৪ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট
চলতি অর্থবছরে উন্নয়ন বাজেটে
অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাতের বৈদেশিক অংশে বরাদ্দ কমছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ,
জ্বালানি ও পরিবহন খাতে কমানো হচ্ছে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। প্রকল্প
বাস্তবায়নের অর্থ ব্যয়ের অক্ষমতার কারণে এ বরাদ্দ কমানো হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা
বলছেন, একদিকে উন্নয়নে বারবার অর্থ সংকটের কথা বলা হয়। কিন্তু দেখা যায়,
বরাদ্দ দিলে তা ব্যবহার করতে পারে না। এ জন্য সক্ষমতা ও সামর্থ্যরে কথা
বিবেচনায় নিয়ে বরাদ্দ দেয়া উচিত। এতে সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত হবে বলে মনে
করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরেন এইড বাজেট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস (ফাবা) উইংয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব ফরিদা নাসরিন যুগান্তরকে বলেন, ডোনার এজেন্সিগুলোর পক্ষ থেকে অর্থায়ন তথা অর্থ ছাড়ে কোনো সমস্যা নেই। বৈঠকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা প্রকল্প বাস্তবায়নে বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। যেখানে বেশিরভাগই ছিল নিজেদের অক্ষমতা। এর মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে প্রকল্পের ইন্টারন্যাশনাল টেন্ডারিংয়ে সমস্যা, ই-টেন্ডারিং ও কনসালটেন্ট নিয়োগে বিলম্বের কথা জানিয়েছে। তিনি বলেন, এসব খাতের বিভিন্ন সংস্থা ও বিভাগ ছাড়াও প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হয়েছে। ধারাবাহিক বৈঠক শেষ হলে এর বিস্তারিত জানা যাবে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানায়, চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বৈদেশিক সহায়তার অংশ কাটছাঁট প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ১০ ডিসেম্বর থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সঙ্গে ৪ দিনব্যাপী ধারাবাহিক বৈঠকে বসেছে ইআরডি। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার ৩২টি মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিদ্যুৎ, তেল-গ্যাস ও প্রাকৃকিত সম্পদ, পরিবহন ও যোগাযোগ এবং শিল্প সেক্টরের সংশ্লিষ্টরা অংশ নেন।
ইআরডির তথ্যমতে, সংশোধিত এডিপিতে প্রধান তিনটি খাত- বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পরিবহনে ৩ হাজার ৯৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ কমানো হচ্ছে। এ অর্থ কমছে শুধু বিনিয়োগ প্রকল্পগুলো থেকে। অর্থাৎ টেকনিক্যাল অ্যাসিসটেন্স (টিএ) প্রজেক্টের হিসাব করলে এর অংক আরও বাড়বে।
এ বিষয়ে জাতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম প্রধান শেখ মোহাম্মদ আবদুল আহাদ বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগে নতুন করে ১২টি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। আরও কয়েকটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু চলমান কয়েকটি প্রকল্পের বাস্তবায়ন জটিলতার কারণে অর্থ ব্যয় করা যাচ্ছে না। এ জন্য চলতি অর্থবছরের বৈদেশিক অংশ থেকে বরাদ্দ কমানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, পরিবহন বিভাগের জন্য বৈদেশিক অংশে বিনিয়োগ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ছিল ৪ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ থাকছে ২ হাজার কোটি টাকা। এ হিসাবে বরাদ্দ কমানো হচ্ছে ২ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা। অথচ উন্নয়ন বাজেটে সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার খাত হচ্ছে পরিবহন। এর পরে অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এ বিভাগটির জন্য এডিপির বৈদেশিক অংশে বরাদ্দ রয়েছে ৪ হাজার ৪২২ কোটি টাকা। বৈঠকে ১ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা সমর্পণ করেছে বিভাগটি। অর্থাৎ অর্থ ব্যয়ে অপারগতা প্রকাশ করে ফেরত দেয়া হয়েছে। এ হিসাবে এ খাতটির বৈদেশিক অংশে বরাদ্দ থাকবে ২ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা। এর পরে রয়েছে জ্বালানি বিভাগ। এ খাতটির জন্য ৫০২ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল বৈদেশিক সহায়তা হিসেবে। সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ থাকবে ২৫৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ বাকি ২৪৫ কোটি টাকা সমর্পণ করেছে সংস্থাটি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের লিড ইকোনমিস্ট অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বাস্তবতা ও সামর্থ্যরে সঙ্গে সমন্বয় না করেই বছরের প্রথম দিকে বরাদ্দ দেয়া হয়। পরে বরাদ্দের অর্থ পুরোপুরি ব্যয় করতে পারে না সংস্থা ও মন্ত্রণালয়গুলো। এ জন্য প্রতিবছরই বরাদ্দের বড় একটা অংশ ছেঁটে ফেলা হয়। তবে বছরের প্রথম থেকেই এডিপি বাস্তবায়নে গতি এলে খুব বেশি অংশ ছেঁটে ফেলার প্রয়োজন পড়ত না বলে মনে করেন তিনি। এ অবস্থায় সংস্থা ও মন্ত্রণালয়গুলোকে এডিপি বাস্তবায়নে সক্ষমতা ও তৎপরতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
ইআরডি এবার আগেভাগেই এ সংশোধনীর কার্যক্রম শুরু করেছে। প্রথমে বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর চাহিদা পর্যালোচনা করা হবে। এরপর দাতাদের সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক করা হবে বলে জানা গেছে। বাস্তবায়নের অবস্থা নাজুক হওয়ায় সংশোধন করে এডিপির রেকর্ড পরিমাণ অর্থ সংশোধন করা হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চার দিনব্যাপী ধারাবাহিক বৈঠকের প্রথম দিন ছিল ১০ ডিসেম্বর। এদিন সর্বমোট ৩৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে কৃষি, পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান এবং পানিসম্পদ- এ তিন খাতের মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
ভৌত, পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ন, শিক্ষা ও ধর্ম, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, জনসংখ্যা ও পরিবারকল্যাণ, গণসংযোগ খাতের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে ১৪ ডিসেম্বর। এ খাতের মোট ৩১টি সংস্থা ও বিভাগের শেষ দিন ১৫ ডিসেম্বর ৪টি সেক্টরের সঙ্গে বৈঠক হবে। এর অধীনে রয়েছে ২৫টি সংস্থা ও বিভাগ।
এর মধ্যে রয়েছে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, সমাজসেবা অধিদফতর, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে গতি না আসায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। এ জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সচিব ও প্রকল্প পরিচালকদের (পিডি) তলব করা হয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা বা বড় কোনো কারণ না থাকা সত্ত্বেও এডিপি বাস্তবায়নে গতি আসেনি। কারণ জানতে ও সমস্যার সমাধানে করণীয় ঠিক করতে এক সভার আয়োজন করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবারের এ সভায় পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকের বিস্তারিত বিষয় নিয়ে আগামী রোববার সাংবাদিক সম্মেলন ডেকেছেন মন্ত্রী। এর আগে একনেক বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এডিপি বাস্তবায়নে ধীরগতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৈদেশিক অংশের ব্যয়ের হার খারাপ। বিদেশী সহায়তার তহবিল থেকে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা। যা মোট বরাদ্দের মাত্র ৬ শতাংশ। অর্থবছরের বৈদেশিক অংশে মোট ২৭ হাজার ৭০০ কোটি টাকার বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
২০১৪-১৫ অর্থবছরের জন্য ৮৬ হাজার কোটি টাকার এডিপি বাস্তবায়ন করছে সরকার। বরাদ্দের মধ্যে পরিকল্পনা কমিশনের নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নের ৫ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ অংশ বাদ দিলে নতুন এডিপির মূল আকার দাঁড়ায় ৮০ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরেন এইড বাজেট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস (ফাবা) উইংয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব ফরিদা নাসরিন যুগান্তরকে বলেন, ডোনার এজেন্সিগুলোর পক্ষ থেকে অর্থায়ন তথা অর্থ ছাড়ে কোনো সমস্যা নেই। বৈঠকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা প্রকল্প বাস্তবায়নে বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। যেখানে বেশিরভাগই ছিল নিজেদের অক্ষমতা। এর মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে প্রকল্পের ইন্টারন্যাশনাল টেন্ডারিংয়ে সমস্যা, ই-টেন্ডারিং ও কনসালটেন্ট নিয়োগে বিলম্বের কথা জানিয়েছে। তিনি বলেন, এসব খাতের বিভিন্ন সংস্থা ও বিভাগ ছাড়াও প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হয়েছে। ধারাবাহিক বৈঠক শেষ হলে এর বিস্তারিত জানা যাবে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানায়, চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বৈদেশিক সহায়তার অংশ কাটছাঁট প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ১০ ডিসেম্বর থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সঙ্গে ৪ দিনব্যাপী ধারাবাহিক বৈঠকে বসেছে ইআরডি। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার ৩২টি মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিদ্যুৎ, তেল-গ্যাস ও প্রাকৃকিত সম্পদ, পরিবহন ও যোগাযোগ এবং শিল্প সেক্টরের সংশ্লিষ্টরা অংশ নেন।
ইআরডির তথ্যমতে, সংশোধিত এডিপিতে প্রধান তিনটি খাত- বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পরিবহনে ৩ হাজার ৯৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ কমানো হচ্ছে। এ অর্থ কমছে শুধু বিনিয়োগ প্রকল্পগুলো থেকে। অর্থাৎ টেকনিক্যাল অ্যাসিসটেন্স (টিএ) প্রজেক্টের হিসাব করলে এর অংক আরও বাড়বে।
এ বিষয়ে জাতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম প্রধান শেখ মোহাম্মদ আবদুল আহাদ বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগে নতুন করে ১২টি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। আরও কয়েকটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু চলমান কয়েকটি প্রকল্পের বাস্তবায়ন জটিলতার কারণে অর্থ ব্যয় করা যাচ্ছে না। এ জন্য চলতি অর্থবছরের বৈদেশিক অংশ থেকে বরাদ্দ কমানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, পরিবহন বিভাগের জন্য বৈদেশিক অংশে বিনিয়োগ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ছিল ৪ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ থাকছে ২ হাজার কোটি টাকা। এ হিসাবে বরাদ্দ কমানো হচ্ছে ২ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা। অথচ উন্নয়ন বাজেটে সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার খাত হচ্ছে পরিবহন। এর পরে অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এ বিভাগটির জন্য এডিপির বৈদেশিক অংশে বরাদ্দ রয়েছে ৪ হাজার ৪২২ কোটি টাকা। বৈঠকে ১ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা সমর্পণ করেছে বিভাগটি। অর্থাৎ অর্থ ব্যয়ে অপারগতা প্রকাশ করে ফেরত দেয়া হয়েছে। এ হিসাবে এ খাতটির বৈদেশিক অংশে বরাদ্দ থাকবে ২ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা। এর পরে রয়েছে জ্বালানি বিভাগ। এ খাতটির জন্য ৫০২ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল বৈদেশিক সহায়তা হিসেবে। সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ থাকবে ২৫৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ বাকি ২৪৫ কোটি টাকা সমর্পণ করেছে সংস্থাটি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের লিড ইকোনমিস্ট অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বাস্তবতা ও সামর্থ্যরে সঙ্গে সমন্বয় না করেই বছরের প্রথম দিকে বরাদ্দ দেয়া হয়। পরে বরাদ্দের অর্থ পুরোপুরি ব্যয় করতে পারে না সংস্থা ও মন্ত্রণালয়গুলো। এ জন্য প্রতিবছরই বরাদ্দের বড় একটা অংশ ছেঁটে ফেলা হয়। তবে বছরের প্রথম থেকেই এডিপি বাস্তবায়নে গতি এলে খুব বেশি অংশ ছেঁটে ফেলার প্রয়োজন পড়ত না বলে মনে করেন তিনি। এ অবস্থায় সংস্থা ও মন্ত্রণালয়গুলোকে এডিপি বাস্তবায়নে সক্ষমতা ও তৎপরতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
ইআরডি এবার আগেভাগেই এ সংশোধনীর কার্যক্রম শুরু করেছে। প্রথমে বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর চাহিদা পর্যালোচনা করা হবে। এরপর দাতাদের সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক করা হবে বলে জানা গেছে। বাস্তবায়নের অবস্থা নাজুক হওয়ায় সংশোধন করে এডিপির রেকর্ড পরিমাণ অর্থ সংশোধন করা হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চার দিনব্যাপী ধারাবাহিক বৈঠকের প্রথম দিন ছিল ১০ ডিসেম্বর। এদিন সর্বমোট ৩৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে কৃষি, পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান এবং পানিসম্পদ- এ তিন খাতের মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
ভৌত, পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ন, শিক্ষা ও ধর্ম, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, জনসংখ্যা ও পরিবারকল্যাণ, গণসংযোগ খাতের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে ১৪ ডিসেম্বর। এ খাতের মোট ৩১টি সংস্থা ও বিভাগের শেষ দিন ১৫ ডিসেম্বর ৪টি সেক্টরের সঙ্গে বৈঠক হবে। এর অধীনে রয়েছে ২৫টি সংস্থা ও বিভাগ।
এর মধ্যে রয়েছে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, সমাজসেবা অধিদফতর, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে গতি না আসায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। এ জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সচিব ও প্রকল্প পরিচালকদের (পিডি) তলব করা হয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা বা বড় কোনো কারণ না থাকা সত্ত্বেও এডিপি বাস্তবায়নে গতি আসেনি। কারণ জানতে ও সমস্যার সমাধানে করণীয় ঠিক করতে এক সভার আয়োজন করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবারের এ সভায় পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকের বিস্তারিত বিষয় নিয়ে আগামী রোববার সাংবাদিক সম্মেলন ডেকেছেন মন্ত্রী। এর আগে একনেক বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এডিপি বাস্তবায়নে ধীরগতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৈদেশিক অংশের ব্যয়ের হার খারাপ। বিদেশী সহায়তার তহবিল থেকে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা। যা মোট বরাদ্দের মাত্র ৬ শতাংশ। অর্থবছরের বৈদেশিক অংশে মোট ২৭ হাজার ৭০০ কোটি টাকার বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
২০১৪-১৫ অর্থবছরের জন্য ৮৬ হাজার কোটি টাকার এডিপি বাস্তবায়ন করছে সরকার। বরাদ্দের মধ্যে পরিকল্পনা কমিশনের নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নের ৫ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ অংশ বাদ দিলে নতুন এডিপির মূল আকার দাঁড়ায় ৮০ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা।
No comments