দিনাজপুরে সংঘর্ষে বিএনপির সভা পণ্ড, গাড়ি ভাঙচুর
(তিন
পক্ষের মঞ্চ দখল ও পাল্টা দখলের ঘটনায় দিনাজপুর জেলা বিএনপির যৌথ
কর্মিসভা পণ্ড হয়ে যায়। ছবিটি শহরের লোকভবন মিলনায়তন থেকে তোলা। ছবি:
প্রথম আলো) কেন্দ্রীয়
নেতাদের উপস্থিতিতে তিন পক্ষের মঞ্চ দখল ও পাল্টা দখলের ঘটনাকে কেন্দ্র
করে দিনাজপুর জেলা বিএনপির যৌথ কর্মিসভা পণ্ড হয়ে গেছে। আজ শুক্রবার বেলা
১১টার দিকে শহরের লোকভবন মিলনায়তনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্রও করে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমানকে বহনকারী গাড়ি ভাঙচুর করা
হয়। পুরো ঘটনার জন্য দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা, বিভক্তি, নেতৃত্বের কোন্দল
এবং সরকারি দলের ষড়যন্ত্রকে দায়ী করেছেন নেতারা। জেলা বিএনপির সভাপতি
মো. লুৎফর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশে জেলা কমিটি আজ ওই
যৌথ সভার আয়োজন করেছিল। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সভা শুরুর আগে সভার প্রধান
অতিথি দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান ও বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয়
যুগ্ম মহাসচিব ও রাজশাহী সিটির সাবেক মেয়র মো. মিজানুর রহমানসহ অপর
অতিথিরা সভাস্থলে আসেন। এর আগেই জেলার ১৩ উপজেলা ও ৮টি পৌরসভা কমিটির
নেতা-কর্মীরা যৌথসভায় উপস্থিত হন। প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় নেতা-কর্মীরা
জানান, গত উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায়
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুকুর চৌধুরী কেন্দ্র থেকে বহিষ্কৃত হন। এরপর
থেকে তিনি ও তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা দলীয় কার্যালয় বা সরকারবিরোধী আন্দোলনে
মাঠে ছিলেন না। কিন্তু আজ সভা শুরুর আগেই বেলা পৌনে ১১টার দিকে কয়েক শ
কর্মী-সমর্থকসহ মুকুর চৌধুরী মিলনায়তনে আসেন। এ সময় সভা শুরুর প্রস্তুতি
চলছিল। মুকুরের সমর্থকেরা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তাঁকে দিয়ে সভা পরিচালনা
করার দাবি জানান। মুকুর চৌধুরী নিজেও সভা পরিচালনা করবেন বলে ঘোষণা দেন। এ
সময় জেলা বিএনপির বর্তমান নেতৃত্বে থাকা নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মুকুর
চৌধুরীর কর্মী-সমর্থকদের বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে মঞ্চে টাঙানো
ব্যানারে কেন্দ্রীয় নেতাদের নামের পাশে মুকুর চৌধুরীর না থাকায় তাঁর
সমর্থকেরা মঞ্চের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। এ নিয়ে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
মোস্তফা কামাল ও তাঁর সমর্থকদের সঙ্গে মুকুর চৌধুরীর সমর্থকদের হাতাহাতি
শুরু হয়। এ সময় মাহবুবুর রহমান ও মিজানুর রহমান উভয় পক্ষের
কর্মী-সমর্থকদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। বেলা ১১টার দিকে মুকুর চৌধুরী ও
জেলা নেতৃত্বের পক্ষের সমর্থকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে মিলনায়তন থেকে বেরিয়ে
যান।
এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাবেক মন্ত্রী খুরশিদ জাহান হক ও তাঁর বড় ছেলে শাহরিয়ার আকতার হক ওরফে ডনের ছবিসহ হাতে ফেস্টুন ও মাথায় পট্টি বেঁধে জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফুল আলম ও যুবদলের সভাপতি আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে কয়েক শ কর্মী-সমর্থক মিলনায়তনে আসেন। দলের এ অংশটি কোন্দল ও নেতৃত্বের ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠে সরকারবিরোধী আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে বর্তমান কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি গঠনে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দাবি জানায়। এরপরই হাতাহাতি ও বিভিন্ন পক্ষের দাবির মুখে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে জেলা বিএনপির সভাপতি মো. লুৎফর রহমান, সহসভাপতি এ জেড এম রেজওয়ানুল হক, সাবেক সংসাদ মো. আকতারুজ্জামান মিয়া ও সাবেক সভাপতি আবদুল হালিম উপস্থিত নেতা-কর্মীদের নিয়ে মিলনায়তন থেকে বেরিয়ে যান।
মিলনায়তন চত্বরে আবদুল হালিম প্রথম আলোকে বলেন, দিনাজপুর জেলা বিএনপি বর্তমানে তিন ভাগে বিভক্ত। ভেতরে ঘা রেখে ওপরে প্রলেপ বা জোড়াতালি দিয়ে সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। সমস্যা সমাধানে সব পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন করে কমিটি গঠন করা ছাড়া এ সমস্যার সমাধান হবে না বলে তিনি মত ব্যক্ত করেন। মো. আশরাফুল আলম বলেন, জেলার বর্তমান কমিটি দল পরিচালনায় ব্যর্থ। ফলে অনেক বিভক্তির সৃষ্টি হয়েছে। কর্মীদের ওপর নেতাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দিয়ে সব পক্ষকে নিয়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি করার দাবি জানান তিনি। অপরদিকে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হাসানুজ্জামান বলেন, বিরোধী দলের চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিভেদ-বিভাজনের কোনো সুযোগ নেই। প্রয়োজন ঐক্যের। কোনো পক্ষকে বাদ দিয়ে সেই ঐক্য সম্ভব নয়।
বিএনপি মামা-ভাগিনার দল নয়
এদিকে যৌথ কর্মিসভা পণ্ড হওয়ার পর বেলা তিনটার দিকে দিনাজপুর শহরের মুন্সিপাড়া এলাকায় জেলা বিএনপির সভাপতি লুৎফর রহমানের বাসায় প্রেস ব্রিফিং করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এ সময় মাথায় পট্টি বাঁধা ডন লেখা (প্রয়াত খুরশিদ জাহান হক ও তাঁর ছেলে শাহরিয়ার আকতার হক) ছবি বহনকারীদের দায়ী করে মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘তস্করের মতো হলে প্রবেশ করে তাঁরা মঞ্চ দখল করে নিল। এদের বেশির ভাগ অচেনা মুখ। দলের কর্মকাণ্ডের সাথে কোনো কালেই তাঁরা সংশ্লিষ্ট ছিল না।’ তিনি বলেন, বিএনপি কোনো মামা-ভাগিনার দল নয়। জিয়াউর রহমানের আদর্শে বিশ্বাসীদের দল। ঘটনা তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান। মিজানুর রহমান বলেন, দিনাজপুরের এই ঘটনা প্রমাণ করেছে জেলায় দলের অনৈক্যের সংকট প্রকট। নেতৃত্বে দুর্বলতা এবং কোন্দল রয়েছে। সব পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে আলাপ আলোচনা ছাড়া এ সংকট উত্তরণ সম্ভব নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ সময় দিনাজপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মো. লুৎফুর রহমানসহ জেলা কমিটির নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মাহবুবুর রহমানের গাড়ি ভাঙচুর
বিকেলে প্রেস ব্রিফিং শেষ করে যাওয়ার সময় শহরের লিলি সিনেমা মোড়ে একটি পক্ষের কর্মীরা মাহবুবুর রহমানকে বহনকারী গাড়ি ভাঙচুর করেন। কর্মীরা ইট দিয়ে গাড়ির পেছনের কাচ ভেঙে ফেলেন। এ সময় অনেককে জুতা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে দেখা গেছে। এর মধ্যেই গাড়িটি দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করায় মাহবুবুর রহমানের কোনো ক্ষতি হয়নি।
এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাবেক মন্ত্রী খুরশিদ জাহান হক ও তাঁর বড় ছেলে শাহরিয়ার আকতার হক ওরফে ডনের ছবিসহ হাতে ফেস্টুন ও মাথায় পট্টি বেঁধে জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফুল আলম ও যুবদলের সভাপতি আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে কয়েক শ কর্মী-সমর্থক মিলনায়তনে আসেন। দলের এ অংশটি কোন্দল ও নেতৃত্বের ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠে সরকারবিরোধী আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে বর্তমান কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি গঠনে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দাবি জানায়। এরপরই হাতাহাতি ও বিভিন্ন পক্ষের দাবির মুখে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে জেলা বিএনপির সভাপতি মো. লুৎফর রহমান, সহসভাপতি এ জেড এম রেজওয়ানুল হক, সাবেক সংসাদ মো. আকতারুজ্জামান মিয়া ও সাবেক সভাপতি আবদুল হালিম উপস্থিত নেতা-কর্মীদের নিয়ে মিলনায়তন থেকে বেরিয়ে যান।
মিলনায়তন চত্বরে আবদুল হালিম প্রথম আলোকে বলেন, দিনাজপুর জেলা বিএনপি বর্তমানে তিন ভাগে বিভক্ত। ভেতরে ঘা রেখে ওপরে প্রলেপ বা জোড়াতালি দিয়ে সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। সমস্যা সমাধানে সব পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন করে কমিটি গঠন করা ছাড়া এ সমস্যার সমাধান হবে না বলে তিনি মত ব্যক্ত করেন। মো. আশরাফুল আলম বলেন, জেলার বর্তমান কমিটি দল পরিচালনায় ব্যর্থ। ফলে অনেক বিভক্তির সৃষ্টি হয়েছে। কর্মীদের ওপর নেতাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দিয়ে সব পক্ষকে নিয়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি করার দাবি জানান তিনি। অপরদিকে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হাসানুজ্জামান বলেন, বিরোধী দলের চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিভেদ-বিভাজনের কোনো সুযোগ নেই। প্রয়োজন ঐক্যের। কোনো পক্ষকে বাদ দিয়ে সেই ঐক্য সম্ভব নয়।
বিএনপি মামা-ভাগিনার দল নয়
এদিকে যৌথ কর্মিসভা পণ্ড হওয়ার পর বেলা তিনটার দিকে দিনাজপুর শহরের মুন্সিপাড়া এলাকায় জেলা বিএনপির সভাপতি লুৎফর রহমানের বাসায় প্রেস ব্রিফিং করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এ সময় মাথায় পট্টি বাঁধা ডন লেখা (প্রয়াত খুরশিদ জাহান হক ও তাঁর ছেলে শাহরিয়ার আকতার হক) ছবি বহনকারীদের দায়ী করে মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘তস্করের মতো হলে প্রবেশ করে তাঁরা মঞ্চ দখল করে নিল। এদের বেশির ভাগ অচেনা মুখ। দলের কর্মকাণ্ডের সাথে কোনো কালেই তাঁরা সংশ্লিষ্ট ছিল না।’ তিনি বলেন, বিএনপি কোনো মামা-ভাগিনার দল নয়। জিয়াউর রহমানের আদর্শে বিশ্বাসীদের দল। ঘটনা তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান। মিজানুর রহমান বলেন, দিনাজপুরের এই ঘটনা প্রমাণ করেছে জেলায় দলের অনৈক্যের সংকট প্রকট। নেতৃত্বে দুর্বলতা এবং কোন্দল রয়েছে। সব পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে আলাপ আলোচনা ছাড়া এ সংকট উত্তরণ সম্ভব নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ সময় দিনাজপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মো. লুৎফুর রহমানসহ জেলা কমিটির নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মাহবুবুর রহমানের গাড়ি ভাঙচুর
বিকেলে প্রেস ব্রিফিং শেষ করে যাওয়ার সময় শহরের লিলি সিনেমা মোড়ে একটি পক্ষের কর্মীরা মাহবুবুর রহমানকে বহনকারী গাড়ি ভাঙচুর করেন। কর্মীরা ইট দিয়ে গাড়ির পেছনের কাচ ভেঙে ফেলেন। এ সময় অনেককে জুতা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে দেখা গেছে। এর মধ্যেই গাড়িটি দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করায় মাহবুবুর রহমানের কোনো ক্ষতি হয়নি।
No comments