আমার জানামতে ঢাকাস্থ আমেরিকান দূতাবাস ইতিপূর্বে বাংলাদেশের এ ধরনের অভিযোগ সত্য নয় বলে বিবৃতি দিয়েছে। আপনি বরাবরই বাংলাদেশ নিয়ে গবেষণা করছেন, সর্বশেষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আপনি যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কি মনে করছেন? জবাবে উইলিয়াম মাইলাম বলেন, ‘আমি মনে করি, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক একটি রাষ্ট্র-টু-রাষ্ট্র সম্পর্ক। আর বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রাধিকার। বাংলাদেশ সরকারের কর্তা ব্যক্তিদের সামপ্রতিক মন্তব্যের পর দেশটিতে গণতন্ত্রাতিক উত্তরণের আমেরিকান প্রচেষ্টা আগামীতে আরও গতি পাবে বলে আমার মনে হয়। অন্তত আমি মনে করি, যুক্তরাষ্ট্রের আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত এবারের বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক অধিবেশনে যোগদান শেষে অর্থমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের অন্য মন্ত্রীরা ‘বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে কোন দুর্নীতি খুঁজে পায়নি’ এবং ‘পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক ফিরে আসতে চায়’ বলে বিগত কয়েক মাস ধরে বলে আসছেন। কিন্তু বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ান এক্সটারনাল রিলেশন বিষয়ক সিনিয়র কম্যুনিকেশন অফিসার গাব্রিয়েলা আগুইলিয়ার সমপ্রতি এই প্রতিনিধির নিকট এক লিখিত বার্তায় পদ্মা সেতুর দুর্নীতির অভিযোগ বিষয়ে জুন ২৯, ২০১২ তারিখে গৃহীত বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্তের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন যে, পদ্মা সেতুর দুর্নীতির অভিযোগ থেকে বিশ্বব্যাংক সরে আসেনি বা এ বিষয়ক বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্তের কোন পরিবর্তন হয়নি। তবে বিশ্বব্যাংকের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলেছে, এবারের বার্ষিক সম্মেলনে বিশ্বব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ এই মর্মে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, আগামীতে বিশ্বব্যাপী ব্যাংকের যে কোন প্রকল্পে কাজ চলাকালে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে দুর্নীতি বিষয়ে তদন্ত চলাকালে যুগপৎভাবে ওই প্রকল্পের কাজও চলবে। ব্যাংকের টাকার সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, যা আগামী বছরের অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ এমন এক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রকে পাশ কাটিয়ে দৃশ্যত চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করতে যাচ্ছে যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খোদ ভারত ও চীন ২০১৪ সাল জুড়ে কূটনৈতিক পেশিশক্তি প্রদর্শনের অবস্থান থেকে সরে এসে সহযোগিতামূলক কূটনীতিকে প্রাধান্য দিচ্ছে এবং এমনকি রাশিয়াও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে সমঝোতার সুরে কথা বলছে। অবশ্য চলতি সপ্তাহে মার্কিন সিনেট প্রকাশিত সিআইএ’র টর্চার রিপোর্ট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এই মুহূর্তে নতুন করে ব্যাপক আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়েছে।
এদিকে স্টেট ডিপার্টমেন্টের উল্লিখিত প্রতিক্রিয়া জানার পর এ বিষয়ে বাংলাদেশে প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী থিংকট্যাংক প্রতিষ্ঠান উইলসন সেন্টারের সিনিয়র ফেলো রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম-এর সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিনিধির। ‘স্টেট ডিপার্টমেন্ট এই প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশকে মূলত কি বার্তা দিতে চেয়েছে, একজন প্রাক্তন কূটনৈতিক হিসেবে আপনি এর মর্মার্থ কি বলে মনে করেন?’ এমন প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম মাইলাম বলেন, ‘স্টেট ডিপার্টমেন্ট যে প্রতিক্রিয়া জানালো তার কূটনৈতিক ব্যাখ্যা আমি এই বলে মনে করি যে, স্টেট ডিপার্টমেন্ট উপরিক্ত মন্তব্যের মাধ্যমে মূলত এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে চেয়েছে। কেননা, বিষয়টি এত ট্রিভিয়াল যে এ ধরনের কোন আলোচনায় অংশ না নেয়াই যে কোন সম্মানিত প্রতিপক্ষের জন্য ডিগনিটির পরিচয়।’
সমপ্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এক প্রেস কনফারেন্সে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাংকের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বাতিল করিয়েছিল, এ বিষয়ে আপনার কোন পর্যবেক্ষণ আছে কি? জবাবে উইলিয়াম মাইলাম বলেন, আমার জানামতে ঢাকাস্থ আমেরিকান দূতাবাস ইতিপূর্বে বাংলাদেশের এ ধরনের অভিযোগ সত্য নয় বলে বিবৃতি দিয়েছে। আপনি বরাবরই বাংলাদেশ নিয়ে গবেষণা করছেন, সর্বশেষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আপনি যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কি মনে করছেন? জবাবে উইলিয়াম মাইলাম বলেন, ‘আমি মনে করি, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক একটি রাষ্ট্র-টু-রাষ্ট্র সম্পর্ক। আর বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রাধিকার। বাংলাদেশ সরকারের কর্তা ব্যক্তিদের সামপ্রতিক মন্তব্যের পর দেশটিতে গণতন্ত্রাতিক উত্তরণের আমেরিকান প্রচেষ্টা আগামীতে আরও গতি পাবে বলে আমার মনে হয়। অন্তত আমি মনে করি, যুক্তরাষ্ট্রের আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত এবারের বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক অধিবেশনে যোগদান শেষে অর্থমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের অন্য মন্ত্রীরা ‘বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে কোন দুর্নীতি খুঁজে পায়নি’ এবং ‘পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক ফিরে আসতে চায়’ বলে বিগত কয়েক মাস ধরে বলে আসছেন। কিন্তু বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ান এক্সটারনাল রিলেশন বিষয়ক সিনিয়র কম্যুনিকেশন অফিসার গাব্রিয়েলা আগুইলিয়ার সমপ্রতি এই প্রতিনিধির নিকট এক লিখিত বার্তায় পদ্মা সেতুর দুর্নীতির অভিযোগ বিষয়ে জুন ২৯, ২০১২ তারিখে গৃহীত বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্তের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন যে, পদ্মা সেতুর দুর্নীতির অভিযোগ থেকে বিশ্বব্যাংক সরে আসেনি বা এ বিষয়ক বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্তের কোন পরিবর্তন হয়নি। তবে বিশ্বব্যাংকের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলেছে, এবারের বার্ষিক সম্মেলনে বিশ্বব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ এই মর্মে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, আগামীতে বিশ্বব্যাপী ব্যাংকের যে কোন প্রকল্পে কাজ চলাকালে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে দুর্নীতি বিষয়ে তদন্ত চলাকালে যুগপৎভাবে ওই প্রকল্পের কাজও চলবে। ব্যাংকের টাকার সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, যা আগামী বছরের অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ এমন এক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রকে পাশ কাটিয়ে দৃশ্যত চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করতে যাচ্ছে যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খোদ ভারত ও চীন ২০১৪ সাল জুড়ে কূটনৈতিক পেশিশক্তি প্রদর্শনের অবস্থান থেকে সরে এসে সহযোগিতামূলক কূটনীতিকে প্রাধান্য দিচ্ছে এবং এমনকি রাশিয়াও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে সমঝোতার সুরে কথা বলছে। অবশ্য চলতি সপ্তাহে মার্কিন সিনেট প্রকাশিত সিআইএ’র টর্চার রিপোর্ট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এই মুহূর্তে নতুন করে ব্যাপক আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়েছে।
No comments