সীমিত গোলাবারুদে পাকসেনাদের পর্যুদস্ত করি
সিরাজগঞ্জের
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, সিরাজগঞ্জ কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস আমিনুল
ইসলাম চৌধুরী যেন জীবন্ত এক ইতিহাস। ছাত্রলীগের এক কর্মী হিসেবে ১৯৬২ সালে
আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের মাধ্যমে তার সংগ্রামী জীবন
শুরু। এরপর মুক্তিযুদ্ধে বীরের মতো লড়ে আহত হন তিনি। যুদ্ধের স্মৃতির কথা
বলতে গিয়ে আমিনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সীমিত অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে
পাকবাহিনীকে পর্যুদস্তু করি আমরা। যৌথ বাহিনীর সাহায্য ছাড়াই অকুতোভয়
মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের পরাজিত করে ১৪ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জকে শত্র“মুক্ত
করে। তিনি বলেন, ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একজন কর্মী
হিসেবে তৎকালীন ছাত্রনেতা শেখ ফজলুল হক মনি, রাজ্জাক ভাই, সিরাজ ভাইয়ের
(দাদা) সান্নিধ্যে আসার সুযোগ হয়েছিল। দেশে স্বাধীনতা যুদ্ধের দামামা বেজে
উঠতেই ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জ এসে ছাত্রলীগ কর্মীদের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি
নিতে বলি। সিরাজগঞ্জ কলেজ ছাত্রলীগের প্রায় ৭০/৮০ জন কর্মী সশস্ত্র যুদ্ধের
জন্য শপথ নেয়। নিজ অঞ্চলকে হানাদারমুক্ত রাখতে রেলপথ ও নৌপথে প্রতিরোধ গড়ে
তুলি আমরা। এ সময় পাকবাহিনীর সঙ্গে কয়েক দফা সম্মুখ যুদ্ধ হয়েছিল। শহর
থেকে ১২ মাইল দূরে উল্লাপাড়ার ঘাটিনা রেল সেতু, যমুনা নদীর ঘাট ও বাঘাবাড়ী
ঘাটে এসব যুদ্ধ হয়।
’৭১-এর এপ্রিল মাসের শেষ দিকে হানাদার বাহিনী শহর দখল করে নেয়। তখন আমিনুল ইসলাম চৌধুরী অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদেও মতো গেরিলা প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে পাড়ি জমিয়েছিলেন। আগস্ট মাসে তিনি তার সহযোদ্ধাদের সঙ্গে কুড়িগ্রামের রৌমারি মুক্তাঞ্চলের যুব শিবির হয়ে ভারতে উচ্চতর সামরিক ও গেরিলা প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরে আসেন।
১৬ অক্টোবর সকালে গেরিলা আশ্রয় কেন্দ্রে খবর আসে শহর থেকে প্রায় ৭ মাইল উত্তর-পশ্চিমে সদর থানার ভাটপিয়ারী গ্রামের হাইস্কুল মাঠে হানাদার বাহিনী বিপুলসংখ্যক প্রশিক্ষিত রাজাকার নিয়ে ক্যাম্প স্থাপন করেছে। তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত হয় রাতেই ওই ক্যাম্পে আক্রামণ করা হবে। আমিনুল ইসলাম বলেন, কমান্ডার মোজাফফরের নেতৃত্বে ২০ জনের গেরিলা দল নিয়ে রাত ১০টায় পাক ক্যাম্পে আক্রমণ করি আমরা। ক্যাম্পটি চারদিক থেকে ঘিরে মুহুর্মুহু গ্রেনেড নিক্ষেপ করি। প্রায় ৪ ঘণ্টার যুদ্ধে গেরিলা সদস্য আবদুল মোতালেব ও আমি পাকসেনাদের গুলিতে আহত হই। চারদিকে আক্রমণে ছিলেন ফিরোজ ভূইয়া, শফিকুল ইসলাম শফি, আলাউদ্দিন, আবদুল হালিম, ইসমাইল হোসেনসহ যোদ্ধারা। যুদ্ধে ২০ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের সৈন্য, ২০ রাজাকার ও ২৫ জন পাঞ্জাবি মিলিশিয়া নিহত হয়। তাদের ফেলে যাওয়া ২টি এলএমজি, ৩০টি চাইনিজ রাইফেল, ৩৫টি ৩০৩ রাইফেলসহ ৭০টি অস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে আসে।
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আমির হোসেন ভুলু, মুজিব বাহিনীর প্রধান আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, কমান্ডার মোজাফ্ফর, মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন, জহুরুল ইসলাম, এফএফ কমান্ডার ইসমাইল হোসেন, খ.ম আখতার, ফজলুল মতিন মুক্তা, গোলাম হায়দার খোকা, গেরিলা আবু মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, ইসহাক আলীর নেতৃত্বে একটি যৌথ বাহিনী গঠন করা হয়। এ যৌথ কমান্ডকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়- মুজিব বাহিনী কমান্ড, এফএফ কমান্ড ও ইসমাইল বাহিনী কমান্ড। তারা একযোগে শৈলাবাড়ি পাক ক্যাম্পে আক্রমণ চালায়। ১১ ডিসেম্বর সকাল থেকে শুরু হয় যুদ্ধ। ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর পাকসেনারা পিছু হঠতে বাধ্য হয়। যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার আহসান হাবিব, সুলতান মাহমুদ, কালুসহ ৫ জন শহীদ হন এবং হানাদার পাঞ্জাব রেজিমেন্টের একজন ক্যাপ্টেন, ২ জন মেজরসহ ২৮ জন নিহত হন।
১৪ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় বিজয়ের বেশে জয় বাংলা স্লোগান আর ফাঁকা গুলির মধ্য দিয়ে শহর দখলমুক্ত করে মুক্তিযোদ্ধারা। সিরাজগঞ্জ বিএ কলেজ (বর্তমান সিরাজগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ) মাঠে মুক্তিবাহিনী ও জনতার বিজয় উল্লাসের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার লাল-সবুজের পতাকা উত্তোলন করা হয়।
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম চৌধুরী আক্ষেপ করে বলেন, স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও যখন স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকারদের আস্ফালন চোখে পড়ে, তখন যেন হানাদার বাহিনীর গুলিতে সৃষ্ট ক্ষত স্থানের ঘা নতুন করে জেগে ওঠে।
’৭১-এর এপ্রিল মাসের শেষ দিকে হানাদার বাহিনী শহর দখল করে নেয়। তখন আমিনুল ইসলাম চৌধুরী অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদেও মতো গেরিলা প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে পাড়ি জমিয়েছিলেন। আগস্ট মাসে তিনি তার সহযোদ্ধাদের সঙ্গে কুড়িগ্রামের রৌমারি মুক্তাঞ্চলের যুব শিবির হয়ে ভারতে উচ্চতর সামরিক ও গেরিলা প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরে আসেন।
১৬ অক্টোবর সকালে গেরিলা আশ্রয় কেন্দ্রে খবর আসে শহর থেকে প্রায় ৭ মাইল উত্তর-পশ্চিমে সদর থানার ভাটপিয়ারী গ্রামের হাইস্কুল মাঠে হানাদার বাহিনী বিপুলসংখ্যক প্রশিক্ষিত রাজাকার নিয়ে ক্যাম্প স্থাপন করেছে। তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত হয় রাতেই ওই ক্যাম্পে আক্রামণ করা হবে। আমিনুল ইসলাম বলেন, কমান্ডার মোজাফফরের নেতৃত্বে ২০ জনের গেরিলা দল নিয়ে রাত ১০টায় পাক ক্যাম্পে আক্রমণ করি আমরা। ক্যাম্পটি চারদিক থেকে ঘিরে মুহুর্মুহু গ্রেনেড নিক্ষেপ করি। প্রায় ৪ ঘণ্টার যুদ্ধে গেরিলা সদস্য আবদুল মোতালেব ও আমি পাকসেনাদের গুলিতে আহত হই। চারদিকে আক্রমণে ছিলেন ফিরোজ ভূইয়া, শফিকুল ইসলাম শফি, আলাউদ্দিন, আবদুল হালিম, ইসমাইল হোসেনসহ যোদ্ধারা। যুদ্ধে ২০ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের সৈন্য, ২০ রাজাকার ও ২৫ জন পাঞ্জাবি মিলিশিয়া নিহত হয়। তাদের ফেলে যাওয়া ২টি এলএমজি, ৩০টি চাইনিজ রাইফেল, ৩৫টি ৩০৩ রাইফেলসহ ৭০টি অস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে আসে।
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আমির হোসেন ভুলু, মুজিব বাহিনীর প্রধান আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, কমান্ডার মোজাফ্ফর, মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন, জহুরুল ইসলাম, এফএফ কমান্ডার ইসমাইল হোসেন, খ.ম আখতার, ফজলুল মতিন মুক্তা, গোলাম হায়দার খোকা, গেরিলা আবু মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, ইসহাক আলীর নেতৃত্বে একটি যৌথ বাহিনী গঠন করা হয়। এ যৌথ কমান্ডকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়- মুজিব বাহিনী কমান্ড, এফএফ কমান্ড ও ইসমাইল বাহিনী কমান্ড। তারা একযোগে শৈলাবাড়ি পাক ক্যাম্পে আক্রমণ চালায়। ১১ ডিসেম্বর সকাল থেকে শুরু হয় যুদ্ধ। ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর পাকসেনারা পিছু হঠতে বাধ্য হয়। যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার আহসান হাবিব, সুলতান মাহমুদ, কালুসহ ৫ জন শহীদ হন এবং হানাদার পাঞ্জাব রেজিমেন্টের একজন ক্যাপ্টেন, ২ জন মেজরসহ ২৮ জন নিহত হন।
১৪ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় বিজয়ের বেশে জয় বাংলা স্লোগান আর ফাঁকা গুলির মধ্য দিয়ে শহর দখলমুক্ত করে মুক্তিযোদ্ধারা। সিরাজগঞ্জ বিএ কলেজ (বর্তমান সিরাজগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ) মাঠে মুক্তিবাহিনী ও জনতার বিজয় উল্লাসের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার লাল-সবুজের পতাকা উত্তোলন করা হয়।
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম চৌধুরী আক্ষেপ করে বলেন, স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও যখন স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকারদের আস্ফালন চোখে পড়ে, তখন যেন হানাদার বাহিনীর গুলিতে সৃষ্ট ক্ষত স্থানের ঘা নতুন করে জেগে ওঠে।
No comments