সাহস থাকলে রাজপথে মোকাবিলা করুন -খালেদা জিয়া by কাফি কামাল ও বিল্লাল হোসেন রবিন
সাহস
থাকলে রাজপথে আন্দোলন মোকাবিলার জন্য সরকারের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে
দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোট নেতা খালেদা জিয়া। বলেছেন, সাহস
থাকলে রাজপথে মোকাবিলা করুন। পুলিশ দিয়ে আমাদের কর্মসূচিতে বাধা দেবেন না।
বাড়ির সামনে বালুর ট্রাক দিয়ে আটকে রাখবেন না। আমরা রাজপথে নামবো। গুলির
সামনে দাঁড়াতে রাজি আছি। বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী, আলেম-ওলামাসহ দেশবাসীর
প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আর কতদিন চোখের পানি ঝরাবেন? পাল্টা জবাব
দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিন। সময় হলে আন্দোলনের ডাক দেবো। যখনই ডাক দেবো তখনই
মা-বোন-ভাই সবাইকে রাজপথে নামতে হবে। যতদিন প্রয়োজন ততদিন ঢাকা থাকার
প্রস্তুতি নিয়ে যেতে হবে। মা-বোনদের বলবো, আসুন ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করে
এই জালেম সরকারের বিদায় করি। গতকাল বিকালে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর বালুর মাঠে
২০ দল আয়োজিত জনসভায় তিনি এ সব কথা বলেন। লাখো মানুষের সমাবেশে
ঘণ্টাব্যাপী দেয়া বক্তব্যে সরকারের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, অবিলম্বে
নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে সরে পড়ুন। কারণ হাসিনার অধীনে নিরপেক্ষ
নির্বাচন হতে পারে না- এইচ টি ইমাম সেটা পরিষ্কার করে দিয়েছেন।
ন্যায়বিচারের জন্য বিচারকদের প্রতি এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি না
চালাতে ও অবিলম্বে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য পুলিশের প্রতি আহ্বান জানান।
সেই সঙ্গে গ্যাস-বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ালে পরদিন থেকেই সরকার
পতন আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেন। খালেদা জিয়া সরকারি দলের নেতাকর্মীদের
উদ্দেশে বলেন, আপনাদের বড় নেতারা পাসপোর্টে সিল ও পকেটে টিকিট নিয়ে ঘুরছে।
যে কোন দিন দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবে। কিন্তু আপনারা কোথাও যেতে পারবেন না। তাই
আপনারা সাবধান হয়ে যান। নইলে দেশের মানুষ আপনাদের ঘর থেকে বের হতে দেবে
না। যারা বেশি বাড়াবাড়ি করছে তাদের পরিণতি কঠিন ও ভয়াবহ হবে। পুলিশ বাহিনীর
প্রতি আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে কথায় কথায়
গুলি করবেন না। এদের অনেকেই আপনাদেরই আত্মীয়-স্বজন। সবাই আপনাদের সঙ্গে
সুসম্পর্ক রক্ষা করতে চায়। আর পুলিশের সব সদস্যই খারাপ নয়। স্বাধীনতা
যুদ্ধে এ পুলিশের অনেক বড় অবদান আছে। কিন্তু এখন পুলিশকে দিয়ে নানা অপকর্ম
করানো হচ্ছে। একটি বিশেষ জেলার ও ছাত্রলীগের কর্মীদের পুলিশের পোশাক পরিয়ে
এসব অপকর্মের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির ইমেজ নষ্ট করা হচ্ছে। ২০ দলীয় জোট নেতা
খালেদা জিয়া পুলিশের কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে বলেন, মানুষের চোখের সামনে পেটানো
হচ্ছে, অত্যাচার করা হয়েছে। এ সব কাজ বন্ধ করতে হবে। এটা চলতে থাকলে
পাল্টা জবাব দেয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে। অন্যথায় যারা এসব অপকর্ম করছে তাদের
ভবিষ্যতের বিচারের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। কেননা দেশের মানুষ কাউকে
ক্ষমা করেনি।
হাসিনাকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই
বিচারকদের আল্লাহর বিচারের প্রতি ভয় রেখে ন্যায়বিচার করার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, আপনারা আল্লাহকে ভয় করুন। আল্লাহকে ভয় করে ন্যায়বিচার করুন। হাসিনাকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। মনে রাখবেন, এই দুনিয়া বেশি কিছু নয়। জন্মের দিনই আমাদের মৃত্যুর কথা লেখা হয়ে গেছে। তাই মৃত্যুকে ভয় পাই না। কিন্তু এখানে অন্যায় বিচার করলে, অন্যায় রায় দিলে আল্লাহর কাছে তার জবাব দিতে হবে। বিচার বিভাগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আজ বিচার বিভাগের কোন স্বাধীনতা নেই। আওয়ামী লীগ হলেই খালাস আর বিএনপি হলেই জেলে ভরো, মিথ্যা মামলা দাও। খালেদা জিয়া বলেন, হাসিনার বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা ছিল। তার ও তার দলের লোকজনের বিরুদ্ধে থাকা ৮০০০ মামলা প্রত্যাহার করেছে। কিন্তু বিএনপির একটি মামলাও প্রত্যাহার করা হয়নি। মিগ-২৯ মামলাও প্রত্যাহার হয়ে গেছে। এ মামলা চলছে হাসিনার সাজা হতো। এছাড়া তিনি ক্ষমতায় থাকাকালে চেকের মাধ্যমে চাঁদা নিতেন। তার ভাই সেলিম ও তার দলের সাধারণ সম্পাদক জলিল সেটা প্রকাশ করেছেন। আমাদের কাছে সেসব তথ্য আছে। খালেদা জিয়া প্রশ্ন তুলে বলেন, এরশাদের মামলাগুলো কেন তোলা হচ্ছে না? তিনিও মঞ্জুর হত্যা মামলা ও জিয়া হত্যা মামলার আসামি। তিনি বলেন, ২৫শে ফেব্রুয়ারি পিলখানায় যে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে তা হাসিনা আগেই জানতেন। নইলে তিনি কেন হঠাৎ বাড়ি পরিবর্তন করেছেন? কেন পিলখানার অনুষ্ঠানে যাননি? হত্যাকাণ্ডের কথা মইনও জানতো। সে পিলখানায় সেনা অভিযান না চালিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে বসেছিলেন। কেন সেদিন সেনাপ্রধানকে প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে বসিয়ে রাখা হয়েছিল? সেখানে অভিযান চালানো হলে ৫৭ জন সেনাকর্মকর্তা নিহত হতো না। এর বিচার তো একদিন হবেই হাসিনা। আন্দোলনের সময় আমাদের ৩৫০ নেতাকর্মী গুম-খুনের শিকার হয়েছে। এর দায় তো হাসিনাকে নিতেই হবে। আওয়ামী লীগ যা করছে তার পরিণতি হবে অত্যন্ত খারাপ এবং ভয়াবহ। ছাত্রলীগ-যুবলীগের গুণ্ডামি বন্ধ করুন। তারা এত অস্ত্র কোথায় পাচ্ছে? তারা যদি অবৈধ অস্ত্র বহন করতে পারে তাহলে সাধারণ মানুষও বহন করলে অপরাধ কোথায়?
গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ালেই পতন আন্দোলন
গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ালে কর্মসূচি দেয়ার ঘোষণা দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, মানুষ গ্যাস, বিদ্যুৎ পায় না। গ্যাস বিদ্যুতের অভাবে চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জের মতো শিল্পাঞ্চলে একের পর এক শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। অথচ সরকার আবারও নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমে গেছে। যদি দাম বাড়ানো হয়, তাহলে ২০ দলীয় জোট ঘরে বসে থাকবে না। এ সময় তিনি জনগণের উদ্দেশে বলেন, কর্মসূচি দিলে পালন করবেন? উপস্থিত লাখো মানুষ সমস্বরে ‘হ্যাঁ’ সূচক জবাব দিলে তিনি বলেন, ‘শাবাশ, শাবাশ। আমি সরকারকে বলবো, যেদিন থেকে দাম বাড়াবেন পরের দিন থেকেই সরকারের পতন আন্দোলন শুরু হবে। খালেদা জিয়া বলেন, সরকার দাবি করছে, এখন নাকি ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এটা মিথ্যা কথা। এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ৬০০০ মেগাওয়াট। শীত মওসুম চলছে। তাই লোডশেডিং কম। কিন্তু গরমে লোডশেডিং বেশি ছিল। কারণ সরকার কুইক রেন্টালের মাধ্যমে ১৭ হাজার কোটি টাকা লুট করেছে। তিনি বলেন, এক সময় আমরা রপ্তানিকারক দেশ ছিলাম। বাংলাদেশ ঔষধ, সিরামিক, তৈরি পোশাক, পাট, চামড়া অনেক দ্রব্য রপ্তানি করতাম। এখন ধানকাটার মওসুম। কিন্তু সরকার একদিকে চাল আমদানি অন্যদিকে রপ্তানি করছে। কৃষকদের মাথায় হাত। কৃষি উপকরণের দাম বাড়লেও উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। অথচ আওয়ামী লীগ কৃষকদের বিনামূল্যে সার দেবে বলেছিল।
মানুষ খেকোই নয়, এরা দেশ খেকো
সুন্দরবনের দুর্ঘটনা পরিকল্পিত অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, আমাদের সুন্দরবন পৃথিবীর মধ্যে বিখ্যাত। কয়েকদিন আগে যে ট্যাঙ্কার ডুবেছে তার তদন্ত হবে না। বালুর ট্যাঙ্কার দিয়ে তেল বোঝাই করেছে। এই তেল সুন্দরবনকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। সুন্দরবনে আর পশুপাখি থাকবে না, পালিয়ে যাবে। এই সরকার শুধু মানুষ আর পশুখেকো নয় তারা বাংলাদেশখেকো। তারা পুরো দেশটাকেই খেয়ে ফেলতে চায়। খালেদা জিয়া বলেন, আপনারা খোঁজ নিন দেশে হাসিনার কে কে আছে। তার সবাতো বিদেশে। তারা আবার বিদেশী বিয়ে করেছে। যারা বিদেশে থাকে, বিদেশে খায়, বিদেশে অর্থ পাচার করে তাদের আবার কিসের দেশপ্রেম? তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, কার ছেলে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে ডলারে বেতন নেন। প্রতি মাসে সে বেতন ২ লাখ ডলার। কিসের উপদেষ্টা, কি উপদেশ দেন? তিনি যুবসমাজের উদ্দেশে বলেন, তোমরা বেকার, চাকরি পাচ্ছো না। কিন্তু কেউ নামকাওয়াস্তে প্রতি মাসে কোটি টাকার বেশি পাচার করছে বেতনের নামে। তোমরা কি এর প্রতিবাদ করতে পারো না?
কর্নেল জিয়াকে ধরলে সব গুম-খুনের খবর বের হবে
নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনের প্রসঙ্গে ২০দলীয় জোট নেতা খালেদা জিয়া বলেন, লোক দেখানোর জন্য অল্প কয়েকজনকে ধরা হয়েছে। জেলখানায় তাদের রাখা হয়েছে জামাই আদরে। মূল হোতা র্যাব-এর অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসানকে ধরা হয়নি। জিয়াকে ধরলে শুধু নারায়ণগঞ্জ নয় সারা দেশের সব গুম-খুনের রহস্য বের হয়ে যাবে। তিনি বলেন, আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য যদি চাকরি যায় তাহলে এই খুনি কেন এখনও চাকরিতে বহাল রয়েছে। বিরোধী জোট নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই গুম-খুন শুরু হয়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে স্বজনহারাদের কান্না আপনারা দেখেছেন। আজকে এক বছর হয়ে গেছে এখনও তাদের ফিরিয়ে দেয়া হয়নি।
স্বঘোষিত বেইমান ও বিশ্ববেহায়া একসঙ্গে
খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে গুম-খুনের দল। আজ তাদের সঙ্গে কারা আছে? আওয়ামী লীগের সঙ্গে খুনিরা যোগ দিয়েছে। এরশাদের নাম ছিল বিশ্ববেহায়া। আজ বিশ্ববেহায়া আর স্বঘোষিত বেইমান এক হয়েছে। তাদের হাতে কি দেশ নিরাপদ? তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে এমন একজন যাকে আমি নেতা বলবো না, যে স্বাধীনতার পর দাবি করতো আওয়ামী লীগ তাদের দলের ২০ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, দেশ বাঁচাতে তরুণ-যুবকদের এগিয়ে আসতে হবে। দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি বলেন, সাংবাদিক সাগর-রুনির কাছে সরকারের অনেক অবৈধ কর্মকাণ্ডের তথ্য ছিল। তাই তাদের হত্যার পর কেবল ল্যাপটপটিই খুনিরা নিয়ে গেছে।
আঁতাতের সরকার
খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ দেশকে ভালবাসে না। মইন-ফখরুদ্দীনের সঙ্গে হাসিনার আঁতাত রয়েছে। আমার সঙ্গেও তাদের কথা হয়েছিল। কিন্তু আমি দেশের বাইরে যাইনি, তাই আমার বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। আমার ছেলেগুলোকে কিভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করেছে। তারপরও আমি বলেছি, এই দেশ আমার একমাত্র ঠিকানা। আর হাসিনা তাদের সঙ্গে আঁতাত করে বিদেশে গেছেন। কারাগার থেকে বেরুনোর দিন তিনি মেহেদী হাতে দিয়েছিলেন।
বিজয়ের মাসে মানুষের মুখে আনন্দ নেই
খালেদা জিয়া বলেন, ডিসেম্বর বিজয়ের মাস, আনন্দের মাস। কিন্তু দেশের মানুষের মুখে হাসি নেই। কারণ মানুষ ভাল নেই। যারা ক্ষমতায় আছে তারা প্রতিনিয়ত গুম-খুন করছে। এই জালেম সরকার থাকার কারণে দেশে এই অবস্থা। আওয়ামী লীগ এখন দেশের জন্য বোঝা হয়ে গেছে। তাদেরকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। তাজউদ্দিন আহমেদের মেয়ের একটি বইয়ের রেফারেন্স দিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিষ্ক্রিয় ভূমিকার কথা তুলে ধরেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ফাঁসির ভয়ে শেখ মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। কিন্তু একজন সৈনিক জিয়াউর রহমান সে ভয় তুচ্ছ করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। খালেদা জিয়া বলেন, এই অবৈধ সরকার সব প্রতিষ্ঠান দলীয়করণ করে ধ্বংস করে দিয়েছে। সিভিল প্রশাসনকে দলীয়করণ করা হয়েছে। মিথ্যা কথা বলে ভাল ভাল সরকারি কর্মকর্তাদের চাকরি থেকে সরানোর চেষ্টা চলছে। কয়েকদিন আগেও মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে এক যুগ্ম সচিবকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে।
ছাত্র-যুব সমাজকে ধ্বংস করাই হাসিনার টার্গেট
দেশের শিক্ষাব্যবস্থার দুরবস্থার কথা তুলে ধরে খালেদা বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখন ছাত্রলীগের অস্ত্রাগার হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে তারা অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। আমরা নকল বন্ধ করেছিলাম। এ সরকার প্রশ্নপত্রই ফাঁস করে দিচ্ছে। জিপিএ-৫ এর নামে ঢালাওভাবে পাস করিয়ে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র দু’জনের বেশি চান্স পায় না। এতিনি বলেন, শেখ হাসিনার টার্গেট হচ্ছে ছাত্র ও যুব সমাজ। যুব সমাজকে ধ্বংস করার জন্য মাদকের ব্যবসা করছে সরকারের লোকজন। তাদের একজন এমপিকে এ কারণে গ্রেপ্তারের কয়েকদিনের মধ্যে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
কাঁচপুরে জনতার ঢল
দুপুরের পর কাঁচপুর পরিণত হয় গোটা রীতিমতো জনসমুদ্রে। রঙ-বেরঙের ব্যানার, ফেস্টুন, প্লেকার্ড, বেলুনে ছেয়ে যায় বালুরমাঠসহ কাঁচপুর। বাজনার সঙ্গে নেচে গেয়ে ও স্লোগান দিয়ে কর্মী-সমর্থকরা মাতিয়ে তোলে পুরো এলাকা। দলীয় পতাকার রঙের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শাড়ি পরে হাতে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিপুল সংখ্যক মহিলার মিছিল উপস্থিত সকলের দৃষ্টি কেড়েছে। হাজার হাজার নেতাকর্মী জনসভায় যোগ দেন লঞ্চে চড়ে। সোনারগাঁয়ের কাঁচপুরের সীমানা ছাড়িয়ে শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পাড়ের সিদ্ধিরগঞ্জ, রূপগঞ্জের তারাবো মোড় ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিসিক এলাকা পর্যন্ত জনসভা ছড়িয়ে পড়ে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের সভাপতিত্বে জনসভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, অর্থ সম্পাদক আবদুস সালাম, যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল, মহিলা দলের সম্পাদক শিরিন সুলতানা, স্থানীয় নেতাদের জেলা বিএনপির সম্পাদক কাজী মনিরুজ্জামান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রেজাউল করিম, সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি বদরুজ্জমান খসরু, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-অর্থবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দীপু, যুবদলের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, সাবেক এমপি আবুল কালাম, আতাউর রহমান খান আঙ্গুর, জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মঈন উদ্দীন আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামাল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য সচিব মামুন মাহমুদ, সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু জাফর, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মান্নান, জেলা বারের সভাপতি এডভোকেট শাখাওয়াত হোসন খান, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজিব প্রমুখ। এছাড়া ২০ দলীয় জোটের শরিক এলডিপি সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, জামায়াতের অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল লতিফ নেজামী, জাগপার শফিউল আলম প্রধান, বিজেপির ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, কল্যাণ পার্টির মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমসহ সিনিয়র নেতারা বক্তব্য দেন।
হাসিনাকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই
বিচারকদের আল্লাহর বিচারের প্রতি ভয় রেখে ন্যায়বিচার করার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, আপনারা আল্লাহকে ভয় করুন। আল্লাহকে ভয় করে ন্যায়বিচার করুন। হাসিনাকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। মনে রাখবেন, এই দুনিয়া বেশি কিছু নয়। জন্মের দিনই আমাদের মৃত্যুর কথা লেখা হয়ে গেছে। তাই মৃত্যুকে ভয় পাই না। কিন্তু এখানে অন্যায় বিচার করলে, অন্যায় রায় দিলে আল্লাহর কাছে তার জবাব দিতে হবে। বিচার বিভাগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আজ বিচার বিভাগের কোন স্বাধীনতা নেই। আওয়ামী লীগ হলেই খালাস আর বিএনপি হলেই জেলে ভরো, মিথ্যা মামলা দাও। খালেদা জিয়া বলেন, হাসিনার বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা ছিল। তার ও তার দলের লোকজনের বিরুদ্ধে থাকা ৮০০০ মামলা প্রত্যাহার করেছে। কিন্তু বিএনপির একটি মামলাও প্রত্যাহার করা হয়নি। মিগ-২৯ মামলাও প্রত্যাহার হয়ে গেছে। এ মামলা চলছে হাসিনার সাজা হতো। এছাড়া তিনি ক্ষমতায় থাকাকালে চেকের মাধ্যমে চাঁদা নিতেন। তার ভাই সেলিম ও তার দলের সাধারণ সম্পাদক জলিল সেটা প্রকাশ করেছেন। আমাদের কাছে সেসব তথ্য আছে। খালেদা জিয়া প্রশ্ন তুলে বলেন, এরশাদের মামলাগুলো কেন তোলা হচ্ছে না? তিনিও মঞ্জুর হত্যা মামলা ও জিয়া হত্যা মামলার আসামি। তিনি বলেন, ২৫শে ফেব্রুয়ারি পিলখানায় যে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে তা হাসিনা আগেই জানতেন। নইলে তিনি কেন হঠাৎ বাড়ি পরিবর্তন করেছেন? কেন পিলখানার অনুষ্ঠানে যাননি? হত্যাকাণ্ডের কথা মইনও জানতো। সে পিলখানায় সেনা অভিযান না চালিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে বসেছিলেন। কেন সেদিন সেনাপ্রধানকে প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে বসিয়ে রাখা হয়েছিল? সেখানে অভিযান চালানো হলে ৫৭ জন সেনাকর্মকর্তা নিহত হতো না। এর বিচার তো একদিন হবেই হাসিনা। আন্দোলনের সময় আমাদের ৩৫০ নেতাকর্মী গুম-খুনের শিকার হয়েছে। এর দায় তো হাসিনাকে নিতেই হবে। আওয়ামী লীগ যা করছে তার পরিণতি হবে অত্যন্ত খারাপ এবং ভয়াবহ। ছাত্রলীগ-যুবলীগের গুণ্ডামি বন্ধ করুন। তারা এত অস্ত্র কোথায় পাচ্ছে? তারা যদি অবৈধ অস্ত্র বহন করতে পারে তাহলে সাধারণ মানুষও বহন করলে অপরাধ কোথায়?
গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ালেই পতন আন্দোলন
গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ালে কর্মসূচি দেয়ার ঘোষণা দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, মানুষ গ্যাস, বিদ্যুৎ পায় না। গ্যাস বিদ্যুতের অভাবে চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জের মতো শিল্পাঞ্চলে একের পর এক শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। অথচ সরকার আবারও নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমে গেছে। যদি দাম বাড়ানো হয়, তাহলে ২০ দলীয় জোট ঘরে বসে থাকবে না। এ সময় তিনি জনগণের উদ্দেশে বলেন, কর্মসূচি দিলে পালন করবেন? উপস্থিত লাখো মানুষ সমস্বরে ‘হ্যাঁ’ সূচক জবাব দিলে তিনি বলেন, ‘শাবাশ, শাবাশ। আমি সরকারকে বলবো, যেদিন থেকে দাম বাড়াবেন পরের দিন থেকেই সরকারের পতন আন্দোলন শুরু হবে। খালেদা জিয়া বলেন, সরকার দাবি করছে, এখন নাকি ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এটা মিথ্যা কথা। এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ৬০০০ মেগাওয়াট। শীত মওসুম চলছে। তাই লোডশেডিং কম। কিন্তু গরমে লোডশেডিং বেশি ছিল। কারণ সরকার কুইক রেন্টালের মাধ্যমে ১৭ হাজার কোটি টাকা লুট করেছে। তিনি বলেন, এক সময় আমরা রপ্তানিকারক দেশ ছিলাম। বাংলাদেশ ঔষধ, সিরামিক, তৈরি পোশাক, পাট, চামড়া অনেক দ্রব্য রপ্তানি করতাম। এখন ধানকাটার মওসুম। কিন্তু সরকার একদিকে চাল আমদানি অন্যদিকে রপ্তানি করছে। কৃষকদের মাথায় হাত। কৃষি উপকরণের দাম বাড়লেও উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। অথচ আওয়ামী লীগ কৃষকদের বিনামূল্যে সার দেবে বলেছিল।
মানুষ খেকোই নয়, এরা দেশ খেকো
সুন্দরবনের দুর্ঘটনা পরিকল্পিত অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, আমাদের সুন্দরবন পৃথিবীর মধ্যে বিখ্যাত। কয়েকদিন আগে যে ট্যাঙ্কার ডুবেছে তার তদন্ত হবে না। বালুর ট্যাঙ্কার দিয়ে তেল বোঝাই করেছে। এই তেল সুন্দরবনকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। সুন্দরবনে আর পশুপাখি থাকবে না, পালিয়ে যাবে। এই সরকার শুধু মানুষ আর পশুখেকো নয় তারা বাংলাদেশখেকো। তারা পুরো দেশটাকেই খেয়ে ফেলতে চায়। খালেদা জিয়া বলেন, আপনারা খোঁজ নিন দেশে হাসিনার কে কে আছে। তার সবাতো বিদেশে। তারা আবার বিদেশী বিয়ে করেছে। যারা বিদেশে থাকে, বিদেশে খায়, বিদেশে অর্থ পাচার করে তাদের আবার কিসের দেশপ্রেম? তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, কার ছেলে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে ডলারে বেতন নেন। প্রতি মাসে সে বেতন ২ লাখ ডলার। কিসের উপদেষ্টা, কি উপদেশ দেন? তিনি যুবসমাজের উদ্দেশে বলেন, তোমরা বেকার, চাকরি পাচ্ছো না। কিন্তু কেউ নামকাওয়াস্তে প্রতি মাসে কোটি টাকার বেশি পাচার করছে বেতনের নামে। তোমরা কি এর প্রতিবাদ করতে পারো না?
কর্নেল জিয়াকে ধরলে সব গুম-খুনের খবর বের হবে
নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনের প্রসঙ্গে ২০দলীয় জোট নেতা খালেদা জিয়া বলেন, লোক দেখানোর জন্য অল্প কয়েকজনকে ধরা হয়েছে। জেলখানায় তাদের রাখা হয়েছে জামাই আদরে। মূল হোতা র্যাব-এর অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসানকে ধরা হয়নি। জিয়াকে ধরলে শুধু নারায়ণগঞ্জ নয় সারা দেশের সব গুম-খুনের রহস্য বের হয়ে যাবে। তিনি বলেন, আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য যদি চাকরি যায় তাহলে এই খুনি কেন এখনও চাকরিতে বহাল রয়েছে। বিরোধী জোট নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই গুম-খুন শুরু হয়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে স্বজনহারাদের কান্না আপনারা দেখেছেন। আজকে এক বছর হয়ে গেছে এখনও তাদের ফিরিয়ে দেয়া হয়নি।
স্বঘোষিত বেইমান ও বিশ্ববেহায়া একসঙ্গে
খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে গুম-খুনের দল। আজ তাদের সঙ্গে কারা আছে? আওয়ামী লীগের সঙ্গে খুনিরা যোগ দিয়েছে। এরশাদের নাম ছিল বিশ্ববেহায়া। আজ বিশ্ববেহায়া আর স্বঘোষিত বেইমান এক হয়েছে। তাদের হাতে কি দেশ নিরাপদ? তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে এমন একজন যাকে আমি নেতা বলবো না, যে স্বাধীনতার পর দাবি করতো আওয়ামী লীগ তাদের দলের ২০ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, দেশ বাঁচাতে তরুণ-যুবকদের এগিয়ে আসতে হবে। দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি বলেন, সাংবাদিক সাগর-রুনির কাছে সরকারের অনেক অবৈধ কর্মকাণ্ডের তথ্য ছিল। তাই তাদের হত্যার পর কেবল ল্যাপটপটিই খুনিরা নিয়ে গেছে।
আঁতাতের সরকার
খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ দেশকে ভালবাসে না। মইন-ফখরুদ্দীনের সঙ্গে হাসিনার আঁতাত রয়েছে। আমার সঙ্গেও তাদের কথা হয়েছিল। কিন্তু আমি দেশের বাইরে যাইনি, তাই আমার বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। আমার ছেলেগুলোকে কিভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করেছে। তারপরও আমি বলেছি, এই দেশ আমার একমাত্র ঠিকানা। আর হাসিনা তাদের সঙ্গে আঁতাত করে বিদেশে গেছেন। কারাগার থেকে বেরুনোর দিন তিনি মেহেদী হাতে দিয়েছিলেন।
বিজয়ের মাসে মানুষের মুখে আনন্দ নেই
খালেদা জিয়া বলেন, ডিসেম্বর বিজয়ের মাস, আনন্দের মাস। কিন্তু দেশের মানুষের মুখে হাসি নেই। কারণ মানুষ ভাল নেই। যারা ক্ষমতায় আছে তারা প্রতিনিয়ত গুম-খুন করছে। এই জালেম সরকার থাকার কারণে দেশে এই অবস্থা। আওয়ামী লীগ এখন দেশের জন্য বোঝা হয়ে গেছে। তাদেরকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। তাজউদ্দিন আহমেদের মেয়ের একটি বইয়ের রেফারেন্স দিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিষ্ক্রিয় ভূমিকার কথা তুলে ধরেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ফাঁসির ভয়ে শেখ মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। কিন্তু একজন সৈনিক জিয়াউর রহমান সে ভয় তুচ্ছ করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। খালেদা জিয়া বলেন, এই অবৈধ সরকার সব প্রতিষ্ঠান দলীয়করণ করে ধ্বংস করে দিয়েছে। সিভিল প্রশাসনকে দলীয়করণ করা হয়েছে। মিথ্যা কথা বলে ভাল ভাল সরকারি কর্মকর্তাদের চাকরি থেকে সরানোর চেষ্টা চলছে। কয়েকদিন আগেও মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে এক যুগ্ম সচিবকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে।
ছাত্র-যুব সমাজকে ধ্বংস করাই হাসিনার টার্গেট
দেশের শিক্ষাব্যবস্থার দুরবস্থার কথা তুলে ধরে খালেদা বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখন ছাত্রলীগের অস্ত্রাগার হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে তারা অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। আমরা নকল বন্ধ করেছিলাম। এ সরকার প্রশ্নপত্রই ফাঁস করে দিচ্ছে। জিপিএ-৫ এর নামে ঢালাওভাবে পাস করিয়ে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র দু’জনের বেশি চান্স পায় না। এতিনি বলেন, শেখ হাসিনার টার্গেট হচ্ছে ছাত্র ও যুব সমাজ। যুব সমাজকে ধ্বংস করার জন্য মাদকের ব্যবসা করছে সরকারের লোকজন। তাদের একজন এমপিকে এ কারণে গ্রেপ্তারের কয়েকদিনের মধ্যে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
কাঁচপুরে জনতার ঢল
দুপুরের পর কাঁচপুর পরিণত হয় গোটা রীতিমতো জনসমুদ্রে। রঙ-বেরঙের ব্যানার, ফেস্টুন, প্লেকার্ড, বেলুনে ছেয়ে যায় বালুরমাঠসহ কাঁচপুর। বাজনার সঙ্গে নেচে গেয়ে ও স্লোগান দিয়ে কর্মী-সমর্থকরা মাতিয়ে তোলে পুরো এলাকা। দলীয় পতাকার রঙের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শাড়ি পরে হাতে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিপুল সংখ্যক মহিলার মিছিল উপস্থিত সকলের দৃষ্টি কেড়েছে। হাজার হাজার নেতাকর্মী জনসভায় যোগ দেন লঞ্চে চড়ে। সোনারগাঁয়ের কাঁচপুরের সীমানা ছাড়িয়ে শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পাড়ের সিদ্ধিরগঞ্জ, রূপগঞ্জের তারাবো মোড় ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিসিক এলাকা পর্যন্ত জনসভা ছড়িয়ে পড়ে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের সভাপতিত্বে জনসভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, অর্থ সম্পাদক আবদুস সালাম, যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল, মহিলা দলের সম্পাদক শিরিন সুলতানা, স্থানীয় নেতাদের জেলা বিএনপির সম্পাদক কাজী মনিরুজ্জামান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রেজাউল করিম, সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি বদরুজ্জমান খসরু, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-অর্থবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দীপু, যুবদলের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, সাবেক এমপি আবুল কালাম, আতাউর রহমান খান আঙ্গুর, জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মঈন উদ্দীন আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামাল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য সচিব মামুন মাহমুদ, সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু জাফর, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মান্নান, জেলা বারের সভাপতি এডভোকেট শাখাওয়াত হোসন খান, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজিব প্রমুখ। এছাড়া ২০ দলীয় জোটের শরিক এলডিপি সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, জামায়াতের অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল লতিফ নেজামী, জাগপার শফিউল আলম প্রধান, বিজেপির ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, কল্যাণ পার্টির মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমসহ সিনিয়র নেতারা বক্তব্য দেন।
No comments