সারদা কেলেঙ্কারিতে পশ্চিমবঙ্গের যোগাযোগ মন্ত্রী গ্রেফতার
সারদা
চিট ফান্ড কেলেঙ্কারিতে এবার গ্রেফতার করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগাযোগ মন্ত্রী মদন মিত্রকে। ভারতে
বহুল আলোচিত এ কেলেঙ্কারিতে এই প্রথম পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কোন মন্ত্রীকে
গ্রেফতার করা হলো। গতকাল তাকে গ্রেফতার করার আগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এই
গ্রেফতারের ঘটনা মমতা সরকারের জন্য ভীষণ এক বিব্রতকর অবস্থা। তার সরকার এতে
অনেক সমস্যার মুখোমুখি হবে। এখানে উল্লেখ্য, সারদা কেলেঙ্কারিতে ক্ষমতাসীন
তৃণমূল কংগ্রেস জড়িত এমন অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে। এ অভিযোগে এ পর্যন্ত তৃণমূল
কংগ্রেসের বড় মাপের তিনজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হলো। কিন্তু মদন মিত্র
তাদের মধ্যে ব্যতিক্রম। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী মমতার সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও তৃণমূল
পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এই মদন মিত্র। গত বছর দলীয় সভায় মমতা তার দলের
যে তিনজন নেতার পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছিলেন, তারা সবাই এখন আটক।
তাদেরকে জেলে পাঠানো হয়েছে। ওই সময় মমতা বলেছিলেন- তারা কি চোর? আমি কি
চোর? এ কেলেঙ্কারিতে এর আগে আটক করা হয়েছে তৃণমূলের এমপি সৃঞ্জয় বোস ও
কুনাল ঘোষকে। আগস্টে আটক করা হয়েছে তৃণমূলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সাবেক
পুলিশ কর্মকর্তা রজত মজুমদারকে। গত মাসে মদন মিত্রকে তলব করেছিল কেন্দ্রীয়
গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। তারপর তিনি হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়েছেন।
যোগাযোগ মন্ত্রী মদন মিত্রকে সারদা গ্রুপের চেয়ারম্যানন সুদীপ্ত সেনের
সঙ্গে সারদা গ্রুপের এজেন্টদের এক মিটিংয়ে দেখা ভূয়সী প্রশংসা করতে দেখা
গেছে একটি ভিডিও ক্লিপে। অভিযোগ আছে, তিনি এই গ্রুপের কাছ থেকে গাড়ি,
জ্বালানি ও ড্রাইভারের সুবিধা নিয়েছেন। তার এসব খরচ বহন করেছে সারদা গ্রুপ।
একটি মন্দিরের জন্য সুদীপ্ত সেনের কাছ থেকে ডোনেশন পাইয়ে দিয়েছেন। তবে
তৃণমূল নেতাদের দাবি, কলকাতায় কয়েকদিন আগে বিজেপির স্থানীয় সভাপতি অমিত শাহ
যে প্রতিশোধ পরায়ণ বক্তব্য রেখেছেন তার পরেই মদন মিত্রকে গ্রেপ্তার করা
হলো। এর সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস দল কেন্দ্রে বিজেপিকে দায়ী
করছে। তারা বলছে, কংগ্রেস আয়োজিত জওয়াহার লাল নেহরুর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে
সম্প্রতি যোগ দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার প্রতিশোধ নিতে কেন্দ্রীয়
বিজেপি তৃণমূলকে টার্গেট করেছেছ। তবে এর জবাবে অমিত শাহ বলেছেন, যা করছে তা
সিবিআই করছে। উল্লেখ্য, সারদা গ্রুপ পঞ্জি নামে একটি স্কিম চালু করে। তাতে
গরিবদের অর্থ জমা করতে বলা হয়। বলা হয়, বিনিময়ে তারা শতকরা ৪০ ভাগ হারে
সুদ পাবেন। কিন্তু সংস্থাটি পশ্চিমবঙ্গে ও ওড়িশায় ঋণখেলাপিতে পরিণত হয়। এ
জন্য গত বছর সংস্থাটি ভেঙে যায়।
No comments