গুলশান ষড়যন্ত্রে সরকারের তালিকায় ২২ জন
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান
অফিসে সচিবালয় কর্মচারীদের বৈঠককে সরকারের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র বলে
অভিহিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জনপ্রশাসন
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে এ মন্তব্য করা হয়। এ
চিঠির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ২২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পরিচিতিসহ তালিকা
পাঠানো হয়; যাদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ এনে কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী
শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
এদিকে বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ চিঠি পাওয়ার আধা ঘণ্টার মধ্যে তালিকায় প্রথম নম্বরে থাকা ওএসডি যুগ্মসচিব একেএম জাহাঙ্গীর হোসেনকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মন্ত্রণালয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্র যুগান্তরকে জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতি গোপনীয় চিঠিটি বিকাল ৩টায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীর দফতরে আসে। চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ৪ ডিসেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে বেসামরিক প্রশাসনে কর্মরত বর্তমান ও সাবেক আনুমানিক ২৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী যোগ দেন। এ বিষয়ে দুটি গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে পৃথক প্রতিবেদন দেয়া হয়। একটিতে ৫ জন অবসরপ্রাপ্ত, ১ জন চাকরিচ্যুত ও ১৮ জন কর্মকর্তাসহ মোট ২৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন বলে জানানো হয়। অপর প্রতিবেদনে বলা হয়, ৮ জন অবসরপ্রাপ্ত, ১ জন চাকরিচ্যুত ও ১৩ জন কর্মকর্তাসহ মোট ২২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এ বৈঠককে কেন্দ্র করে গণমাধ্যম, রাজনৈতিক অঙ্গন ও জনপ্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। গোয়েন্দা প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে আরও বলা হয়, বিএনপির সম্ভাব্য আন্দোলনে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তাদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেয়া এবং সরকারবিরোধী যে কোনো আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াতপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সক্রিয় করার উদ্দেশ্যেই এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। বৈঠকটি গভীর রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়ায় এবং বিএনপির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমের কাছে তা এড়িয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা থাকায় বৈঠকটি গভীর ষড়যন্ত্রমূলক।
চিঠিতে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়ে বৈঠকে অংশ নেয়াকে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯-এর বিধি-২৫(১)-এর লংঘন বলে অভিহিত করা হয়েছে। এ বিধিতে বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ বা কোনো প্রকার সহায়তা করতে পারবেন না। কেউ করলে তা অসদাচরণ বলে গণ্য হবে।
এ পর্যায়ে মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে গুলশান বৈঠকে অংশ নেয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। একই সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশও করা হয়েছে।
অংশ নেয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তালিকা : কর্মরতদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওএসডি যুগ্মসচিব একেএম জাহাঙ্গীর হোসেন, ওএসডি সিনিয়র সহকারী সচিব এহসানুল হক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ইব্রাহীম মিয়াজী, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তা একেএম হুমায়ুন কবির, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. বাদিউল কবির (সংযুক্ত বেপজা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়), তথ্য মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক মো. বিল্লাল হোসেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অফিস সহায়ক মো. মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, শেরেবাংলা নগরের আইএমইডির অফিস সহায়ক মো. মজিবুল হক, এজি অফিসের এমএলএসএস মো. মামুন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. তৌফিকুল ইসলাম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন বিভাগের অফিস সহায়ক মো. আজিম উদ্দিন এবং তথ্য মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক মো. শহিদুল ইসলাম।
অবসরপ্রাপ্তদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব এএসএম আবদুল হালিম, অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. ইবাদত আলী, ড. মাহবুবুর রহমান, আফতাব আহম্মেদ, অবসরপ্রাপ্ত উপসচিব ফজলুর রহমান, আসলাম ইকবাল, শেখ বাশার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবদুল মান্নান এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের চাকরিচ্যুত ক্যাশ সরকার মো. তোয়াহা। যাকে ২০০১-২০০৬ সালের মধ্যে মন্ত্রীর স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগে চাকরিচ্যুত করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই কর্মচারী বর্তমানে বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানের বাসায় থাকেন।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো গোয়েন্দা প্রতিবেদনে তালিকাভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে কয়েকজনের নামের বানান ভুল রয়েছে। এমনকি একজন সচিব কর্মরত থাকলেও তাকে অবসরপ্রাপ্ত হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। একজন কর্মকর্তা ওএসডি অতিরিক্ত সচিব হলেও তাকে বলা হয়েছে অবসরপ্রাপ্ত সচিব। তার নামের বানানও সঠিকভাবে উপস্থাপিত হয়নি। এছাড়া প্রতিবেদনে ক্যাডার কর্মকর্তাদের আইডি নম্বর না থাকায় কিছুটা জটিলতা তৈরি হবে। তবে ভিডিও ফুটেজ থাকলে কাউকে চিহ্নিত করতে কোনো সমস্যা হবে না। এছাড়া পত্রিকায় সাবেক যুগ্মসচিব আবদুল বারীর ছবি ছাপা হলেও তার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে তারা ধারণা করছেন, বৈঠকে সত্যিই যারা যোগ দিয়েছিলেন তাদের কয়েকজনের নাম গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আসেনি। এমনকি পত্রিকার রিপোর্টেও প্রকাশিত হয়নি।
এই বৈঠকে অংশ নেয়া কর্মকর্তাদের তালিকায় থাকা সাবেক সচিব ড. মাহবুবুর রহমানের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার রাতে তিনি যুগান্তরকে বলেন, ৪ ডিসেম্বর রাতে বাসায় বসে টিভিতে তিনি এ সংবাদ দেখেন। এই সচিব দাবি করেন, ওই বৈঠকে তিনি উপস্থিত ছিলেন না এবং কেউ প্রমাণও করতে পারবে না। ওএসডি সচিব ইবাদত আলীর মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেখানে এখনও সচিব হিসেবে চাকরিতে বহাল আছেন সেখানে তাকে অবসরপ্রাপ্ত সচিব উল্লেখ করে গোয়েন্দা প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। তার চাকরির মেয়াদ রয়েছে ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত। এতেই বুঝে নিতে হবে প্রতিবেদনটি কতখানি অসত্য। তিনি বলেন, এ ধরনের বৈঠকে উপস্থিত থাকার প্রশ্নই ওঠে না। তিনি খুবই অসুস্থ। কেউ হয়তো লোকমুখে শুনে এ ধরনের প্রতিবেদন তৈরি করেছেন।
এদিকে এ বিষয়ে গতকাল রাতে ওএসডি ও বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো একেএম জাহাঙ্গীর হোসেনের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে ঘটনার রাতে (৪ ডিসেম্বর) তিনি যুগান্তরকে জানিয়েছিলেন, অসুস্থ অবস্থায় বাসায় বিশ্রাম করছেন। গুলশানে বিএনপি কার্যালয়ে যাননি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গোয়েন্দা সংস্থার কয়েকটি সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রতিবেদনের বিষয়ে তাদের কাছ যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে।
এদিকে বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ চিঠি পাওয়ার আধা ঘণ্টার মধ্যে তালিকায় প্রথম নম্বরে থাকা ওএসডি যুগ্মসচিব একেএম জাহাঙ্গীর হোসেনকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মন্ত্রণালয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্র যুগান্তরকে জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতি গোপনীয় চিঠিটি বিকাল ৩টায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীর দফতরে আসে। চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ৪ ডিসেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে বেসামরিক প্রশাসনে কর্মরত বর্তমান ও সাবেক আনুমানিক ২৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী যোগ দেন। এ বিষয়ে দুটি গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে পৃথক প্রতিবেদন দেয়া হয়। একটিতে ৫ জন অবসরপ্রাপ্ত, ১ জন চাকরিচ্যুত ও ১৮ জন কর্মকর্তাসহ মোট ২৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন বলে জানানো হয়। অপর প্রতিবেদনে বলা হয়, ৮ জন অবসরপ্রাপ্ত, ১ জন চাকরিচ্যুত ও ১৩ জন কর্মকর্তাসহ মোট ২২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এ বৈঠককে কেন্দ্র করে গণমাধ্যম, রাজনৈতিক অঙ্গন ও জনপ্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। গোয়েন্দা প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে আরও বলা হয়, বিএনপির সম্ভাব্য আন্দোলনে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তাদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেয়া এবং সরকারবিরোধী যে কোনো আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াতপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সক্রিয় করার উদ্দেশ্যেই এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। বৈঠকটি গভীর রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়ায় এবং বিএনপির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমের কাছে তা এড়িয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা থাকায় বৈঠকটি গভীর ষড়যন্ত্রমূলক।
চিঠিতে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়ে বৈঠকে অংশ নেয়াকে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯-এর বিধি-২৫(১)-এর লংঘন বলে অভিহিত করা হয়েছে। এ বিধিতে বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ বা কোনো প্রকার সহায়তা করতে পারবেন না। কেউ করলে তা অসদাচরণ বলে গণ্য হবে।
এ পর্যায়ে মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে গুলশান বৈঠকে অংশ নেয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। একই সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশও করা হয়েছে।
অংশ নেয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তালিকা : কর্মরতদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওএসডি যুগ্মসচিব একেএম জাহাঙ্গীর হোসেন, ওএসডি সিনিয়র সহকারী সচিব এহসানুল হক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ইব্রাহীম মিয়াজী, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তা একেএম হুমায়ুন কবির, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. বাদিউল কবির (সংযুক্ত বেপজা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়), তথ্য মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক মো. বিল্লাল হোসেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অফিস সহায়ক মো. মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, শেরেবাংলা নগরের আইএমইডির অফিস সহায়ক মো. মজিবুল হক, এজি অফিসের এমএলএসএস মো. মামুন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. তৌফিকুল ইসলাম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন বিভাগের অফিস সহায়ক মো. আজিম উদ্দিন এবং তথ্য মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক মো. শহিদুল ইসলাম।
অবসরপ্রাপ্তদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব এএসএম আবদুল হালিম, অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. ইবাদত আলী, ড. মাহবুবুর রহমান, আফতাব আহম্মেদ, অবসরপ্রাপ্ত উপসচিব ফজলুর রহমান, আসলাম ইকবাল, শেখ বাশার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবদুল মান্নান এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের চাকরিচ্যুত ক্যাশ সরকার মো. তোয়াহা। যাকে ২০০১-২০০৬ সালের মধ্যে মন্ত্রীর স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগে চাকরিচ্যুত করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই কর্মচারী বর্তমানে বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানের বাসায় থাকেন।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো গোয়েন্দা প্রতিবেদনে তালিকাভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে কয়েকজনের নামের বানান ভুল রয়েছে। এমনকি একজন সচিব কর্মরত থাকলেও তাকে অবসরপ্রাপ্ত হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। একজন কর্মকর্তা ওএসডি অতিরিক্ত সচিব হলেও তাকে বলা হয়েছে অবসরপ্রাপ্ত সচিব। তার নামের বানানও সঠিকভাবে উপস্থাপিত হয়নি। এছাড়া প্রতিবেদনে ক্যাডার কর্মকর্তাদের আইডি নম্বর না থাকায় কিছুটা জটিলতা তৈরি হবে। তবে ভিডিও ফুটেজ থাকলে কাউকে চিহ্নিত করতে কোনো সমস্যা হবে না। এছাড়া পত্রিকায় সাবেক যুগ্মসচিব আবদুল বারীর ছবি ছাপা হলেও তার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে তারা ধারণা করছেন, বৈঠকে সত্যিই যারা যোগ দিয়েছিলেন তাদের কয়েকজনের নাম গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আসেনি। এমনকি পত্রিকার রিপোর্টেও প্রকাশিত হয়নি।
এই বৈঠকে অংশ নেয়া কর্মকর্তাদের তালিকায় থাকা সাবেক সচিব ড. মাহবুবুর রহমানের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার রাতে তিনি যুগান্তরকে বলেন, ৪ ডিসেম্বর রাতে বাসায় বসে টিভিতে তিনি এ সংবাদ দেখেন। এই সচিব দাবি করেন, ওই বৈঠকে তিনি উপস্থিত ছিলেন না এবং কেউ প্রমাণও করতে পারবে না। ওএসডি সচিব ইবাদত আলীর মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেখানে এখনও সচিব হিসেবে চাকরিতে বহাল আছেন সেখানে তাকে অবসরপ্রাপ্ত সচিব উল্লেখ করে গোয়েন্দা প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। তার চাকরির মেয়াদ রয়েছে ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত। এতেই বুঝে নিতে হবে প্রতিবেদনটি কতখানি অসত্য। তিনি বলেন, এ ধরনের বৈঠকে উপস্থিত থাকার প্রশ্নই ওঠে না। তিনি খুবই অসুস্থ। কেউ হয়তো লোকমুখে শুনে এ ধরনের প্রতিবেদন তৈরি করেছেন।
এদিকে এ বিষয়ে গতকাল রাতে ওএসডি ও বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো একেএম জাহাঙ্গীর হোসেনের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে ঘটনার রাতে (৪ ডিসেম্বর) তিনি যুগান্তরকে জানিয়েছিলেন, অসুস্থ অবস্থায় বাসায় বিশ্রাম করছেন। গুলশানে বিএনপি কার্যালয়ে যাননি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গোয়েন্দা সংস্থার কয়েকটি সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রতিবেদনের বিষয়ে তাদের কাছ যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে।
No comments