রক্তদান মহৎ কাজ by ফখরুল ইসলাম চৌধুরী
আগামীকাল ১৪ জুন বিশ্ব রক্তদাতা দিবস।
অনেকে আছেন যারা ক্যান্সার, থ্যালাসেমিয়া ও অন্যান্য রক্ত সংক্রান্ত রোগে
আক্রান্ত রোগীদের বিনামূল্যে রক্তদান করে আসছেন। তাদেরই জন্য পালিত হয় এ
দিবস। ২০০৪ সাল থেকে দিনটি পালিত হয়ে আসছে। ১৪ জুন দিবসটি পালনের আরও একটি
তাৎপর্য রয়েছে। এদিন জন্ম হয়েছিল বিজ্ঞানী কার্ল ল্যান্ডস্টেইনারের। এ
নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী আবিষ্কার করেছিলেন রক্তের এ বি ও গ্র“প।
সারা বিশ্বে প্রতিবছর ১৪ কোটি ১০ লাখ ইউনিট রক্ত স্বেচ্ছায় দান করা হয়। অথচ এর মাত্র ৩৮ শতাংশ সংগ্রহ হয় উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে, যেখানে বাস করে মোট জনসংখ্যার ৮২ শতাংশ মানুষ। এছাড়া এখনও বিশ্বের অনেক দেশের মানুষের রক্তের প্রয়োজন হলে নির্ভর করতে হয় নিজ পরিবারের সদস্য বা বন্ধুদের রক্তদানের ওপর। অনেক দেশে পেশাদার রক্তদাতারা অর্থের বিনিময়ে রক্তদান করে আসছে। অথচ বিশ্বের নানা দেশ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে জানা যায়, নিরাপদ রক্ত সরবরাহের মূল ভিত্তি হল স্বেচ্ছায় বিনামূল্যে রক্তদান, কারণ এ রক্ত তুলনামূলক নিরাপদ।
এ তথ্যটি স্পষ্ট করে বলা দরকার যে, নিরাপদ রক্ত সরবরাহ করার মূল ভিত্তি হল বিনামূল্যে স্বেচ্ছায় রক্তদান এবং দানকৃত রক্তের পরীক্ষা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক নির্ধারিত মৌলিক ৫টি স্ক্রিনিং টেস্ট অবশ্যই করাতে হবে। তবেই নিরাপদ রক্ত সরবরাহ নিশ্চিত হবে। দেশের বিশাল একটি জনগোষ্ঠী বিভিন্ন ভ্রান্ত ধারণা থেকে রক্তদানে আগ্রহী নয়। অথচ সবাই একটু সচেতন হলে রক্তের অভাবে কোনো লোক মারা যেত না। আমি দেখেছি, রক্তের অভাবে বহু লোক মারা যাচ্ছে অথচ তাদের কাছের লোকটি রক্ত দিতে আগ্রহী নয়। নিজ পরিবারে একই গ্র“পের রক্ত থাকার পরও বাইরের লোক বা ডোনার খোঁজেন রক্তের প্রয়োজনে।
সারা বিশ্বে প্রতিবছর ১৪ কোটি ১০ লাখ ইউনিট রক্ত স্বেচ্ছায় দান করা হয়। অথচ এর মাত্র ৩৮ শতাংশ সংগ্রহ হয় উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে, যেখানে বাস করে মোট জনসংখ্যার ৮২ শতাংশ মানুষ। এছাড়া এখনও বিশ্বের অনেক দেশের মানুষের রক্তের প্রয়োজন হলে নির্ভর করতে হয় নিজ পরিবারের সদস্য বা বন্ধুদের রক্তদানের ওপর। অনেক দেশে পেশাদার রক্তদাতারা অর্থের বিনিময়ে রক্তদান করে আসছে। অথচ বিশ্বের নানা দেশ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে জানা যায়, নিরাপদ রক্ত সরবরাহের মূল ভিত্তি হল স্বেচ্ছায় বিনামূল্যে রক্তদান, কারণ এ রক্ত তুলনামূলক নিরাপদ।
এ তথ্যটি স্পষ্ট করে বলা দরকার যে, নিরাপদ রক্ত সরবরাহ করার মূল ভিত্তি হল বিনামূল্যে স্বেচ্ছায় রক্তদান এবং দানকৃত রক্তের পরীক্ষা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক নির্ধারিত মৌলিক ৫টি স্ক্রিনিং টেস্ট অবশ্যই করাতে হবে। তবেই নিরাপদ রক্ত সরবরাহ নিশ্চিত হবে। দেশের বিশাল একটি জনগোষ্ঠী বিভিন্ন ভ্রান্ত ধারণা থেকে রক্তদানে আগ্রহী নয়। অথচ সবাই একটু সচেতন হলে রক্তের অভাবে কোনো লোক মারা যেত না। আমি দেখেছি, রক্তের অভাবে বহু লোক মারা যাচ্ছে অথচ তাদের কাছের লোকটি রক্ত দিতে আগ্রহী নয়। নিজ পরিবারে একই গ্র“পের রক্ত থাকার পরও বাইরের লোক বা ডোনার খোঁজেন রক্তের প্রয়োজনে।
রক্ত দিতে খুব একটা সাহসের প্রয়োজন হয় না। আবার রক্তদান করা কোনো নায়কোচিত কাজও নয়। তবে এটি অত্যন্ত মহৎ একটি কাজ। আমাদের এক ব্যাগ রক্ত হাসি ফোটাতে পারে একজন মায়ের, একজন বাবার, একজন স্ত্রীর, একজন সন্তানের। হয়তো আমাদের রক্তে বেঁচে যেতে পারে একটি পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটি। তাই আসুন একটু সচেতন হই, স্বেচ্ছায় রক্তদান করি, ধরে রাখি একটি পরিবারের হাসি-আনন্দ।
যে-কেউ চাইলেই রক্তদান করতে পারে না। রক্তদাতার কিছু করণীয় বা কিছু যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। রক্তদান করতে হলে রক্তদাতার বয়স আবশ্যই ১৮ হতে হবে এবং ওজন হতে হবে কমপক্ষে ৪৮ কেজি। তাকে সুস্থ হতে হবে। রক্তদাতার যদি কয়েক মাসের মধ্যে কোনো বড় ধরনের অপারেশন না হয়ে থাকে; জণ্ডিস ও ম্যালেরিয়া জাতীয় অথবা রক্তসংক্রান্ত কোনো অসুখে না ভোগেন, তাহলেই তিনি রক্তদান করতে পারবেন। রক্তদানের সময় দাতার রক্তচাপ অবশ্যই স্বাভাবিক থাকতে হবে। এসব ঠিক থাকলেই কেবল একজন ব্যক্তি রক্তদান করতে পারে।
একজন ব্যক্তি রক্তদান করলে একজন মানুষের জীবন বাঁচে। তাছাড়া রক্তদাতার অনেক উপকার হয়। রেড ক্রিসেন্ট রক্তদান কেন্দ্রের মাধ্যমে রক্তদান করা হলে রক্তদাতার রক্তের পাঁচটি পরীক্ষা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করে দেয়া হয়- যা কোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে করালে খরচ পড়বে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। যেসব পরীক্ষা বিনামূল্যে করে দেয়া হয় সেগুলো হল- এইচআইবি/এইডস, হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি, ম্যালেরিয়া ও সিফিলিস। তাছাড়া রক্তের গ্র“পও নির্ণয় করা হয়। নিয়মিত রক্তদান করলে প্রেসার পয়েন্ট স্বাভাবিক থাকে। সুতরাং প্রত্যেক মানুষের উচিত নিয়মিত স্বেচ্ছায় রক্তদান করা।
রক্তদানের ব্যাপারে ইসলামে কোনো বাধা নেই। তবে ধর্মে রক্ত বিক্রি বৈধ নয়। ডাক্তারি গবেষণা মতে, একজন সুস্থ-সবল মানুষ তিন মাস পরপর রক্তদান করতে পারে, এতে শারীরিক কোনো সমস্যা বা ক্ষতি হয় না। পৃথিবীতে অনেক মহৎ কাজ রয়েছে, যার অন্যতম হল স্বেচ্ছায় রক্তদান। কারণ রক্ত কোনো ফ্যাক্টরিতে উৎপাদন হয় না, কেবল একজন মানুষের প্রয়োজনে আরেকজন মানুষ তা দিতে পারে।
বাংলাদেশে বর্তমানে রক্তের চাহিদা রয়েছে প্রায় তিন লাখ ব্যাগ। এর মধ্যে জোগান রয়েছে মাত্র দুই লাখ ব্যাগের। অর্থাৎ প্রায় এক লাখ ব্যাগের অভাব রয়েছে, যা পূরণ করতে প্রয়োজন শুধুই সচেতনতা। দেশের উচ্চমাধ্যমিক থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীরা নিয়মিত রক্তদান করলে এদেশে কোনো রোগী রক্তের অভাবে মারা যাবে না। তাই ছাত্রছাত্রীসহ সব দেশপ্রেমিক নাগরিকের প্রতি অনুরোধ, নিয়মিত স্বেচ্ছায় রক্তদান করুন, অন্যের জীবন বাঁচান, নিজে সুস্থ থাকুন।
ফখরুল ইসলাম চৌধুরী : যুব উপপ্রধান, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, যুব রেড ক্রিসেন্ট, চট্টগ্রাম
poragrcy@yahoo.com
No comments